Saturday, December 27, 2014

মোহাম্মদ আলী দেড় যুগ ধরে সোনা চোরাচালানে জড়িত:প্রথম অালো

১৬ মাস আগে ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে চোরাচালানের ১২৪ কেজি সোনা জব্দ করে শুল্ক গোয়েন্দারা। এর মধ্যে ১০০ কেজি সোনা ছিল মোহাম্মদ আলীর। গত বৃহস্পতিবার পুরানা পল্টনের বাসা থেকে ৬১ কেজি সোনা, পাঁচ বস্তা দেশি-বিদেশি মুদ্রাসহ এই মোহাম্মদ আলীকেই আটক করে শুল্ক গোয়েন্দারা। চোরাচালানের ১২৪ কেজি সোনা জব্দের ঘটনায় হওয়া মামলার সূত্র ধরে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি
)। ডিবির জ্যেষ্ঠ সহকারী কমিশনার মিনহাজুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, একটি চোরাচালান চক্রের প্রধান হিসেবে কাজ করে আসছিলেন মোহাম্মদ আলী। ১৬ মাস আগে চোরাচালানের ১২৪ কেজি সোনা জব্দের ঘটনায় হওয়া মামলার অন্যতম আসামি ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরোয়ার্ডিং এজেন্ট (সিঅ্যান্ডএফ) মিলন শিকদার। তিনি ১৮ ডিসেম্বর আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। তিনি আদালতকে বলেন, মোহাম্মদ আলী ও তাঁর কয়েকজন সহযোগীর জন্য এ চালান আনা হয়েছিল। মিলন কয়েকজন চোরাচালানি ও সোনা পাচারের সঙ্গে জড়িত সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট এবং বেসামরিক বিমান পরিবহন কর্তৃপক্ষের কয়েকজন কর্মীর নামও আদালতকে বলেছেন। শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মইনুল খান প্রথম আলোকে বলেন, মোহাম্মদ আলী সোনা চোরাচালান ও বিদেশে অর্থ পাচারের সঙ্গে জড়িত বলে তাঁদের কাছে তথ্য আছে। গত বৃহস্পতিবার তাঁর পল্টনের বাসা থেকে কালো কাঁথায় ও স্কচটেপে মোড়ানো সোনার বার উদ্ধার করা হয়। এর আগে শাহজালাল বিমানবন্দরে উদ্ধার হওয়া একাধিক সোনার বারের সঙ্গে মোহাম্মদ আলীর বাসায় পাওয়া সোনার বারের মিল আছে। এসব সোনার বারে ‘দুবাই’ সিল মারা আছে। মোহাম্মদ আলীর পাসপোর্টে দেখা গেছে, তিনি কয়েকবার দুবাই গেছেন। ডিবির কর্মকর্তারা আরও বলেন, মোহাম্মদ আলী দেড় যুগের বেশি সময় ধরে সোনা চোরাচালানের সঙ্গে জড়িত। পল্টনে দুটি ফ্ল্যাট কেনার আগে তিনি নগরের নিউ ইস্কাটনে একটি ফ্ল্যাট কিনেছিলেন। পরিচিতজনের কাছে তিনি ইস্কাটনের আলী হিসেবে পরিচিত। সম্প্রতি পুরানা পল্টনে বেশ কিছু সোনার বারসহ সোনা চোরাচালান চক্রের আরেক প্রধান নজরুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি বর্তমানে কারাগারে আছেন। ধারণা করা হচ্ছে, নজরুলের সঙ্গে মোহাম্মদ আলীর যোগসূত্র আছে। এ নিয়ে শুল্ক গোয়েন্দা ও ডিবির কর্মকর্তারা তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন। জব্দ তালিকা তৈরি: পুরানা পল্টনে মোহাম্মদ আলীর বাসা থেকে উদ্ধার হওয়া দেশি-বিদেশি মুদ্রা গণনার সঙ্গে সেগুলোর জব্দ তালিকা তৈরি কেরছে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। শুল্ক গোয়েন্দা সূত্র জানায়, পাঁচ বস্তা মুদ্রা উদ্ধারের পর সেগুলো শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নেওয়া হয়। বৃহস্পতিবার রাত থেকে ২৫ জন শুল্ক গোয়েন্দার সঙ্গে ডিবি পুলিশ বিমানবন্দরের একটি সুরক্ষিত কক্ষে মুদ্রা গণনার সঙ্গে জব্দ তালিকা তৈরি কের। কক্ষটি ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরার (সিসি) পর্যবেক্ষণের আওতায়। আটক মোহাম্মদ আলীর উপস্থিতিতে প্রতিটি মুদ্রার ধারাবাহিক নম্বর তুলে গণনা ও জব্দ তালিকা তৈরিতে প্রায় ২২ ঘণ্টা সময় লাগে।  শুল্ক ও গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মইনুল খান প্রথম আলোকে জানিয়েছেন, উদ্ধার করা অর্থের গণনা গতকাল রাত ১১টার দিকে শেষ হয়েছে। তাতে দেখা গেছে, মোট সৌদি রিয়াল ৩ কোটি ২৯ লাখ ৯০ হাজার এবং ৫ কোটি ২৫ লাখ ৯০ হাজার বাংলাদেশি টাকা। তিনি আরও বলেন, মোহাম্মদ আলীর বিরুদ্ধে পল্টন থানায় মামলা হয়েছে। রাতেই তাঁকে ওই থানায় সোপর্দ করা হয়।

No comments:

Post a Comment