Tuesday, August 26, 2014

রূপগঞ্জে ৩শ একর খাস জমি বেদখল:যুগান্তর

রূপগঞ্জে ৩শ’ একর খাস ও সরকারি জমি প্রভাবশালীদের দখলে রয়েছে। দলীয় ও পেশিশক্তির মাধ্যমে সরকারি জমি দখল করে তৈরি করা হয়েছে বাড়িঘর, হাউজিং কোম্পানি, শিল্প-কারখানা, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। এছাড়া নামে-বেনামে ভুয়া দলিল করে দখল করে নেয়া হচ্ছে সরকারি জমি। উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় জমির অংশ কেনার নামে নিরীহদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, বসতবাড়িসহ জমি দখল করে নেয়ারও অভিযোগ রয়েছে। এতে করে অসংখ্য লোক ভিটাবাড়িহারা হয়েছে। জানা
যায়, মামলার কারণে রূপগঞ্জে প্রায় ১৯৩ একর খাস জমি সরকারের হাতছাড়া। স্থানীয় ভূমি অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে বছরের পর বছর সরকারি এসব জমি ভোগদখল করছেন প্রভাবশালীরা। অথচ জমি উদ্ধারে তেমন কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে। উপজেলাধীন প্রায় ১৮০ একরের সরকারি খাস জলাশয় এখন প্রভাবশালী মহলের দখলে। অথচ এসব জমি প্রান্তিক ক্ষুদ্র মাছচাষীদের মধ্যেই বিতরণের কথা। কৌশলে কিছু অংশ বৈধ ইজারা নিয়ে খাস জলাশয়ের সিংহভাগই বছরের পর বছর আটকে রেখেছে প্রভাবশালীরা। শীতলক্ষ্যা নদীর পাশে জেগে ওঠা খাস জমিও প্রভাবশালীদের দখলে চলে গেছে। তারা রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে এসব খাস জলাশয় ভোগদখল করছেন। রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লোকমান হোসেন বলেন, জমি দখলমুক্ত করতে মাঝে মাঝে অভিযান চালানো হয়। অনেক সময় অবৈধ দখলদাররা আদালতের আদেশ নিয়ে খাস জমি দখল করে থাকেন। এসব ক্ষেত্রে সময়ক্ষেপণ ছাড়া আর উপায় থাকে না। রূপগঞ্জ উপজেলার শীতলক্ষ্যা নদীর চর দখল করার অভিযোগ আছে রাজনৈতিক দলগুলোর নেতাদের বিরুদ্ধে। এক বছর আগে দখলদারদের চিহ্নিত করতে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে উদ্যোগ নেয়া হলেও দু’দিন পরই তা থমকে যায়। জমি বন্দোবস্ত দেয়ার ক্ষেত্রেও চলছে অব্যবস্থাপনা। প্রকৃত ভূমিহীনদের খাস জমি বন্দোবস্ত পাওয়ার ক্ষেত্রে অগ্রাধিকারের বিধান থাকলেও বাস্তবে কমসংখ্যক ভূমিহীনই সরকারের এ সুবিধা ভোগ করছেন। যাদের খাস জমি পাওয়ার কোনো সুযোগ নেই তারাই খাস জমি নিয়ে কাড়াকাড়ি করছেন। প্রভাবশালীরাই প্রশাসনের অসাধু কর্মকর্তাদের সহায়তায় ভূমিহীন সেজে নিজেদের নামে এসব খাস জমি বন্দোবস্ত নিচ্ছেন। এসি ল্যান্ড অফিসের একশ্রেণীর কর্মকর্তা-কর্মচারীর যোগসাজশ এবং লেনদেনের মাধ্যমে, উপজেলার জাঙ্গীর, ভিংরাব, সুরিয়াব, পিতলগঞ্জ এলাকায় প্রায় ২শ’ বিঘা জমি স্থানীয় ছাত্রলীগ নেতারা দখল করে ঢাকা ভিলেজ ও আশালয় হাউজিং কোম্পানিকে দিয়েছে। গঙ্গানগর এলাকার গ্লোব ফিসারিকে ৭০ বিঘা জমি দখল করে দিয়েছে মুড়াপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের এক নেতা। তারাব শীতলক্ষ্যা নদীর পারে সরকারি জমি দখল করে আওয়ামী লীগ নেতারা গড়ে তুলেছে বালুমহাল। রূপসী বাসস্ট্যান্ড, বরপা, কর্নগোপ, খাদুন ও যাত্রামুড়া এলাকায় সরকারি জমি দখল করে নির্মাণ করা হয়েছে শিল্প প্রতিষ্ঠান। ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের দুই পাশের সরকারি জমিতে ক্ষমতাসীন দলের ১৫টি রাজনৈতিক কার্যালয়সহ অন্তত ৩শ’ দোকানপাট নির্মাণ করা হয়েছে। গন্ধর্বপুর চর, পূর্বগ্রাম চর, দাউদপুরের বন বিভাগের জমি, বেলদী, পুটিনার চর, মাসাব, কান্দাপাড়া, বিশ্বরোড, গোলাকান্দাইল, ভুলতা, কাঞ্চন এলাকার খাস জমি, মুড়াপাড়ার চরের জমিসহ হাজার বিঘা জমি স্থানীয় রাজনৈকিত দলের নেতা, জনপ্রতিনিধি ও প্রভাবশালীরা বছরের পর বছর দখল করে রেখেছেন।  

No comments:

Post a Comment