Tuesday, July 15, 2014

গাজায় হামলা বন্ধ দাবি আরব লিগের : ৭ দিনে নিহত ১৭২:নয়াদিগন্ত

আরব লিগ গাজায় ইসরাইলের বিমান হামলা বন্ধে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের পদক্ষেপ নেয়ার ও ফিলিস্তিনের বেসামরিক লোকজনকে রক্ষার আহ্বান জানিয়েছে। গতকাল জোটের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠকে পেশ করার জন্য প্রস্তুত রিপোর্টে এ আহ্বান জানানো হয়। এ দিকে গাজা উপত্যকায় গতকাল সোমবার ইসরাইলি বিমান হামলার সপ্তম দিনে আরো দুইজন নিহত হয়েছে। এদের একজন পুরুষ ও অপরজন নারী। এ নিয়ে গাজায় ইসরাইলের সাত দিনের বর্বর হামলায় নিহতের সংখ্যা
বেড়ে ১৭২ জনে দাঁড়াল। আলজাজিরা, রয়টার্স ও বিবিসি। গাজা উপত্যকায় ইসরাইলের বর্বর গণহত্যার সপ্তম দিন পার হলেও গাজার নিরীহ বাসিন্দাদের রক্ষা করতে কোনো দেশ বা কোনো নেতা এখনো বাস্তবসম্মত কোনো উদ্যোগ নিয়ে এ গিয়ে আসেননি। তবে এ সম্পর্কে আলোচনার জন্য গতকাল সোমবার দিনের শেষে বৈঠকে বসেন আরব লিগের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা। সঙ্ঘাত বন্ধের প্রচেষ্টা হিসেবে আরব লিগের এ বৈঠক হলো। তা ছাড়া ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস ইসরাইলের হামলা বন্ধে জাতিসঙ্ঘের হস্তপে চেয়েছেন। মিসরের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে রোববার বলা হয়, গ্রিনিচ সময় ১৯টায় বৈঠক শুরু হবে। বৈঠকের ল্য ফিলিস্তিনের বেসামরিক লোকদের রক্তয় বন্ধের উপায় খোঁজা এবং এ ব্যাপারে অভিন্ন আরব অবস্থান ঠিক করা। বৈঠকে পেশ করার জন্য প্রস্তুত রিপোর্টে বলা হয়, লিগ গাজায় ইসরাইলি আগ্রাসন অবিলম্বে বন্ধের জন্য জরুরি পদক্ষেপ নেয়ার ও ফিলিস্তিনিদের সুরক্ষা দেয়ার ওপর গুরুত্বারোপ করেছে। গাজায় ইসরাইলি বিমান হামলা এমন পর্যায়ে গেছে যে, আর নীরব থাকা যায় না। এতে আরো বলা হয়, লিগ চায় ফিলিস্তিনি জনগণকে সুরক্ষায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় আইনি ও মানবিক সংস্থাগুলোর মাধ্যমে হস্তক্ষেপ করুক। এ পর্যন্ত অস্ত্রবিরতির মধ্যস্থতার প্রচেষ্টা সফল হয়নি। কায়রো এ ব্যাপারে বেশ কয়েকবার উদ্যোগ নিয়েছে। মিসর বিগত অস্ত্রবিরতি চুক্তিগুলোর মধ্যস্থতায় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে এবং সর্বশেষ ২০১২ সালের নভেম্বরে ইসরাইল ও হামাসের মধ্যে অস্ত্রবিরতিতে মধ্যস্থতা করে। এ দিকে গাজায় ইসরাইলের সাত দিনের বর্বর হামলায় ১৭২ জন নিহত হয়েছে। রোববার ইসরাইলি বিমান হামলায় মারাত্মকভাবে আহত দুইজন গতকাল মারা গেছেন। ওই দিন আরো আটজন নিহত হয়। রোববার রাতে গাজা উপত্যকার দণিাঞ্চলীয় দিয়ার এল বালায় ইসরাইলি বিমান হামলায় ৬৫ বছর বয়সী এক ব্যক্তি, মিসর সীমান্তে ২০ বছর বয়সী এক তরুণ এবং খান ইউনিস শহরে আরো দুইজন নিহত হয়। জরুরি সেবা সংস্থার মুখপাত্র আশরাফ আল-কুদ্রা জানান, গাজার উত্তরাঞ্চলীয় জাবালিয়া শহরে এক বাড়িতে হামলায় ১৪ বছর বয়সী এক কিশোর নিহত হয়। তিনি জানান, ওই হামলার পর পরই গাজার মধ্যাঞ্চলে মাঘাজি শরণার্থী শিবিরে অপর এক হামলায় এক নারী নিহত হয়। গাজার উত্তরাঞ্চলীয় বেইত হানুনে ইসরাইলি সামরিক অভিযানে এক ব্যক্তি নিহত হয়। সেখানে ইসরাইলি সামরিক বাহিনী হুঁশিয়ার করে দিয়ে বলেছে, তারা গাজায় তাদের অভিযান আরো জোরদার করবে। তারা বাসিন্দাদের গাজা ছেড়ে চলে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। কুদ্রা জানান, অন্য স্থানে এর আগের একটি হামলায় অপর এক ব্যক্তি মারাত্মকভাবে আহত হয় এবং পরে সে মারা যায়। ইসরাইলি হামলায় গাজায় প্রায় এক হাজার ২৩০ জন আহত হয়েছে। প্রত্যদর্শীরা জানান, রাফায় রাজপথের মাঝখানে বন্দুকধারীদের এক ব্যক্তিকে গুলি করে হত্যা করতে দেখা যায়। ইসরাইলের সহযোগিতায় কেউ এ হত্যাকাণ্ড ঘটাতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। গাজার সশস্ত্র গ্র“পগুলোর কেউ তাৎণিকভাবে এর দায়িত্ব স্বীকার করেনি। ইসরাইলি অভিযান শুরুর পর থেকে শনিবার ছিল সবচেয়ে ভয়াবহ দিন। এ দিনে ৫৬ জন নিহত হয়। তা ছাড়া পশ্চিমতীরের দণিাঞ্চলের হেবরন নগরীতে সোমবার সকালে ইসরাইলি সৈন্যদের সাথে সংঘর্ষে এক ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। তার নাম মুনির আহমদ বাদারিন (২০)।

No comments:

Post a Comment