শোক আর ক্ষোভে ফুঁসে উঠেছেন পদ্মায় স্বজনহারা শত শত মানুষ। গত রাত ১২টায় শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ৩৬ ঘণ্টায়ও পদ্মায় নিমজ্জিত এমএল পিনাক-৬ লঞ্চের সন্ধান না পাওয়া, লাশ উদ্ধার করতে না পারা এমনকি স্বজনদের ভালো কোনো সংবাদও দিতে পারছে না কর্তৃপক্ষ। তবে কর্তৃপক্ষ বলছে, নদীতে তীব্র স্রোত থাকায় যে ইকুইপমেন্ট রয়েছে, তা দিয়ে লঞ্চটি অনুসন্ধান করা সম্ভব হচ্ছে না। চট্টগ্রাম থেকে জরিপ-১১ নামের উদ্ধারকারী জাহাজ ইতোমধ্য
ে মাওয়ার উদ্দেশ্যে রওনা করেছে। জাহাজটি পৌঁছলে ডুবে যাওয়া লঞ্চটি শনাক্ত করা সম্ভব হবে। এ দিকে গতকাল মঙ্গলবার চাঁদপুরের হাইমচর এলাকা থেকে অজ্ঞাত দু’টি লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, তীব্র স্রোতে লাশগুলো ভেসে চাঁদপুরের হাইমচরের দিকে চলে গেছে। এ কারণে ওই এলাকায়ও তল্লাশি চালানো হচ্ছে। কর্তৃপক্ষ বলছে, ভেসে যাওয়া লাশগুলো পাওয়া গেলে সেগুলো মাওয়া ঘাটে ফিরিয়ে আনা হবে না। লাশগুলো মাদারীপুর শিবচরের পাচ্চর হাইস্কুল মাঠে পাঠানো হবে। গতকাল মাওয়া ঘাটে গিয়ে প্রিয়জনহারা স্বজনদের বিক্ষোভ করতে দেখা যায়। তারা মাওয়া চৌরাস্তায় ঢাকা-মাওয়া মহাসড়ক অবরোধ করেন। এ সময় একটি বেসরকারি টেলিভিশনের দুই সাংবাদিকের ওপর তারা হামলা চালান। এ ছাড়া বিআইডব্লিউটিএর জাহাজ তিস্তায় হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করেন। বিআইডব্লিউটিএর উপপরিচালক আলী আজগর জানান, গতকাল সকাল সাড়ে ৮টার দিকে লঞ্চডুবিতে নিখোঁজ যাত্রীদের স্বজনেরা বিক্ষোভ করেন। সাড়ে ৮টা থেকে ৯টা পর্যন্ত আধ ঘণ্টাব্যাপী মাওয়া চৌরাস্তায় মহাসড়ক অবরোধ করে রাখেন বিক্ষুব্ধ স্বজনেরা। এ সময় তারা তিস্তা জাহাজে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করেন। একপর্যায়ে বিক্ষোভকারীরা বেসরকারি টিভি চ্যানেল বাংলাভিশনের স্টাফ রিপোর্টার সেকেন্দার রিমন ও ক্যামেরাপারসন মনিরুজ্জামান মনিরকে মারধর করেন। পরে র্যাব ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা লঞ্চ উদ্ধারের আশ্বাস দিলে মহাসড়ক থেকে অবরোধ তুলে নেয়া হয়। স্বজনেরা বলেন, ৩৩ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত লঞ্চ শনাক্ত বা লাশ উদ্ধারে কোনো অগ্রগতি নেই। নারায়ণগঞ্জ থেকে উদ্ধারকারী জাহাজ রুস্তম আনা হলেও সেটি কোনো কাজে আসছে না। রুস্তমকে নদীর একপাশে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছে। বিআইডব্লিউটিএর দু’টি জাহাজ দিয়ে সাইড সোলার স্ক্যান করা হলেও ডুবে যাওয়া লঞ্চের কোনো সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে না। স্বজনেরা বলছেন, জীবিত পাবো না জানি। আমাদের লাশটি বুঝিয়ে দেয়া হোক। আবার অন্যরা বলছেন, কর্তৃপক্ষের কার্যক্রম দেখে মনে হচ্ছে স্বজনদের লাশ মনে হয় আর ফিরে পাবো না। শাহানা নামের এক বৃদ্ধা বুক চাপড়াতে চাপড়াতে বলেন, আমি এত কিছু বুঝি না। আমি আমার মেয়ে, জামাতা আর নাতিদের ফেরত চাই। রুস্তম এসে কী করবে আর জরিপ-১১ এসে কী করবে। এগুলো আমার জানার দরকার নেই। তিনি বলেন, গত সোমবার দুপুর ১২টা থেকে মাওয়া ঘাটে বসে আছি। অথচ জীবিত তো নয়ই, মৃত লাশ পর্যন্ত খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। মন্ত্রী বলছেন, ধৈর্যধারণ করতে। আর কত ধৈর্যধারণ করলে আমার মেয়ে, জামাতা ও নাতিদের খুঁজে পাওয়া যাবে। বাবা কাজী আনোয়ার উল্লাহর খোঁজে আসা ছেলে মো: ইয়াকুব জানান, দুই দিন ধরে পদ্মার পাড়ে বাবার জন্য অপেক্ষার প্রহর গুনছি। বাবার সন্ধান পাচ্ছি না। ঘাটে নির্মাণ করা তথ্যকেন্দ্রসহ বিভিন্ন জায়গায় দৌড়াদৌড়ি করে কোনো লাভ হচ্ছে না। কর্তৃপক্ষ বলছে, চেষ্টা করছি। কিন্তু আমরা চেষ্টার কোনো নমুনা দেখছি না। স্বজনদের সুবিধার্থে মাওয়া ঘাটে বেশ কয়েকটি তথ্যকেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। স্থাপন করা হয়েছে অস্থায়ী চিকিৎসাকেন্দ্র। রেডক্রিসেন্ট সদস্যরা ট্রলার ভাড়া করে লাশের সন্ধানে ঘুরছেন। কিন্তু ফিরে আসছেন খালি হাতে। তথ্যকেন্দ্রের তথ্য অনুযায়ী নিখোঁজ যাত্রীদের মধ্যে ফরিদপুরের ২৫, মাদারীপুরের ৪৯, শরীয়তপুরের দুই, গোপালগঞ্জের ১৯, বরিশালের ৭, গাজীপুরের ২, নারায়ণগঞ্জের ৭, কুমিল্লার ৫, ঢাকার ১, ঝালকাঠির ৪, নরসিংদীর ১, নড়াইলের ১, বাগেরহাটের ২, চাঁদপুর ১, লক্ষ্মীপুরের তিনজনসহ ১২৯ জন রয়েছেন। এর মধ্যে পুরুষ ৪৬, মহিলা ৪৮ ও ৩৫ জন শিশু রয়েছেন। এ দিকে গতকাল দুপুরে মেঘনা নদীর চাঁদপুর এলাকা থেকে দু’টি লাশ উদ্ধার করা হয়েছে বলে তথ্যকেন্দ্র থেকে জানানো হয়েছে। লাশ দু’টি শিবচরের পাচ্চর হাইস্কুল মাঠে নিয়ে যাওয়া হবে। উদ্ধারকারী টিমের প্রধান বিআইডব্লিউটিএর যুগ্ম পরিচালক জহিরুল ইসলাম সন্ধ্যায় জানান, বিআইডব্লিইটিএ, নৌবাহিনী, ফায়ার সার্ভিস মিলে অনুসন্ধান চালিয়ে যাচ্ছি। কিন্তু তীব্র স্রোতে অনুসন্ধান কাজ কিছুটা ব্যাহত হচ্ছে। তিনি বলেন, সোমবার রাত থেকে সাইড সোলার স্ক্যানিং দিয়ে তল্লাশি চালানো হচ্ছে। কিন্তু স্ক্যানিংয়ে জলজপ্রাণী দেখা গেলেও লঞ্চ খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। এমনকি একটি লাশও পাওয়া যায়নি। দুর্ঘটনাস্থল থেকে স্রোতের দিকে আরো পাঁচ কিলোমিটার পর্যন্ত সাইড সোলার স্ক্যানিং করা হচ্ছে। তিনি বলেন, এই মুহূর্তে কোনো অগ্রগতির সংবাদ দেয়া যাচ্ছে না। নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান বলেন, এমভি পিনাক-৬ উদ্ধারে সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হচ্ছে। লঞ্চটি শনাক্ত করতে নৌবাহিনীর দু’টি এবং বিআইডব্লিউটিএর একটি জাহাজ কাজ করে যাচ্ছে। এই জাহাজ তিনটি নদীর তলদেশের প্রতিটি বস্তু শনাক্ত করতে পারছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত লঞ্চটি শনাক্ত করতে পারেনি। কারণ এই জাহাজ তিনটি মাটির ওপরে থাকা বস্তু শনাক্ত করতে পারে। মাটির নিচে থাকা বস্তু শনাক্ত করা এই জাহাজ দিয়ে সম্ভব নয়। তাই চট্টগ্রাম থেকে উদ্ধারকারী জাহাজ জরিপ-১১ মাওয়ায় আনা হচ্ছে। জাহাজটি ইতোমধ্যে রওনা দিয়েছে। আশা করছি মধ্য রাতে জাহাজটি মাওয়ায় পৌঁছাবে। জরিপ-১১ জাহাজটি শুধু মাটির ওপরেই নয়, মাটির তলদেশে থাকা বস্তু শনাক্ত করতে সক্ষম। তিনি আরো বলেন, ধারণা করা হচ্ছে স্রোতের তীব্রতায় লাশগুলো দুর্ঘটনাস্থলের আশপাশে নেই। লাশগুলো ভেসে চাঁদপুর বা মেঘনার দিকে চলে গেছে। ভেসে যাওয়া এসব লাশ পাওয়া গেলে মাওয়া ঘাটে আনা হবে না। যেহেতু মাদারীপুর, শিবচর, গোপালগঞ্জ এলাকার লাশ বেশি হবে, তাই সেগুলো শিবচরের পাচ্চর হাইস্কুল মাঠে রাখা হবে। নিহতদের পরিবারকে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ২০ হাজার ও বিআইডব্লিউটিএর পক্ষ থেকে এক লাখ পাঁচ হাজার টাকা করে সহায়তা দেয়া হবে। রাতে বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যান ড. সামসুদ্দোহা সাংবাদিকদের বলেন, গত সোমবার লঞ্চ ডুবে যাওয়ার পর থেকে বিআইডব্লিউটিএ, নৌবাহিনী, ফায়ার সার্ভিস কোস্টগার্ড মিলে অনুসন্ধান চালিয়ে যাচ্ছে। প্রথমে তিনটি জাহাজ দিয়ে সাইড সোলার স্ক্যান করা হয়েছে। এতে প্রায় ৬০০ মিটার ব্যাসার্ধে স্ক্যান করা হয়েছে। প্রথমে ঘটনাস্থল থেকে স্রোতের দিকে আরো পাঁচ কিলোমিটার ও পরে ১০ কিলোমিটার পর্যন্ত তল্লাশি চালানো হয়েছে। কিন্তু ডুবে যাওয়া লঞ্চের সন্ধান পাওয়া যায়নি, যার কারণে সন্ধ্যার পর উদ্ধারকাজে অংশ নেয়া সব সংস্থার কর্মকর্তাদের নিয়ে একটি সভা করা হয়েছে। ওই সভায় সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে ঘটনাস্থল থেকে স্রোতের দিকে আরো ১৫ কিলোমিটার পর্যন্ত তল্লাশি চালানো হবে। যতক্ষণ পর্যন্ত লঞ্চের সন্ধান না পাওয়া যায় ততক্ষণ পর্যন্ত অভিযান চলবে। লঞ্চের সন্ধান পাওয়া গেলেই উদ্ধারকারী জাহাজ রুস্তমকে দিয়ে সেটি উদ্ধার করা হবে। পাশাপাশি চট্টগ্রাম থেকে আসা উদ্ধারকারী জাহাজ জরিপ-১১ পৌঁছলে উদ্ধারকাজ আরো সহজ হয়ে যাবে। লঞ্চডুবির ঘটনায় মামলা দায়ের : এ দিকে, গতকাল সন্ধ্যা সোয়া ৭টায় বিআইডব্লিউটিএ’র পরিবহন পরিদর্শক জাহাঙ্গীর ভূঁইয়া বাদি হয়ে ছয়জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন লৌহজং থানায়। থানার ওসি তোফাজ্জল হোসেন জানান, দণ্ডবিধি ২৮০, ২৮২ ও ৩০৪ (খ) ধারায় দায়ের করা এই মামলার আসামিরা হলেন লঞ্চের মালিক আবু বকর সিদ্দিক কালু মিয়া, চালক নবীসহ ছয়জন। তাবলিগ জামায়াতের ৫ মুসল্লি নিখোঁজ : লঞ্চডুবিতে লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলার চরপাগলা গ্রামের দ্বীনি দাওয়াতে বের হওয়া তাবলিগ জামায়াতের পাঁচজন মুসল্লি নিখোঁজ রয়েছেন। ওই গ্রামের বাসিন্দা ও ফেনীর সোনাগাজী উপজেলার আলীমুদ্দিন হালিমিয়া মাদরাসার সহকারী শিক্ষক মো: ইয়াকুব গতকাল সকাল ৮টার দিকে নিখোঁজ মুসল্লিদের খোঁজে মুন্সীগঞ্জের মাওয়াঘাটে এসে স্থানীয় সাংবাদিকদের এ তথ্য জানিয়েছেন। রমজান মাসের শুরুতে তাবলিগ জামায়াতের ১৬ জনের একটি দল দ্বীনি দাওয়াতে বের হয়েছিলেন। তারা যশোর ও শরীয়তপুরের বেশ কয়েকটি মসজিদ ও মাদরাসায় ইসলামের দাওয়াতের কাজে শরিক হন। পরিশেষে সোমবার মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার কাওরাকান্দি ঘাট থেকে মাওয়াগামী এমএল পিনাক-৬ নামে লঞ্চে করে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেন। বেলা ১১টার দিকে লঞ্চটি পদ্মার করাল স্রোতের তোড়ে তলিয়ে গেলে চারজন মুসল্লি জীবিত উদ্ধার হন। বাকি ১২ জনের ভাগ্যে কী ঘটেছে তা জানা নেই কারো। ২ মেয়েসহ বেঁচে গেলেন মা, স্বামী ও ছেলে নিখোঁজ : এমএল পিনাক-৬ লঞ্চডুবিতে ২০ মিনিট পানিতে ভেসে থাকা অবস্থায় থাকলে স্থানীয় জেলেরা দুই মেয়েসহ মা মিনা বেগমকে উদ্ধার করে। কিন্তু নিখোঁজ রয়েছেন মিনা বেগমের স্বামী মিজানুর রহমান ও ছেলে ইমতিয়াজ। বেঁচে আসা দুই মেয়ের নাম আরফিন ও আরমিন। মিনা বেগম জানান, তার স্বামী মিজানুর গাজীপুরের একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের গাড়ি চালান। ঈদের দুই দিন আগে গ্রামের বাড়িতে যায় পরিবারটি। কিন্তু সোমবার কর্মস্থলে ফেরার পথে লঞ্চডুবিতে দুই মেয়েসহ মা মিনা পদ্মায় ভেসে থাকলে স্থানীয় জেলেদের ট্রলারযোগে তাদের জীবিত উদ্ধার করা হয়। তবে এখনো নিখোঁজ রয়েছেন বেঁচে আসা মিনার স্বামী ও ছেলে। ২২ বছরের মধ্যে প্রথম ডুবল লঞ্চ : নৌপরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান জানিয়েছেন, ১৯৯২ সালে মাওয়া-কাওরাকান্দি নৌরুটে প্রথম লঞ্চ চলাচল শুরু হয়। বর্তমানে ৮৭টি লঞ্চ চলাচল করছে এ নৌরুটে। নৌমন্ত্রী বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও অতিরিক্ত যাত্রী বহন করার কারণেই ২২ বছরের মধ্যে এই প্রথম লঞ্চডুবির ঘটনা ঘটে। যোগাযোগমন্ত্রীর দুঃখ প্রকাশ : মাওয়ার অদূরে লঞ্চডুবিতে নিহতদের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে দুঃখ প্রকাশ করেছেন যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি সোমবার রাত সাড়ে ৭টার দিকে মাওয়ার রেস্ট হাউজে স্থানীয় সাংবাদিকদের কাছে এ দুঃখ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, লঞ্চডুবিতে আফসোস লাগছে। নিখোঁজ ও নিহত যাত্রীদের স্বজনের জন্য সমবেদনা জানাচ্ছি। তবে সান্ত্বনা দেয়ার ভাষা নেই আমার। মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের প্রায় এক ঘণ্টা ঘটনাস্থলে। পরে রাতেই ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেন। হাইমচরে দুইটি লাশ উদ্ধার চাঁদপুর সংবাদদাতা শরীফ চৌধুরী জানান, মুন্সীগঞ্জের মাওয়ায় যাত্রীবাহী লঞ্চ পিনাক-৬ ডুবে যাওয়ার পর ১৮ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও লঞ্চটির সন্ধান মেলেনি। যার ফলে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় থেকে লঞ্চডুবির নিখোঁজ যাত্রীদের লাশ যাতে স্রোতে সমুদ্রে পাড়ি দিতে না পারে সে জন্য চাঁদপুর নৌবন্দরকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এ নির্দেশনা পেয়ে চাঁদপুরের বিআইডব্লিউটিএ, জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন মঙ্গলবার সকাল থেকে পদ্মা-মেঘনায় বিআইডাব্লিউটির দুটি ট্যাগ ও প্রশাসনের স্পিডবোট দিয়ে চষে বেড়াচ্ছে। চাঁদপুরের হাইমচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুজ্জমান মিয়া জানান, চাঁদপুর হাইমচরের মেঘনা নদীর মাঝের চর থেকে অজ্ঞাত একজন পুরুষ ও একজন মহিলার লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল বেলা ১১টার দিকে লাশগুলো স্থানীয় জনতা দেখতে পেয়ে থানায় খবর দিলে বেলা আড়াইটার দিকে হাইমচর থানায় আনা হয়। কিন্তু এখনো তাদের পরিচয় পাওয়া যায়নি। তবে তারা মুন্সীগঞ্জের লঞ্চডুবির যাত্রী কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। চাঁদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো: কামরুল ইসলাম জানান, দু’টি লাশের মধ্যে একটি লাশ বিকৃত হয়ে গেছে। ধারণা করা হচ্ছে লাশগুলো মুন্সীগঞ্জের দুর্ঘটনাকবলিত লঞ্চের যাত্রী। অন্য দিকে চাঁদপুরের পুলিশ সুপার মো: আমির জাফর জানিয়েছেন, লঞ্চের নিখোঁজ যাত্রীদের সন্ধানে পুলিশ বাহিনীও সতর্ক অবস্থায় রয়েছে। এ দিকে বিআইডাব্লিউটির চাঁদপুর বন্দর কর্মকর্তা মো: মোবারক হোসেন জানান, নৌ-মন্ত্রণালয় থেকে নির্দেশনা পেয়ে তারা পদ্মা-মেঘনায় নিখোঁজ যাত্রীদের সন্ধানে নেমে পড়েন। এ সন্ধান অব্যাহত থাকবে বলে তিনি জানান।
No comments:
Post a Comment