Saturday, August 9, 2014

সরকার গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রণ করে মানুষের অধিকার হরণ করতে চায় : মির্জা ফখরুল:নয়াদিগন্ত

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সরকার মিডিয়া নিয়ন্ত্রণ করে মানুষের অধিকার হরণ করতে চায়। সরকার একদলীয় শাসনব্যবস্থা কায়েম করে ক্ষমতায় টিকে থাকতে চাচ্ছে। সম্প্রচার নীতিমালার নামে সরকার আইন করে গণমাধ্যমের কণ্ঠরোধ করে দিচ্ছে। তারা চুরি করবে, দুর্নীতি করবে, পদ্মা সেতু খাবে, র‌্যাব দিয়ে মানুষ হত্যা করবে, আর কথা বলা যাবে না এটা হতে পারে না।  শুক্রবার বেলা ১১টায় সোনারগাঁওয়ে মেঘ
নাঘাট শিল্পনগরীর বালুর মাঠে উপজেলা বিএনপির ঈদপুর্নমিলনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।  মির্জা ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার ১৯৭৫ সালে বাকশাল কায়েম করে সব পত্রিকা বন্ধ করে চারটি পত্রিকা তাদের হাতে রেখেছিল। এখনো তারা তাই করছে। সত্য কথা প্রকাশ করায় আমার দেশ পত্রিকা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। দিগন্ত টেলিভিশন, চ্যানেল ওয়ান ও ইসলামিক টিভি বন্ধ করে দিয়েছে এ সরকার। এ অবৈধ সরকার সংবাদপত্রের স্বাধীনতাকে রুদ্ধ করে দিচ্ছে। গণমাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণ করে অবৈধ সরকার বিএনপির আন্দোলন বানচাল করতে চায়। এ সরকার অর্থনীতিকে ধ্বংস করেছে। বাংলাদেশকে তারা মৃত্যুপুরীতে পরিণত করেছে। মানুষ হত্যা করে কোনো সরকার ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারেনি। এ সরকারও পারবে না।  তিনি বলেন, ৫ জানুয়ারির তামাশার নির্বাচনে ১৫৪ জনকে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত করা হয়েছে। ক্ষমতা পাকাপোক্ত করতে আওয়ামী লীগ সরকার সংবিধান পরিবর্তন করে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন করেছে। ভোট দেয়া আমাদের মৌলিক অধিকার, এটা ফিরে পেতে সংগ্রাম ও লড়াই করতে হবে। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া লড়াই করছেন গণতন্ত্র ফিরে পেতে। এ জুলুমবাজ, ফ্যাসিবাদী সরকারকে নির্বাচন করতে বাধ্য করা হবে। আগামী কয়েক দিনের মধ্যে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করবেন। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার, মানুষের অধিকার আদায়, অবৈধ সরকারের হাত থেকে দেশকে ও দেশের মানুষকে মুক্ত করতে তার ডাকে আপনারা সাড়া দিয়ে আন্দোলন তীব্রতর করুন। নারায়ণগঞ্জে এ সরকার সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। সরকার র‌্যাবকে লেলিয়ে দিয়ে সেভেন মার্ডারের ঘটনা ঘটিয়েছে। এসব থেকে মুক্তি পেতে হলে এ সরকারকে উৎখাত করতে হবে।   দেশনেত্রী খালেদা জিয়া যে আন্দোলনের ডাক দিয়েছেন, সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে তাতে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে।  তিনি আরো বলেন, আজকের এ সভা প্রমাণ করেছে সোনারগাঁয়ের মাটি বিএনপির ঘাঁটি। সোনারগাঁয়ে শত প্রতিকূলতার মাঝেও বিএনপি থেকে আজহারুল ইসলাম মান্নান উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। আওয়ামী লীগ এখানে ২০টি কেন্দ্র দখল করে নিলেও মান্নান জয়ী হয়েছেন।  মির্জা ফখরুল আরো বলেন, অনেক কষ্ট ও বেদনার মধ্যে অনেক মা-বোন এবারের ঈদ করেছেন। তিনি সোনারগাঁয়ের সনমান্দি ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক চেয়ারম্যান বিল্লাল হোসেন হত্যার বিচার দাবি করেন। এ ছাড়া সোনারগাঁও পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বশিরউদ্দিন মোল্লার রূহের মাগফিরাত কামনা করেন। সম্প্রতি তিনি ইন্তেকাল করেন। উপজেলা বিএনপির সভাপতি খন্দকার আবু জাফরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব বরকতউল্লাহ বুলু, শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক খায়রুল কবির খোকন, সহআইন বিষয়ক সম্পাদক ও নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য কাজী মনিরুজ্জামান মনির, কেন্দ্রীয় শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসেন, সোনারগাঁ উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আজহারুল ইসলাম মান্নান, নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এ টি এম কামাল, মহানগর যুবদলের আহ্বায়ক মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক জাহিদ হাসান রোজেল, সাবেক কেন্দ্রীয় ছাত্রদল নেতা আজিজুল হক, সোনারগাঁও পৌর বিএনপির সভাপতি এম এ জামান প্রমুখ। এ সময় বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন। পরে জাতীয়তাবাদী বাউল দলের পরিবেশনায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়।

No comments:

Post a Comment