র মধ্য দিয়ে যে সূচনা হয়েছে সেটিও পরিকল্পনারই অংশ। সরকারের আচরণ ও মনোভাব এবং অতীত অভিজ্ঞতাকে সামনে রেখেই এবার আন্দোলনের ছক আঁকা হয়েছে এবং চূড়ান্ত কার্যকর আন্দোলনের মাধ্যমেই দাবি আদায় হবে। ২০ দলীয় জোটের শরিকদের বেশ কয়েকটির শীর্ষ নেতাদের সাথে কথা বলে আন্দোলন প্রশ্নে তাদের এই মনোভাব জানা গেছে। জোটের ছোট কয়েকটি শরিক দলের কয়েকজন নেতার জোট থেকে বের হয়ে আলাদা জোট গঠনের দিকটিকে অন্য শরিকেরা আমলে নিচ্ছেন না বলেই তারা জানিয়েছেন। তারা মনে করছেন, সরকারের ইচ্ছায় গোয়েন্দাদের চালে শরিকদের কয়েকটি দলের কিছু নেতা জোট ত্যাগ করে জোটের আন্দোলনকে ক্ষতিগ্রস্ত করার অপপ্রয়াসে লিপ্ত হয়েছেন। কিন্তু এই তৎপরতা জোটের জন্য কিছুটা বিব্রতকর হলেও কার্যত জোটের রাজনীতি ও আন্দোলনে এর কোনো প্রভাব পড়বে না। দেশের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় মানুষের আকাক্সা অনুুযায়ী দ্রুততম সময়েই দেশে একটি পরিবর্তন আসবেÑ এমন প্রবল সম্ভাবনার কথাই জানিয়েছেন তারা। বিএনপিসহ তখনকার সব বিরোধী দলের বর্জনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠিত ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের পর এখন পর্যন্ত বড় ধরনের আন্দোলন কর্মসূচিতে যায়নি বিরোধী দল। ঈদের পর কঠোর কর্মসূচি দেয়ার কথা বলা হলেও সর্বশেষ ফিলিস্তিনে গণহত্যা, জাতীয় সম্প্রচার নীতিমালা এবং সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বিল পাসের প্রতিবাদে ২০ দলীয় জোট একটি হরতালসহ বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে। সর্বশেষ গত সোমবার সংবিধান সংশোধনের প্রতিবাদে দিনব্যাপী হরতাল পালিত হয়। কঠোর আন্দোলনের ঘোষণা দিয়ে শেষ পর্যন্ত ‘নরম কর্মসূচি’ দেয়া নিয়ে জোটের ভেতরে-বাইরে বেশ আলোচনা-সমালোচনাও চলছে। জোটের কয়েকটি ছোট দলের কিছু নেতা আন্দোলন প্রশ্নে শরিকদের সাথে পরামর্শ না করা এবং কার্যকর আন্দোলন কর্মসূচি না দেয়াসহ জোটে তাদের মূল্যায়ন না করার অভিযোগ সামনে এনে জোট থেকে বের হয়ে যায়। বের হয়ে যাওয়া দলগুলোর নেতারা বৃহস্পতিবার একটি নতুন জোট গঠনের ঘোষণা দেন। তবে ওইসব দল বিকল্প নেতৃত্বে এখনো জোটেই রয়েছে। তবে জোটের কর্মসূচি প্রণয়নে শরিকদেরও আরো ঘনিষ্ঠভাবে সম্পৃক্ত করা নিয়ে শরিক আরো কিছু দলের মধ্যেও কিছুটা ক্ষোভ ও হতাশা দেখা দিয়েছিল। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে কিছু কৌশলী কর্মসূচির পরিপ্রেক্ষিতে তাদের সেই ক্ষোভ-হতাশা অনেকটাই কেটে গেছে। এখন তারা বেগম জিয়ার নেতৃত্বে একটি কার্যকর আন্দোলনের ব্যাপারে আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি আশাবাদী। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে জোটের অন্যতম প্রধান শরিক জামায়াতে ইসলামীর নীতিনির্ধারণী ফোরাম নির্বাহী পরিষদের একজন সদস্য বলেন, জামায়াত জোটের আন্দোলনের ব্যাপারে কখনো হতাশ হয়নি। আন্দোলনের কর্মসূচি নির্ধারণে জোট নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে জোটের শীর্ষ বৈঠকেই ক্ষমতা দেয়া হয়েছে। আর চূড়ান্ত কর্মসূচি জোটের বৈঠকে আলোচনা করেই ঘোষণা করা হয়। ফলে এ নিয়ে প্রশ্ন তোলার কোনো সুযোগ নেই। তা ছাড়া তিনি যখন যাদের সাথে আলোচনা করা প্রয়োজন তা অবশ্যই করছেন। আন্দোলন একটি কৌশলের বিষয়। যখন যে কর্মসূচি এসেছে জামায়াত সর্বশক্তি দিয়ে তা বাস্তবায়নের চেষ্টা করছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জামায়াতের এই নেতা বলেন, জোটে ভাঙন ধরানো এবং জোটের আন্দোলনকে ক্ষতিগ্রস্ত করার জন্য নানা তৎপরতার অংশ হিসেবেই সরকারের সাথে জামায়াতের আঁতাতের কাল্পনিক খবরও প্রকাশ করছে কিছু মিডিয়া। ছোট কিছু দলের জোট থেকে বের হয়ে গিয়ে অন্য জোট গঠনের ঘোষণার বিষয়টিও তারই অংশ। তিনি বলেন, দেশের মানুষ পরিবর্তনের জন্য উন্মুখ হয়ে বসে আছে। ৫ জানুয়ারি ভোটারবিহীন নির্বাচনের মধ্য দিয়ে ক্ষমতায় এসে বর্তমান সরকার সংবিধান সংশোধনের মতো বড় ধরনের কাজ করে ফেলেছে। এগুলো দেশের জনগণ ভালোভাবে নিতে পারছে না। ধারাবাহিকতা রক্ষার নির্বাচনের নামে ভোটারবিহীন নির্বাচনে ক্ষমতা দখল করে নতুন নির্বাচন না দিয়ে পাঁচ বছর ক্ষমতায় থেকে যাওয়ার যে কথা সরকারের পক্ষ থেকে প্রচার করা হচ্ছে এটা জনগণকে আরো ক্ষুব্ধ করে তুলেছে। এই অবস্থা দেশে পরিবর্তন অত্যাসন্ন এবং এ জন্য কার্যকর আন্দোলন জনগণের ব্যাপক অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে শিগগিরই লক্ষ করা যাবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। জোটের শরিক জাগপার সভাপতি শফিউল আলম প্রধান বলেন, মিডিয়ায় এবং নেতাকর্মীরা একটি ভুল শব্দ প্রয়োগ করার কারণে কিছুটা ভুল বোঝাবুুঝিরও সৃষ্টি হয়। ‘বিএনপির নেতৃত্বাধীন’ ২০ দলীয় জোট বলে কিছু নেই। বিএনপি জোটের একটি শরিক দল এবং নিঃসন্দেহে সবচেয়ে বড় শরিক দল। বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া হচ্ছেন জোটের নেত্রী। ফলে ‘খালেদা জিয়ার নেতৃত্বাধীন’ ২০ দলীয় জোট বলাটাই হচ্ছে সঠিক। তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে জোট সঠিক পথেই যাচ্ছে। আমার দল বেগম জিয়ার কাছ থেকে এ পর্যন্ত কোনো বিমাতাসুলভ আচরণ কিংবা অবমূল্যায়ন পায়নি। তিনি বলেন, বেগম জিয়া আন্দোলনের ক্ষেত্রে কৌশল অবলম্বন করছেন। এটাই স্বাভাবিক। যারা এখন নানা কথা বলে বের হয়ে গিয়ে জোট গঠনের ঘোষণা দিচ্ছেন এটা আসলে গোয়েন্দাদের খেলা। এমন খেলা এরশাদের আমলে এবং ১/১১-এর সময়ও হয়েছিল। এগুলোতে শেষ পর্যন্ত কিছুই হয় না। এতে ২০ দলীয় জোটেরও কোনো ক্ষতি হবে না। খেলাফত মজলিসের আমির অধ্যক্ষ মাওলানা মোহাম্মদ ইসহাক বলেন, এই জালিম সরকারকে সরাতে হলে আগেই ঢাকঢোল বাজিয়ে কিছু করা যাবে না। এরা ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য শেষ পর্যন্ত চেষ্টা করে যাবে। ফলে কৌশলে আন্দোলনকে সফলতার দিকে নিয়ে যাওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ। সেটাই হচ্ছে। হয়তো জালিম সরকার আগের মতোই জুলুম-নির্যাতন চালানোর পথ বেছে নেবে। এর মধ্য দিয়েই সামনে একটা কিছু হবে। এ ব্যাপারে আমরা দৃঢ় আশাবাদী। কারণ এভাবে জনগণের ভোট ছাড়াই ভোটারবিহীন নামমাত্র নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত সরকার দিয়ে একটি দেশ চলতে পারে না। ইসলামী ঐক্যজোটের মহাসচিব মুফতি ফয়জুল্লাহ বলেন, কার্যকর আন্দোলনের ব্যাপারে আমরা আগের চেয়ে অনেক বেশি আশাবাদী। আমাদের কাছে মনে হচ্ছে, আন্দোলন এখন সঠিক পথেই অগ্রসর হচ্ছে। সরকারের উসকানিতে অপরিণামদর্শী কর্মসূচি দিয়ে ফলাফলবিহীন আন্দোলনের কোনো মানে নেই। অতীতের তিক্ত অভিজ্ঞতা সবার সামনে। তিনি বলেন, পরিস্থিতি যা দাঁড়িয়েছে তাতে আগাম ঘোষণা দিয়ে আন্দোলনের রূপরেখা প্রকাশ করে আন্দোলনে সফল হওয়ার সম্ভাবনা কম। কারণ সরকার স্বৈরাচার থেকে ভয়াবহ স্বৈরাচারে রূপ নিতে নানা পন্থা অবলম্বন করছে। এই অবস্থায় জোটের নেত্রী কৌশলী কর্মসূচি নিয়ে যেভাবে এগোচ্ছেন সেটাকে আমরা সঠিকই মনে করছি। তিনি বলেন, আমাদের বিশ্বাস আগামী ঈদের পর থেকে দেশে মূল আন্দোলন শুরু হবে এবং দ্রুততম সময়ে দেশে পরিবর্তন আসার মতো পরিস্থিতি তৈরি হবে। জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মহাসচিব মুফতি মোহাম্মদ ওয়াক্কাসের কাছে এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আন্দোলন কর্মসূচি দেয়া হচ্ছে, আরো কঠোর কর্মসূচি আসবে। কী হবে আল্লাহ তায়ালাই ভালো জানেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ একটি ব্যবস্থা করে দেবেন। কারণ দেশে বতমানে যে অবস্থা বিরাজ করছে এটা মেনে নেয়া যায় না। ঘরে-বাইরে কোথাও মানুষ নিরাপদ নয়। সরকার দেশের মানুষকে তোয়াক্কা না করে যা খুশি করে যাচ্ছে। এটা অস্বাভাবিক পরিস্থিতি। এমন পরিস্থিতি স্থায়ী হয় না। শিগগিরই আল্লাহ পরিবর্তনের ব্যবস্থা করবেন বলে আমরা আশাবাদী। এনপিপির চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ বলেন, জোট থেকে বের হয়ে যারা নতুন জোট করছেন তারা কিছুই করতে পারবেন না। তারা নামসর্বস্ব দল। তৃতীয় রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে তাদের দাঁড়ানোর কোনো সম্ভাবনা নেই। তারা সরকারের ইন্ধনে গোয়েন্দাদের দ্বারা পরিচালিত। তিনি বলেন, আন্দোলনের সূচনা হয়েছে। ইতোমধ্যেই হরতাল হয়েছে। বেগম জিয়া ঢাকার বাইরে সফর করছেন। যে আন্দোলনের সূচনা হয়েছে তা তীব্র হয়ে সরকার পতন আন্দোলনে রূপ নেবে। তিনি বলেন, জোটের কর্মসূচি প্রণয়নে শরিকদের সাথে আলোচনা না করার অভিযোগ সঠিক নয়। সোমবারের হরতালের সিদ্ধান্ত জোটের শরিকদের সাথে আলোচনা করেই নেয়া হয়েছিল।
Headlines from most popular newspapers of Bangladesh. বাংলাদেশে প্রকাশিত প্রধান প্রধান দৈনিক পত্রিকার সংবাদ শিরোনামগুলো এক নজরে দেখে নিন।
Saturday, September 27, 2014
এবার কার্যকর আন্দোলনে আশাবাদী শরিকেরা:নয়াদিগন্ত
র মধ্য দিয়ে যে সূচনা হয়েছে সেটিও পরিকল্পনারই অংশ। সরকারের আচরণ ও মনোভাব এবং অতীত অভিজ্ঞতাকে সামনে রেখেই এবার আন্দোলনের ছক আঁকা হয়েছে এবং চূড়ান্ত কার্যকর আন্দোলনের মাধ্যমেই দাবি আদায় হবে। ২০ দলীয় জোটের শরিকদের বেশ কয়েকটির শীর্ষ নেতাদের সাথে কথা বলে আন্দোলন প্রশ্নে তাদের এই মনোভাব জানা গেছে। জোটের ছোট কয়েকটি শরিক দলের কয়েকজন নেতার জোট থেকে বের হয়ে আলাদা জোট গঠনের দিকটিকে অন্য শরিকেরা আমলে নিচ্ছেন না বলেই তারা জানিয়েছেন। তারা মনে করছেন, সরকারের ইচ্ছায় গোয়েন্দাদের চালে শরিকদের কয়েকটি দলের কিছু নেতা জোট ত্যাগ করে জোটের আন্দোলনকে ক্ষতিগ্রস্ত করার অপপ্রয়াসে লিপ্ত হয়েছেন। কিন্তু এই তৎপরতা জোটের জন্য কিছুটা বিব্রতকর হলেও কার্যত জোটের রাজনীতি ও আন্দোলনে এর কোনো প্রভাব পড়বে না। দেশের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় মানুষের আকাক্সা অনুুযায়ী দ্রুততম সময়েই দেশে একটি পরিবর্তন আসবেÑ এমন প্রবল সম্ভাবনার কথাই জানিয়েছেন তারা। বিএনপিসহ তখনকার সব বিরোধী দলের বর্জনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠিত ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের পর এখন পর্যন্ত বড় ধরনের আন্দোলন কর্মসূচিতে যায়নি বিরোধী দল। ঈদের পর কঠোর কর্মসূচি দেয়ার কথা বলা হলেও সর্বশেষ ফিলিস্তিনে গণহত্যা, জাতীয় সম্প্রচার নীতিমালা এবং সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বিল পাসের প্রতিবাদে ২০ দলীয় জোট একটি হরতালসহ বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে। সর্বশেষ গত সোমবার সংবিধান সংশোধনের প্রতিবাদে দিনব্যাপী হরতাল পালিত হয়। কঠোর আন্দোলনের ঘোষণা দিয়ে শেষ পর্যন্ত ‘নরম কর্মসূচি’ দেয়া নিয়ে জোটের ভেতরে-বাইরে বেশ আলোচনা-সমালোচনাও চলছে। জোটের কয়েকটি ছোট দলের কিছু নেতা আন্দোলন প্রশ্নে শরিকদের সাথে পরামর্শ না করা এবং কার্যকর আন্দোলন কর্মসূচি না দেয়াসহ জোটে তাদের মূল্যায়ন না করার অভিযোগ সামনে এনে জোট থেকে বের হয়ে যায়। বের হয়ে যাওয়া দলগুলোর নেতারা বৃহস্পতিবার একটি নতুন জোট গঠনের ঘোষণা দেন। তবে ওইসব দল বিকল্প নেতৃত্বে এখনো জোটেই রয়েছে। তবে জোটের কর্মসূচি প্রণয়নে শরিকদেরও আরো ঘনিষ্ঠভাবে সম্পৃক্ত করা নিয়ে শরিক আরো কিছু দলের মধ্যেও কিছুটা ক্ষোভ ও হতাশা দেখা দিয়েছিল। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে কিছু কৌশলী কর্মসূচির পরিপ্রেক্ষিতে তাদের সেই ক্ষোভ-হতাশা অনেকটাই কেটে গেছে। এখন তারা বেগম জিয়ার নেতৃত্বে একটি কার্যকর আন্দোলনের ব্যাপারে আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি আশাবাদী। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে জোটের অন্যতম প্রধান শরিক জামায়াতে ইসলামীর নীতিনির্ধারণী ফোরাম নির্বাহী পরিষদের একজন সদস্য বলেন, জামায়াত জোটের আন্দোলনের ব্যাপারে কখনো হতাশ হয়নি। আন্দোলনের কর্মসূচি নির্ধারণে জোট নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে জোটের শীর্ষ বৈঠকেই ক্ষমতা দেয়া হয়েছে। আর চূড়ান্ত কর্মসূচি জোটের বৈঠকে আলোচনা করেই ঘোষণা করা হয়। ফলে এ নিয়ে প্রশ্ন তোলার কোনো সুযোগ নেই। তা ছাড়া তিনি যখন যাদের সাথে আলোচনা করা প্রয়োজন তা অবশ্যই করছেন। আন্দোলন একটি কৌশলের বিষয়। যখন যে কর্মসূচি এসেছে জামায়াত সর্বশক্তি দিয়ে তা বাস্তবায়নের চেষ্টা করছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জামায়াতের এই নেতা বলেন, জোটে ভাঙন ধরানো এবং জোটের আন্দোলনকে ক্ষতিগ্রস্ত করার জন্য নানা তৎপরতার অংশ হিসেবেই সরকারের সাথে জামায়াতের আঁতাতের কাল্পনিক খবরও প্রকাশ করছে কিছু মিডিয়া। ছোট কিছু দলের জোট থেকে বের হয়ে গিয়ে অন্য জোট গঠনের ঘোষণার বিষয়টিও তারই অংশ। তিনি বলেন, দেশের মানুষ পরিবর্তনের জন্য উন্মুখ হয়ে বসে আছে। ৫ জানুয়ারি ভোটারবিহীন নির্বাচনের মধ্য দিয়ে ক্ষমতায় এসে বর্তমান সরকার সংবিধান সংশোধনের মতো বড় ধরনের কাজ করে ফেলেছে। এগুলো দেশের জনগণ ভালোভাবে নিতে পারছে না। ধারাবাহিকতা রক্ষার নির্বাচনের নামে ভোটারবিহীন নির্বাচনে ক্ষমতা দখল করে নতুন নির্বাচন না দিয়ে পাঁচ বছর ক্ষমতায় থেকে যাওয়ার যে কথা সরকারের পক্ষ থেকে প্রচার করা হচ্ছে এটা জনগণকে আরো ক্ষুব্ধ করে তুলেছে। এই অবস্থা দেশে পরিবর্তন অত্যাসন্ন এবং এ জন্য কার্যকর আন্দোলন জনগণের ব্যাপক অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে শিগগিরই লক্ষ করা যাবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। জোটের শরিক জাগপার সভাপতি শফিউল আলম প্রধান বলেন, মিডিয়ায় এবং নেতাকর্মীরা একটি ভুল শব্দ প্রয়োগ করার কারণে কিছুটা ভুল বোঝাবুুঝিরও সৃষ্টি হয়। ‘বিএনপির নেতৃত্বাধীন’ ২০ দলীয় জোট বলে কিছু নেই। বিএনপি জোটের একটি শরিক দল এবং নিঃসন্দেহে সবচেয়ে বড় শরিক দল। বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া হচ্ছেন জোটের নেত্রী। ফলে ‘খালেদা জিয়ার নেতৃত্বাধীন’ ২০ দলীয় জোট বলাটাই হচ্ছে সঠিক। তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে জোট সঠিক পথেই যাচ্ছে। আমার দল বেগম জিয়ার কাছ থেকে এ পর্যন্ত কোনো বিমাতাসুলভ আচরণ কিংবা অবমূল্যায়ন পায়নি। তিনি বলেন, বেগম জিয়া আন্দোলনের ক্ষেত্রে কৌশল অবলম্বন করছেন। এটাই স্বাভাবিক। যারা এখন নানা কথা বলে বের হয়ে গিয়ে জোট গঠনের ঘোষণা দিচ্ছেন এটা আসলে গোয়েন্দাদের খেলা। এমন খেলা এরশাদের আমলে এবং ১/১১-এর সময়ও হয়েছিল। এগুলোতে শেষ পর্যন্ত কিছুই হয় না। এতে ২০ দলীয় জোটেরও কোনো ক্ষতি হবে না। খেলাফত মজলিসের আমির অধ্যক্ষ মাওলানা মোহাম্মদ ইসহাক বলেন, এই জালিম সরকারকে সরাতে হলে আগেই ঢাকঢোল বাজিয়ে কিছু করা যাবে না। এরা ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য শেষ পর্যন্ত চেষ্টা করে যাবে। ফলে কৌশলে আন্দোলনকে সফলতার দিকে নিয়ে যাওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ। সেটাই হচ্ছে। হয়তো জালিম সরকার আগের মতোই জুলুম-নির্যাতন চালানোর পথ বেছে নেবে। এর মধ্য দিয়েই সামনে একটা কিছু হবে। এ ব্যাপারে আমরা দৃঢ় আশাবাদী। কারণ এভাবে জনগণের ভোট ছাড়াই ভোটারবিহীন নামমাত্র নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত সরকার দিয়ে একটি দেশ চলতে পারে না। ইসলামী ঐক্যজোটের মহাসচিব মুফতি ফয়জুল্লাহ বলেন, কার্যকর আন্দোলনের ব্যাপারে আমরা আগের চেয়ে অনেক বেশি আশাবাদী। আমাদের কাছে মনে হচ্ছে, আন্দোলন এখন সঠিক পথেই অগ্রসর হচ্ছে। সরকারের উসকানিতে অপরিণামদর্শী কর্মসূচি দিয়ে ফলাফলবিহীন আন্দোলনের কোনো মানে নেই। অতীতের তিক্ত অভিজ্ঞতা সবার সামনে। তিনি বলেন, পরিস্থিতি যা দাঁড়িয়েছে তাতে আগাম ঘোষণা দিয়ে আন্দোলনের রূপরেখা প্রকাশ করে আন্দোলনে সফল হওয়ার সম্ভাবনা কম। কারণ সরকার স্বৈরাচার থেকে ভয়াবহ স্বৈরাচারে রূপ নিতে নানা পন্থা অবলম্বন করছে। এই অবস্থায় জোটের নেত্রী কৌশলী কর্মসূচি নিয়ে যেভাবে এগোচ্ছেন সেটাকে আমরা সঠিকই মনে করছি। তিনি বলেন, আমাদের বিশ্বাস আগামী ঈদের পর থেকে দেশে মূল আন্দোলন শুরু হবে এবং দ্রুততম সময়ে দেশে পরিবর্তন আসার মতো পরিস্থিতি তৈরি হবে। জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মহাসচিব মুফতি মোহাম্মদ ওয়াক্কাসের কাছে এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আন্দোলন কর্মসূচি দেয়া হচ্ছে, আরো কঠোর কর্মসূচি আসবে। কী হবে আল্লাহ তায়ালাই ভালো জানেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ একটি ব্যবস্থা করে দেবেন। কারণ দেশে বতমানে যে অবস্থা বিরাজ করছে এটা মেনে নেয়া যায় না। ঘরে-বাইরে কোথাও মানুষ নিরাপদ নয়। সরকার দেশের মানুষকে তোয়াক্কা না করে যা খুশি করে যাচ্ছে। এটা অস্বাভাবিক পরিস্থিতি। এমন পরিস্থিতি স্থায়ী হয় না। শিগগিরই আল্লাহ পরিবর্তনের ব্যবস্থা করবেন বলে আমরা আশাবাদী। এনপিপির চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ বলেন, জোট থেকে বের হয়ে যারা নতুন জোট করছেন তারা কিছুই করতে পারবেন না। তারা নামসর্বস্ব দল। তৃতীয় রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে তাদের দাঁড়ানোর কোনো সম্ভাবনা নেই। তারা সরকারের ইন্ধনে গোয়েন্দাদের দ্বারা পরিচালিত। তিনি বলেন, আন্দোলনের সূচনা হয়েছে। ইতোমধ্যেই হরতাল হয়েছে। বেগম জিয়া ঢাকার বাইরে সফর করছেন। যে আন্দোলনের সূচনা হয়েছে তা তীব্র হয়ে সরকার পতন আন্দোলনে রূপ নেবে। তিনি বলেন, জোটের কর্মসূচি প্রণয়নে শরিকদের সাথে আলোচনা না করার অভিযোগ সঠিক নয়। সোমবারের হরতালের সিদ্ধান্ত জোটের শরিকদের সাথে আলোচনা করেই নেয়া হয়েছিল।
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment