অনুমোদনের জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের পক্ষ থেকে পাঠানো হয়েছে। এর আগে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, কৃষি খাতে ঋণ না দিয়ে এই দুই ব্যাংকের আগ্রহ অকৃষি ও বৈদেশিক বাণিজ্যঋণ প্রদানে। বিশেষ করে রাকাব তো বৈদেশিক বাণিজ্য ও অকৃষি খাতে ঋণ নিয়ে বিশাল অঙ্কের লোকসান গুনছে। গত বছরের শেষে রাকাবেব পুঞ্জীভূত লোকসানই ছিল ছয় হাজার ৪০৬ কোটি টাকা। এ পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে এই দুই ব্যাংকের জন্য তিন দফা সুপারিশ করা হয়। এই সুপারিশের মধ্যে রয়েছে তাদের ঋণকার্যক্রমের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ হতদরিদ্র কৃষকদের মধ্যে বিতরণের জন্য বাধ্যবাধকতা আরোপ করা। ব্যাংক দু’টিকে অকৃষি বাণিজ্যিক খাতে ঋণ বিতরণে নিরুৎসাহিত করা এবং বিকেবির বৈদেশিক বাণিজ্য ঋণকার্যক্রম কেবল কৃষি সংশ্লিষ্ট শিল্পে বা পণ্যসেবার মধ্যে সীমিত রাখা এবং সেসব ঋণকার্যক্রমে অধিকতর সতর্কতা অবলম্বন করা। অর্থমন্ত্রীর জন্য তৈরি করা সারসংক্ষেপে এ দু’টি ব্যাংক সম্পর্কে বাংলাদেশ ব্যাংকের পর্যালোচনা তুলে ধরে ব্যাংকিং বিভাগ। এতে উল্লেখ করা হয়, ‘গত বছরের শেষ দিন (৩১-১২-১৩) পর্যন্ত বিকেবির মোট ঋণগ্রহীতার ১০ দশমিক ৬৫ শতাংশ ছিল হতদরিদ্র কৃষক এবং এই কৃষকদের প্রদত্ত ঋণস্থিতি ব্যাংকটির মোট ঋণস্থিতির শূন্য দশমিক ৯১ শতাংশ। বিকেবির শহরাঞ্চলের শাখাগুলো কৃষিঋণের চেয়ে বৈদেশিক বাণিজ্য ও প্রকল্প ঋণের ক্ষেত্রে বেশি অঙ্কের ঋণ প্রদান করেছে। এই ব্যাংকের খেলাপি ঋণের বেশির ভাগ বৈদেশিক ও অকৃষি খাতে প্রদত্ত বাণিজ্যিক ঋণ। কৃষিঋণকার্যক্রম হ্রাস করে বৈদেশিক বাণিজ্যঋণ ও অকৃষি বাণিজ্যিক ঋণ কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করায় বিকেবির খেলাপি ঋণের হার বৃদ্ধি পেয়ে বিপুল মূলধন ঘাটতি দেখা দিয়েছে। রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক (রাকাব) সম্পর্কে সারসংক্ষেপে বলা হয়, ‘৩১-১২-১৩ তারিখে রাকাবের মোট ঋণগ্রহীতার ৭৫ দশমিক ৬১ শতাংশ হতদরিদ্র কৃষক এবং তাদের প্রদত্ত ঋণের স্থিতি ব্যাংকটির মোট ঋণস্থিতির ৪৬ দশমিক ১৪ শতাংশ এবং মোট কৃষিঋণের ৭০ দশমিক ৫৮ শতাংশ। রাকাবের বৈদেশিক বাণিজ্যঋণ না থাকায় এবং অকৃষি ও প্রকল্পঋণ কম থাকায় হতদরিদ্র কৃষকদের প্রদত্ত ঋণহার বেশি। এ পরিস্থিতি বিবেচনায় এনে বিকেবির ক্ষেত্রে তিনটি এবং রাকাবের ক্ষেত্রে দু’টি সুপারিশ করেছে ব্যাংকিং বিভাগ। বিকেবির ক্ষেত্রে তিন সুপারিশ হচ্ছেÑ বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক অর্ডার, ১৯৭৩-এ বিবৃত কার্যক্রমের মধ্যে তৎপরতা সীমিত রাখা এবং তাদের ঋণকার্যক্রমের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ হতদরিদ্র কৃষকদের মধ্যে বিতরণ করা। অকৃষি বাণিজ্যিক খাতে ঋণ বিতরণ নিরুৎসাহিত করা এবং বৈদেশিক বাণিজ্য ঋণকার্যক্রম কেবল কৃষি সংশ্লিষ্ট শিল্প সেবা বা পণ্যের মধ্যে সীমিত রাখা এবং সেসব পণ্যকার্যক্রমে অধিকতর সতর্কতা অবলম্বন করা। রাকাবের বিষয়ে দু’টি সুপারিশের মধ্যে রয়েছেÑ রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক অর্ডিন্যান্স, ১৯৮৬ এ বিবৃত কার্যক্রমের মধ্যে তৎপরতা সীমিত রাখা, তাদের ঋণকার্যক্রমের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ হতদরিদ্র কৃষকদের মধ্যে বিতরণ করা এবং অকৃষি বাণিজ্যিক ঋণ বিতরণ নিরুৎসাহিত করা। জানা গেছে, বর্তমানে অর্থমন্ত্রী চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে অবস্থান করছেন। তিনি দেশে ফিরলে এ সারসংক্ষেপের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। অর্থমন্ত্রীর অনুমোদন পাওয়া গেলে সরকারের এই দু’টি ব্যাংকের প্রতি অকৃষি বাণিজ্যিক ঋণ বিতরণে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে।
Headlines from most popular newspapers of Bangladesh. বাংলাদেশে প্রকাশিত প্রধান প্রধান দৈনিক পত্রিকার সংবাদ শিরোনামগুলো এক নজরে দেখে নিন।
Thursday, December 18, 2014
বিকেবি-রাকাবের বাণিজ্যিক ঋণ বিতরণে নিষেধাজ্ঞা আসছে:নয়াদিগন্ত
অনুমোদনের জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের পক্ষ থেকে পাঠানো হয়েছে। এর আগে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, কৃষি খাতে ঋণ না দিয়ে এই দুই ব্যাংকের আগ্রহ অকৃষি ও বৈদেশিক বাণিজ্যঋণ প্রদানে। বিশেষ করে রাকাব তো বৈদেশিক বাণিজ্য ও অকৃষি খাতে ঋণ নিয়ে বিশাল অঙ্কের লোকসান গুনছে। গত বছরের শেষে রাকাবেব পুঞ্জীভূত লোকসানই ছিল ছয় হাজার ৪০৬ কোটি টাকা। এ পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে এই দুই ব্যাংকের জন্য তিন দফা সুপারিশ করা হয়। এই সুপারিশের মধ্যে রয়েছে তাদের ঋণকার্যক্রমের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ হতদরিদ্র কৃষকদের মধ্যে বিতরণের জন্য বাধ্যবাধকতা আরোপ করা। ব্যাংক দু’টিকে অকৃষি বাণিজ্যিক খাতে ঋণ বিতরণে নিরুৎসাহিত করা এবং বিকেবির বৈদেশিক বাণিজ্য ঋণকার্যক্রম কেবল কৃষি সংশ্লিষ্ট শিল্পে বা পণ্যসেবার মধ্যে সীমিত রাখা এবং সেসব ঋণকার্যক্রমে অধিকতর সতর্কতা অবলম্বন করা। অর্থমন্ত্রীর জন্য তৈরি করা সারসংক্ষেপে এ দু’টি ব্যাংক সম্পর্কে বাংলাদেশ ব্যাংকের পর্যালোচনা তুলে ধরে ব্যাংকিং বিভাগ। এতে উল্লেখ করা হয়, ‘গত বছরের শেষ দিন (৩১-১২-১৩) পর্যন্ত বিকেবির মোট ঋণগ্রহীতার ১০ দশমিক ৬৫ শতাংশ ছিল হতদরিদ্র কৃষক এবং এই কৃষকদের প্রদত্ত ঋণস্থিতি ব্যাংকটির মোট ঋণস্থিতির শূন্য দশমিক ৯১ শতাংশ। বিকেবির শহরাঞ্চলের শাখাগুলো কৃষিঋণের চেয়ে বৈদেশিক বাণিজ্য ও প্রকল্প ঋণের ক্ষেত্রে বেশি অঙ্কের ঋণ প্রদান করেছে। এই ব্যাংকের খেলাপি ঋণের বেশির ভাগ বৈদেশিক ও অকৃষি খাতে প্রদত্ত বাণিজ্যিক ঋণ। কৃষিঋণকার্যক্রম হ্রাস করে বৈদেশিক বাণিজ্যঋণ ও অকৃষি বাণিজ্যিক ঋণ কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করায় বিকেবির খেলাপি ঋণের হার বৃদ্ধি পেয়ে বিপুল মূলধন ঘাটতি দেখা দিয়েছে। রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক (রাকাব) সম্পর্কে সারসংক্ষেপে বলা হয়, ‘৩১-১২-১৩ তারিখে রাকাবের মোট ঋণগ্রহীতার ৭৫ দশমিক ৬১ শতাংশ হতদরিদ্র কৃষক এবং তাদের প্রদত্ত ঋণের স্থিতি ব্যাংকটির মোট ঋণস্থিতির ৪৬ দশমিক ১৪ শতাংশ এবং মোট কৃষিঋণের ৭০ দশমিক ৫৮ শতাংশ। রাকাবের বৈদেশিক বাণিজ্যঋণ না থাকায় এবং অকৃষি ও প্রকল্পঋণ কম থাকায় হতদরিদ্র কৃষকদের প্রদত্ত ঋণহার বেশি। এ পরিস্থিতি বিবেচনায় এনে বিকেবির ক্ষেত্রে তিনটি এবং রাকাবের ক্ষেত্রে দু’টি সুপারিশ করেছে ব্যাংকিং বিভাগ। বিকেবির ক্ষেত্রে তিন সুপারিশ হচ্ছেÑ বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক অর্ডার, ১৯৭৩-এ বিবৃত কার্যক্রমের মধ্যে তৎপরতা সীমিত রাখা এবং তাদের ঋণকার্যক্রমের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ হতদরিদ্র কৃষকদের মধ্যে বিতরণ করা। অকৃষি বাণিজ্যিক খাতে ঋণ বিতরণ নিরুৎসাহিত করা এবং বৈদেশিক বাণিজ্য ঋণকার্যক্রম কেবল কৃষি সংশ্লিষ্ট শিল্প সেবা বা পণ্যের মধ্যে সীমিত রাখা এবং সেসব পণ্যকার্যক্রমে অধিকতর সতর্কতা অবলম্বন করা। রাকাবের বিষয়ে দু’টি সুপারিশের মধ্যে রয়েছেÑ রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক অর্ডিন্যান্স, ১৯৮৬ এ বিবৃত কার্যক্রমের মধ্যে তৎপরতা সীমিত রাখা, তাদের ঋণকার্যক্রমের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ হতদরিদ্র কৃষকদের মধ্যে বিতরণ করা এবং অকৃষি বাণিজ্যিক ঋণ বিতরণ নিরুৎসাহিত করা। জানা গেছে, বর্তমানে অর্থমন্ত্রী চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে অবস্থান করছেন। তিনি দেশে ফিরলে এ সারসংক্ষেপের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। অর্থমন্ত্রীর অনুমোদন পাওয়া গেলে সরকারের এই দু’টি ব্যাংকের প্রতি অকৃষি বাণিজ্যিক ঋণ বিতরণে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে।
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment