ঈদের আগেই নিখোঁজ ব্যক্তিদের ফিরিয়ে দেয়ার দাবি করেছেন তাদের পরিবার। র্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে বিভিন্ন সময়ে এসব ব্যক্তি অপহৃত হয়েছেন। তাদের মধ্যে রাজনৈতিক নেতাকর্মীও রয়েছেন। জাতীয় প্রেস কাবে গতকাল আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে নিখোঁজ ব্যক্তিদের ফিরিয়ে দেয়ার দাবি করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে নিখোঁজ ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যরা ছাড়াও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য
উপস্থাপন করেন নিখোঁজ সাজেদুল ইসলাম সুমনের মা হাজেরা খাতুন। অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সুমনের বোন ফেরদৌসি আখতার, রাসেলের মা মজিদা বেগম, আল আমিনের মা জেসমিন বেগম, তানভীরের মা নিলুফা বেগম, রানার মা আয়েশা খাতুন, আদনানের মা কানিস, সুমনের স্ত্রী নাসিমা আক্তার এবং মাসুমের মা। সংবাদ সম্মেলনে সুশীলসমাজের প্রতিনিধিরাও উপস্থিত ছিলেন। নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, গুম-খুনের দায়দায়িত্ব প্রধানমন্ত্রীকে নিতে হবে। তিনি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে রয়েছেন। তাই এর দায় তিনি এড়াতে পারেন না। তিনি আরো বলেন, ওপরের নির্দেশে গুম-খুনের তদন্ত হয় না। ওপর থেকে বলা হয় তদন্ত করার দরকার নেই। তাই গুম-খুনের বিচার হবে না। সংবিধান বিশেষজ্ঞ ড. শাহদীন মালিক বলেন, জাতিসঙ্ঘ থেকে প্রতিনিধি এসেছে। হয়তো আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সেনাবাহিনী নেবে। এ দেশের সেনাবাহিনী, বিমানবাহিনী, নৌবাহিনী অনেক ভালো কাজ করছে। তাদের আহ্বান জানাই তারা যেন কোনো র্যাব সদস্যাকে না নেয়। অধিকারের সাধারণ সম্পাদক আদিলুর রহমান বলেন, ১৯৭১-৭৪ সালের পর এখন আবার গুম শুরু হয়েছে। রাষ্ট্রীয় বাহিনীর হাতে গুম হওয়া মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন। এভাবে দেশ চলতে পারে না। এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন গণস্বাস্থ্যের প্রতিষ্ঠাতা মুক্তিযোদ্ধা জাফর উল্লাহ চৌধুরী, অধিকারের সেক্রেটারি জেনারেল আদিলুর রহমান খান, নারী পরে শিরীন হক, জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের সেক্রেটারি ডা: ফয়জুল হাকিম লাল, নাগরিক উদ্যোগের নির্বাহী প্রধান জাকির হোসেন। হাজেরা খাতুনের পে বক্তব্য পাঠ করে শোনান আইন ও সালিশ কেন্দ্রের নূর খান লিটন। অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করেন জাতীয় মানবাধিকার সমিতির চেয়ারম্যান মো: মঞ্জুর হোসেন ঈসা। পরিবারের সদস্যরা অভিযোগ করেন, নিখোঁজ ব্যক্তিদের র্যাব পরিচয়ে তুলে নেয়া হয়। বেশ কয়েকজনকে পরিবার পরিজনের সামনে থেকেই তুলে নেয়া হয়। এরপর আর তারা ফিরে আসেননি। র্যাব এবং পুলিশের সাথে একের পর এক যোগাযোগ করেও কোনো ফল হয়নি। সরকারের উচ্চপর্যায়ের বিভিন্ন দফতরে যোগাযোগ করা হয়েছে। তারা অনেক সময় আশ্বাসও দিয়েছেন। কিন্তু কোনো প্রতিফলন ঘটেনি। নিখোঁজ এসব ব্যক্তির মধ্যে কয়েকজন রয়েছেন যারা সরাসরি রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন। তাদের উদ্ধারের ব্যাপারে এর আগেও সংবাদ সম্মেলন ও মানববন্ধন হয়েছে। এমনকি জাতীয় সংসদের সামনেও এ নিয়ে মানববন্ধন করেছেন নিখোঁজ ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যরা ও সুশীল সমাজের নেতারা। সংবাদ সম্মেলন শেষে জাতীয় প্রেস কাবের সামনে ঈদের আগে গুম হওয়া সবাইকে ফিরিয়ে দেয়ার দাবিতে মানববন্ধন হয়। এতে সুশীলসমাজের প্রতিনিধিসহ তিগ্রস্ত পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
No comments:
Post a Comment