Wednesday, July 23, 2014

বাগেরহাটে গণহত্যায় সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে সিরাজুল হক গ্রেপ্তার:প্রথম অালো

একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধ–কালে বাগেরহাটের শাঁখারীকাঠি ও ডাকরায় গণহত্যা এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে শেখ সিরাজুল হক ওরফে সিরাজ মাস্টারকে (৮০) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তিনি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের গ্রেপ্তারি পরোয়ানাভুক্ত আসামি। সিরাজুল হককে গত সোমবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে বাগেরহাটের সদর উপজেলার ডেমা গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে বাগেরহাট মডেল থানার পুলিশ। তিনি স্থান
ীয়ভাবে ‘কসাই সিরাজ’ নামে পরিচিত। তাঁর পৈতৃক বাড়ি একই উপজেলার গোটাপাড়া গ্রামে। তবে মুক্তিযুদ্ধের পর তিনি ওই গ্রাম ছেড়ে ডেমা গ্রামে জমি কিনে সপরিবারে বসবাস করছিলেন। বাগেরহাট মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আলী আজম খান প্রথম আলোকে বলেন, গত ১০ জুন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুন্যাল-১ সিরাজ মাস্টারের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। ২০০৯ সালের পর থেকে তিনি এলাকা ছেড়ে পালিয়ে ছিলেন। সম্প্রতি তিনি গ্রামে ফিরেছেন এমন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশ তাঁর বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাঁকে গ্রেপ্তার করে। গতকাল মঙ্গলবার সকালে তাঁকে ঢাকায় পাঠানো হয়। মানবতাবিরোধী অপরাধ তদন্ত সংস্থার সূত্র জানায়, সিরাজুল হকের বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধকালে বাগেরহাটে ছয়টি গণহত্যার অভিযোগ রয়েছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে সদর উপজেলার চুলকাঠি গ্রামে সাতজনকে, রণজিতপুর গ্রামে ৪২ জনকে ও কান্দাপাড়া গ্রামে ১৮ জনকে, কচুয়া উপজেলা সদরে পাঁচজনকে, শাঁখারীকাঠি গ্রামে ৪২ জনকে এবং রামপাল উপজেলার ডাকরা গ্রামে ৬০০-৭০০ জনকে হত্যার অভিযোগ। তাঁর বিরুদ্ধে এসব গণহত্যায় নেতৃত্ব দেওয়ার এবং পাকিস্তানি সেনাদের সহায়তা করার অভিযোগ রয়েছে। সিরাজুল হকের বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্তকারী কর্মকর্তা জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার মো. হেলালউদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, একাত্তরের ৫ মে শাঁখারীকাঠি বাজারে গণহত্যার সঙ্গে সিরাজ মাস্টার, আকরাম হোসেন খান ও আবদুল লতিফ তালুকদারের সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ তদন্তে পাওয়া গেছে। এ তিনজনই বাগেরহাটের। এ ছাড়া প্রাথমিক তদন্তে বাগেরহাটের অন্য গণহত্যাগুলোতে সিরাজ মাস্টারের নেতৃত্ব দেওয়ার প্রমাণ পাওয়া গেছে। রাষ্ট্রপক্ষ ১০ জুন ট্রাইব্যুনাল-১-এ সিরাজ মাস্টার, লতিফ তালুকদার ও আকরাম হোসেনকে গ্রেপ্তারের আবেদন জানালে ট্রাইব্যুনাল তাঁদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে ১১ জুন বাগেরহাটের কচুয়া উপজেলার সোলারকোলা গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে লতিফ তালুকদারকে (৬৫) ও ১৯ জুন রাজশাহী থেকে আকরাম হোসেন খানকে (৬০) গ্রেপ্তার করা হয়। আকরামের বাড়ি বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলার দৈবজ্ঞহাটি গ্রামে। ২০০৯ সালে নিমাই চন্দ্র দাস নামে স্থানীয় এক ব্যক্তি বাদী হয়ে ওই তিনজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ২০-৩০ জনের বিরুদ্ধে বাগেরহাটের আদালতে একটি মামলা করেন। মুক্তিযুদ্ধকালের মানবতাবিরোধী অপরাধসংশ্লিষ্ট হওয়ায় পরে মামলাটি ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর করা হয়।

No comments:

Post a Comment