দীর্ঘদিন পর স্থানীয় নেতা-কর্মীরা যথেষ্টই উজ্জীবিত। আর সংগঠনে পদ বাগাতে মরিয়া স্থানীয় পাঁচ এমপিসহ আট নেতা। কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে ধরনা দেওয়ার পাশাপাশি তাঁরা জেলার কাউন্সিলরদের নানাভাবে ম্যানেজ করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। বিশেষ করে সভাপতি পদের জন্য তিন এমপি ও সাধারণ সম্পাদক পদের জন্য দুজন এমপি ব্যাপক তদবির চালাচ্ছেন। এই নেতাদের কেউ কেউ দলীয় স্থানীয় নেতাদের পেছনে অর্থ ব্যয় করছেন বলেও নিশ্চিত হওয়া গেছে। জেলা আওয়ামী লীগ সূত্র মতে, সর্বশেষ ২০০৫ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের কাউন্সিল হয়েছিল। সে সময় সাবেক এমপি অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম মোহাম্মদ ফারুককে সভাপতি ও বর্তমানে রাজশাহী-২ (তানোর-গোদাগাড়ী) আসনের এমপি ওমর ফারুক চৌধুরীকে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করা হয়। আওয়ামী লীগের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক প্রয়াত আব্দুল জলিলের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত ওই ত্রিবার্ষিক কাউন্সিলের পরবর্তী তিন মাসের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের নির্দেশনা ছিল। তবে ছয় বছর লেগে যায় পূর্ণাঙ্গ কমিটি করতে। সেটিও করা হয় ঢাকায় বসে। আবার পূর্ণাঙ্গ কমিটি করতে গিয়ে তাজুল ইসলাম মোহাম্মদ ফারুককে বাদ দিয়ে সভাপতি করা হয় তৎকালীন রাজশাহী-৩ (পবা-মোহনপুর) আসনের এমপি মেরাজ উদ্দিন মোল্লাকে। তাজুল ইসলাম ফারুকের মতো ভাগ্য বরণ করে নিতে হয় মেরাজ উদ্দিন মোল্লাকেও। বিগত সংসদ নির্বাচনে রাজশাহী-৩ আসনে দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে আয়েন উদ্দিনের বিরুদ্ধে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার কারণে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হয়। তাঁর স্থলে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয় জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি ও সংরক্ষিত নারী আসনের এমপি আক্তার জাহানকে। জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ জানান, রাজশাহী বিভাগীয় মহিলা ক্রীড়া কমপ্লেক্স মাঠে জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনের সার্বিক প্রস্তুতি শেষ হয়েছে। এই কাউন্সিলে সর্বমোট ১৫ হাজার নেতা-কর্মী অংশ নিচ্ছেন। এর মধ্যে কাউন্সিলর থাকবেন ২৯০ জন। দলের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম প্রধান অতিথি এবং প্রেসিডিয়াম সদস্য মোহাম্মদ নাসিম উদ্বোধক হিসেবে কাউন্সিলের উদ্বোধন করার কথা রয়েছে। এদিকে জেলা আওয়ামী লীগ সূত্র মতে, এবার কাউন্সিলের মাধ্যমে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদ পেতে মোট পাঁচ এমপিসহ অন্তত আট নেতা এরই মধ্যে মাঠে নেমেছেন। তাঁদের মধ্যে সভাপতি পদে বর্তমান ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আক্তার জাহান, রাজশাহী-৬ (বাঘা-চারঘাট) আসনের এমপি ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, সাধারণ সম্পাদক ও রাজশাহী-৩ আসনের এমপি ওমর ফারুক চৌধুরী ও রাজশাহী বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সাবেক চেয়ারম্যান নূরুল ইসলাম ঠাণ্ডুর নাম শোনা যাচ্ছে। আর সাধারণ সম্পাদক পদের দৌড়ে রয়েছেন বর্তমান যুগ্ম সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ, রাজশাহী-৫ (পুঠিয়া-দুর্গাপুর) আসনের এমপি আব্দুল ওয়াদুদ দারা, রাজশাহী-৩ আসনের এমপি আয়েন উদ্দিন ও বর্তমান সাংগঠনিক সম্পাদক লায়েব উদ্দিন লাভলু। জেলা আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে কালের কণ্ঠকে জানান, সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নামা অন্তত তিনজন এমপি স্থানীয় নেতাদের ম্যানেজ করতে রীতিমতো অর্থ নিয়ে প্রচার চালাচ্ছেন। ২৯০ জন কাউন্সিলরকে নিজেদের পক্ষে টানতে তাঁরা খুব সতর্কতার সঙ্গে নিজেদের লোকদের মাধ্যমে অর্থ বিলি করছেন। এরই ধারাবাহিকতায় একজন এমপিকে সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক পদের দুই প্রার্থী যৌথভাবে গাড়ি কিনে দিয়েছেন বলেও দাবি দলের একাধিক নেতার। পদ পেতে মরিয়া সাত নেতার কয়েকজনের সঙ্গে এ নিয়ে কথা বললে তাঁদের কয়েকজন এর সত্যতা স্বীকার করেন। তবে তাঁরা এ নিয়ে মুখ খুলতে চাননি। আবার কেউ কেউ দাবি করেন, এটি স্রেফ অপপ্রচার। জানতে চাইলে এমপি আয়েন উদ্দিন বলেন, ‘বিগত ২০০৫ সালের কাউন্সিলের মাধ্যমে জেলা আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের চাঙ্গা করার পরিবর্তে আরো ঝিমিয়ে ফেলা হয়েছে। ফলে বিগত ৯ বছরে জেলা আওয়ামী লীগ কোনো দলীয় কর্মসূচিও পালন করতে পারেনি। তাই আমি চাই এবার যোগ্য নেতৃত্বের মাধ্যমে সেই সংকট দূর হোক।’ তিনি আরো বলেন, ‘কাউন্সিলকে ঘিরে কেউ অর্থ ছড়াচ্ছে- এমন কথা সঠিক নয়। দলের কিছু স্বার্থবাদী নেতা এসব অপপ্রচার চালাচ্ছেন। তাঁরা বিগত দিনেও জেলা আওয়ামী লীগকে ধ্বংস করতে বারবার চেষ্টা চালিয়েছেন।’ কাউন্সিল নিয়ে কথা বলার জন্য ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আক্তার জাহানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তাঁর ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে। সাধারণ সম্পাদক ওমর ফারুক চৌধুরীও ফোন রিসিভ করেননি।
Headlines from most popular newspapers of Bangladesh. বাংলাদেশে প্রকাশিত প্রধান প্রধান দৈনিক পত্রিকার সংবাদ শিরোনামগুলো এক নজরে দেখে নিন।
Thursday, December 4, 2014
পাঁচ এমপিসহ আট নেতা পদ পেতে মরিয়া, অর্থ নিয়ে মাঠে কেউ কেউ:কালের কন্ঠ
দীর্ঘদিন পর স্থানীয় নেতা-কর্মীরা যথেষ্টই উজ্জীবিত। আর সংগঠনে পদ বাগাতে মরিয়া স্থানীয় পাঁচ এমপিসহ আট নেতা। কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে ধরনা দেওয়ার পাশাপাশি তাঁরা জেলার কাউন্সিলরদের নানাভাবে ম্যানেজ করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। বিশেষ করে সভাপতি পদের জন্য তিন এমপি ও সাধারণ সম্পাদক পদের জন্য দুজন এমপি ব্যাপক তদবির চালাচ্ছেন। এই নেতাদের কেউ কেউ দলীয় স্থানীয় নেতাদের পেছনে অর্থ ব্যয় করছেন বলেও নিশ্চিত হওয়া গেছে। জেলা আওয়ামী লীগ সূত্র মতে, সর্বশেষ ২০০৫ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের কাউন্সিল হয়েছিল। সে সময় সাবেক এমপি অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম মোহাম্মদ ফারুককে সভাপতি ও বর্তমানে রাজশাহী-২ (তানোর-গোদাগাড়ী) আসনের এমপি ওমর ফারুক চৌধুরীকে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করা হয়। আওয়ামী লীগের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক প্রয়াত আব্দুল জলিলের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত ওই ত্রিবার্ষিক কাউন্সিলের পরবর্তী তিন মাসের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের নির্দেশনা ছিল। তবে ছয় বছর লেগে যায় পূর্ণাঙ্গ কমিটি করতে। সেটিও করা হয় ঢাকায় বসে। আবার পূর্ণাঙ্গ কমিটি করতে গিয়ে তাজুল ইসলাম মোহাম্মদ ফারুককে বাদ দিয়ে সভাপতি করা হয় তৎকালীন রাজশাহী-৩ (পবা-মোহনপুর) আসনের এমপি মেরাজ উদ্দিন মোল্লাকে। তাজুল ইসলাম ফারুকের মতো ভাগ্য বরণ করে নিতে হয় মেরাজ উদ্দিন মোল্লাকেও। বিগত সংসদ নির্বাচনে রাজশাহী-৩ আসনে দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে আয়েন উদ্দিনের বিরুদ্ধে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার কারণে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হয়। তাঁর স্থলে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয় জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি ও সংরক্ষিত নারী আসনের এমপি আক্তার জাহানকে। জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ জানান, রাজশাহী বিভাগীয় মহিলা ক্রীড়া কমপ্লেক্স মাঠে জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনের সার্বিক প্রস্তুতি শেষ হয়েছে। এই কাউন্সিলে সর্বমোট ১৫ হাজার নেতা-কর্মী অংশ নিচ্ছেন। এর মধ্যে কাউন্সিলর থাকবেন ২৯০ জন। দলের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম প্রধান অতিথি এবং প্রেসিডিয়াম সদস্য মোহাম্মদ নাসিম উদ্বোধক হিসেবে কাউন্সিলের উদ্বোধন করার কথা রয়েছে। এদিকে জেলা আওয়ামী লীগ সূত্র মতে, এবার কাউন্সিলের মাধ্যমে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদ পেতে মোট পাঁচ এমপিসহ অন্তত আট নেতা এরই মধ্যে মাঠে নেমেছেন। তাঁদের মধ্যে সভাপতি পদে বর্তমান ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আক্তার জাহান, রাজশাহী-৬ (বাঘা-চারঘাট) আসনের এমপি ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, সাধারণ সম্পাদক ও রাজশাহী-৩ আসনের এমপি ওমর ফারুক চৌধুরী ও রাজশাহী বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সাবেক চেয়ারম্যান নূরুল ইসলাম ঠাণ্ডুর নাম শোনা যাচ্ছে। আর সাধারণ সম্পাদক পদের দৌড়ে রয়েছেন বর্তমান যুগ্ম সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ, রাজশাহী-৫ (পুঠিয়া-দুর্গাপুর) আসনের এমপি আব্দুল ওয়াদুদ দারা, রাজশাহী-৩ আসনের এমপি আয়েন উদ্দিন ও বর্তমান সাংগঠনিক সম্পাদক লায়েব উদ্দিন লাভলু। জেলা আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে কালের কণ্ঠকে জানান, সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নামা অন্তত তিনজন এমপি স্থানীয় নেতাদের ম্যানেজ করতে রীতিমতো অর্থ নিয়ে প্রচার চালাচ্ছেন। ২৯০ জন কাউন্সিলরকে নিজেদের পক্ষে টানতে তাঁরা খুব সতর্কতার সঙ্গে নিজেদের লোকদের মাধ্যমে অর্থ বিলি করছেন। এরই ধারাবাহিকতায় একজন এমপিকে সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক পদের দুই প্রার্থী যৌথভাবে গাড়ি কিনে দিয়েছেন বলেও দাবি দলের একাধিক নেতার। পদ পেতে মরিয়া সাত নেতার কয়েকজনের সঙ্গে এ নিয়ে কথা বললে তাঁদের কয়েকজন এর সত্যতা স্বীকার করেন। তবে তাঁরা এ নিয়ে মুখ খুলতে চাননি। আবার কেউ কেউ দাবি করেন, এটি স্রেফ অপপ্রচার। জানতে চাইলে এমপি আয়েন উদ্দিন বলেন, ‘বিগত ২০০৫ সালের কাউন্সিলের মাধ্যমে জেলা আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের চাঙ্গা করার পরিবর্তে আরো ঝিমিয়ে ফেলা হয়েছে। ফলে বিগত ৯ বছরে জেলা আওয়ামী লীগ কোনো দলীয় কর্মসূচিও পালন করতে পারেনি। তাই আমি চাই এবার যোগ্য নেতৃত্বের মাধ্যমে সেই সংকট দূর হোক।’ তিনি আরো বলেন, ‘কাউন্সিলকে ঘিরে কেউ অর্থ ছড়াচ্ছে- এমন কথা সঠিক নয়। দলের কিছু স্বার্থবাদী নেতা এসব অপপ্রচার চালাচ্ছেন। তাঁরা বিগত দিনেও জেলা আওয়ামী লীগকে ধ্বংস করতে বারবার চেষ্টা চালিয়েছেন।’ কাউন্সিল নিয়ে কথা বলার জন্য ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আক্তার জাহানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তাঁর ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে। সাধারণ সম্পাদক ওমর ফারুক চৌধুরীও ফোন রিসিভ করেননি।
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment