Tuesday, July 22, 2014

নবী সা:-এর রওজা জিয়ারত করেছেন খালেদা জিয়া:নয়াদিগন্ত

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া এবং সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান পবিত্র মদিনা শরীফে ব্যস্ত সময় পার করছেন। গতকাল সোমবার প্রথম প্রহরে (রাত ১২টা ১০ মিনিট) তারা মসজিদে নববীতে অবস্থিত মহানবী হজরত মুহাম্মদ সা:-এর রওজা মোবারক জিয়ারত করেন। সেখানে দোয়া মুনাজাতে তারা দেশ ও জাতির কল্যাণ কামনা করেন। এর আগে গত রোববার সৌদি বিএনপির নেতাকর্মীদের নিয়ে মসজিদে নববীতে ইফতার করেন তারেক রহমান। তিনি প্রতি ওয়াক্
ত নামাজ জামায়াতে আদায় করছেন এবং নফল ইবাদতের পর বিশেষ মুনাজাত করছেন। পবিত্র ওমরাহ পালনের জন্য আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তারা মক্কার উদ্দেশে রওনা হবেন।  বাদশাহর আমন্ত্রণে সৌদি আরব সফররত বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান মসজিদে নববীর সন্নিকটে দারুল ঈমান হোটেলে অবস্থান করছেন; সাথে রয়েছেন তারেক রহমানের স্ত্রী ডা: জোবায়দা রহমান, মেয়ে জাইমা রহমান, খালেদা জিয়ার দুই ভাই মরহুম সাঈদ এস্কান্দার ও শামীম এস্কান্দারের স্ত্রী ও সন্তান। এ দিকে বিএনপির প্রধান দুই নেতা বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান দেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেছেন। দীর্ঘ দিন বিদেশে থাকা তারেক রহমান চাচ্ছেন খুব অল্প সময়ের মধ্যে ফের আন্দোলন শুরু হোক। যে আন্দোলন শত বিপত্তি সত্ত্বেও স্থগিত হবে না।  সৌদি আরবে ওমরাহ করতে এসে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান মদিনায় একই হোটেলে অবস্থান করছেন।  খালেদা জিয়ার সফরসঙ্গী ও ওমরাহ করতে আসা দলের কয়েকজন নেতা জানিয়েছেন, তারেক রহমান সার্বক্ষণিক দেশের রাজনীতি নিয়েই চিন্তা ভাবনা করছেন। ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের পর তিনি নতুন পরিকল্পনায় এগুচ্ছেন। আগামী দিনের আন্দোলন পরিকল্পনায় তা বাস্তবায়ন হবে।  দলের সিনিয়র একজন নেতা বলেছেন, তারেক রহমান এখন অনেক বেশি পরিণত। তিনি জানেন কিভাবে সামনে এগুতে হয়। ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের পর হতাশাগ্রস্ত নেতাকর্মীদের মধ্যে চাঞ্চল্য ফিরিয়ে আনা শুধু নতুন নির্বাচনের মাধ্যমেই সম্ভব বলে মনে করছেন তিনি।  তার ধারণা সরকার বেশি দিন স্থায়ী হলে তা আরো বেশি ভয়ঙ্কর হতে পারে। আর এতে করে নেতাকর্মীরা নেতৃত্বের প্রতি বীতশ্রদ্ধ হয়ে পড়বেন। জুলুম-নির্যাতনের ঘেরাটোপ থেকে তারা সহজে বের হতে পারবেন না।  মদিনায় তারেক রহমান এখনো প্রকাশ্যে কোনো বক্তৃতা করেননি। গত রোববার তিনি মসজিদে নববীতে নেতাকর্মীদের নিয়ে ইফতার করেছেন। জানা গেছে, সৌদি আরবে থাকা অবস্থায় তিনি জেদ্দাতে একটি সমাবেশে অংশ নিতে পারেন।  মদিনায় নেতাকর্মীদের আকর্ষণের জায়গাও তারেক রহমান। তাকে দেখার জন্য, একটু হাত মেলানোর জন্য প্রবাসী নেতাকর্মী এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে বেশ আগ্রহ দেখা গেছে।  সূত্র জানায়, গত রোববার ভোরে মদিনায় পৌঁছার পর বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান দুই দিনে পারিবারিক সম্মিলনের পাশাপাশি চারবার একান্ত বৈঠক করেছেন। এসব বৈঠকের আগে ও পরে তারা দলের অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন বিষয়ে তাদের পর্যবেক্ষণ এবং সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে উদ্যোগী হন। এতে সহায়তা করেন তিন ব্যক্তিগত কর্মকর্তা শামছুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, মারুফ কামাল খান ও সাবেক ছাত্র নেতা রকীবুল ইসলাম বকুল।  সূত্র জানিয়েছে, খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের বৈঠকগুলোতে মূলত দলের পুনর্গঠন এবং আন্দোলনের নতুন রোডম্যাপ নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। দোয়া-মুনাজাতেও স্থান পাচ্ছে আন্দোলনের সফলতা এবং সরকার পতনে আল্লাহর সহায়তা কামনা।  সোমবার প্রথম প্রহরে মহানবী সা:-এর পবিত্র রওজা জিয়ারত শেষে বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান মুনাজাত করেন। তারা দেশবাসীর জন্য শান্তি কামনা ও দুঃশাসনের হাত থেকে মুক্তির জন্য আল্লাহর সহায়তা চান। এ সময় সাথে ছিলেন তারেক রহমানের স্ত্রী ডা: জোবায়দা রহমান, মেয়ে জাইমা রহমান, বিজেপি চেয়ারম্যান আন্দালিব রহমান পার্থ, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ডা: এ জেড এম জাহিদ হোসেন, বিশেষ সহকারী শামছুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, প্রেস সচিব মারুফ কামাল খান, মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক বিশেষ সহকারী এনামুল হক চৌধুরী, তারেক রহমানের সাবেক ব্যক্তিগত কর্মকর্তা রকীবুল ইসলাম বকুল, বিএনপির তথ্য ও প্রযুক্তি সম্পাদক শরীফ শাহ কামাল তাজ, সৌদি আরব পশ্চিমাঞ্চল বিএনপির সভাপতি আহমদ আলী মুকিব প্রমুখ। এর আগে মসজিদে নববীর ২২ নম্বর গেটের সামনের খোলা জায়গায় সৌদি বিএনপি নেতাকর্মীদের সাথে দোয়া-মুনাজাত ও ইফতার করেন তারেক রহমান। মুনাজাত পরিচালনা করেন জাতীয়তাবাদী ওলামাদলের স্থানীয় সভাপতি মাওলানা রফিকুল ইসলাম মাদানী।  সেখানে সফরসঙ্গী ছাড়াও বিজেপি চেয়ারম্যান আন্দালিব রহমান পার্থ, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ডা: এ জেড এম জাহিদ হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, জিয়ানগর উপজেলা চেয়ারম্যান মাসুদ সাঈদী, বুড়িচং উপজেলা চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান, বিএনপি নেতা ও সৌদি আরব সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের আহ্বায়ক আব্দুুর রহমান, সৌদি পশ্চিমাঞ্চল বিএনপির সভাপতি আহমদ আলী মুকীব, তাঁতীদলের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি জাহাঙ্গীর আলম মিন্টু, য্বুদলের সাবেক আন্তর্জাতিক সম্পাদক আব্দুল জলিল, জেদ্দা মহানগর বিএনপি সভাপতি কেফায়েতউল্লাহ চৌধুরী ও এম আজাদ চয়ন, সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান তপন, যুবদলের সভাপতি মোজাম্মেল হোসেন, স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা এরশাদ আহমেদ, বিএনপি নেতা নুরুজ্জামান, আবু সাঈদ, আলতাফ হোসেন, ফারুক মমতাজ, শ্রমিক দল নেতা আব্দুল মান্নান, ভুট্টো, মাসুদ আহমেদ, জাসাস নেতা আমিনুল ইসলাম, তাঁতীদলের নেতা মো: রিপন, বিএনপি নেতা আতিকুর রহমান, মোস্তাক আহমেদ, আকতার হোসেন, টিপুসহ কয়েক শ’ নেতাকর্মী।

No comments:

Post a Comment