Wednesday, November 26, 2014

বিদ্যুৎ চুক্তি নিয়ে ীণ আলো দেখছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী:নয়াদিগন্ত

দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থার (সার্ক) ১৮তম শীর্ষ সম্মেলনে বহুল আলোচিত বিদ্যুৎ সহযোগিতা চুক্তির ব্যাপারে এখনো আশাবাদী বলে জানালেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী।   গতকাল সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুর হোটেল সল্টেতে এক সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ আশার বাণী শোনালেন।   তবে সার্কভুক্ত আট দেশের সরকারপ্রধানদের উপস্থিতিতে দুই দিনের মূল অধিবেশনের আগে সার্ক পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের
উপস্থিতিতে তৃতীয় ধাপের আনুষ্ঠানিক বৈঠকে এখনো এই চুক্তির বিষয়ে সব দেশ একমত হয়নি বলেও জানান মন্ত্রী।   তাহলে কিভাবে এই চুক্তির ব্যাপারে আশাবাদী হলেন- এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, অনেক বড় বড় সম্মেলনে দেখা যায় একেবারে শেষ মুহূর্তে বড় ধরনের অর্জন হয়। সেই অভিজ্ঞতা থেকে দুই দিনের মূল অধিবেশনকে সামনে রেখে বিদ্যুৎ সহযোগিতা চুক্তির ব্যাপারে আশাবাদী বলে ব্যাখ্যা দিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।   তবে দু-একটি দেশের বিরোধিতার কারণেই বিদ্যুৎ সহযোগিতাবিষয়ক চুক্তিটিও শেষ পর্যন্ত ভেস্তে যেতে বসেছে- এমন তথ্যের কথা জানিয়ে সেই দু-একটি দেশের নাম জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, এখনো আলোচনার রাস্তা বন্ধ হয়ে যায়নি। তাই এখনই কারো প্রতি অঙ্গুলি নির্দেশ করা ঠিক নয়।   এ ছাড়া সার্কভুক্ত আট দেশের মধ্যে যাত্রী ও পণ্য পরিবহনের জন্য সার্ক আঞ্চলিক রেল সহযোগিতা চুক্তি এবং সার্ক পণ্য ও যাত্রীবাহী মোটরযান চলাচলবিষয়ক দুই আলোচিত চুক্তি এবারের সম্মেলনে আর হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই বলেও জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।   এ ছাড়া পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠকে সার্ককে আরো গতিশীল ও কার্যকর সংস্থায় পরিণত করতে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানান মন্ত্রী। সভায় আঞ্চলিক প্রকল্পগুলোর সময়ানুগ বাস্তবায়নের ব্যাপারে গুরুত্বারোপ করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।   এর আগে ২২ নভেম্বর সার্কভুক্ত দেশের যুগ্ম পররাষ্ট্র সচিবদের উপস্থিতি অনুষ্ঠিত গ্রোগ্রামিং কমিটির সুপারিশগুলো পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের কাউন্সিল অব মিনিস্টারস সভায় অনুমোদিত হয়েছে।   মন্ত্রী বলেন, বাণিজ্য, অর্থ, যোগাযোগ, জ্বালানি, দারিদ্র্য বিমোচন, কৃষি, পরিবেশ, জলবায়ু পরিবর্তন, সন্ত্রাসবাদ প্রতিরোধ, শিা, সংস্কৃতিসহ গুরুত্বপূর্ণ আঞ্চলিক সহযোগিতার বিষয়ে সময়ানুগ পদপে গ্রহণের ব্যাপারে সভায় গুরুত্বারোপ করা হয়েছে।   তারুণ্যকে এই অঞ্চলের একটি বড় সম্পদ হিসেবে আখ্যায়িত করে একে প্রকৃত অর্থে মানব সম্পদে রূপান্তর করার জন্য সভায় আহ্বান জানানো হয়েছে।   এ ছাড়া সভায় একটি গবেষণাপত্র, দুইটি অ্যাকশান ফ্রেমওয়ার্ক এবং একটি সঙ্কলন উদ্বোধন করা হয়েছে বলেও জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।   সভায় সর্বসম্মতভাবে চারটি সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে বলে জানান মন্ত্রী। এর মধ্যে রয়েছে : দারিদ্র্য বিমোচন ও সার্ক উন্নয়ন ল্যমাত্রা অর্জনে সর্বোচ্চ চেষ্টা অব্যাহত রাখা, পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থার উন্নয়ন এবং সবার জন্য পুষ্টি নিশ্চিত করতে দুইটি পৃথক সার্ক আঞ্চলিক কর্ম কাঠামো প্রণয়ন এবং দণি এশিয়ার অর্থনৈতিক উন্নয়নে ‘দণি এশীয় অর্থনৈতিক ইউনিয়ন (South Asian Economic Union-SAEU) গঠনে পরবর্তী পদপে গ্রহণ।   এ ছাড়া সাফটা (তৃতীয় পর্যায়)-এর অন্তর্ভুক্ত সেনসিটিভ লিস্ট হ্রাসকরণের ল্েয সদস্য দেশগুলোর কাছ থেকে রিকোয়েস্ট লিস্ট ও অফার লিস্ট সার্ক সচিবালয়ে পাঠানোর ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে মন্ত্রীদের সভায়।   এর পর থেকে প্রতি দুই বছর পর পর একটি নির্ধারিত সময়ে সার্ক শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠানের ব্যাপারে সদস্য দেশের মন্ত্রীরা সভায় ঐকমত্য পোষণ করেন।   এ ছাড়া দণি এশিয়ার উন্নয়ন পরিস্থিতি তুলে ধরতে এখন থেকে নিয়মিত দ্বিবার্ষিক উন্নয়ন প্রতিবেদন প্রকাশের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে সভায়।   চীন-জাপানসহ বর্তমানে সার্কের যে নয় পর্যবেক দেশ রয়েছে তার সাথে সার্কের প্রকল্পভিত্তিক সম্পর্ক জোরদার করা হবে এবং আর কোনো পর্যবেক বাড়ানো হবে না বলেও সভায় সিদ্ধান্ত হয়।   অত্র অঞ্চলের মানুষের খাদ্যনিরাপত্তা সুসংহত করতে সার্ক খাদ্যভাণ্ডার (SAARC Food Bank)-কে আরো কার্যকর করতে সভায় সুপারিশ করা হয়েছে।   ঢাকায় স্থাপিত সার্ক কৃষিকেন্দ্রের কাজের পর্যালোচনা করা হয়। এ ছাড়া দিল্লিতে অবস্থিত সার্ক বিশ্ববিদ্যালয়কে আরো কার্যকর করে এটিকে ‘সেন্টার এক্সেলেন্স’-হিসেবে উন্নীত করার ব্যাপারে পদপে গ্রহণের সিদ্ধান্ত হয় সভায়।

No comments:

Post a Comment