বিশ্বে এইচআইভি সংক্রমণ নিয়ে বসবাস করছে সাড়ে তিন কোটি মানুষ। বাংলাদেশে এ সংখ্যা সাড়ে নয় হাজার। দেশে শুধু ২০১৩ সালে সংক্রমণের শিকার হয়েছে এক হাজার ৩০০ জন। জাতিসংঘের এইচআইভি ও এইডসবিষয়ক সংস্থা ইউএনএইডসের গত বুধবার প্রকাশিত প্রতিবেদনে এ তথ্য দেওয়া হয়েছে। ‘ইউএনএইডস গ্যাপ রিপোর্ট’ শিরোনামের এ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এইচআইভি আক্রান্তদের ৫৪ শতাংশ অর্থাৎ বিশ্বের এক কোটি ৯০ লাখ মানুষ জানেই না যে তারা এই
চআইভি ভাইরাসে আক্রান্ত। এ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে ১৫ বছর বছরের কম বয়সী ২০০ শিশু এইচআইভি সংক্রমণের শিকার। আর ১৫ বছরের বেশি বয়সী তিন হাজার ৩০০ নারী এর শিকার। এ পর্যন্ত এইডসের কারণে বাংলাদেশে কমপক্ষে ২০০ মানুষের মৃত্যু হয়েছে। ৪২২ পৃষ্ঠার এ প্রতিবেদনে ব্যবধান (গ্যাপ) কমানোর ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। নিজেদের সংক্রমণ সম্পর্কে জানা, সেবা পাওয়া এবং সামাজিক সুরক্ষার ব্যাপারে বিভিন্ন দেশে ও সমাজে ব্যবধান আছে। গবেষণার উদ্ধৃতি দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে চিকিৎসার পরিধি ১০ শতাংশ বাড়ানো হলে নতুন সংক্রমণ ১ শতাংশ কমে যায়। ২০১৩ সালে এক কোটি ৩০ লাখ মানুষকে জীনবদায়ী ওষুধ দেওয়া হয়। এ বৈশ্বিক প্রতিবেদনের পরিসংখ্যান থেকে দেখা যায়, বাংলাদেশে এইচআইভি আক্রান্ত সব মানুষ অ্যান্টিরেট্রোভাইরাল ওষুধ পাচ্ছে না। আক্রান্ত প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে এক হাজার ২৩ জন এবং ১৫ বছরের কম বয়সীদের মধ্যে ৬০ জন এসব ওষুধ পাচ্ছে। এ ব্যাপারে আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণাকেন্দ্র, বাংলাদেশের সেন্টার ফর এইচআইভি অ্যান্ড এইডসের পরিচালক তাসনীম আজীম প্রথম আলোকে বলেন, ‘এ দেশে চিকিৎসার ক্ষেত্রে কিছু ফাঁক রয়ে গেছে, সকলে চিকিৎসা পাচ্ছেন না।’ তিনি বলেন, চিকিৎসার ফাঁক দূর করে সেবার পরিধি আরও বাড়াতে হবে। প্রতিবেদনে বেশ কিছু আশা জাগানিয়া তথ্যও দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, ২০০৫ সালের পর থেকে এইডসে মৃত্যুর হার ৩৫ শতাংশ এবং ২০০১ সালের পর থেকে শিশুদের মধ্যে সংক্রমণ ৫৮ শতাংশ কমেছে। এতে আরও বলা হয়েছে, ইউএনএইডসসহ বিভিন্ন দেশ ও সংস্থার উদ্যোগের ফলে ২০৩০ সালের মধ্যে এক কোটি নতুন সংক্রমণ এবং এক কোটি ১২ লাখ এইডসের কারণে মৃত্যু প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে।
No comments:
Post a Comment