যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার (সিআইএ) নির্মম জিজ্ঞাসাবাদ-কৌশল নিয়ে সিনেট কমিটির প্রতিবেদন প্রকাশের পর বিতর্ক চলছেই। ওই সব কৌশল অবলম্বনের পক্ষে সিআইএর প্রধানের সাফাই গাওয়ার পরপরই পাল্টা জবাব দিয়েছেন সিনেটের সংশ্লিষ্ট কমিটির চেয়ারম্যান ডায়ান ফাইনস্টাইন। তিনি বলেছেন, সিআইএর প্রধান যতই দাবি করুন না কেন, ওই সব কৌশল কোনোই কাজে লাগেনি। খবর এএফপির। যুক্তরাষ্ট্রে ‘নাইন-ইলেভেনের’ হামলার প
র বন্দী সন্দেহভাজন জঙ্গিদের জিজ্ঞাসাবাদে নির্মম সব কৌশল ব্যবহার করেছিল সিআইএ। ‘জিজ্ঞাসাবাদের জোরদার কৌশল বা ইআইটি’ নামে পরিচিত ওই সব কৌশল পরে সিআইএ বাদ দেয়। এ বিষয়ে গত মঙ্গলবার একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে মার্কিন সিনেটের গোয়েন্দাবিষয়ক কমিটি। এই কমিটির প্রধান সিনেটর ডায়ান ফাইনস্টাইন। প্রতিবেদনে বলা হয়, জিজ্ঞাসাবাদের সময় ভয়ংকর নির্যাতন করে বন্দীদের কাছ থেকে কোনো কার্যকর তথ্য আদায় করতে পারেনি সিআইএ; বরং সংস্থাটি ভুল তথ্য দিয়ে মার্কিন প্রশাসন ও জনগণকে বিভ্রান্ত করেছিল। এরপর বৃহস্পতিবার ‘দুর্লভ’ এক সংবাদ সম্মেলন করেন সিআইএর বর্তমান প্রধান জন ব্রেনান। ভার্জিনিয়া অঙ্গরাজ্যের ল্যাংলিতে সিআইএর সদর দপ্তর থেকে সংবাদ সম্মেলনটি সরাসরি সম্প্রচার করা হয়, যা সংস্থাটির ইতিহাসে এই প্রথম। এ সময় ব্রেনান দাবি করেন, ইআইটির আওতায় বিভিন্ন সময় যেসব বন্দীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল, তাঁদের কাছে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ও কার্যকর তথ্য পাওয়া গিয়েছিল। এর ফলে অনেক সম্ভাব্য হামলা রোধ করা গেছে। ওই সব তথ্য ইআইটি ছাড়া অন্য কোনোভাবে পাওয়া গিয়েছিল কি না, তা বলা অসম্ভব। ব্রেনানের এই বক্তব্যের জবাব দিয়েছেন ডায়ান ফাইনস্টাইন। খুদে ব্লগ লেখার সাইট টুইটারে তিনি লিখেছেন, ‘ব্রেনান, বলা অসম্ভব হতো, যদি আমরা অন্য কোনোভাবে তথ্যগুলো পেতাম। অনুসন্ধান বলছে, এটা সম্ভব। বন্দীদের নির্যাতনের আগেই সিআইএ তথ্যগুলো জানত।’ আর ওই সব তথ্যের কার্যকারিতা নিয়ে ব্রেনানের দাবির জবাবে ফাইনস্টাইনের মন্তব্য, ‘নির্যাতনের মাধ্যমে তথ্য আদায় করে কোনো সন্ত্রাসী হামলা ঠেকানো, কোনো সন্ত্রাসীকে আটক বা কারও জীবন বাঁচানো গেছে—এমন প্রমাণ পাওয়া যায়নি।’ ব্রেনানের দাবি ছিল, ইআইটির মাধ্যমে পাওয়া তথ্যই পরে আল-কায়েদা নেতা ওসামা বিন লাদেনের তল্লাশিতে কাজে লেগেছে। এর জবাবে ফাইনস্টাইনের মন্তব্য, ‘অনুসন্ধানে প্রমাণিত হয়েছে, বিন লাদেনকে খুঁজে পেতে যেসব তথ্য গুরুত্বপূর্ণ ছিল, তার সঙ্গে ইআইটির কোনো সম্পর্ক নেই।’ জিজ্ঞাসাবাদের ওই সব কৌশলে তৎকালীন প্রশাসনের সম্মতি ছিল বলে জানিয়েছেন সিআইএর প্রধান। কিন্তু ফাইনস্টাইন বলেছেন, ‘গোপন কোনো সম্মতি নিয়ে এমন নির্যাতনমূলক কৌশলকে বৈধ বলে দাবি করা যায় না।’
No comments:
Post a Comment