Saturday, October 11, 2014

সহজে জামিন পেয়ে বারবার ব্যাংক লুট:কালের কন্ঠ

১৪ বছর আগের ঘটনা। এয়াকুব আলী ওরফে ফরহাদ নামে চট্টগ্রামের এক যুবক একটি দল গঠন করেছিল। রাতারাতি ধনী হওয়াই ছিল ওই দলের লক্ষ্য। এ জন্য এক ভয়ংকর মিশন শুরু করে তারা। নিরাপত্তার জাল ছিঁড়ে লাখ লাখ টাকা, স্বর্ণালংকারসহ মূল্যবান সামগ্রী লুট করার ফন্দি আঁটে দলটি। ২০০০ সালে সংঘবদ্ধ ওই দলে নাম লেখায় অন্তত ২৫ জন। প্রথমে তারা চট্টগ্রাম বন্দরে স্ক্র্যাপ লোহা ও অন্য মালামাল চুরি করত। কয়েক বছর পর তারা মোবাইল ফোন ও
জুয়েলারি দোকানে চুরি শুরু করে। দুটি মামলায় গ্রেপ্তার হওয়ার পর জামিনে ছাড়া পেয়ে দলনেতা এয়াকুব দুবাইয়ে পালিয়ে যায়। পরে দলের নেতা হয় সাতকানিয়ার শাকুর মাহমুদ ওরফে শুক্কুর। ২০০৭ সালে নতুন দলনেতার নির্দেশে ব্যাংকের ভল্ট ভেঙে টাকা লুটের মিশনে নামে দলটি। এই লুটেরা দল ঢাকার ব্র্যাক ব্যাংকের ভল্ট, রেল ভবন, ফরিদপুর-বগুড়া-রাউজানের তিনটি ব্যাংক এবং চট্টগ্রামের লালখান বাজারের ম্যাক্রোহান্টস, রিয়াজউদ্দিন বাজারের ইউনিভার্সাল জুয়েলারি, লাকী প্লাজার তিনটি, বহদ্দারহাটের একটি, বন্দর এলাকার একটি ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার একটি জুয়েলারি দোকান থেকে ৫০ কোটি টাকার বেশি স্বর্ণালংকার লুট করে বলে সন্দেহ করা হয়। কালের কণ্ঠের অনুসন্ধানে জানা গেছে, সবচেয়ে বড় ব্যাংক লুটের দুর্ধর্ষ এই দলের অন্তত ২৩ সদস্য এখন সক্রিয়। তাদের ১২ জন চুরির মামলায় গ্রেপ্তার হলেও জামিনে ছাড়া পেয়ে আবার অপকর্ম করে চলেছে। সর্বশেষ গত ২৬ সেপ্টেম্বর জয়পুরহাটের ব্র্যাক ব্যাংকের দেয়াল কেটে প্রায় দুই কোটি টাকা লুটের ঘটনার মূল হোতা ‘ভল্ট মাস্টার’ রাজা মিয়া এই গ্রুপের অন্যতম সদস্য। ২০০৮ সালে রাজধানীর ধানমণ্ডির কলাবাগানে ব্র্যাক ব্যাংকে আড়াই শ ভরি সোনা লুটের ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়ার পর জামিনে ছাড়া পায় রাজা। এরপর সে টাঙ্গাইল ও জামালপুরেও ব্যাংকে চুরি করে। বৃহস্পতিবার রাজার সঙ্গে গ্রেপ্তার হওয়া স্বপন দেবনাথও চট্টগ্রামের শুক্কুরের দলের সদস্য। ২০১২ সালে চট্টগ্রামের রিয়াজউদ্দিন বাজার এলাকায় গোল্ডেন প্লাজার ইউনিভার্সাল জুয়েলারি থেকে সাড়ে পাঁচ কেজি স্বর্ণালংকার চুরির মামলায় গ্রেপ্তার হয় সে। এরপর জামিনে ছাড়া পেয়ে রাজার সঙ্গে মিলে জয়পুরহাটের ব্যাংকে হানা দেয়। পুলিশ ও র‌্যাবের হাতে গ্রেপ্তারকৃতদের তথ্য মতে, চট্টগ্রামের শুক্কুরের দলসহ ব্যাংক ও মার্কেটে বড় চুরির পাঁচটি দল আছে। এসব দলে শতাধিক সদস্য আছে। তাদের মূল টার্গেট ব্যাংকগুলোর মফস্বল এলাকার শাখা। কখনো ছাদ কেটে ভেতরে ঢুকে, কখনো সুড়ঙ্গ তৈরি করে, কখনো অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে, আবার কখনো নিরাপত্তাকর্মীকে হত্যা করে ব্যাংকের সিন্দুক (ভল্ট) ভেঙে টাকা লুটের ঘটনা ঘটাচ্ছে তারা। পুলিশ ও র‌্যাবের দায়িত্বশীলরা বলছেন, গ্রেপ্তার করা হলেও জামিনে ছাড়া পেয়ে অপকর্মে সিদ্ধহস্ত আসামিরা একই কাজ করছে। কোটি কোটি টাকার সম্পদ লুট করলেও আইনগত সীমাবদ্ধতার কারণে এদের বিরুদ্ধে চুরির মামলা করা হয়। এই সুযোগে দুর্ধর্ষ লুটেরাচক্রের সদস্যরা সহজেই জামিন পাচ্ছে। এদিকে সহজে জামিন পাওয়ার বাস্তবতার কথা বলছেন আইনজীবীরাও। পাশাপাশি ব্যাংক লুটের আসামিদের ক্ষেত্রে চুরির ঘটনা তদন্তে এবং তদন্ত প্রতিবেদনে আরো সচেতন হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তাঁরা। ঢাকা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মোসলেহ উদ্দিন জসিম কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘মামলার মেরিটের ওপর নির্ভর করে আদালত জামিন দিয়ে থাকেন। এটি আদালতের এখতিয়ার। তবে স্বীকারোক্তি আদায় করা হলে, লুট হওয়া টাকা বা জিনিসপত্র উদ্ধার হলে জামিন পাওয়ার কথা নয়। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ব্যাংকে লুটের মামলায় সন্দেহজনক আসামি গ্রেপ্তার করে তদন্তকারীরা। এদের সঙ্গে ফাঁক গলে প্রকৃত দুর্ধর্ষ চোরও জামিন পেলে সেটা তদন্তের দুর্বলতাও হতে পারে।’ অ্যাডভোকেট মোসলেহ উদ্দিন আরো বলেন, ‘সাধারণ চুরির ঘটনায় দণ্ডবিধির ৩৮০ ধারায় মামলা হয়। সংরক্ষিত মজুদের ঘরে ঢুকে অর্থাৎ ব্যাংকে লুটের ঘটনায় ৪৬১ ধারা যুক্ত হবে। আর ঘরে তালা ভেঙে প্রবেশ করে চুরি করলে ৪৫৭ ধারায় মামলা হয়। ডাকাতির ধারা যুক্ত করতে হলে অস্ত্র প্রদর্শন, আঘাত, ভয়ভীতি প্রদর্শন এবং পাঁচ বা ততোধিক ব্যক্তির অপরাধ হতে হবে। ব্যাংকে চুরির জন্য দায়ের করা মামলা হালকা মামলা নয়। এ মামলায়ও সাত বছরের কারাদণ্ডের বিধান আছে।’ নাম প্রকাশ না করার শর্তে র‌্যাবের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, ‘ধানমণ্ডির ব্যাংকে লুটের ঘটনাটি চাঞ্চল্যকর। ছয় বছর আগে ঘটে যাওয়া এ ঘটনার বিচারকাজ আজও শেষ হয়নি। এই সুযোগে দুর্ধর্ষ আসামিরা জামিনে থেকে অপকর্ম করার সুযোগ পাচ্ছে। সবার ব্যাপারে আমাদের কাছে তথ্যও নেই।’ র‌্যাবের গোয়েন্দা শাখার পরিচালক লে. কর্নেল আবুল কালাম আজাদ কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘ভল্ট ভাঙতে পারদর্শী রাজা মিয়া ও স্বপন দেবনাথকে গ্রেপ্তারের পর আমরা তাদের জামিনে ছাড়া পেয়ে অব্যাহত অপকর্ম চালানোর তথ্য পেয়েছি। আমরা কিশোরগঞ্জ ও জয়পুরহাটের রহস্য উদ্ঘাটন করেছি। সংঘবদ্ধ চক্রের সদস্যদের গ্রেপ্তারে আমাদের নজরদারি আছে।’ এই গোয়েন্দা কর্মকর্তা আরো বলেন, ‘তবে কোটি কোটি টাকা লোপাট হলেও আইন অনুযায়ী চুরির মামলাই হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে চুরি এড়াতে ব্যাংকের নিজস্ব নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা জরুরি। পাশের ভবনে কারা থাকে, দেয়াল কেটে বা সিঁদ কেটে ঢোকা যায় কি না- এসব পরীক্ষা করা উচিত। এ ছাড়া সকিউরিটি অ্যালার্মও স্থাপন করা যেতে পারে। জয়পুরহাটের ব্র্যাক ব্যাংকের দেয়ালটি ছিল মাত্র পাঁচ ইঞ্চি পুরু।’ সর্বশেষ জয়পুরহাটে ব্র্যাক ব্যাংকের দেয়াল কেটে এক কোটি ৯৬ লাখ টাকা লুটের যে ঘটনা ঘটে, গতকাল পর্যন্ত পুলিশ ও র‌্যাব ওই ঘটনায় ৯ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। জয়পুরহাট থানার ওসি আব্দুর রশিদ সরকার গতকাল কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘দণ্ডবিধির ৩৮০ ধারায় এ মামলাটি করা হয়েছে। কোটি টাকা লুট হলেও ডাকাতির মামলা করার মতো কোনো ঘটনা ঘটেনি।’ অনুসন্ধানে জানা গেছে, জয়পুরহাটে চুরির মূল হোতা মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার নসকরপুর গ্রামের ভোলা মিয়ার ছেলে রাজা মিয়া। সে চট্টগ্রামের শুক্কুর সিন্ডিকেটের ‘ভল্ট মাস্টার’। ব্যাংকের যেকোনো ধরনের ভল্ট ভাঙতে তার ১০ থেকে ১৫ মিনিট সময় লাগে। ২০০৮ সালের ৫ জানুয়ারি ধানমণ্ডিতে মিরপুর রোডে হোটেল নীদমহলের দ্বিতীয় তলায় ব্র্যাক ব্যাংকের ছাদ কেটে ভেতরে ঢুকে চোরেরা ৭৫টি লকার ও ৬২টি ভল্ট থেকে স্বর্ণালংকার ও টাকা লুট করে। তদন্তের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কর্মকর্তারা তখন জানান, চোরেরা নকল চাবি ব্যবহার করে সহজেই ভল্ট খুলেছিল। আর এ কাজটি নিখুঁতভাবে করেছিল রাজা মিয়া। ডিবি পুলিশ রাজা মিয়া, সাহেব আলমসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে। মিরপুর থেকে উদ্ধার করা হয় ৫১ ভরি স্বর্ণালংকার। ঘটনায় রাজা মিয়া, সাহেব আলম চৌধুরী, মশিউর রহমান রাজু, ফজলুল হক, হাওয়া বিবি, আবু হানিফ, রুস্তম, দেব কুমার চন্দ, সুকুমার চক্রবর্তী, আবু তাহের, মাসুক, আবদুল মান্নান, মোহাম্মদ শাকুর, মাহমুদ ওরফে শুক্কুর, ইউসুফ আলী, আবদুল হালিম মোল্লা ও মোফাজ্জল হোসেন জড়িত ছিল বলে তথ্য পায় ডিবি। তবে দুই বছর কারাভোগ করার পরই জামিনে ছাড়া পেয়েছে রাজা মিয়াসহ চারজন। র‌্যাবের হাতে গ্রেপ্তারের পর রাজা মিয়া স্বীকার করেছে, কলাবাগানের ওই ঘটনা ছাড়াও জামালপুর ও টাঙ্গাইলে ব্যাংকে চুরির মামলা রয়েছে তার বিরুদ্ধে। ব্যাংক লুটে পারদর্শী রাজার সঙ্গে বাড্ডার একটি চুরির মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া শামীমের সম্পর্ক হয় জেলহাজতে। জামিনে ছাড়া পেয়ে তারা একাট্টা হয়। বরিশালের স্বর্ণা গ্রামের মোজাফফর আহম্মেদের ছেলে শামীম আগে ব্যাংকে চুরি করেছে কি না তাও খতিয়ে দেখছে পুলিশ ও র‌্যাব। কলাবাগানের ব্যাংক লুটের মামলার ব্যাপারে জানতে চাইলে ডিবির উপকমিশনার (দক্ষিণ) কৃষ্ণপদ রায় কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘কয়েকজন আসামিকে গ্রেপ্তার করে তখনই রহস্য উদ্ঘাটন করা হয়েছিল। আমি তখন ছিলাম না। তবে জেনেছি, চার্জশিটও দেওয়া হয়েছে।’ গোয়েন্দা সূত্র জানায়, ২০১২ সালের সেপ্টেম্বরে ঈদের বন্ধে চট্টগ্রামের রিয়াজউদ্দিন বাজার এলাকায় গোল্ডেন প্লাজার ইউনিভার্সাল জুয়েলারি থেকে সাড়ে পাঁচ কেজি স্বর্ণালংকার চুরি হয়। ওই ঘটনায় পুলিশ স্বর্ণালংকার ও টাকাসহ আবু তাহের, স্বপন দেবনাথ ও নুরুল আলম ওরফে খুরু নামে তিন চোরকে গ্রেপ্তার করে। খুরু আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে বলে, তাদের দলে আরো ছিল তাহের, স্বপন দেবনাথ, কামাল, ফিরোজ, বাদশা ও মোহাম্মদ আলী ওরফে ভাগিনা আলী। তার তথ্যে বেরিয়ে আসে এয়াকুব আলী ও শুক্কুরের নেতৃত্বে অন্তত ২৫ জন এ দলটিতে কাজ করছে। তাদের মধ্যে রাজা মিয়া, মশিউর রহমান রাজু, বাগেরহাটের আবু হানিফ, রুস্তম, কবীর গাজী, চট্টগ্রামের আতিকুর রহমান স্বপন উল্লেখযোগ্য। একই গ্রুপ ধানমণ্ডির ব্যাংক লুট করে। শুক্কুরসহ এ দলটির ১২ জন জামিনে ছাড়া পেয়েছে। এক যুগে তারা ১৪টি বড় ধরনের চুরির ঘটনা ঘটিয়েছে বলে জানিয়েছে খুরু। সূত্র জানায়, স্বীকারোক্তি দেওয়া খুরু ছাড়া দুজনই জামিনে ছাড়া পেয়েছে। জামিনে ছাড়া পেয়ে স্বপন দেবনাথ জয়পুরহাটের ব্যাংক লুটে অংশ নেয়। বৃহস্পতিবার র‌্যাবের হাতে গ্রেপ্তারের পর সে দাবি করে, ১৯৯৫ থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত চট্টগ্রাম বন্দরে সাধারণ আনসার সদস্য হিসেবে কাজ করত সে। চুক্তির মেয়াদ শেষে সে রাজা ও শামীমের সঙ্গে ব্যাংক লুটেরা সিন্ডিকেটে জড়িত হয়। মামলা ও আসামির জামিনের ব্যাপারে জানতে চাইলে চট্টগ্রামের কোতোয়ালি থানার পরিদর্শক (তদন্ত) নিজাম উদ্দিন কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘চুরির মামলায় আসামি জামিন পেলে আমাদের কী করার আছে? আমরা গত বছর চার্জশিটও দিয়েছি।’ তিনি আরো বলেন, ২০১০ সালে রাউজানের পথেরহাটে ইউসিবিএল ব্যাংকের ৩০ লাখ টাকা লুটের ঘটনায় বাদশা নামের একজনকে গ্রেপ্তারের পর আরেকটি সিন্ডিকেটের তথ্য পাওয়া যায়। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত বছরের ১৯ অক্টোবর ঈদের ছুটির সময় ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে ইসলামী ব্যাংকের নিরাপত্তা প্রহরী আইয়ুব আলীকে হত্যা করে ভল্ট ভেঙে ৭২ লাখ ১১ হাজার টাকা লুট করে দুর্বৃত্তরা। ব্যাংকের ব্যবস্থাপক মাহমুদ হাসান দাবি করেন, ডাকাতরা নাইট্রিক এসিড দিয়ে ভল্টের তালা ভাঙে। তারা হাতে গ্লাভস ব্যবহার করে, যাতে হাতের ছাপ পাওয়া না যায়। ডাকাতরা যাওয়ার সময় ব্যাংকের সিসি ক্যামেরার ডিস্ক খুলে নিয়ে যায় বলেও জানান তিনি। কালীগঞ্জ থানায় মামলা হলেও এ লুটের ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটিত হয়নি। মামলায় সন্দেহভাজন পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তবে তারা সবাই জামিনে ছাড়া পেয়েছে। তদন্ত কর্মকর্তা এসআই ইউনুস আলী জানান, মামলাটি এখনো তদন্তাধীন আছে। ২০০৯ সালের ৭ সেপ্টেম্বর নাটোরে ন্যাশনাল ব্যাংকের শাখা থেকে এক কোটি ৬২ লাখ টাকা লুট হয়। ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে বাগাতিপাড়া পৌরসভার মেয়র মোশাররফ হোসেনসহ ১৫ জনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে। পরে তারা জামিনে বেরিয়ে যায়। ২০১২ সালের ১ অক্টোবর ঝালকাঠি ইসলামী ব্যাংক শাখা থেকে দুর্বৃত্তরা ৭৭ লাখ ২২ হাজার টাকা লুট করে। পুলিশ ছয়জনকে গ্রেপ্তার করলেও আসামিরা চুরির মামলায় জামিনে ছাড়া পেয়েছে। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ঝালকাঠি থানার এসআই আবদুর রহিম জানান, গত বছর ১১ জনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিটও দেওয়া হয়েছে। মামলা বিচারাধীন। ব্যাংক লুটের সবচেয়ে চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটে গত ২৬ জানুয়ারি কিশোরগঞ্জে। শহরের ঈশা খাঁ রোডে সুড়ঙ্গ খুঁড়ে সোনালী ব্যাংকে ঢুকে ১৬ কোটি ৪০ লাখ টাকা চুরি করা হয়। দুই দিন পরই রাজধানীর শ্যামপুর এলাকা থেকে লুট হওয়া পাঁচ বস্তা টাকাসহ হাবিব ও ইদ্রিস নামে দুজনকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব। কিশোরগঞ্জ থানার তৎকালীন ওসি (বর্তমানে ইটনা থানার ওসি) আব্দুল মালেক গতকাল কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘ঘটনা যত বড়ই হোক না কেন, হয়েছে চুরির মামলা। ধারা ছিল দণ্ডবিধির ৪৬১/৩৮০। আমার জানা মতে, এ মামলায় কোনো আসামিরই জামিন হয়নি।’ এ ছাড়া গত বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর সিলেটের দক্ষিণ সুরমায় ব্র্যাক ব্যাংকে ৯০ লাখ টাকার ডাকাতির ঘটনা ঘটে। ৮ অক্টোবর ছয়জনকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব-৯। আসামিরা সবাই জামিনে ছাড়া পেয়েছে। গত বছরের ২৩ জুন কুড়িগ্রামে পূবালী ব্যাংকের ভল্ট কেটে ৫৮ লাখ টাকা লুটের ঘটনার রহস্য এখনো উদ্ঘাটন করতে পারেনি পুলিশ। ব্যাংকের নৈশ প্রহরী হাবিবুর রহমানকে সন্দেহজনক হিসেবে গ্রেপ্তার করা হলেও পরে তিনি জামিনে ছাড়া পেয়েছেন।

No comments:

Post a Comment