Saturday, December 6, 2014

চাহিদা মেটাতে পারছে না দেশীয় চা:নয়াদিগন্ত

দেশীয় চা চাহিদা মেটাতে পারছে না। ফলে প্রতি সপ্তাহে পাশের দেশ থেকে আমদানি হচ্ছে শতাধিক টন। বাইরে থেকে গুণগত মানসম্পন্ন চা আমদানির পাশাপাশি একেবারে নি¤œমানের চা-ও আমদানি হচ্ছে বলে জানা গেছে। কিছু অসাধু ব্যবসায়ী বাংলাদেশের ভালো চায়ের সাথে নি¤œমানের চা মিশিয়ে মুনাফার অঙ্ক বাড়াচ্ছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। আবার এমন খবরও পাওয়া গেছে, বিদেশী ভালো চায়ের সাথেও বিদেশী নি¤œমানের চা মিশিয়ে বিক্রি করা হচ্ছে।  অবশ্য শ
ীত মওসুম শুরুর কারণে বাংলাদেশী চা উৎপাদন কমে গেছে। বিপরীত দিকে জনসংখ্যা বৃদ্ধি, ক্রয়ক্ষমতা বৃদ্ধি এবং সর্বোপরি একটি উপকারী পানীয় হিসেবে চায়ের ব্যবহার বেড়েছে আগের চেয়ে বহুগুণে। এমনিতেই প্রতি বছর শীতে চায়ের ভোগ কিছুটা বাড়ে। রাতে গা গরম করা অথবা চায়ের কাপে সুখ চুমুক দিয়ে জমিয়ে আড্ডা মারার কারণেও শীতে চায়ের ব্যবহার বাড়ে। এসব কারণে বাংলাদেশের বাগানগুলো বর্ধিত চাহিদা মেটাতে পারে না। ফলে চা-ব্যবসায়ীরা ব্যবসায় টিকিয়ে রাখতে বিদেশের দিকে হাত বাড়ায়। অবশ্য বেশির ভাগ ব্যবসায়ীই পাশের দেশ ভারতের বাজার থেকে চা কিনে থাকেন। কম সময়, অপেক্ষাকৃত কম মূল্যে কেনা যায় বলে ভারত থেকে আমদানির ঝোঁক বেশি।  বাংলাদেশে চট্টগ্রামের চা নিলাম হাউসে প্রতি সপ্তাহে কম-বেশি ২৫ লাখ কেজি চা নিলামের জন্য উপস্থাপন করা হয়ে থাকে। এর মধ্যে ১৫ থেকে ২৫ শতাংশ চা বিক্রি হয় না নানা কারণে। চা-ব্যবসায়ী আব্দুস সালাম নয়া দিগন্তকে জানিয়েছেন, বাংলাদেশী চায়ের চাহিদা অনেক। ভোগের পরিমাণ অনুযায়ী এখানে উৎপাদন কম হয়ে থাকে। তবু কিছু চা অবিক্রীত রয়ে যায়। তিনি জানান, এটা হয়ে থাকে দাম বেশি হওয়ার কারণে আবার নি¤œমান হওয়ার কারণেও। তিনি জানান, আগে চা আমদানি করা যেত না। ফলে এখানে যে চা উৎপাদন হয় সবই বিক্রি হয়ে যেত।  এখন ব্যবসায়ীরা আমদানি করতে পারছেন বলে নি¤œমানের চায়ের লটটা অবিক্রীত থেকে যায়। আবার কিছু উচ্চমানের লটও ফেরত যায়। এর কারণ একই, গুণগত মানসম্পন্ন চা বিদেশ থেকে কম দামে আমদানি করতে পারলে কেন দেশীয় চা ব্যবসায়ীরা কিনবেন ?  গত সপ্তাহে চট্টগ্রামে ২৫ লাখ ২০ হাজার কেজি চা উপস্থাপন করা হয়েছিল নিলামে। কিন্তু অবিক্রীত থেকে যায় এর ১৫ শতাংশ। আবার এর আগের সপ্তাহে ২৪ লাখ ৭০ হাজার কেজি চা উপস্থাপন করা হয়েছিল। কিন্তু বিক্রি হয় এর ৮৬ শতাংশ। গত সপ্তাহে প্রতি কেজি চা গড়ে ১৮৬.৫২ টাকায় বিক্রি হয়। অবশ্য কোনো কোনো ব্র্যান্ডের চা বিক্রি হয় ২৫৪ টাকা কেজি পর্যন্ত। বাংলাদেশের চায়ের মধ্যে সবচেয়ে বেশি দামে বিক্রি হয়ে থাকে চুরামনি ডাস্ট চা। এ চা গত সপ্তাহে সর্বোচ্চ ২৫৪ টাকা কেজি বিক্রি হয়েছে। অবশ্য এ চা ১৭০ টাকা কেজিতেও বিক্রি হয়েছে। রেড ডাস্ট চা বিক্রি হয়েছে ১৭৫ টাকা থেকে ২৪০ টাকা কেজিতে। অবশ্য প্লেইন ব্রোকেন চা ১০০ থেকে ১২০ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়েছে। আবার স্মল ব্রোকেন চা বিক্রি হয়েছে ১৮৫ থেকে ১৯৩ টাকা, মিডিয়াম ব্রোকেন বিক্রি হয়েছে ১৭৭ থেকে ১৮৪ টাকা প্রতি কেজি।  বাংলাদেশ ২০১৩ সালে ছয় কোটি ৩৫ লাখ কেজি চা উৎপাদন করেছিল। চলতি বছর অনুকূল আবহাওয়া এবং পর্যাপ্ত বৃষ্টি হওয়ায় রেকর্ড পরিমাণ চা উৎপাদন করে বাংলাদেশ। চা বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী চলতি বছর ১.৬ শতাংশ অর্থাৎ ১০ লাখ ১৬ হাজার কেজি চা বেশি উৎপাদিত হয়েছে।

No comments:

Post a Comment