পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হোসেন মাহমুদ আলী দাবি করেছেন, জাতিসঙ্ঘ মহাসচিব বান কি মুনের সাথে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বৈঠকে ৫ জানুয়ারির নির্বাচন বা মধ্যবর্তী নির্বাচনের সম্ভাবনা নিয়ে কোনো কথা হয়নি। জাতিসঙ্ঘ মহাসচিব বরং ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের পর দেশে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রশংসা করেছেন। সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘বিশ্বাস না হলে আপনারা জাতিসঙ্ঘ মহাসচিবকে জিজ্ঞাসা করে নিতে পারেন।
’ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জাতিসঙ্ঘ সাধারণ অধিবেশনে (ইউএনজিএ) যোগ দিতে নিউ ইয়র্ক সফরের বিষয়ে গতকাল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এক আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কথা বলেন। এর আগে বিরোধী দলের সাথে সংলাপের কথা বলায় জাতিসঙ্ঘে বাংলাদেশের সদস্য পদপ্রাপ্তির ৪০ বছর পূর্তি উপলক্ষে পত্রিকায় প্রকাশিত ক্রোড়পত্র থেকে বান কি মুনের বাণী বাদ দেয়া এবং প্রেসিডেন্ট আবদুল হামিদের সাথে জাতিসঙ্ঘ মহাসচিবের বৈঠকের ফলাফল বিকৃতভাবে প্রকাশ করায় পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্যের সত্যতা নিয়ে সাংবাদিকদের মধ্যে দ্বিধা থেকে যায়। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, গত ২৭ সেপ্টেম্বর ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সাথে বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ বছরের মে মাসে ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর এটিই ছিল দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে প্রথম দ্বিপক্ষীয় বৈঠক। এ সময় ভারতের প্রধানমন্ত্রী মন্তব্য করেন, বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন এবং তার সুযোগ্য কন্যা বাংলাদেশকে বাঁচিয়ে দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৈঠকে বিশেষ করে স্থলসীমানা চুক্তি ১৯৭৪-এর অনুসমর্থন এবং তিস্তা নদীর পানি বণ্টন চুক্তিসংক্রান্ত ইস্যুগুলোর দ্রুত নিষ্পত্তির বিষয়টি তুলে ধরেন। ভারতের প্রধানমন্ত্রী জানান, তার সরকার এ বিষয়গুলো সমাধানের লক্ষ্যে সক্রিয়ভাবে ও নিষ্ঠার সাথে কাজ করে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নেপাল ও ভুটানের সাথে বাংলাদেশের ট্রানজিটের ক্ষেত্রে ভারতের সহযোগিতা চান। ভারতের প্রধানমন্ত্রী সার্ক স্যাটেলাইট স্থাপনের বিষয়ে তার সরকারের উদ্যোগের কথা তুলে ধরেন। প্রধানমন্ত্রী মোদি দক্ষিণ এশিয়ার সব রাষ্ট্রকে সাথে নিয়ে আঞ্চলিক সহযোগিতা বৃদ্ধি ও উন্নয়নে কাজ করার আগ্রহ ব্যক্ত করেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে এ বিষয়ে একসাথে কাজ করার অভিপ্রায় ব্যক্ত করেন। সফরসঙ্গীর বিশাল বহর নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর ইউএনজিএতে যোগ দেয়ার যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিষয়টি ব্যাখ্যা করার জন্য পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হককে দায়িত্ব দেন। পররাষ্ট্র সচিব তখন বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সাথে অনেক বিশিষ্ট ব্যক্তি থাকেন। এবারো অনেকে ছিলেন। ইউএনজিএর সাইডলাইনে প্রায় ৫০টি ইভেন্ট ছিল। এসব ইভেন্টে প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গীরা যোগ দেন। এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মার্কিন নেতৃত্বাধীন আইএসবিরোধী জোটে বাংলাদেশের যোগ দেয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই।
No comments:
Post a Comment