তাই ব্যবসা-বাণিজ্যে বৈচিত্র্য আনতে অন্যান্য খাতেও জোর দিতে হবে। আর এটা পারেন তরুণ উদ্যোক্তারা। এ জন্য তাঁদের শুধু সমর্থন ও আর্থিক সহযোগিতা দরকার। কিন্তু পদে পদে কঠিন শর্তের জালে আটকা পড়ে তরুণ উদ্যোক্তাদের উদ্যম হারিয়ে যাচ্ছে। এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণ ঘটাতে তরুণ উদ্যোক্তা শনাক্তরণ, নীতিমালা তৈরি, ব্যাংকের বিশেষ সেল গঠন করে তহবিল জোগাড়, সহজ শর্তে ঋণ প্রদান এবং তরুণ উদ্যোক্তা পল্লী স্থাপন করতে হবে। এ জন্য সরকারের পদক্ষেপ দরকার। এসবের ব্যবস্থা হলে শুধু তরুণরাই দেশের অর্থনীতির চেহারা বদলে দিতে সক্ষম হবে। গতকাল বৃহস্পতিবার চিটাগাং খুলশী ক্লাবে জুনিয়র চেম্বার ইন্টারন্যাশনাল (জেসিআই) চট্টগ্রাম চ্যাপ্টার ও কালের কণ্ঠের যৌথ আয়োজনে গোলটেবিল বৈঠকে তরুণ উদ্যোক্তা ও শিল্পপতিরা এসব কথা বলেন। ‘তরুণ উদ্যোক্তাদের উদ্বুদ্ধকরণে সরকারকে এগিয়ে আসতে হবে’ শীর্ষক এই গোলটেবিল বৈঠকের সঞ্চালক ছিলেন কালের কণ্ঠ সম্পাদক ইমদাদুল হক মিলন। বৈঠক দুপুর ১২টায় শুরু হয়ে আড়াইটা পর্যন্ত চলে। স্বাগত বক্তৃতায় জুনিয়র চেম্বার চট্টগ্রামের প্রেসিডেন্ট ও এলবিয়ন গ্রুপের চেয়ারম্যান রাইসুল উদ্দিন সৈকত বলেন, তরুণদের আইডিয়াগুলো চমৎকার ও উদ্ভাবনমূলক। কিন্তু তাঁদের নতুন ও ভিন্নধর্মী চিন্তার কথা শুনতে চায় না সবাই। অর্থলগ্নিকারীরা উদ্যোগ বাস্তবায়নে ঋণ সহায়তা দিতে চায় না; দিলেও আবার আগেই ফেরত পাওয়ার নিশ্চয়তা চায়। ফলে তরুণ উদ্যোক্তারা শুরুর ধাপেই হোঁচট খান, হতাশ হয়ে পড়েন। ইমদাদুল হক মিলন বলেন, ‘দুর্বৃত্তরা হাজার হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়ে ব্যাংকগুলোকে খালি করে দিচ্ছে। অথচ সম্ভাবনাময় তরুণ উদ্যোক্তারা উদ্ভাবনী প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য ঋণ পাচ্ছেন না। এভাবে আর চলতে পারে না, চলতে দেওয়া যায় না। তিনি বলেন, তরুণদের অধিকার আদায়ে রাষ্ট্রের সংশ্লিষ্ট সব স্থানে আমরা কড়া নাড়ব, প্রতিবেদন করে সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করব। ব্যর্থ হলে চলবে না, হাতে হাত ধরে আমরা এগিয়ে যাব।’ জুনিয়র চেম্বার ইন্টারন্যাশনাল চট্টগ্রামের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও বড়তাকিয়া গ্রুপের চেয়ারম্যান নিয়াজ মোর্শেদ এলিট বলেন, তরুণদের সম্ভাবনা কাজে না লাগালে কাঙ্ক্ষিত অর্থনৈতিক অগ্রগতি সম্ভব নয়। সমাজ উল্টো পথেই চলছে, তেলা মাথায় তেল দিচ্ছে। প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ীদের ঋণ দিচ্ছে ব্যাংকগুলো। অথচ আজকের যেসব ব্যক্তি প্রথম ব্যবসা শুরু করতে চাইছেন তাঁদের নানা অজুহাতে ফিরিয়ে দিচ্ছে।’ দৈনিক আজাদীর ব্যবস্থাপনা সম্পাদক ওয়াহিদ মালেক বলেন, ‘আমরা তরুণদের সম্ভাবনা নিয়ে শুনতে চাই কম। বলার মানসিকতা বেশি। এটা পরিহার করতে হবে। যুগের সঙ্গে তাল মেলাতে গেলে আগের প্রজন্মের মানসিকতা পরিবর্তন করতে হবে। এ প্রজন্মের আধুনিক ও উদ্ভাবনী ক্ষমতাকে কাজে লাগাতে হবে। তিনি বলেন, এখন একা উদ্যোক্তা হওয়া খুব কঠিন। তরুণ উদ্যোক্তাদের সফল হতে হলে মেধার সমন্বয় করে এগোতে হবে। আমরা যদি পরস্পরকে একটু ছাড় দিই তাহলে সফল কিছু করা সম্ভব।’ ইস্ট ডেল্টা ইউনিভার্সিটির প্রতিষ্ঠাতা ভাইস চেয়ারম্যান সাঈদ আল নোমান বলেন, ‘সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো হয় দুর্বল অথবা পক্ষপাতদুষ্ট। এ কারণে আমরা এগোতে পারছি না। তরুণ উদ্যোক্তারা বিনিয়োগের পরিবেশ পাচ্ছেন না, তাই আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন। রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক নেতৃত্বের মধ্যে তাঁদের জন্য সহযোগিতার মনোভাব গড়ে তুলতে হবে।’ এন মোহাম্মদ গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মনজুরুল হক বলেন, সরকার রাজস্ব আদায়ে যেভাবে উদ্যোগী থাকে, সে ভূমিকা যদি তরুণ উদ্যোক্তাদের সহায়তার ক্ষেত্রে পালন করে তাহলে দেশ নিশ্চিতভাবে এগিয়ে যাবে। চট্টগ্রাম মেরিন ডকইয়ার্ডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবু তালেব সিদ্দিকী বলেন, তরুণ উদ্যোক্তাদের সফল না হওয়ার জন্য অর্থায়নই হচ্ছে প্রধান কারণ। তরুণ উদ্যোক্তাদের জন্য একটি ফান্ড গঠন করে সরকার তাদের সহায়তা ও উদ্বুদ্ধ করতে পারে। এম জে এল বাংলাদেশের প্রডাকশন প্ল্যানার জসিম আহমদ বলেন, একক প্রতিষ্ঠানের ওপর নির্ভর করে দেশের অর্থনীতি চলতে পারে না। এ জন্য পণ্যের বহুমুখী উৎপাদনের ওপর জোর দিতে হবে। আর ব্যতিক্রমী ও উদ্ভাবনী উদ্যোগে ব্যাংক সহায়তা দিতে হবে। কিউপির ব্যবস্থাপনা পরিচালক এস এম শরফুদ্দিন মাহী বলেন, কারা তরুণ উদ্যোক্তা তা সংজ্ঞায়িত করে, প্রত্যেক ব্যাংকের উচিত তাঁদের একেবারে কম সুদে ঋণ দেওয়া। জেসিআই চট্টগ্রামের সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার মাশফিক আহমেদ রুশাদ সমাপনী বক্তব্য দেন। এ ছাড়া আলোচনায় অংশ নেন সেন্ট্রাল মিশিগান ইউনিভার্সিটির পরিচালক এমবিএ প্রোগ্রাম ড. দেবাশীষ চক্রবর্তী, লঙ্কাবাংলা ফাইন্যান্সের অ্যাসিস্ট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট সোলায়মান হোসাইন, বনলতা অ্যাপারেলসের মনিকা চক্রবর্তী, এস এম টেক্সটাইলসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নুরুল আবসার মজুমদার, এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংকের মাহবুবুর রহমান, ফুলকলি গ্রুপের পরিচালক গিয়াস উদ্দিন, আর এস গ্রুপ অব কম্পানির মহাব্যবস্থাপক ওয়াহিদুল আলম, ক্রিসল্যান ডেভেলপমেন্ট লিমিটেডের পরিচালক নূর ই জান্নাত জেমি, জুনিয়র চেম্বার ইন্টারন্যাশনাল কেন্দ্রীয় কমিটির পরিচালক আশিক এ রহমান, জেসিআই চট্টগ্রামের সদস্য তৌহিদ আহমদ প্রমুখ।
Headlines from most popular newspapers of Bangladesh. বাংলাদেশে প্রকাশিত প্রধান প্রধান দৈনিক পত্রিকার সংবাদ শিরোনামগুলো এক নজরে দেখে নিন।
Friday, November 14, 2014
তরুণ উদ্যোক্তাদের দিকে নজর দিতে হবে:কালের কন্ঠ
তাই ব্যবসা-বাণিজ্যে বৈচিত্র্য আনতে অন্যান্য খাতেও জোর দিতে হবে। আর এটা পারেন তরুণ উদ্যোক্তারা। এ জন্য তাঁদের শুধু সমর্থন ও আর্থিক সহযোগিতা দরকার। কিন্তু পদে পদে কঠিন শর্তের জালে আটকা পড়ে তরুণ উদ্যোক্তাদের উদ্যম হারিয়ে যাচ্ছে। এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণ ঘটাতে তরুণ উদ্যোক্তা শনাক্তরণ, নীতিমালা তৈরি, ব্যাংকের বিশেষ সেল গঠন করে তহবিল জোগাড়, সহজ শর্তে ঋণ প্রদান এবং তরুণ উদ্যোক্তা পল্লী স্থাপন করতে হবে। এ জন্য সরকারের পদক্ষেপ দরকার। এসবের ব্যবস্থা হলে শুধু তরুণরাই দেশের অর্থনীতির চেহারা বদলে দিতে সক্ষম হবে। গতকাল বৃহস্পতিবার চিটাগাং খুলশী ক্লাবে জুনিয়র চেম্বার ইন্টারন্যাশনাল (জেসিআই) চট্টগ্রাম চ্যাপ্টার ও কালের কণ্ঠের যৌথ আয়োজনে গোলটেবিল বৈঠকে তরুণ উদ্যোক্তা ও শিল্পপতিরা এসব কথা বলেন। ‘তরুণ উদ্যোক্তাদের উদ্বুদ্ধকরণে সরকারকে এগিয়ে আসতে হবে’ শীর্ষক এই গোলটেবিল বৈঠকের সঞ্চালক ছিলেন কালের কণ্ঠ সম্পাদক ইমদাদুল হক মিলন। বৈঠক দুপুর ১২টায় শুরু হয়ে আড়াইটা পর্যন্ত চলে। স্বাগত বক্তৃতায় জুনিয়র চেম্বার চট্টগ্রামের প্রেসিডেন্ট ও এলবিয়ন গ্রুপের চেয়ারম্যান রাইসুল উদ্দিন সৈকত বলেন, তরুণদের আইডিয়াগুলো চমৎকার ও উদ্ভাবনমূলক। কিন্তু তাঁদের নতুন ও ভিন্নধর্মী চিন্তার কথা শুনতে চায় না সবাই। অর্থলগ্নিকারীরা উদ্যোগ বাস্তবায়নে ঋণ সহায়তা দিতে চায় না; দিলেও আবার আগেই ফেরত পাওয়ার নিশ্চয়তা চায়। ফলে তরুণ উদ্যোক্তারা শুরুর ধাপেই হোঁচট খান, হতাশ হয়ে পড়েন। ইমদাদুল হক মিলন বলেন, ‘দুর্বৃত্তরা হাজার হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়ে ব্যাংকগুলোকে খালি করে দিচ্ছে। অথচ সম্ভাবনাময় তরুণ উদ্যোক্তারা উদ্ভাবনী প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য ঋণ পাচ্ছেন না। এভাবে আর চলতে পারে না, চলতে দেওয়া যায় না। তিনি বলেন, তরুণদের অধিকার আদায়ে রাষ্ট্রের সংশ্লিষ্ট সব স্থানে আমরা কড়া নাড়ব, প্রতিবেদন করে সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করব। ব্যর্থ হলে চলবে না, হাতে হাত ধরে আমরা এগিয়ে যাব।’ জুনিয়র চেম্বার ইন্টারন্যাশনাল চট্টগ্রামের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও বড়তাকিয়া গ্রুপের চেয়ারম্যান নিয়াজ মোর্শেদ এলিট বলেন, তরুণদের সম্ভাবনা কাজে না লাগালে কাঙ্ক্ষিত অর্থনৈতিক অগ্রগতি সম্ভব নয়। সমাজ উল্টো পথেই চলছে, তেলা মাথায় তেল দিচ্ছে। প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ীদের ঋণ দিচ্ছে ব্যাংকগুলো। অথচ আজকের যেসব ব্যক্তি প্রথম ব্যবসা শুরু করতে চাইছেন তাঁদের নানা অজুহাতে ফিরিয়ে দিচ্ছে।’ দৈনিক আজাদীর ব্যবস্থাপনা সম্পাদক ওয়াহিদ মালেক বলেন, ‘আমরা তরুণদের সম্ভাবনা নিয়ে শুনতে চাই কম। বলার মানসিকতা বেশি। এটা পরিহার করতে হবে। যুগের সঙ্গে তাল মেলাতে গেলে আগের প্রজন্মের মানসিকতা পরিবর্তন করতে হবে। এ প্রজন্মের আধুনিক ও উদ্ভাবনী ক্ষমতাকে কাজে লাগাতে হবে। তিনি বলেন, এখন একা উদ্যোক্তা হওয়া খুব কঠিন। তরুণ উদ্যোক্তাদের সফল হতে হলে মেধার সমন্বয় করে এগোতে হবে। আমরা যদি পরস্পরকে একটু ছাড় দিই তাহলে সফল কিছু করা সম্ভব।’ ইস্ট ডেল্টা ইউনিভার্সিটির প্রতিষ্ঠাতা ভাইস চেয়ারম্যান সাঈদ আল নোমান বলেন, ‘সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো হয় দুর্বল অথবা পক্ষপাতদুষ্ট। এ কারণে আমরা এগোতে পারছি না। তরুণ উদ্যোক্তারা বিনিয়োগের পরিবেশ পাচ্ছেন না, তাই আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন। রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক নেতৃত্বের মধ্যে তাঁদের জন্য সহযোগিতার মনোভাব গড়ে তুলতে হবে।’ এন মোহাম্মদ গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মনজুরুল হক বলেন, সরকার রাজস্ব আদায়ে যেভাবে উদ্যোগী থাকে, সে ভূমিকা যদি তরুণ উদ্যোক্তাদের সহায়তার ক্ষেত্রে পালন করে তাহলে দেশ নিশ্চিতভাবে এগিয়ে যাবে। চট্টগ্রাম মেরিন ডকইয়ার্ডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবু তালেব সিদ্দিকী বলেন, তরুণ উদ্যোক্তাদের সফল না হওয়ার জন্য অর্থায়নই হচ্ছে প্রধান কারণ। তরুণ উদ্যোক্তাদের জন্য একটি ফান্ড গঠন করে সরকার তাদের সহায়তা ও উদ্বুদ্ধ করতে পারে। এম জে এল বাংলাদেশের প্রডাকশন প্ল্যানার জসিম আহমদ বলেন, একক প্রতিষ্ঠানের ওপর নির্ভর করে দেশের অর্থনীতি চলতে পারে না। এ জন্য পণ্যের বহুমুখী উৎপাদনের ওপর জোর দিতে হবে। আর ব্যতিক্রমী ও উদ্ভাবনী উদ্যোগে ব্যাংক সহায়তা দিতে হবে। কিউপির ব্যবস্থাপনা পরিচালক এস এম শরফুদ্দিন মাহী বলেন, কারা তরুণ উদ্যোক্তা তা সংজ্ঞায়িত করে, প্রত্যেক ব্যাংকের উচিত তাঁদের একেবারে কম সুদে ঋণ দেওয়া। জেসিআই চট্টগ্রামের সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার মাশফিক আহমেদ রুশাদ সমাপনী বক্তব্য দেন। এ ছাড়া আলোচনায় অংশ নেন সেন্ট্রাল মিশিগান ইউনিভার্সিটির পরিচালক এমবিএ প্রোগ্রাম ড. দেবাশীষ চক্রবর্তী, লঙ্কাবাংলা ফাইন্যান্সের অ্যাসিস্ট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট সোলায়মান হোসাইন, বনলতা অ্যাপারেলসের মনিকা চক্রবর্তী, এস এম টেক্সটাইলসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নুরুল আবসার মজুমদার, এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংকের মাহবুবুর রহমান, ফুলকলি গ্রুপের পরিচালক গিয়াস উদ্দিন, আর এস গ্রুপ অব কম্পানির মহাব্যবস্থাপক ওয়াহিদুল আলম, ক্রিসল্যান ডেভেলপমেন্ট লিমিটেডের পরিচালক নূর ই জান্নাত জেমি, জুনিয়র চেম্বার ইন্টারন্যাশনাল কেন্দ্রীয় কমিটির পরিচালক আশিক এ রহমান, জেসিআই চট্টগ্রামের সদস্য তৌহিদ আহমদ প্রমুখ।
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment