ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলার নবম দিনে গতকাল ক্রেতা-দর্শনার্থীদের উপস্থিতি কিছুটা বেড়েছে। দেশব্যাপী চলা অবরোধের কারণে বাণিজ্যমেলায় কয়েক দিন ধরেই দেখা মেলেনি দর্শনার্থীদের উপস্থিতি। এতে ুব্ধ ও হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়ে মেলায় অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানগুলো। গতকাল দুপুর ১২টায় মেলা প্রাঙ্গণে গিয়ে দেখা যায়, স্টলগুলোতে ক্রেতা-দর্শনার্থীদের জন্য পরিপাটি হয়ে অপেক্ষা করছেন বিক্রয় প্রতিনিধিরা। কিন্তু ক্রেতা-দর্শকদের
উপস্থিতি ছিল একেবারেই কম। দু-একজন দর্শনার্থী পেলে বিক্রয় প্রতিনিধিরা তাদের ঘিরে ধরছেন। বর্ণনা দিচ্ছেন নিজেদের প্রতিষ্ঠানের পণ্যগুলোর। ক্রেতা-দর্শনার্থীরাও ঘুরে ঘুরে দেখছেন সারি সারি পণ্য। এরপর পছন্দ হলে কেউ কিনছেন কেউ বা শুধুই দেখছেন। মেলায় কথা হয় অংশগ্রহণকারী ব্রাদার্স ফার্নিচারের সিনিয়র সহকারী ম্যানেজার মনিরুল ইসলামের সাথে। তার প্রতিষ্ঠানের পণ্যগুলোতে ৫ থেকে ১৫ শতাংশ ডিসকাউন্ট পাচ্ছেন ক্রেতারা। কিন্তু অবরোধের কারণে ক্রেতা-দর্শনার্থীদের সাড়া পাচ্ছেন না বলে তিনি হতাশা ব্যক্ত করেন। তিনি নয়া দিগন্তকে বলেন, অবরোধের কারণে মেলায় ক্রেতা-দর্শনার্থীদের উপস্থিতি একেবারের কম। গত সাত বছরের অভিজ্ঞতা থেকে তিনি বলেন, আজ মেলার নবম দিন। এই দিনে গত বছরও যে পরিমাণ ক্রেতা-দর্শনার্থীর উপস্থিতি ছিল, এ বছর এসেছে তার ৪০ শতাংশ। এভাবে চলতে থাকলে তির মুখে পড়তে হবে বলে তিনি জানান। পোশাক প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান বেক্সিফেব্রিক্সের কর্মকর্তা জাকারিয়া বলেন, এবারের মেলায় লোকসমাগম খুবই কম। মেলা শুরু প্রথম দু-এক দিন দর্শনার্থীর উপস্থিতি থাকলেও গত ৪ জানুয়ারির পর একেবারেই কমে গেছে। এমন পরিস্থিতি অব্যাহত থাকলে লোকসানে পড়তে হবে বলে তিনি জানান। শুক্রবার সরজমিনে গিয়ে চোখে পড়ে নির্মাণকাজের দৃশ্য। মেলার ৯ দিন অতিবাহিত হলেও এখনো শেষ হয়নি স্টল তৈরি। অংশগ্রহণকারীদের দাবি, দেশে চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে জমে ওঠেনি মেলা। ফলে তারাও ধীরগতিতে তৈরি করছে স্টল নির্মাণের কাজ। বাণিজ্যমেলার ভেতরে অলস সময় পার করছেন বিক্রয়কর্মীরা। ক্রেতা-দর্শনার্থী না থাকায় এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। এতে অংশগ্রহণকারী স্টল মালিকদের মধ্যে ক্ষোভ ও হতাশা দেখা যায়। এভাবে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা অব্যাহত থাকলে তির আশঙ্কা করছেন ব্যবসায়ীরা। এন মোহাম্মদ গ্রুপের হিসাব কর্মকর্তা শাহ আলম বলেন, অবরোধের কারণে মেলায় বেচাকেনায় ধস নেমেছে। রাজনৈতিক পরিস্থিতি ভালো না হওয়ায় মেলা জমছে না। মেলার সাত থেকে আট দিন পেরিয়ে গেলেও বেচাবিক্রি ভালো নয়। প্রতিদিন যা বেচাকেনা হচ্ছে তা দিয়ে স্টাফদের খরচও হচ্ছে না বলে তিনি জানান। এ বিষয়ে মেলার পরিচালক ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব ড. এ এফ এম মনজুর কাদির বলেন, এবারের মেলা শুরুর দিন থেকেই ছিল ক্রেতা-দর্শনার্থীদের উপস্থিতি। কিন্তু রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার কারণে উপস্থিতি কিছুটা কমে গেছে। এ রাজনৈতিক সঙ্কট কেটে না গেলে দেশের সার্বিক অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি হুমকির মুখে পড়বে বলে তিনি জানান।
No comments:
Post a Comment