ইরাক ও সিরিয়ায় ইসলামিক স্টেটের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে বিমান হামলা অব্যাহত রয়েছে। গতকাল মার্কিন সামরিক বাহিনী জানায়,তারা ইরাক ও সিরিয়ায় আইএসের বিরুদ্ধে নতুন করে বিমান হামলা চালিয়েছে। ইরাকের রাজধানী বাগদাদের পশ্চিমে আইএসের দুটি গাড়ি ও অস্ত্রভান্ডার ধ্বংস হয়ে গেছে। তাছাড়া ইরবিলে আইএস যোদ্ধাদের লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়। তেমনি সিরিয়া-ইরাক সীমান্তে আবু কামালের কাছে আইএসের আটটি ড়াড়ি ধ্বংস হ
য়ে যায় মার্কিন নেতৃত্বাধীন হামলায়। সিরিয়ার পূর্বাঞ্চলে দেইর আল জৌরে আইিএসের আরো দুটি গাড়ি ধ্বংস হয়। সিরিয়ার সরকারবিরোধীরা জানিয়েছেন, কুর্দি শহর কোবানের পাশে বিমান হামলা চালানো হয়। শহরটি কয়েক দিন ধরে অবরোধ করে রেখেছে আইএস যোদ্ধারা। প্রত্যক্ষদর্শীরা তুরস্ক থেকে দুইটি যুদ্ধবিমান উড়ে আসার কথা জানিয়েছেন। কিন্তু আইএসবিরোধী যুদ্ধে তুরস্কের বিমানঘাঁটি কিংবা আকাশ ব্যবহার হওয়ার কথা অস্বীকার করেছেন দেশটির কর্মকর্তারা। এ দিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা বলেছেন, ইসলামিক স্টেটের (আইএস) বিরুদ্ধে মার্কিন নেতৃত্বাধীন বিমান হামলা স্পষ্টই এ বার্তাই দিয়েছে যে তাদের দমনে বিশ্ব একাট্টা। গত মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলে বিমান হামলায় বেশ কিছু সংখ্যক আইএস ও আল কায়েদা যোদ্ধা নিহত হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। যুক্তরাষ্ট্রের সাথে যৌথ এ হামলায় যোগ দিয়েছে বাহরাইন, জর্দান, কাতার, সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাত। এ পদক্ষেপের জন্য আরব নেতাদের ধন্যবাদ জানিয়ে ওবামা মঙ্গলবার বলেন, অনেকটা নজিরবিহীন এ যৌথ প্রচেষ্টার কারণে আমি মনে করি বিশ্ব যে একাট্টা এ বিষয়ে একটি স্পষ্ট বার্তা পাঠানোর সুযোগ আমাদের তৈরি হয়েছে। তিনি বলেন, যে কারো কাছে বিষয়টি স্পষ্ট যারা আমেরিকার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করবে কিংবা আমেরিকানদের ক্ষতি করার চেষ্টা করবে তাদেরকে সহ্য করা হবে না। সোমবার সিরিয়ায় আইএসের বিরুদ্ধে প্রথমবারের মতো বিমান হামলা চালায় যুক্তরাষ্ট্র ও পাঁচটি আরব দেশ। এর কয়েক ঘণ্টা পর বিষয়টি নিয়ে কথা বলেন যুক্তরাষ্ট্রের পেসিডেন্ট বারাক ওবামা। তিনি জানিয়েছেন, ‘এই দেশগুলোর সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দাঁড়াতে পেরে যুক্তরাষ্ট্র গর্বিত’Ñ বলেন ওবামা। আইএস সিরিয়া ও ইরাকের অনেক অঞ্চল নিজেদের দখলে নিয়ে নিয়েছে। আগস্ট থেকে ইরাকের আইএসের বিরুদ্ধে বিমান হামলা চালানো শুরু করে যুক্তরাষ্ট্র। এখন পর্যন্ত প্রায় ২০০ বার সেখানে বিমান হামলা চালিয়েছে দেশটি। উত্তর-পূর্ব সিরিয়ার রাক্কায় আইএস এর প্রধান কার্যালয়। সোমবার সেখানেও বিমান হামলা চালানো হয়। এ ছাড়া আইএসের প্রশিণ এলাকা, যানবাহন এবং গুদামেও হামলা চালানো হয়েছে। আরেক গোষ্ঠী ‘খোরাসান গ্রুপ’-এর ওপরও হামলা চালানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ওবামা। তিনি বলেন, ‘আমাদের জনগণকে হুমকি দেয়া সন্ত্রাসীদের জন্য কোনো নিরাপদ স্থান আমরা থাকতে দেবো না।’ তবে আইএসকে দমনে বেশ কয়েক বছর সময় লাগতে পারে বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির সামরিক বাহিনীর এক মুখপাত্র বিবিসিকে এ কথা জানিয়েছেন। রিয়ার অ্যাডমিরাল জন কিরবি আরো বলেন, সিরিয়ায় শুরু করা যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন বিমান হামলা এরই মধ্যে আইএসকে অনেকটা দুর্বল করে দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি জানিয়েছেন, সিরিয়ায় আইএসবিরোধী হামলায় যোগ দিতে ৫০টিরও বেশি দেশ সম্মত হয়েছে।
No comments:
Post a Comment