যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা বা সিআইএর (সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স এজেন্সি) জিজ্ঞাসাবাদে বর্বর নির্যাতন চালানোর কার্যক্রমের পক্ষে সাফাই গেয়েছেন। এ নির্যাতনে বিরুদ্ধে তীব্র সমালোচনার মুখে এ সাফাই গাইলেন। সংস্থাটির পরিচালক জন ব্রেনান। তিনি দাবি করেন সিআইএ কর্মীরা এ নির্যাতনের মাধ্যমে ‘সঠিক কিছু তথ্য’ বের করতে সম হন। তবে জিজ্ঞাসাবাদের কিছু পদ্ধতিকে ‘রূঢ়’ ও ‘জঘন্য’ বলে স্বীকার করেছেন তিনি। তবে
ব্রেনানের যুক্তি প্রত্যাখ্যান করেছেন মার্কিন সিনেটর ও প্রতিবেদনসংক্রান্ত কমিটির প্রধান ড্যানি ফেইনস্টেইন। সিআইএ প্রধানের বক্তব্যের পরপরই এক টুইট বার্তায় তিনি এ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। বন্দীদের জেরায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী এই গোয়েন্দা সংস্থার ‘নিষ্ঠুর’ পন্থা ব্যবহারের বিষয়ে রিপোর্ট প্রকাশের পর সমালোচনার মধ্যে এভাবেই তিনি আত্মপসমর্থন করলেন। সন্দেহভাজন বন্দীদের ওপর সিআইএ কর্মকর্তাদের নির্মম নির্যাতনের রিপোর্ট প্রকাশের পর বৃহস্পতিবার ভার্জিনিয়ায় সংস্থাটির সদর দফতরে এক বিরল সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন ব্রেনান। ব্রেনান বলেন, ‘কিছু কর্মকর্তা এ ধরনের (নিষ্ঠুর নির্যাতন) আচরণের সাথে জড়িত। বেশির ভাগ কর্মকর্তাই সঠিকভাবে তাদের কাজ করে গেছেন।’ তবে যেসব কর্মকর্তা এর সাথে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে কি নাÑ এ ব্যাপারে কিছুই উল্লেখ করেননি তিনি। তিনি বলেন, ‘যখন সোজাভাবে উত্তর না পাওয়া যায় তখন আমরা আইনানুগ অনেক পদ্ধতি অবলম্বন করে থাকি।’ ব্রেনান বলেন, ‘আমাদের পর্যালোচনা হলোÑ আটক ও জিজ্ঞাসাবাদ পদ্ধতি যুক্তরাষ্ট্রে আক্রমণের পরিকল্পনা, সন্ত্রাসীদের আটক ও অনেক জীবন রা করেছে।’ এ সময় তিনি ‘এনহ্যান্সড ইন্টারোগেশন টেকনিকস’ (উন্নত জিজ্ঞাসাবাদ কৌশল) বা ইআইটি কার্যক্রম বন্ধ না করার বিষয়টি উল্লেখ করেন। এ পদ্ধতিকে কার্যকর বলেও উল্লেখ করেন তিনি। ব্রেনানের যুক্তি প্রত্যাখ্যান করেছেন মার্কিন সিনেটর ও প্রতিবেদনসংক্রান্ত কমিটির প্রধান ড্যানি ফেইনস্টেইন। সিআইএ প্রধানের বক্তব্যের পরপরই এক টুইট বার্তায় তিনি এ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। তা ছাড়া এ পদ্ধতিতে হুমকি মোকাবেলা করার মতো কার্যকর কোনো তথ্য সংগ্রহ করতে গোয়েন্দা সংস্থাটি ব্যর্থ হয়েছে বলে জানান সিনেট কমিটি। রিপোর্টটি প্রকাশের পর বিশ্বব্যাপী সিআইএর নিষ্ঠুরতা নিয়ে নতুন করে সমালোচনা শুরু হওয়ায় সংস্থাটির বর্তমান দায়িত্বশীলদের মধ্যে ব্রেনানই প্রথমবারের মতো এ বিষয়ে মুখ খুললেন। ২০০২ সালে যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশের সময়ে সন্দেহভাজন জঙ্গি আটক এবং তাদের জিজ্ঞাসাবাদের ওই কর্মসূচি শুরু করা হয়। সে সময় সিআইয়ের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা ছিলেন জন ব্রেনান। সিআইএর ওই নির্যাতনের বিষয়ে প্রেসিডেন্ট বুশ সবই জানতেন বলে দাবি করেছেন তার সরকারের ভাইস প্রেসিডেন্ট ডিক চেনি। যদিও তিনি সিনেট কমিটির রিপোর্টকে ত্রুটিপূর্ণ বলে দাবি করেছেন। তেমনি ব্রেনান দাবি করেন, সাবেক প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ বন্দী নির্যাতনের কর্মসূচির অনুমোদন দিয়েছিলেন। এ ছাড়া এ কর্মসূচি পরিচালনার পুরো সমর্থনও জুগিয়েছেন তিনি।
No comments:
Post a Comment