Wednesday, April 8, 2015

কাউন্সিলর প্রার্থীদের নামে অভিযোগের পাহাড়:কালের কন্ঠ

ঢাকার উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের আসন্ন নির্বাচনে কাউন্সিলর পদপ্রার্থীরা প্রচার-প্রচারণার মাধ্যমে ৯৩টি ওয়ার্ডই সরগরম করে রেখেছেন। এলাকাবাসীকে তাঁরা দিচ্ছেন মাদক, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি বন্ধসহ নানা নাগরিক সুবিধা নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি। কিন্তু কালের কণ্ঠের অনুসন্ধানে দেখা গেছে, যাঁরা এসব প্রতিশ্রুতি দিয়ে বেড়াচ্ছেন, তাঁদের বিরুদ্ধেই রয়েছে ওই সব অপরাধের অভিযোগের পাহাড়। আবার অনেক প্রার্থ
ীর বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট থানায় রয়েছে একাধিক মামলা। এক প্রার্থীর বিরুদ্ধে ৩০টি মামলা চলমান থাকার নজিরও রয়েছে। এ রকম শতাধিক কাউন্সিলর পদপ্রার্থীর বিরুদ্ধে পাওয়া গেছে হত্যা মামলাসহ নানা অভিযোগ। আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জামায়াত, জাতীয় পার্টি- সব দল সমর্থিত প্রার্থীর বিরুদ্ধেই পাওয়া গেছে ভয়ংকর সব অভিযোগ। নগরবাসীর আশঙ্কা, চিহ্নিত অপরাধীরা নির্বাচিত হলে রাজধানী হবে সন্ত্রাসের অভয়ারণ্য আর দুই সিটি করপোরেশন হবে লুটপাটের স্বর্গরাজ্য। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন গাবতলী, জমিদারবাড়ি (হাসনাবাদ), গাবতলী গৈদারটেক, প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয় কলোনি ও বুদ্ধিজীবী মাজার নিয়ে ১০ নম্বর ওয়ার্ড। এ ওয়ার্ডে শ্রমিক লীগ নেতা আবু তাহের কাউন্সিলর পদপ্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এই প্রার্থী পরিবহন চাঁদাবাজির সঙ্গে জড়িত। তিনি গাবতলী ও মাজার রোড থেকে আবুল কালাম, জহির, মজিবুর নামের তিনজনকে দিয়ে নিয়মিত চাঁদা ওঠান। এ ছাড়া মিরপুর ১ নম্বরে রাস্তা দখল করে বসা কাঁচাবাজার থেকেও তাঁর লোকজন নিয়মিত চাঁদাবাজি করে থাকে। স্থানীয় উচ্চ পর্যায়ের নেতার আশীর্বাদে তিনি প্রার্থী হয়েছেন। অভিযোগের ব্যাপারে শ্রমিক লীগ নেতা আবু তাহের কালের কণ্ঠকে বলেন, 'আমি বা আমার লোকজন কোনো চাঁদাবাজির সঙ্গে জড়িত নই। আমি ওই লাইনের লোক না।' একই ওয়ার্ডের সাবেক কমিশনার বিএনপি নেতা মাসুদ খানের বিরুদ্ধে রয়েছে কাফরুল, পল্লবী ও মিরপুর মডেল থানায় তিনটি মামলা। কাফরুল এলাকা থেকে কাউন্সিলর হিসেবে নির্বাচন করছেন সাব্বির দেওয়ান জনি। তাঁর বিরুদ্ধে এলাকায় মাদক, সন্ত্রাস ও ঝুট নিয়ে অবৈধ কর্মকাণ্ডের অভিযোগ পাওয়া গেছে। তাঁর বিরুদ্ধে সাতটি মামলাও রয়েছে। একই ওয়ার্ডের প্রার্থী লস্কর মো. তসনিম। তাঁর বিরুদ্ধে তিনটি মামলা বিচারাধীন। আবার সাবেক কমিশনার জালাল মোস্তফা পাঁচ মামলার আসামি বলে জানা যায়। তবে তাঁর দাবি, তিনি সবগুলো মামলায় খালাস পেয়েছেন। ১২ নম্বর ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদপ্রার্থী কাজী ফরিদুল হক হ্যাপীর বিরুদ্ধে রয়েছে মাদক, দখলবাজি ও চাঁদাবাজির অভিযোগ। ডেল্টা মেডিক্যাল কজেলসংলগ্ন একটি নির্মাণাধীন ভবনে কয়েক মাস আগে তাঁর লোকজন চাঁদা দাবি করেছে বলে জানা যায়। এ ছাড়া কল্যাণপুর খাল ও টোলারবাগসংলগ্ন জমি দখলের অভিযোগও রয়েছে এই প্রার্থীর বিরুদ্ধে। এ ওয়ার্ডের সবচেয়ে বড় সমস্যা মাদক। অনুসন্ধানে জানা যায়, ওয়ার্ডের জোনাকী রোড, মনিরুদ্দিন মার্কেট, সালেমুদ্দিন মার্কেট, আনসার ক্যাম্প, ওয়াক-আপ, দারুসসালাম এলাকায় বাপ্পী, কাঙ্গালী ফারুক, বাবুল, মিলন, রুমান, দেলোয়ার মাদক ব্যবসা করে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ফরিদুল হক হ্যাপীর মদদ রয়েছে। এ প্রার্থীর বিরুদ্ধে রাজধানীর কলাবাগান থানায় দুটি মামলা রয়েছে। এসব ব্যাপারে কাজী ফরিদুল হক হ্যাপী কালের কণ্ঠকে বলেন, 'আমাদের এলাকায় কোনো মাদক ব্যবসা চলে না। কেউ যদি মাদক সেবন করে থাকে তাহলে তা তার ব্যক্তিগত ব্যাপার। কোনো মাদক বিক্রেতার সঙ্গে আমার যোগাযোগ নাই।' একই ওয়ার্ডের শাহআলীবাগে স্থানীয় যুবলীগ নেতা ইকবাল হোসেন তিতুর বিরুদ্ধেও রয়েছে দখলবাজির অভিযোগ। বলপূর্বক পুরো এলাকার ডিশ ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করেন এ প্রার্থী। এলাকাবাসী জানায়, জনতা হাউজিং এলাকায় পাঁচটি প্লট দখল করেছেন তিনি। এ ছাড়া স্থানীয় মাদক ব্যবসায়ী খোকন, মাসুম, মুন্না, আসলাম, রাজীব, মিরাজ ও তুষারকে আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। একই ওয়ার্ডে বিএনপি নেতা বাবুল আক্তারের বিরুদ্ধেও পাইকপাড়ায় জমি দখলের অভিযোগ পাওয়া যায়। মিরপুর থানা সূত্রে জানা যায়, ৭ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী বজলুল বাছিদ আঞ্জুর বিরুদ্ধে ২৭টি মামলা, দেলোয়ার হোসেন দুলুর বিরুদ্ধে ৩০টি মামলা রয়েছে। ১১ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী এম এ কাইয়ুম তিনটি, এম এ কাউসার আহমদ পাঁচটি মামলার আসামি। কাইয়ুম মহানগর জাতীয় পার্টির নেতা। ১২ নম্বর ওয়ার্ডে ফজলুল হক পাঁচ, বাবুল আকতার তিন ও মো. ওয়াজ উদ্দিন মিয়া পাঁচ মামলার আসামি। এ ছাড়া ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের মো. ইসমাইল মোল্লা তিন, মো. এনায়েত হোসেন পাঁচ ও মারুফ হাসান স্বপন ১০ মামলার আসামি। এনায়েত হোসেন মিরপুরের জামায়াত নেতা হিসেবে পরিচিত। ডিএনসিসির ১ নম্বর ওয়ার্ড থেকে কাউন্সিলর পদপ্রার্থী মহানগর যুবলীগ উত্তরের সাংগঠনিক সম্পাদক মামুন সরকার ঢাকা ওয়াসার টেন্ডারবাজির সঙ্গে জড়িত। ৫ নম্বর ওয়ার্ডে সাবেক কমিশনার আবদুর রউফ নান্নুর বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি ও সরকারি জায়গা দখলবাজির বিস্তর অভিযোগ পাওয়া গেছে। তিনি দুই মামলার আসামি বলেও জানা যায়। একই ওয়ার্ডে আরেক প্রার্থী আনোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে দুটি মামলা বিচারাধীন। ৬ নম্বর ওয়ার্ডে স্বতন্ত্র প্রার্থী লায়ন দেলোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে দুটি চাঁদাবাজিসহ একাধিক মামলা রয়েছে পল্লবী থানায়। তাঁর বিরুদ্ধে বৈধ অস্ত্র নিয়ে মানুষকে হুমকি প্রদান ও চাঁদাবাজির অভিযোগ করে একাধিক বাসিন্দা। তাঁর বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগে ৪০(১০)১০, ২৫(১০)০৯, ২৩(৯)১২ তিনটি ও ১৩(২)১০ পুলিশের অস্ত্র লুটের মামলা রয়েছে। দেলোয়ারের ব্যাপারে মামলা থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করেন পল্লবী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) বিপ্লব কিশোর শীল। তবে এ প্রার্থী নির্বাচনী হলফনামায় তাঁর বিরুদ্ধে কোনো মামলার তথ্য দেননি। ১৩ নম্বর ওয়ার্ডে আবুল কালাম আজাদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি ও সিটি করপোরেশনের স্থানীয় অফিসে টেন্ডারবাজির অভিযোগ রয়েছে। একই ওয়ার্ডের প্রার্থী মিরপুর থানা বিএনপির সভাপতি আবুল হোসেন আব্দুলের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে মিরপুর মডেল থানায় একাধিক মামলা থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মিরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. সালাহ উদ্দিন খান। ১৯ নম্বর ওয়ার্ডে বনানী সুপার মার্কেটের সাধারণ সম্পাদক মাহমুদ হাসান আজাদ নির্বাচন করছেন। তাঁর বিরুদ্ধে বনানী মার্কেটের পার্কিংয়ের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে। এ ছাড়া এ ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. মফিজুর রহমানও সিটি করপোরেশনে টেন্ডারবাজি করেন বলে অভিযোগ আছে। ২০ নম্বর ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হাজি আসলাম স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও সিটি করপোরেশনের টেন্ডার নিয়ন্ত্রণ করেন। তাঁর বিরুদ্ধে একটি মামলা চলমান। একই ওয়ার্ডে যুবলীগ উত্তরের সাবেক সহসভাপতি মো. নাসিরও নগর ভবনের টেন্ডারের সঙ্গে জড়িত। ২১ নম্বর ওয়ার্ডে বাড্ডা থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি (প্রস্তাবিত) মো. তালাল রেজভী গুলশান ১ নম্বর বিদ্যুৎ অফিস ও সিটি করপোরেশনের টেন্ডারবাজির সঙ্গে জড়িত। ২২ নম্বর ওয়ার্ডে খাজা সলিমুল্লাহর বিরুদ্ধে একটি ও আলী হায়দারের বিরুদ্ধে একটি মামলা বিচারাধীন। ২৪ নম্বর ওয়ার্ডে তালুকদার সারোয়ার হোসেন চারটি, মো. সফিউল্লাহ তিনটি ও শাহ আলম সরফু দুটি মামলা থেকে অব্যাহতি পেয়েছেন বলে জানা যায়। ২৯ নম্বর ওয়ার্ড মো. সলিম উল্লাহ সলুর বিরুদ্ধে দুটি মামলা চলমান ও সাত মামলা থেকে অব্যাহতি পেয়েছেন বলে জানা যায়। একই ওয়ার্ডে মোহাম্মদ এনায়েতুল হাফিজের বিরুদ্ধেও একটি মামলা চলমান। ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডে আবু সাইদ বেপারীর বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা বিচারাধীন। একই ওয়ার্ডে শাহাব উদ্দিন মুন্নার বিরুদ্ধে তিনটি মামলা বিচারাধীন ও দুটি থেকে অব্যাহতি পেয়েছেন। ৩৫ নম্বর ওয়ার্ডের মোসফেকুল জামিলের বিরুদ্ধে দুটি মামলা বিচারাধীন। ওদিকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ১ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী কবির আহমেদের বিরুদ্ধে পল্টন, গুলশান ও খিলগাঁও থানায় তিনটি মামলা বিচারাধীন। একই ওয়ার্ডের ফারুক উল ইসলামের বিরুদ্ধে পাঁচটি মামলা চলমান রয়েছে বলে জানা যায়। এ ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি মোদাচ্ছের হোসেনের বিরুদ্ধে খিলগাঁও এলাকায় ফুটপাত দখল করে ভাড়া দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। ২ নম্বর ওয়ার্ডে ঢাকা মহানগর যুবদল দক্ষিণের সাংগঠনিক সম্পাদক জামিলুর রহমান নয়নের বিরুদ্ধেও রয়েছে এলাকাবাসীর ব্যাপক অভিযোগ। গত জোট সরকারের আমলে গোড়ান এলাকায় মাদক ও দখলবাজিতে ছিলেন তিনি শীর্ষে। আবার সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের টেন্ডারও ছিল তাঁর নিয়ন্ত্রণে। এ প্রার্থীর বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা, নম্বর ৭(৩)১৩ চলমান রয়েছে। ৪ নম্বর ওয়ার্ডে সাবেক কমিশনার সবুজবাগ থানা বিএনপির আহ্বায়ক গোলাম হোসেনের বিরুদ্ধে রয়েছে এলাকার বেশ কিছু জমি দখলের অভিযোগ। এ ছাড়া তাঁর বিরুদ্ধে কমপক্ষে ১০টি মামলা চলমান রয়েছে বলে জানা যায়। সবুজবাগ থানার ওসি মো. রফিকুল ইসলাম কালের কণ্ঠকে বলেন, 'গোলাম হোসেনের বিরুদ্ধে ১০টির বেশি মামলা রয়েছে। আইনের চোখে সে এখনো পলাতক।' এ ব্যাপারে বিএনপি নেতা গোলাম হোসেন বলেন, 'আমি কোনো অন্যায়ের সঙ্গে জড়িত হইনি। তবে এলাকার মানুষের বিচার-সালিস করতে গিয়ে কখনো কেউ আমার ওপর ক্ষিপ্ত থাকতে পারেন।' এ ওয়ার্ডের ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সভাপতি মাসুদ হাসান শামীমের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ রয়েছে। ৫ নম্বর ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ নেতা আশ্রাফুজ্জামান তিন মামলার আসামি বলে জানা যায়। তবে, সব মামলায় তিনি অব্যাহতি পেয়েছেন বলে দাবি সংশ্লিষ্টদের। ৬ নম্বর ওয়ার্ডে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি বি এম সিরাজুল ইসলামের বিরুদ্ধে মুগদা জেনারেল হাসপাতালে নিয়োগ বাণিজ্য ও টেন্ডারবাজির অভিযোগ রয়েছে। একই ওয়ার্ডে সামসুল হুদার বিরুদ্ধে তিনটি মামলা বিচারাধীন বলে জানা যায়। ৯ নম্বর ওয়ার্ডে মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মমিনুল হক সাইদ বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে টেন্ডারবাজির সঙ্গে জড়িত বলে জানা যায়। তিনি দুই মামলায় আসামি হওয়ার পর খালাস পেয়েছেন বলে দাবি করেন। ১০ নম্বর ওয়ার্ডে মতিঝিল থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম টিপু যুবলীগ নেতা মিল্কি হত্যাসহ চার মামলার আসামি। তবে একটি থেকে অব্যাহতি পেয়েছেন বলে জানা যায়। ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সহসভাপতি আনোয়ার ইকবালের বিরুদ্ধে টেন্ডারবাজির অভিযোগ রয়েছে। একই ওয়ার্ডের আব্দুল জব্বারের বিরুদ্ধে চার মামলার মধ্যে একটি চলমান বলে জানা যায়। ২৬ নম্বর ওয়ার্ডে বদিউল আলম সুইটের বিরুদ্ধে চারটি মামলা চলমান রয়েছে। ২০ নম্বর ওয়ার্ড থেকে প্রার্থী হওয়া খায়রুল হাসান জুয়েলও সিটি করপোরেশনে টেন্ডারবাজির সঙ্গে জড়িত বলে অভিযোগ রয়েছে। একই ওয়ার্ডে যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির উপপ্রচার সম্পাদক ফরিদ উদ্দিন আহম্মেদ রতনের বিরুদ্ধে রয়েছে মাদক ও টেন্ডারবাজির ব্যাপক অভিযোগ। রতন বঙ্গবাজার ও সংলগ্ন রেলওয়ে কলোনির মধ্যে নিজের লোকজন দিয়ে মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করেন। ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডে ইলিয়াস রশিদের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা চলমান ও ২৩ মামলা থেকে অব্যাহতি পেয়েছেন বলে জানা যায়। ৪০ নম্বর ওয়ার্ডে যুবলীগ নেতা ফায়জুল ইসলামের বিরুদ্ধে মাদক বাণিজ্যের অভিযোগ রয়েছে। একই ওয়ার্ডের আসাদ উল্লাহর বিরুদ্ধে হত্যাসহ চারটি মামলা চলমান রয়েছে। ৪৫ নম্বরে হাসান আসকারীর বিরুদ্ধে হত্যা মামলা চলমান রয়েছে। ৪৮ নম্বর ওয়ার্ডে মো. আতিকুল্লাহর বিরুদ্ধে সবচেয়ে বেশি মামলা চলমান বলে জানা যায়। তাঁর মামলার সংখ্যা ১৪টি। ৫০ নম্বর ওয়ার্ডে সায়েম খন্দকার পাঁচ মামলা থেকে অব্যাহতি পেয়েছেন। ৫১ নম্বর ওয়ার্ডে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সভাপতি হাবিবুর রহমান হাবুর বিরুদ্ধে সায়েদাবাদ ট্রাকস্ট্যান্ডের চাঁদাবাজির অভিযোগ রয়েছে। ৫২ নম্বর ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ নেতা রুহুল আমিনের বিরুদ্ধেও একই অভিযোগ পাওয়া যায়। একই ওয়ার্ডের গোলাম রহমানের বিরুদ্ধে দুটি হত্যাসহ একাধিক মামলা রয়েছে বলে জানা যায়। এ ছাড়া ৫৭ নম্বর ওয়ার্ডের হাবিল মাহমুদের বিরুদ্ধে পাঁচটি মামলা চলমান রয়েছে। জানা যায়, নিজ নামে সরাসরি সিটি করপোরেশনে টেন্ডারবাজির সঙ্গে যুক্ত আছেন ডিএসসিসির ১১ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী যুবলীগ দক্ষিণের সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া, ১২ নম্বর ওয়ার্ডের গোলাম আশরাফ তালুকদার, ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের মোস্তফা জামাল, ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের জাকির হোসেন স্বপন, ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাজী মোর্শেদ হোসেন কামাল, ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের নাজমুল করিম, ২০ নম্বর ওয়ার্ডের খায়রুল হাসান জুয়েল, ২২ নম্বর ওয়ার্ডের মনিরুল হক বাবু, ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের আনোয়ার ইকবাল, ৪৩ নম্বর ওয়ার্ডের গাজী সারোয়ার হোসেন বাবু ও ২১ নম্বর ওয়ার্ডের এনামুল হক আবির। ২১ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর বিএনপি নেতা হাবিবুল্লাহ হাবিবের বিরুদ্ধে মাদক সংক্রান্ত অভিযোগ রয়েছে। গত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে তাঁকে মাদক মামলায় র‌্যাব আটক করেছিল বলে জানা যায়। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, স্থানীয় সরকার আইন ২০০৯-এর ৯(২) ধারা অনুযায়ী প্রার্থীর পরিবার-পরিজন বা নিকটাত্মীয়ের কেউ সিটি করপোরেশনের সঙ্গে আর্থিকভাবে সম্পৃক্ত থাকলে তিনি প্রার্থী হওয়ার যোগ্যতা হারাবেন।    

No comments:

Post a Comment