Wednesday, August 13, 2014

জোয়ারের সঙ্গে বসবাস:প্রথম অালো

চট্টগ্রাম সিডিএ আগ্রাবাদ আবাসিক এলাকার বাসিন্দা সাবরিনা খুরশীদ। অভিজাত এলাকার বাসিন্দা হয়েও তাঁর মনে শান্তি নেই। অমাবস্যা-পূর্ণিমা এলে রীতিমতো আতঙ্কে থাকেন তিনি। কারণ, এ সময় জোয়ারের পানিতে ডুবে যায় এলাকা। বিশেষ করে দুপুরবেলায় এ সমস্যা প্রকট আকার ধারণ করে। সাবরিনা খুরশীদের মতো অবস্থা চট্টগ্রাম নগরের চার এলাকার প্রায় ১০ লাখ বাসিন্দার। এলাকাগুলোর মধ্যে আবাসিক এলাকা যেমন রয়েছে, তেমনি চাক্তাই ও খাত
ুনগঞ্জের মতো দুই বড় পাইকারি বাজারও আছে। জোয়ারের পানি ঢুকে নষ্ট হয় দুই বাজারের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও গুদামের মালামাল। একই সমস্যা বাকলিয়ায়ও। প্রায় প্রত্যেক অমাবস্যা-পূর্ণিমায় জোয়ারের পানিতে তলিয়ে যায়। আগ্রাবাদ এলাকায় গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে গিয়ে দেখা যায়, এলাকার নালা উপচে জোয়ারের পানিতে রাস্তা ডুবে গেছে। বেশির ভাগ ভবনের নিচতলা তলিয়ে গেছে। এলাকার অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেও পানি ঢুকেছে। কড়া রোদের মধ্যেও প্রায় হাঁটুপানি পার হতে হচ্ছে এলাকাবাসীকে। বিশেষ করে ওই সময় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো ছুটি হওয়ায় বিপাকে পড়েন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা। কারণ হিসেবে জানা যায়, কর্ণফুলী নদীর সঙ্গে যুক্ত চাক্তাই খাল, মহেশ খাল ও রাজাখালী খালের আশপাশে এলাকাগুলোর অবস্থান। দখলের কারণে সংকুচিত হয়েছে খালগুলোর প্রশস্ততা। আর নিয়মিত সংস্কার ও খননের অভাবে গভীরতা কমেছে। আগ্রাবাদ এলাকার বাসিন্দা সুমন ধর বলেন, ‘এ সমস্যা প্রতিনিয়ত বাড়ছে। আগে অমাবস্যা ও পূর্ণিমায় সৃষ্ট জোয়ারের পানি মাসে দু-তিন দিন উঠত। এখন টানা ৮-১০ দিন এ সমস্যার মুখোমুখি হতে হচ্ছে আমাদের।’ চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের জলাবদ্ধতাবিষয়ক স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান ও পশ্চিম বাকলিয়া এলাকার ওয়ার্ড কাউন্সিলর এ কে এম জাফরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘অনেক এলাকার রাস্তা উঁচু করেও সুফল পাওয়া যাচ্ছে না।’ এ সমস্যা সমাধানের পথ জানা আছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন, পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের। চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ) প্রণীত ১৯৯৫ সালের ড্রেনেজ মহাপরিকল্পনায় কর্ণফুলীর জোয়ারের পানি যাতে সংলগ্ন এলাকায় না ঢোকে, সে জন্য টাইডাল রেগুলেটর নিমার্ণের প্রস্তাব করা হয়। কিন্তু তা বাস্তবায়িত হয়নি। সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আলী আহমেদ বলেন, ‘আমরা স্লুইসগেট বসানোর জন্য বারবার আবেদন করেছি। পানি উন্নয়ন বোর্ড আমাদের করতে দিচ্ছে না। বলছে, এটি তাদের কাজ। কিন্তু নিজেরাও করছে না।’ অভিযোগ সম্পর্কে পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী কামরুজ্জামান বলেন, ‘সিটি করপোরেশন বা সিডিএ আমাদের আনুষ্ঠানিকভাবে এখনো কোনো প্রস্তাব দেয়নি। প্রস্তাব পেলে আমরা মতামত দেব।’

No comments:

Post a Comment