কার জন্য কোনো বরাদ্দ রাখেনি অর্থ মন্ত্রণালয়। স্থানীয় সরকার বিভাগের প্রস্তাবে প্রশাসকদের মেয়াদ বাড়ানোর পক্ষে মত দেওয়া হলেও তা কত দিন হবে সে বিষয়ে কিছু বলা হয়নি। মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, প্রস্তাবে ছয় মাস মেয়াদ যথেষ্ট নয় বলা হলেও তা কত দিন করা হবে, তা উল্লেখ করা হয়নি। তবে মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানায়, এই মেয়াদ এক বছর হতে পারে। মন্ত্রিসভার অনুমোদন পেলে আনুষঙ্গিক কিছু প্রক্রিয়া শেষে বিষয়টি জাতীয় সংসদের শীতকালীন অধিবেশনে অনুমোদন হতে পারে। জানতে চাইলে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব মোহাম্মদ মোশাররাফ হোসাইন ভূঁইঞা গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনসংক্রান্ত একটি প্রস্তাব এসেছে। এটি কবে মন্ত্রিসভার বৈঠকে উঠবে, তা এই মুহূর্তে বলতে পারছেন না। মন্ত্রণালয় থেকে দুই প্রশাসকের মেয়াদ বাড়ানোর প্রস্তাব মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠানোর কথা জানান স্থানীয় সরকার বিভাগের অতিরিক্ত সচিব অশোক মাধব রায়। সরকারি দলের একাধিক সূত্র জানায়, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) নির্বাচন নিয়ে এখনই ভাবতে চায় না ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। প্রশাসক হিসেবে রাজনৈতিক নেতাদের নিয়োগ দেওয়ার বিষয়টি নিয়েও অনেক দিন ধরে সরকারি দলের মধ্যে আলাপ-আলোচনা হচ্ছে। বিদ্যমান আইনে প্রশাসক হিসেবে রাজনৈতিক নেতা বা সরকারি কর্মকর্তা যে কেউ নিয়োগ পেতে পারেন। ২০১১ সালের ২৯ নভেম্বর পাস করা বিলে সব সিটি করপোরেশনে মেয়াদ শেষে পছন্দমতো যেকোনো ব্যক্তিকে প্রশাসক নিয়োগের প্রস্তাব করা হয়। রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, জয়-পরাজয়সংক্রান্ত ভাবনাই এই নির্বাচন না হওয়ার প্রধান অন্তরায়। স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচন না দিয়ে সরকার খুবই অন্যায় করছে। আমার দলের বিজয় নিশ্চিত না হয়ে নির্বাচন দেব না, এমন মনোভাব লক্ষ করা যাচ্ছে।’ তিনি মনে করেন, এভাবে জোড়াতালি দিয়ে একটি মহানগরের উন্নয়ন ও নাগরিক সেবা নিশ্চিত করা সম্ভব নয়। জানতে চাইলে নির্বাচন কমিশনার আবদুল মোবারক প্রথম আলোকে বলেন, স্থানীয় সরকার বিভাগ সীমানা নির্ধারণ করে গেজেট প্রকাশের পর নির্বাচন কমিশনকে অনুরোধপত্র পাঠালে কমিশন নির্বাচেনর আয়োজন করবে। এ ছাড়া এই মুহূর্তে কমিশনের আর কিছুই করণীয় নেই। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা জানান, সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের সদিচ্ছা ছাড়া এই নির্বাচন হবে না, এটা সবাই বোঝে। এখানে মন্ত্রণালয় ও নির্বাচন কমিশনের চাওয়া বা না চাওয়ায় কিছু যায় বা আসে না। নির্বাচিত প্রতিনিধি না থাকায় ঢাকা মহানগরের উন্নয়ন কার্যক্রম ঠিকমতো চলছে না বলে অভিযোগ রয়েছে। সিটি করপোরেশনের স্বাভাবিক সেবা থেকেও বঞ্চিত হচ্ছেন নগরবাসী। সামান্য কাজের জন্য মানুষকে ছুটতে হয় করপোরেশন অফিসে, যা আগে তাঁরা স্থানীয় কাউন্সিলরদের মাধ্যমে নিজ এলাকা থেকেই পেতেন। সর্বশেষ ২০০২ সালে অবিভক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ওই নির্বাচন বর্জন করে তখনকার প্রধান বিরোধী দল আওয়ামী লীগ। জয় পান বিএনপির নেতা সাদেক হোসেন খোকা। ২০১১ সালের ৩০ নভেম্বর ডিসিসিকে উত্তর ও দক্ষিণ—এ দুই ভাগে ভাগ করা হয়। নির্বাচন কমিশন ২০১২ সালের ২৪ মে দুই ডিসিসির নির্বাচন অনুষ্ঠানের দিন ধার্য করে তফসিল ঘোষণা করে। কিন্তু উচ্চ আদালতে রিট আবেদনের পর ওই নির্বাচন স্থগিত হয়ে যায়। ২০১৩ সালের ১৩ মে উচ্চ আদালত নির্বাচনের ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেন। কিন্তু সরকার কৌশলে সীমানাসংক্রান্ত জটিলতা জিইয়ে রাখে। তবে ওই বছর আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টির সম্ভাব্য মেয়র প্রার্থীরা মনোনয়ন প্রাপ্তির আশায় ব্যাপক গণসংযোগও শুরু করেছিলেন।
Headlines from most popular newspapers of Bangladesh. বাংলাদেশে প্রকাশিত প্রধান প্রধান দৈনিক পত্রিকার সংবাদ শিরোনামগুলো এক নজরে দেখে নিন।
Monday, December 8, 2014
শিগগির হচ্ছে না ডিসিসি নির্বাচন:প্রথম অালো
কার জন্য কোনো বরাদ্দ রাখেনি অর্থ মন্ত্রণালয়। স্থানীয় সরকার বিভাগের প্রস্তাবে প্রশাসকদের মেয়াদ বাড়ানোর পক্ষে মত দেওয়া হলেও তা কত দিন হবে সে বিষয়ে কিছু বলা হয়নি। মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, প্রস্তাবে ছয় মাস মেয়াদ যথেষ্ট নয় বলা হলেও তা কত দিন করা হবে, তা উল্লেখ করা হয়নি। তবে মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানায়, এই মেয়াদ এক বছর হতে পারে। মন্ত্রিসভার অনুমোদন পেলে আনুষঙ্গিক কিছু প্রক্রিয়া শেষে বিষয়টি জাতীয় সংসদের শীতকালীন অধিবেশনে অনুমোদন হতে পারে। জানতে চাইলে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব মোহাম্মদ মোশাররাফ হোসাইন ভূঁইঞা গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনসংক্রান্ত একটি প্রস্তাব এসেছে। এটি কবে মন্ত্রিসভার বৈঠকে উঠবে, তা এই মুহূর্তে বলতে পারছেন না। মন্ত্রণালয় থেকে দুই প্রশাসকের মেয়াদ বাড়ানোর প্রস্তাব মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠানোর কথা জানান স্থানীয় সরকার বিভাগের অতিরিক্ত সচিব অশোক মাধব রায়। সরকারি দলের একাধিক সূত্র জানায়, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) নির্বাচন নিয়ে এখনই ভাবতে চায় না ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। প্রশাসক হিসেবে রাজনৈতিক নেতাদের নিয়োগ দেওয়ার বিষয়টি নিয়েও অনেক দিন ধরে সরকারি দলের মধ্যে আলাপ-আলোচনা হচ্ছে। বিদ্যমান আইনে প্রশাসক হিসেবে রাজনৈতিক নেতা বা সরকারি কর্মকর্তা যে কেউ নিয়োগ পেতে পারেন। ২০১১ সালের ২৯ নভেম্বর পাস করা বিলে সব সিটি করপোরেশনে মেয়াদ শেষে পছন্দমতো যেকোনো ব্যক্তিকে প্রশাসক নিয়োগের প্রস্তাব করা হয়। রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, জয়-পরাজয়সংক্রান্ত ভাবনাই এই নির্বাচন না হওয়ার প্রধান অন্তরায়। স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচন না দিয়ে সরকার খুবই অন্যায় করছে। আমার দলের বিজয় নিশ্চিত না হয়ে নির্বাচন দেব না, এমন মনোভাব লক্ষ করা যাচ্ছে।’ তিনি মনে করেন, এভাবে জোড়াতালি দিয়ে একটি মহানগরের উন্নয়ন ও নাগরিক সেবা নিশ্চিত করা সম্ভব নয়। জানতে চাইলে নির্বাচন কমিশনার আবদুল মোবারক প্রথম আলোকে বলেন, স্থানীয় সরকার বিভাগ সীমানা নির্ধারণ করে গেজেট প্রকাশের পর নির্বাচন কমিশনকে অনুরোধপত্র পাঠালে কমিশন নির্বাচেনর আয়োজন করবে। এ ছাড়া এই মুহূর্তে কমিশনের আর কিছুই করণীয় নেই। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা জানান, সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের সদিচ্ছা ছাড়া এই নির্বাচন হবে না, এটা সবাই বোঝে। এখানে মন্ত্রণালয় ও নির্বাচন কমিশনের চাওয়া বা না চাওয়ায় কিছু যায় বা আসে না। নির্বাচিত প্রতিনিধি না থাকায় ঢাকা মহানগরের উন্নয়ন কার্যক্রম ঠিকমতো চলছে না বলে অভিযোগ রয়েছে। সিটি করপোরেশনের স্বাভাবিক সেবা থেকেও বঞ্চিত হচ্ছেন নগরবাসী। সামান্য কাজের জন্য মানুষকে ছুটতে হয় করপোরেশন অফিসে, যা আগে তাঁরা স্থানীয় কাউন্সিলরদের মাধ্যমে নিজ এলাকা থেকেই পেতেন। সর্বশেষ ২০০২ সালে অবিভক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ওই নির্বাচন বর্জন করে তখনকার প্রধান বিরোধী দল আওয়ামী লীগ। জয় পান বিএনপির নেতা সাদেক হোসেন খোকা। ২০১১ সালের ৩০ নভেম্বর ডিসিসিকে উত্তর ও দক্ষিণ—এ দুই ভাগে ভাগ করা হয়। নির্বাচন কমিশন ২০১২ সালের ২৪ মে দুই ডিসিসির নির্বাচন অনুষ্ঠানের দিন ধার্য করে তফসিল ঘোষণা করে। কিন্তু উচ্চ আদালতে রিট আবেদনের পর ওই নির্বাচন স্থগিত হয়ে যায়। ২০১৩ সালের ১৩ মে উচ্চ আদালত নির্বাচনের ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেন। কিন্তু সরকার কৌশলে সীমানাসংক্রান্ত জটিলতা জিইয়ে রাখে। তবে ওই বছর আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টির সম্ভাব্য মেয়র প্রার্থীরা মনোনয়ন প্রাপ্তির আশায় ব্যাপক গণসংযোগও শুরু করেছিলেন।
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment