মলা এবং জেল খাটাতেই কেটেছে গত এক মাস। সর্বশেষ গত শুক্রবার বিকেলে নতুন কমিটির নেতাদের ধাওয়া করতে গিয়ে সংঘর্ষে জড়ায় ছাত্রদলের দুই পক্ষ। এ ঘটনায় ওই দিন রাতে সিলেট কোতোয়ালি থানায় মামলা করেছেন থানার উপপরিদর্শক (এসআই) কামাল হোসেন। এতে জেলা কমিটির নতুন সভাপতি সাঈদ আহমদ, সাধারণ সম্পাদক রাহাত চৌধুরী, নগর কমিটির সভাপতি নূরুল আলম সিদ্দিকী, সাধারণ সম্পাদক আবু সালেহ মো. লোকমান, জেলার সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ সাফেক মাহবুব, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুল হক চৌধুরীসহ ৩০ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও ৩০-৪০ জনকে আসামি করা হয়েছে। এ নিয়ে গত এক মাসে ছাত্রদলের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে পাঁচটি মামলা করল পুলিশ। এই পরিস্থিতির পেছনে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের ইন্ধন রয়েছে বলে দাবি জেলা ছাত্রদলের নতুন সভাপতি সাঈদ আহমদের। গতকাল তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘এমন অবস্থা শুধু নগরের একটি অংশেই হচ্ছে। কিছু চিহ্নিত সন্ত্রাসী সংগঠনকে জিম্মি করে রাখতে তৎপর। নগরের বাইরে কিন্তু এ অবস্থা নেই। সব উপজেলা থেকে নতুন কমিটিকে স্বাগত জানিয়ে মিছিল হয়েছে।’ সংগঠন সূত্র জানায়, ২০০২ সালের নভেম্বর মাসে তিন বছর মেয়াদি জেলা ও নগর ছাত্রদলের কমিটি গঠন করা হয়েছিল। দুই কমিটিই মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ার প্রায় এক দশক পর ১৮ সেপ্টেম্বর রাতে কেন্দ্র থেকে নতুন কমিটি ঘোষণা হয়। এতে নগর ছাত্রদলের আগের সাধারণ সম্পাদক নূরুল আলম সিদ্দিকীকে একই কমিটির সভাপতি ও সাবেক যুগ্ম সম্পাদক সাঈদ আহমদকে জেলা কমিটির সভাপতি করা হয়। নতুন কমিটি জানাজানি হওয়ার পর ওই দিন রাত ১০টার দিকে বিক্ষোভ মিছিল করে নতুন কমিটি প্রত্যাখ্যান করেন পদবঞ্চিত নেতা ও তাঁদের কর্মীরা। পরদিন ১৯ সেপ্টেম্বর জেলা কমিটির নতুন সভাপতি সাঈদ আহমদ নগরের হাউজিং এস্টেট এলাকায় বিএনপির এক নেতার বাসায় গেলে সেখানে তাঁকে অবরোধ করে রাখেন পদবঞ্চিত নেতা-কর্মীরা। পুলিশের সহায়তায় সাঈদ মুক্ত হলেও বিকেলে ইলেকট্রিক সাপ্লাই এলাকায় সংঘর্ষে জড়ায় সংগঠনের দুই পক্ষ। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ সাঈদসহ ১৩ কর্মীকে আটক করে তাঁদের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক আইনে মামলা করে কারাগারে পাঠায়। সাঈদ জেলে যাওয়ার পর সংগঠনের নিয়ন্ত্রণ চলে যায় পদবঞ্চিত নেতা-কর্মীদের হাতে। এ সময় প্রায় প্রতিদিনই দফায় দফায় চলে বিক্ষোভ, নতুন কমিটির পক্ষের কোনো কর্মীদের দেখলে শুরু হয় ধাওয়া। এ অবস্থায় বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতারা উদ্যোগী হন ছাত্রদলের বিক্ষুব্ধ নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময়ে। ২৩ সেপ্টেম্বর নগরের একটি কমিউনিটি সেন্টারে মতবিনিময়ে সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র ও বিএনপির কেন্দ্রীয় সদস্য আরিফুল হক চৌধুরীসহ জেলা ও মহানগর বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতারা কেন্দ্রকে জানিয়ে বিষয়টি সমাধানের আশ্বাস দেন। ছাত্রদলের একটি সূত্র জানায়, ওই মতবিনিময় সভায় পদবঞ্চিতদের ব্যানারে মূল স্লোগান ছিল ‘শিবির হটাও, ছাত্রদল বাঁচাও’। ব্যানারের এই স্লোগান নিয়ে বিএনপির অভ্যন্তরে অসন্তোষ দেখা দেয়। পরবর্তী সময়ে এ নিয়ে বিএনপির নেতাদের মধ্যে মতবিরোধ দেখা দেওয়ায় ছাত্রদলের পরিস্থিতি নিয়ে বিএনপির নেতাদের আর উদ্যোগী হতে দেখা যায়নি। এদিকে ১১ দিন কারাভোগ করে ৩০ সেপ্টেম্বর সাঈদ জামিনে মুক্ত হলে ছাত্রদলের দুই পক্ষে ফের পাল্টাপাল্টি তৎপরতা শুরু হয়। জেলা ও নগর কমিটি ১২ অক্টোবর বিভিন্ন ইস্যুতে চার দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করে। তা ঠেকাতে পাল্টা কর্মসূচির ঘোষণা দেয় পদবঞ্চিত নেতা-কর্মীরাও। পাল্টাপাল্টি কর্মসূচির জের ধরেই ঘটে শুক্রবারের সংঘর্ষ। জেলা ছাত্রদলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুল হক চৌধুরী বলেন, ‘নতুন কমিটির গুরুত্বপূর্ণ দুটি পদ পেয়েছেন ছাত্রশিবির থেকে ছাত্রদলে যোগ দেওয়া দুজন। আসল ক্ষোভটা এখানেই। দলবদল করে যদি নেতৃত্ব জুটে যায়, তাহলে আমরা শুরু থেকে দল করে কী লাভ হলো।’
Headlines from most popular newspapers of Bangladesh. বাংলাদেশে প্রকাশিত প্রধান প্রধান দৈনিক পত্রিকার সংবাদ শিরোনামগুলো এক নজরে দেখে নিন।
Sunday, October 19, 2014
এক মাসেও স্বস্তিতে পথে নামতে পারেননি নেতারা:প্রথম অালো
মলা এবং জেল খাটাতেই কেটেছে গত এক মাস। সর্বশেষ গত শুক্রবার বিকেলে নতুন কমিটির নেতাদের ধাওয়া করতে গিয়ে সংঘর্ষে জড়ায় ছাত্রদলের দুই পক্ষ। এ ঘটনায় ওই দিন রাতে সিলেট কোতোয়ালি থানায় মামলা করেছেন থানার উপপরিদর্শক (এসআই) কামাল হোসেন। এতে জেলা কমিটির নতুন সভাপতি সাঈদ আহমদ, সাধারণ সম্পাদক রাহাত চৌধুরী, নগর কমিটির সভাপতি নূরুল আলম সিদ্দিকী, সাধারণ সম্পাদক আবু সালেহ মো. লোকমান, জেলার সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ সাফেক মাহবুব, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুল হক চৌধুরীসহ ৩০ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও ৩০-৪০ জনকে আসামি করা হয়েছে। এ নিয়ে গত এক মাসে ছাত্রদলের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে পাঁচটি মামলা করল পুলিশ। এই পরিস্থিতির পেছনে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের ইন্ধন রয়েছে বলে দাবি জেলা ছাত্রদলের নতুন সভাপতি সাঈদ আহমদের। গতকাল তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘এমন অবস্থা শুধু নগরের একটি অংশেই হচ্ছে। কিছু চিহ্নিত সন্ত্রাসী সংগঠনকে জিম্মি করে রাখতে তৎপর। নগরের বাইরে কিন্তু এ অবস্থা নেই। সব উপজেলা থেকে নতুন কমিটিকে স্বাগত জানিয়ে মিছিল হয়েছে।’ সংগঠন সূত্র জানায়, ২০০২ সালের নভেম্বর মাসে তিন বছর মেয়াদি জেলা ও নগর ছাত্রদলের কমিটি গঠন করা হয়েছিল। দুই কমিটিই মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ার প্রায় এক দশক পর ১৮ সেপ্টেম্বর রাতে কেন্দ্র থেকে নতুন কমিটি ঘোষণা হয়। এতে নগর ছাত্রদলের আগের সাধারণ সম্পাদক নূরুল আলম সিদ্দিকীকে একই কমিটির সভাপতি ও সাবেক যুগ্ম সম্পাদক সাঈদ আহমদকে জেলা কমিটির সভাপতি করা হয়। নতুন কমিটি জানাজানি হওয়ার পর ওই দিন রাত ১০টার দিকে বিক্ষোভ মিছিল করে নতুন কমিটি প্রত্যাখ্যান করেন পদবঞ্চিত নেতা ও তাঁদের কর্মীরা। পরদিন ১৯ সেপ্টেম্বর জেলা কমিটির নতুন সভাপতি সাঈদ আহমদ নগরের হাউজিং এস্টেট এলাকায় বিএনপির এক নেতার বাসায় গেলে সেখানে তাঁকে অবরোধ করে রাখেন পদবঞ্চিত নেতা-কর্মীরা। পুলিশের সহায়তায় সাঈদ মুক্ত হলেও বিকেলে ইলেকট্রিক সাপ্লাই এলাকায় সংঘর্ষে জড়ায় সংগঠনের দুই পক্ষ। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ সাঈদসহ ১৩ কর্মীকে আটক করে তাঁদের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক আইনে মামলা করে কারাগারে পাঠায়। সাঈদ জেলে যাওয়ার পর সংগঠনের নিয়ন্ত্রণ চলে যায় পদবঞ্চিত নেতা-কর্মীদের হাতে। এ সময় প্রায় প্রতিদিনই দফায় দফায় চলে বিক্ষোভ, নতুন কমিটির পক্ষের কোনো কর্মীদের দেখলে শুরু হয় ধাওয়া। এ অবস্থায় বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতারা উদ্যোগী হন ছাত্রদলের বিক্ষুব্ধ নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময়ে। ২৩ সেপ্টেম্বর নগরের একটি কমিউনিটি সেন্টারে মতবিনিময়ে সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র ও বিএনপির কেন্দ্রীয় সদস্য আরিফুল হক চৌধুরীসহ জেলা ও মহানগর বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতারা কেন্দ্রকে জানিয়ে বিষয়টি সমাধানের আশ্বাস দেন। ছাত্রদলের একটি সূত্র জানায়, ওই মতবিনিময় সভায় পদবঞ্চিতদের ব্যানারে মূল স্লোগান ছিল ‘শিবির হটাও, ছাত্রদল বাঁচাও’। ব্যানারের এই স্লোগান নিয়ে বিএনপির অভ্যন্তরে অসন্তোষ দেখা দেয়। পরবর্তী সময়ে এ নিয়ে বিএনপির নেতাদের মধ্যে মতবিরোধ দেখা দেওয়ায় ছাত্রদলের পরিস্থিতি নিয়ে বিএনপির নেতাদের আর উদ্যোগী হতে দেখা যায়নি। এদিকে ১১ দিন কারাভোগ করে ৩০ সেপ্টেম্বর সাঈদ জামিনে মুক্ত হলে ছাত্রদলের দুই পক্ষে ফের পাল্টাপাল্টি তৎপরতা শুরু হয়। জেলা ও নগর কমিটি ১২ অক্টোবর বিভিন্ন ইস্যুতে চার দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করে। তা ঠেকাতে পাল্টা কর্মসূচির ঘোষণা দেয় পদবঞ্চিত নেতা-কর্মীরাও। পাল্টাপাল্টি কর্মসূচির জের ধরেই ঘটে শুক্রবারের সংঘর্ষ। জেলা ছাত্রদলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুল হক চৌধুরী বলেন, ‘নতুন কমিটির গুরুত্বপূর্ণ দুটি পদ পেয়েছেন ছাত্রশিবির থেকে ছাত্রদলে যোগ দেওয়া দুজন। আসল ক্ষোভটা এখানেই। দলবদল করে যদি নেতৃত্ব জুটে যায়, তাহলে আমরা শুরু থেকে দল করে কী লাভ হলো।’
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment