যুবদলের সভাপতি সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলালসহ সংগঠনের ৬৩ জন নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল শনিবার সকাল সাড়ে নয়টার দিকে রাজধানীর লালমাটিয়ায় মোয়াজ্জেম হোসেনের বাসার নিচতলার বৈঠকখানা থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) বিপ্লব কুমার সরকার প্রথম আলোকে বলেন, আজ রোববারের হরতালে নাশকতা সৃষ্টির পরিকল্পনার ছক তৈরির জন্য ওই নেতা-কর্মীরা বৈঠক করছেন—এমন সংবাদ
ের ভিত্তিতে পুলিশ অভিযান চালিয়ে ৬৩ জনকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারকৃতদের কাছে নাশকতা সৃষ্টির কোনো আলামত বা বিস্ফোরক-জাতীয় কিছু পাওয়া গেছে কি না—এ প্রশ্নের জবাবে বিপ্লব কুমার সরকার বলেন, ককটেল কিংবা বিস্ফোরক-জাতীয় কিছু পাওয়া যায়নি। কারণ, এটা তাঁদের প্রাথমিক পর্যায় অর্থাৎ নাশকতা সৃষ্টির পরিকল্পনার বৈঠক ছিল। তবে যুবদলের পক্ষ থেকে বলা হয়, পুলিশের এ অভিযোগ সত্য নয়। সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য গিয়াস উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেনের বাসার নিচে একটি বৈঠকখানা আছে। সেখানে প্রায় প্রতিদিনই যুবদলের নেতা-কর্মীরা গিয়ে তাঁর সঙ্গে দেখা করেন। মোহাম্মদপুরে বিভিন্ন ওয়ার্ডে যুবদলের কমিটি গঠন নিয়ে গতকাল সকালে সেখানে বৈঠক করছিলেন। পুলিশ অতর্কিত অভিযান চালিয়ে সবাইকে আটক করেছে। আটকের পর সবাইকে মোহাম্মদপুর থানায় নেওয়া হয়। সেখান থেকে মোয়াজ্জেম হোসেনকে মিন্টো রোডে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। তাঁকে নিবিড় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডিবি কার্যালয়ে নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন ডিসিðবিপ্লব কুমার সরকার। রাত সাড়ে আটটার দিকে যোগাযোগ করা হলে মোহাম্মদপুর থানার ডিউটি অফিসার উপপরিদর্শক (এসআই) রাজীব মিয়া বলেন, নাশকতার পরিকল্পনার অভিযোগে বিশেষ ক্ষমতা আইনে থানার এসআই মাসুদ শিকদার বাদী হয়ে একটি মামলা করেছেন। এতে সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেনসহ ৬৩ জনকে আসামি করা হয়েছে। ডিসি বিপ্লব কুমার প্রথম আলোকে বলেন, মোহাম্মদপুরে বেশ কয়েকটি মাদ্রাসা যুবদলের বিভিন্ন নেতার নিয়ন্ত্রণে চলে। গ্রেপ্তার হওয়া নেতা-কর্মীদের মধ্যে কয়েকজন মাদ্রাসার ছাত্র ও ছাত্রদের নিয়ন্ত্রণকারী ব্যক্তিও আছেন। তাঁরা ধর্মভিত্তিক সংগঠনের ডাকা আজকের হরতালে মাদ্রাসার ছাত্রদের ব্যবহারের পরিকল্পনা করছিলেন বলেও পুলিশের কাছে তথ্য আছে। অবশ্য পুলিশের এ অভিযোগ অস্বীকার করেন যুবদল নেতা গিয়াস উদ্দিন। এদিকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এক বিবৃতিতে সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেনসহ যুবদল নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তারের তীব্র নিন্দা, ক্ষোভ ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন। তিনি বলেন, এঁদের আটক করে সরকার ‘ন্যক্কারজনক হিংসাত্মক পরিস্থিতি’ সৃষ্টি করেছে। তিনি সবার নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করেন।
No comments:
Post a Comment