Tuesday, October 14, 2014

পরিচালকদের আগ্রাসী থাবায় ব্যাংকিং খাত:যুগান্তর

পরিচালকদের অনিয়ম আর দুর্নীতির আগ্রাসী থাবায় আক্রান্ত দেশের ব্যাংকিং খাত। ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের ওপর অযাচিত হস্তক্ষেপ ও বেআইনি প্রভাবে অধিকাংশ ব্যাংকই অর্থলোভী পরিচালকদের লুটপাটের আখড়ায় পরিণত হয়েছে। কয়েক কোটি টাকা পুঁজি নিয়ে ব্যাংকের উদ্যোক্তা পরিচালক হয়েছেন, এমন অনেকেই এখন শত শত কোটি টাকার মালিক। নিজেদের ব্যাংক থেকে এরা নামে-বেনামে ঋণ নিয়েছেন। এর পাশাপাশি তারা অন্য ব্যাংক থেকেও শত শত কোটি টাকার ঋ
ণ নিয়ে স্থাপন করেছেন দৃষ্টান্ত। অনেক পরিচালক জড়িয়ে পড়ছেন বড় ধরনের ঋণ অনিয়ম ও জালিয়াতিতে। শুধু নিজ ব্যাংক থেকেই পরিচালকদের নামে ঋণ নেয়া হয়েছে ৩ হাজার ৭২২ কোটি টাকা। বেনামে নেয়া ঋণের পরিমাণ এর চেয়ে বেশি। শুধু পরিচালকরা নয়, জনগণের আমানতের টাকায় গড়ে ওঠা এসব ব্যাংক থেকে তাদের আত্মীয়স্বজন ও বন্ধুবান্ধবরাও ক্ষমতার জোরে নিয়মবহির্ভূত ঋণ নিয়েছেন। আর এসবই ঘটেছে বাংলাদেশ ব্যাংকের যথাযথ তদারকির অভাবে। এ প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ যুগান্তরকে বলেন, ব্যাংক পরিচালকদের ঋণের ব্যাপারে বিস্তর অভিযোগ আগেও আসত। তিনি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর থাকার সময়ও এগুলো তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হতো। এখন ব্যবস্থা নেয়ার প্রবণতা কমে গেছে। ফলে পরিচালকরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন। যে কারণে ব্যাংকের পর্ষদ এখন প্রকাশ্যেই বড় ধরনের অনিয়মের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছে। তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংক বেসিক ও সোনালী ব্যাংকের ব্যাপারে যে পদক্ষেপ নিয়েছে সেটি আরও অনেক আগে নেয়া উচিত ছিল। তাহলে হয়তো জালিয়াতির পরিমাণ আরও কমানো যেত। তার মতে, বেসরকারি ব্যাংকগুলোতে তদারকি আরও জোরদার করা উচিত। সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, শুধু ব্যাংক পরিচালক হওয়ার কারণে তারা বেআইনিভাবে বাড়তি সুবিধা নিয়ে দুই হাত খুলে ঋণ নিয়েছেন। কম মূল্যের জমি বহুগুণ বাড়িয়ে, এমনকি একই জমি একাধিক ব্যাংকের কাছে বন্ধক রেখেও ঋণ নেয়ার ঘটনা ঘটছে। ব্যাংক কর্মকর্তারা চাকরি হারানোর ভয়ে এসব অনৈতিক কর্মকাণ্ডে সহায়তা করতে বাধ্য হয়েছেন। এভাবে কিছু অসাধু পরিচালকের স্বনামে ও বেনামি ঋণের ভারে আক্রান্ত হয়ে পড়েছে ব্যাংকিং খাত। এদিকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক নানা ধরনের বিধিবিধান করেও পরিচালকদের বেআইনি ঋণ সুবিধা নেয়ার ঘটনা ঠেকাতে পারছে না। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিধিনিষেধের ফলে এখন পরিচালকরা পরস্পরের যোগসাজশে অন্য ব্যাংক থেকে ঋণ নিচ্ছেন। এসব ঋণের মান নিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রশ্ন তুলেছে। অনেক ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থাও নেয়া হচ্ছে। ঋণের বাইরেও তারা নামে-বেনামে নিজ ব্যাংক থেকে নানা ধরনের সুবিধা নিচ্ছেন। এর মধ্যে কয়েকটি ব্যাংকে পরিচালকরা রীতিমতো লুটপাট করেছেন। দেরিতে হলেও কেন্দ্রীয় ব্যাংক সরকারি-বেসরকারি ব্যাংকগুলোর পরিচালকদের কর্মকাণ্ড ‘বৃত্তের ভেতরে বা আইনের মধ্যে’ আনাতে নানামুখী উদ্যোগ নিয়েছে। আইনি কাঠামো বাস্তবায়নের পাশাপাশি নৈতিক ভিত্তিসম্পন্ন এবং ব্যাংকিং ব্যবসার ধরন সম্পর্কে অভিজ্ঞদের পরিচালক নিয়োগের দিকে নজর দিয়েছে। পরিচালকদের বেআইনি কর্মকাণ্ড তদন্ত করে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার প্রক্রিয়াও শুরু করেছে। সূত্র জানায়, গত কয়েক বছরে ব্যাংকগুলোতে পরিচালকদের হস্তক্ষেপে বেশ কিছু আলোচিত জালিয়াতির ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে কতিপয় পরিচালকের সংশ্লিষ্টতায় সোনালী ব্যাংকে ঘটেছে হলমার্ক কেলেঙ্কারি। ফলে সোনালী ব্যাংকের খোয়া গেছে ২ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। ব্যাংকের চট্ট্রগ্রামের আগ্রাবাদ ও লালদীঘি শাখায় জালিয়াতির ঘটনায় স্থানীয় একজন পরিচালকের যোগসূত্র রয়েছে বলে ব্যাংকের তদন্তে বেরিয়ে এসেছে। ওই দুই শাখায় প্রায় ৫০০ কোটি টাকার ঋণ জালিয়াতি হয়েছে। ব্যাংকের স্থানীয় কার্যালয়ে ১ হাজার ৬০০ কোটি টাকার ঋণ জালিয়াতিতেও পরিচালকদের হাত রয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। অগ্রণী ব্যাংকেও ঋণ বিতরণে পরিচালকদের বেআইনি সুবিধা নেয়ার অভিযোগ রয়েছে। পরিচালকদের কারণে জনতা ব্যাংকের আর্থিক অবস্থা খারাপ হয়েছে বলে খোদ অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত অভিযোগ করেছেন। বেসিক ব্যাংকের চেয়ারম্যান আবদুল হাই বাচ্চুর যোগসাজশে হয়েছে নজিরবিহীন লুটপাট। এই ব্যাংক থেকে আত্মসাৎ হয়েছে প্রায় সাড়ে ৫ হাজার কোটি টাকা। কয়েকটি ব্যাংকের পরিচালকদের সংশ্লিষ্টতায় ঘটেছে বিসমিল্লাহ গ্র“পের ঋণ জালিয়াতি। তাদের মাধ্যমে দেশ থেকে পাচার হয়েছে প্রায় ১ হাজার ২০০ কোটি টাকা। পরিচালকদের হস্তক্ষেপে গত বছর অগ্রণী ব্যাংকের সিএসআরের টাকা নিয়ে বড় ধরনের নয়ছয় হয়েছে। সিএসআরের টাকা নিয়ে প্রাইম ব্যাংকেও জালিয়াতি করেছেন পরিচালকরা। নিজ ব্যাংক থেকে ঋণ : কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিধি অনুযায়ী পরিচালকরা নিজ ব্যাংক থেকে তাদের মোট শেয়ারের ৫০ শতাংশের বেশি ঋণ নিতে পারেন না। ফলে নিজ ব্যাংক থেকে তাদের ঋণ নেয়ার পরিমাণ কমে গেছে। তবে অন্য ব্যাংক থেকে তাদের ঋণ নিতে কোনো বাধা নেই। ফলে পরিচালকরা এখন পরস্পরের যোগসাজশে একে অন্যের ব্যাংক থেকে যেমন ঋণ নিচ্ছে, তেমনি প্রভাব খাটিয়ে নিচ্ছে নানা সুযোগ-সুবিধা। এসব ঋণের বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই নীতিমালা উপেক্ষা করা হয়েছে। ঋণের বিপরীতে জামানত ফুলিয়ে-ফাঁপিয়ে দেখানোয় ভবিষ্যতে তা আদায় অনিশ্চিত হয়ে পড়ার আশংকা রয়েছে। এভাবে ঋণ নেয়ার ফলে পরিচালকদের ঋণের পরিমাণ ফুলে-ফেঁপে উঠছে। অথচ পরিচালকদের বাইরে অন্য উদ্যোক্তারা ঋণ নিতে গেলে শত রকমের শর্ত ও নিয়ম পালন করতে হয়। সূত্র জানায়, ব্যাংকিং খাতে নিজ ব্যাংক থেকে পরিচালকদের নেয়া ঋণের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ৭২২ কোটি টাকা। ২০১২ সালে এর পরিমাণ ছিল ২ হাজার ৪২২ কোটি টাকা। এক বছরের ব্যবধানে নিজ ব্যাংক থেকে পরিচালকদের নেয়া ঋণের পরিমাণ বেড়েছে ১ হাজার ৩০০ কোটি টাকা। নিজ ব্যাংক থেকে পরিচালকদের ঋণের মধ্যে রয়েছে- সিটি ব্যাংকে ২৭ কোটি, ন্যাশনাল ব্যাংকে ৩৭ কোটি, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকে ২৭ কোটি, এনসিসি ব্যাংকে ১ কোটি, সাউথইস্ট ব্যাংকে ৩১ কোটি, প্রাইম ব্যাংকে ৫৪ কোটি টাকা। ন্যাশনাল ব্যাংকে পরিচালক ও কর্মকর্তাদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট ঋণের পরিমাণ হচ্ছে ২ হাজার ৩৭ কোটি টাকা। অতি সম্প্রতি শাহজালাল ব্যাংকে বেনামি ঋণ নিয়ে পরিচালকদের অন্তঃকলহ প্রকাশ্যে রূপ নিয়েছে। ফলে বেড়েছে ব্যাংকের খেলাপি ঋণ ও প্রভিশন ঘাটতি। ব্যাংকের পরিচালক সোলায়মানের বিরুদ্ধে প্রায় ২০০ কোটি টাকার বেনামি ঋণের অভিযোগে মামলা করেছে ব্যাংকের বর্তমান ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ। যদিও সোলায়মান এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। ব্যাংকের পুরান ঢাকার একটি শাখায় পরিচালকদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রায় ২০০ কোটি টাকার ঋণের সন্ধান পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ সংশ্লিষ্ট পরিচালকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে। এবি ব্যাংকে পরিচালকদের হস্তক্ষেপে বেনামি ঋণ দেয়ার ঘটনা ধরা পড়েছে। উত্তরা ট্রেডার্সের নামে ৮০ কোটি টাকা ঋণ দেয়া হয়েছে। ঋণের সুবিধাভোগী অন্য একটি বেসরকারি ব্যাংকের পরিচালক। প্রিমিয়ার ব্যাংক পরিচালক বিএইচ হারুনের বিরুদ্ধে গ্রাহকের হিসাব থেকে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে। এ প্রসঙ্গে ব্যাংকের উদ্যোক্তা পরিচালকদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকসের (বিএবি) চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদার যুগান্তরকে বলেন, যখন ব্যাংক প্রতিষ্ঠিত হয়, তখন ঋণ নেয়ার এসব বিধিবিধান ছিল না। হঠাৎ নতুন নিয়ম করায় পরিচালকরা বিপদে পড়েছেন। মনে রাখতে হবে পরিচালকরাও ব্যবসায়ী। তারা ব্যাংক থেকে ঋণ নেবেন এটাই স্বাভাবিক। তবে নিয়মের মধ্যে নিচ্ছেন কিনা তা খতিয়ে দেখতে হবে। তিনি পরিচালকদের হস্তক্ষেপে সংঘটিত অনিয়মকে বিচ্ছন্ন ঘটনা হিসেবে মন্তব্য করে বলেন, দীর্ঘ সময় ধরে চলা মন্দার পরও বেসরকারি ব্যাংকগুলো এখনও শক্ত ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়ে আছে। প্রতি বছর ভালো লভ্যাংশ দিচ্ছে। তিনি বলেন, সরকারি ব্যাংকের সঙ্গে বেসরকারি ব্যাংকগুলোর তুলনা করা চলে না। ঋণের বেড়াজাল : কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিধিনিষেধের ফলে পরিচালকরা এখন একে অন্যের ব্যাংক থেকে ঋণ নিচ্ছেন। ফলে দুপক্ষই নিজ নিজ ব্যাংকে সুবিধা দিচ্ছেন অন্য পরিচালকদের। ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক থেকে অন্য ব্যাংকের পরিচালকরা ঋণ নিয়েছেন ১ হাজার ৫০৭ কোটি টাকা। ন্যাশনাল ব্যাংক থেকে অন্য ব্যাংক পরিচালকরা ঋণ নিয়েছেন প্রায় ৬ হাজার ৪০০ কোটি টাকা। এর মধ্যে সাউথবাংলা এগ্রিকালচারাল অ্যান্ড কমার্স ব্যাংকের পরিচালক মিজানুর রহমানের সানমুন গ্র“পের নামে রয়েছে ৬০ কোটি টাকা, চট্টগ্রামের একটি বড় শিল্প গ্র“পের নামে রয়েছে প্রায় ১ হাজার ৩২৫ কোটি টাকা, ঢাকার অপর একটি গ্র“পের নামে আছে প্রায় ৭০০ কোটি টাকা, এক্সিম ব্যাংকের পরিচালক নজরুল ইসলাম মজুমদারের নামে আছে প্রায় ৫০০ কোটি টাকা। বেসরকারি খাতের ফার্স্ট সিকিউরিটি ব্যাংকের একজন পরিচালকের নামে রয়েছে সবচেয়ে বেশি ঋণ। এর পরিমাণ প্রায় ৯ হাজার কোটি টাকা। ওই পরিচালক বিভিন্ন ব্যাংকে প্রভাব খাটিয়ে ঋণ নিয়েছেন। আইএফআইসি ব্যাংকের একজন পরিচালকের নামে বিভিন্ন ব্যাংক থেকে নামে-বেনামে নেয়া ঋণের পরিমাণ প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকা। ওই গ্রুপের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামে খেলাপি হওয়া ঋণকে খেলাপি বলা যাবে না মর্মে ১৭টি আদেশ রয়েছে উচ্চতর আদালত থেকে। এক্সিম ব্যাংকের পরিচালক নজরুল ইসলাম মজুমদার বিভিন্ন ব্যাংক থেকে প্রায় ৭০০ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছেন। ইউসিবি থেকে ইউনিটেক্স নামের একটি কোম্পানিকে দেয়া ৬০ কোটি টাকার ঋণ পরিচালকদের নামে দেখানোর নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এই ব্যাংকে নামে-বেনামে পরিচালকদের ঋণের পরিমাণ ছিল প্রায় ১৭৫ কোটি টাকা। এগুলোকে খেলাপি দেখিয়ে অবলোপন করা হয়েছে। এর বেশির ভাগ ঋণ নিয়েছেন ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান আক্তারুজ্জামান চৌধুরী বাবু। এই ব্যাংকে অন্য ব্যাংক পরিচালকদের ঋণের পরিমাণ প্রায় ৫০০ কোটি টাকা। ওয়ান ব্যাংকের পরিচালক সাঈদ হোসেন চৌধুরীর নামে বিভিন্ন ব্যাংকে ঋণের পরিমাণ হাজার কোটি টাকার বেশি। ব্যাংক এশিয়ার পরিচালক রউফ চৌধুরীর র‌্যাংগস গ্র“পের নামে ঋণের পরিমাণ প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকা। প্রাইম ব্যাংকের পরিচালক আজম জে চৌধুরীর নামে বিভিন্ন ব্যাংকে প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকার ঋণ রয়েছে। যমুনা ব্যাংকের পরিচালক গোলাম দস্তগীর গাজীর বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামে বিভিন্ন ব্যাংকে ঋণের পরিমাণ প্রায় হাজার কোটি টাকা, একই ব্যাংকের পরিচালক ফজলুর রহমানের সিটি গ্র“পের নামে ঋণের পরিমাণ প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকা। সাউথবাংলা এগ্রিকালচালাল ব্যাংকের পরিচালক আবদুল কাদির মোল্লার থার্মেক্স গ্রুপের নামে বিভিন্ন ব্যাংকে ঋণের পরিমাণ প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকা। এর বাইরে রয়েছে পরোক্ষ ঋণ। ব্যাংকের অপর পরিচালক মিজানুর রহমানের নামে বিভিন্ন ব্যাংকে ঋণের পরিমাণ প্রায় ১ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। বেসরকারি খাতের সিটি ব্যাংক ও ইউসিবি ব্যাংক একই পরিবারের মালিকানা রয়েছে। এই দুটি ব্যাংকের এককভাবে সবচেয়ে বেশি শেয়ার রয়েছে পারটেক্স গ্র“পের মালিক পক্ষের হাতে। ইউসিবির চেয়ারম্যান হচ্ছেন পারটেক্স গ্র“পের চেয়ারম্যান এম এ হাসেম এবং সিটি ব্যাংকের চেয়ারম্যান হচ্ছেন তার ছেলে রুবেল আজিজ। ব্যাংকিং খাতে এই গ্র“পের নামে ঋণের পরিমাণ প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকা। ব্যাংক এশিয়ার সাবেক পরিচালক আনিসুর রহমান সিনহার গ্রুপের নামে ঋণের পরিমাণ প্রায় ১ হাজার ২০০ কোটি টাকা। ব্যাংক পরিচালকদের বিষয়ে স্বয়ং অর্থমন্ত্রী সম্প্রতি প্রকাশ্যে বলেছেন, পর্ষদের কারণে জনতা ব্যাংকের অবস্থা খারাপ হয়েছে। তিনি আরও বলেছেন, রাজনৈতিক বিবেচনায় পরিচালক নিয়োগ করে সরকার ভুল করেছে। এ থেকে কোনো সুফল পাওয়া যায়নি। এক্সপোর্টার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ইএবি) সভাপতি ও প্রিমিয়ার ব্যাংকের পরিচালক আবদুস সালাম মুর্শেদী যুগান্তরকে বলেন, অর্থনীতির মূল নির্দেশক হচ্ছে ব্যাংক। দেশের বাইরেও ব্যাংকই অর্থনীতির প্রতিনিধিত্ব করে। যারা ব্যাংক চালায় তাদের নিয়ম মানা উচিত। আইন সব সময়ই কল্যাণের জন্য হয়। আইন মেনে ব্যাংক পরিচালনা করলে ব্যাংকও ভালো থাকবে, গ্রাহকরাও লাভবান হবে।  

No comments:

Post a Comment