Monday, September 8, 2014

ছাত্রীকে পিটিয়ে অজ্ঞান করে স্বর্ণের চেইন ছিনতাই:নয়াদিগন্ত

খুলনা সরকারি করোনেশন মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ে তৃতীয় শ্রেণীতে পড়ে আফিয়া ইসলাম স্নেহা। সপ্তাহখানেক আগে সে স্কুলে ওপরের শ্রেণীর এক ছাত্রীর নির্মম নির্যাতনের শিকার হয়। ওই ছাত্রী নির্মমভাবে তাকে পিটিয়ে অজ্ঞান করে তার গলার চেইন নিয়ে যায়। স্নেহা এখন ভয়ে স্কুলে যেতে চায় না। স্কুল কর্তৃপক্ষের ঘটনা চাপা দেয়ার চেষ্টা অভিভাবকদের মধ্যে আতঙ্ক ও ক্ষোভের সঞ্চার করছে। এ বিষয়ে খোঁজ নিতে গিয়ে মাধ্যমিক লেভেলের এ স্
কুলের মেয়েদের মাদকাসক্তি ও তাদের মাধ্যমে এ ঘটনা ঘটার আশঙ্কার কথা জানা গেছে। স্নেহার বাবা নজরুল ইসলাম বাগেরহাটের শহীদ স্মৃতি ডিগ্রি কলেজের প্রভাষক। তাদের বাসা নগরীর মৌলভীপাড়ায়। স্নেহার ঘটনাটি সপ্তাহখানেক চাপাই ছিল। গত শনিবার ঘটনা প্রকাশ পায়। এরপর এ নিয়ে নগরীতে তোলপাড় শুরু হয়। স্নেহার বর্ণনা মতে, গত ৩০ আগস্ট সকাল ১০টা ৫ মিনিটে টিফিনের সময়ে তারা সবাই মাঠে খেলা করছিল। এক সময় পানির তেষ্টা পেলে সে একা কাসে ফেরে পানি পান করতে। তাকে একা পেয়ে ওপরের কাসের এক মেয়ে তাকে ছাদে যেতে বলে। সে অস্বীকার করলে মেয়েটি তাকে জোর করে ধরে সিঁড়ি বেয়ে ওপরে নেয়। ছাদে যাওয়ার পথ তালাবদ্ধ থাকায় তিনতলার সিঁড়ি ঘরে ধাক্কা দিয়ে ফেলে মেয়েটি স্নেহাকে কেন পরীক্ষার সময় তার ছোট বোনকে সে সাহায্য করেনি এ অজুহাতে মারধর শুরু করে। মারের চোটে স্নেহা রক্তবমি করে এবং একপর্যায়ে বামচোখে ঘুষি খেয়ে সে জ্ঞান হারায়। তার ওই চোখে এখনো রক্ত জমে আছে এবং ওই চোখের দৃষ্টিশক্তি হারানোর আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন ডাক্তার। তারপরের ঘটনা সে কিছুই জানে না। পরে স্কুল থেকে মেয়ে অসুস্থ বলে ফোন করে স্নেহার মাকে জানান হয়। তিনি গিয়ে মেয়েকে নিয়ে আসেন। তবে স্কুল কর্তৃপক্ষ প্রকৃত ঘটনা তাকে বলেনি। পরে স্নেহা ঘটনা জানায়। সেদিন অবশ্য স্কুলের কয়েকজন শিক্ষক তাদের বাসায় গিয়েছিলেন। এরপর স্নেহার দাদার  মৃত্যু হয় এবং ঘটনা নিয়ে আর কোনো আলোচনা বা পুলিশকে বলা হয়নি বলে বাবা নজরুল ইসলাম গত শনিবার জানান। এ ব্যাপারে প্রধান শিক্ষক ফারহানা নাজ জানান, স্নেহার ঘটনাটি তিনি শুনেছেন এবং তা তদন্ত করতে সহকারী প্রধান শিক্ষক ঠাকুর দাস সরকারকে প্রধান করে একটি কমিটি গঠন করে দেয়া হয়েছে। এ দিকে সপ্তম শ্রেণীর কয়েকজন ছাত্রী জানায়, স্কুলে এক ছাত্রীর ব্যাগে কিছু দিন আগে ইয়াবা ট্যাবলেট পাওয়া গিয়েছিল। তাদের বেশ কয়েকজন এসবের সাথে জড়িত বলে তারা জানায়। তাদের কেউ মনে হয় মাদক কেনার টাকা জোগাড় করতে স্নেহার চেইন কেড়ে নিতে এ ঘটনা ঘটিয়েছে। অন্য দিকে এ ঘটনার পর নগরীর অভিভাবকদের মধ্যে দারুণ উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। অনেক অভিভাবক ব্যক্তিগতভাবে তাদের উৎকণ্ঠার কথা ব্যক্ত করেন। তারা তাদের সন্তানদের নিরাপত্তার ব্যাপারে স্কুল কর্তৃপক্ষের উদাসীনতার সমালোচনা করেন এবং সরকারের শিক্ষা বিভাগ এ ব্যাপারে যেন তৎপর হয় সে দাবি জানান।

No comments:

Post a Comment