Monday, July 21, 2014

কমিটি ১০০ বার পরিবর্তন করলেও কিছু হবে না:প্রথম অালো

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও স্থানীয় সরকারমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন, বিএনপির ঢাকা মহানগর কমিটি একবার নয়, ১০০ বার পরিবর্তন করলেও সরকারের কিছুই হবে না। গতকাল রোববার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে যুবলীগের ইফতার মাহফিলে সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম এসব কথা বলেন। সম্মেলন না করে বিএনপির ঢাকা মহানগর কমিটি করায় খালেদা জিয়ার সমালোচনা করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘একটা স
ম্মেলনও করেননি। ঢাকা মহানগর কমিটি করে আব্বাস সাহেবকে আহ্বায়ক করলেন। তিনি প্রবীণ রাজনীতিবিদ। তাঁকে দিয়ে ঢাকা মহানগর কমিটি একবার নয়, ১০০ বার পরিবর্তন করলেও সরকারের কিছুই হবে না। কারণ, দেশের রাজনৈতিক বাস্তবতা। আব্বাস সাহেব সারা দিন রাস্তায় বসে থাকলেও কিছু হবে না।’ সৈয়দ আশরাফ বিএনপির চেয়ারপারসনকে উদ্দেশ করে বলেন, ঢাকা মহানগর কমিটি, স্থায়ী কমিটি পরিবর্তন করলেও কোনো কাজ হবে না। বিএনপির বর্তমান অবস্থার জন্য দলটির অন্য কোনো নেতা নন, খালেদা জিয়া দায়ী। তিনি আরও বলেন, ‘আপনার রাজনীতির স্ট্র্যাটেজি (কৌশল) পরিবর্তন না করে কমিটি পরিবর্তন করলে কোনো কাজ হবে না। আপনাদের এ অবস্থার জন্য আব্বাস না, খোকাও না, ফখরুল সাহেবও না, দায়ী আপনি।’ সৈয়দ আশরাফ বলেন, ‘আপনি (খালেদা জিয়া) গণতান্ত্রিক সরকারের অধীনে নির্বাচনে আসেননি। কতবার কত কমিটি করলেন। দোষটা হলো ওদের, আর পুণ্যি হলেন আপনি। নেতাদের ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে নিজে সমালোচনার ঊর্ধ্বে থাকবেন, এমন বাস্তবতা এখন আর নেই।’ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘বিএনপির নেতাদের সঙ্গে আমাদের দেখা হয়, কথা হয়। তাঁদের অনেক দিন ধরে চিনি। তাঁরা এখন চরম হতাশ। আহ্বায়ক কমিটিতে নাম দিতে গেলে অনেকে ঢাকা ছেড়ে পালান।’ এ সময় উপস্থিত নেতা-কর্মীরা বিএনপির প্রতি তির্যক অভিব্যক্তি প্রকাশ করেন। রাজনীতিতে আলোচনা চলবে মন্তব্য করে সৈয়দ আশরাফ বলেন, ‘আমরা সেনাবাহিনী কিংবা অস্ত্রবাহিনী নই। যুদ্ধ করা আমাদের কাজ না। এই রোজার মাসে আপনার (খালেদা জিয়া) প্রতি আহ্বান, রাজনীতির পথ আলোচনার পথ, শান্তির পথ। হুমকি-ধমকি দেওয়া বন্ধ করেন। আশা করি, ঈদের পর আন্দোলন না করে নিজেকে বিশ্লেষণ করবেন, আপনার আত্মোপলব্ধি হবে।’ বিএনপির কঠোর সমালোচনা করে সৈয়দ আশরাফ বলেন, ‘বিএনপির নেতা-কর্মীদের কথাবার্তা শুনলে মনে হয়, রাত পোহালেই তাঁরা সরকারকে নামাবেন। বিএনপি ক্ষমতা দখল করবে। জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকারের কিছুই হবে না। আপনাদের বলে রাখি, আমরাও আপনাদের মতো ইফতার মাহফিল করে বক্তব্য রাখতে পারতাম। কিন্তু সেটা করি নাই।’ সৈয়দ আশরাফ আরও বলেন, ‘আমাদের প্রধানমন্ত্রীও তো ইফতার মাহফিল করেছেন। কই, সেখানে তো তিনি কোনো রাজনৈতিক বক্তব্য দেননি। আর বিএনপির নেত্রী প্রতি ইফতারের আগে অশ্লীলভাবে সরকারের সমালোচনা করেছেন, যা অনভিপ্রেত।’ তিনি আরও বলেন, ‘খালেদা জিয়ার বক্তব্যের ধরন দেখলে মনে হয় যে তিনি দয়া করে শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় রাখছেন। তিনি রাত পোহালেই সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করবেন—এমন ভাব দেখান। মনে রাখবেন, এখন ১৯৭৫ সাল নয়। ওই সময় মারছিলেন বলে বারবার মারবেন। তাঁকে মারার সেই সুযোগ এখন আর নাই।’ বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে ‘বেচারা’ বলে অভিহিত করেন সৈয়দ আশরাফ। তিনি বলেন, ‘ফখরুল সাহেবের কথা কী আর বলব, বেচারা, আহ! বেচারা। এখনো বেচারার কিছু হয় নাই। তিনি অত্যন্ত সুবোধ বালকের মতো ইফতার মাহফিলে বক্তব্য দিচ্ছেন। তাঁর শিকড় কোথায়? মুসলিম লীগে। আপনি যতই চেষ্টা করুন না কেন, তারেক জিয়া আপনাকে স্থায়ী মহাসচিব করছে না। ছেলের বয়সী তারেক জিয়ার চাটুকারিতা না করে বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে কীভাবে শক্তিশালী করা যায়, সে বিষয়ে বক্তব্য রাখুন।’ যুবলীগের চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরীর সভাপতিত্বে ইফতার মাহফিলে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশীদ, সহসভাপতি শহীদ সেরনিয়াবাত, যুগ্ম সম্পাদক মহিউদ্দিন, নাসরিন জাহান চৌধুরী প্রমুখ।

No comments:

Post a Comment