Monday, December 22, 2014

নতুন বেতন জুলাই থেকে:কালের কন্ঠ

সব পর্যায়ের সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন শতভাগ বাড়ানোর সুপারিশ এবং মূল বেতনের ৫ শতাংশ হারে চক্রাকারে ইনক্রিমেন্টের সুপারিশসহ জাতীয় বেতন ও চাকরি কমিশন অর্থমন্ত্রী
আবুল মাল আবদুল মুহিতের কাছে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। এতে বেতন বাড়ানো ছাড়াও স্বেচ্ছা অবসরে যাওয়ার বয়স ২০ বছরে নামিয়ে আনা এবং পেনশন ভাতা ৯০ শতাংশ বাড়ানোর সুপারিশ করা হয়েছে। তুলে নেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেড। ফলে ওপরের ধাপে উঠতে হলে অবশ্যই পদোন্নতি পেতে হবে। ডেপুটেশন প্রথা বাতিল করার পাশাপাশি বিভিন্ন ভাতা না বাড়ানোর পক্ষে মত দিয়েছে কমিশন। তবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তকরণের ক্ষেত্রে ছয় মাস পর কার্যকর করা এবং শিক্ষার্থীদের বেতন থেকে আয়ের একটি অংশ সরকারের কোষাগারে জমা নেওয়ার কথাও বলেছে কমিশন। গতকাল রবিবার সচিবালয়ে কমিশনের সদস্যদের নিয়ে অর্থমন্ত্রীর কাছে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার পর সাংবাদিকদের সামনে কিছু সুপারিশ তুলে ধরেছেন কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন। অর্থমন্ত্রী বলেছেন, এটি বাস্তবায়নের মতো যথেষ্ট অর্থ আছে সরকারের হাতে। আগামী ১ জুলাই থেকেই কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী নতুন বেতন কাঠামো বাস্তবায়ন করা হবে। কমিশনের সুপারিশে ব্রিটিশ আমল থেকে ব্যবহার হওয়া ইবি (ইফিসিয়েন্সি বার) তুলে নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। প্রাধিকার কর্মকর্তাদের জন্য ২৫ লাখ টাকা করে গাড়ির ঋণ সুবিধা এবং সব স্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ফ্ল্যাট বা বাড়ি করার জন্য জমি কিনতে এককালীন ৫০ মাসের মূল বেতনের সমান অর্থ ঋণ দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে। তবে বাড়িভাড়া পাওয়ার ক্ষেত্রে বিদ্যমান তিনটি স্তরকে ভেঙে চারটি স্তরে নামানো হয়েছে। কমিশনের প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, প্রস্তাবিত কাঠামোর ১ নম্বর গ্রেডের বেতন ৪০ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ৮০ হাজার টাকা, দ্বিতীয় গ্রেডের ৩৩ হাজার থেকে ৭০ হাজার, তৃতীয় গ্রেডে ২৯ হাজার থেকে বাড়িয়ে ৬০ হাজার, চতুর্থ গ্রেডে ২৫ হাজার ৭৫০ থেকে ৫২ হাজার, পঞ্চম গ্রেডে ২২ হাজার ২৫০ থেকে ৪৫ হাজার, ষষ্ঠ গ্রেডে ১৮ হাজার ৫০০ থেকে ৩৭ হাজার এবং সপ্তম গ্রেডে ১৫ হাজার থেকে বাড়িয়ে ৩২ হাজার টাকা নির্ধারণের প্রস্তাব করা হয়েছে। বিদ্যমান কাঠামোতে অষ্টম ও নবম গ্রেডকে নতুন কাঠামোর অষ্টম গ্রেডে রেখে মূল বেতন ২৫ হাজার টাকা নির্ধারণের প্রস্তাব করা হয়েছে। মূলত বিসিএস পরীক্ষার মাধ্যমে নতুন নিয়োগপ্রাপ্তরা এ বেতন পাবেন। বিদ্যমান কাঠামোতে অষ্টম গ্রেডের মূল বেতন ছিল ১২ হাজার টাকা ও নবম গ্রেডে ছিল ১১ হাজার টাকা। প্রস্তাবিত বেতন কাঠামোর দশম গ্রেডে মূল বেতন আট হাজার থেকে বাড়িয়ে ১৭ হাজার টাকা, ১১তম গ্রেডে ছয় হাজার ৪০০ থেকে ১৩ হাজার টাকা সুপারিশ করা হয়েছে। বিদ্যমান কাঠামোতে ১২ নম্বর গ্রেডে পাঁচ হাজার ৯০০ টাকা এবং ১৩ নম্বর গ্রেডে পাঁচ হাজার ৫০০ টাকা মূল বেতন ছিল। এ দুটি গ্রেডকে নতুন কাঠামোয় ১১ নম্বর গ্রেডে এনে মূল বেতন ১১ হাজার ৫০০ টাকা নির্ধারণের প্রস্তাব করা হয়েছে। এ ছাড়া বর্তমানের ১৪ নম্বর গ্রেডকে ১২ নম্বরে এনে বেতন পাঁচ হাজার ২০০ থেকে বাড়িয়ে ১০ হাজার ৫০০ টাকা, ১৫তম গ্রেডকে ১৩তমে এনে বেতন চার হাজার ৯০০ থেকে ১০ হাজার টাকা এবং চার হাজার ৭০০ টাকা বেতনের বিদ্যমান কাঠামোর ১৬ নম্বর গ্রেডকে নয়া কাঠামোর ১৪তে এনে ৯ হাজার ৫০০ টাকা নির্ধারণের প্রস্তাব করা হয়েছে। এর বাইরে চার হাজার ৫০০ ও চার হাজার ৪০০ টাকা বেতনের ১৭ ও ১৮ নম্বর গ্রেডকে ১৫ নম্বরে এনে ৯ হাজার টাকা এবং ১৯ ও ২০ নম্বর গ্রেডের চার হাজার ২৫০ ও চার হাজার ১০০ টাকাকে ১৬তম গ্রেডে এনে আট হাজার ২০০ টাকা নির্ধারণের প্রস্তাব করা হয়েছে। কমিশনের প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, প্রত্যেক পদধারী প্রতিবছর ১ জুলাই থেকে একটি করে ইনক্রিমেন্ট পাবেন। প্রতিটি ইনক্রিমেন্ট হবে তাঁর মূল বেতনের ৫ শতাংশ। এটি চক্রাকারে বাড়বে। এ হিসাবে, ২ নম্বর গ্রেডে তিনটি ইনক্রিমেন্ট শেষে বেতন দাঁড়াবে ৭৮ হাজার ৭৫০ টাকা, তৃতীয় গ্রেডে ছয়টি ইনক্রিমেন্ট শেষে ৭৫ হাজার ৯৪০ টাকা, চতুর্থ গ্রেডে ৯টি ইনক্রিমেন্ট শেষে ৭৪ হাজার ৫০ টাকা, পঞ্চম গ্রেডে ১০টি ইনক্রিমেন্ট শেষে ৭৩ হাজার ৩৬০ টাকা, ষষ্ঠ গ্রেডে ১৪টি ইনক্রিমেন্ট শেষে ৭৩ হাজার ৩৫০ টাকা, সপ্তম গ্রেডে ১৫টি ইনক্রিমেন্ট শেষে ৬৬ হাজার ৭৭০ টাকা এবং অষ্টম গ্রেডে ১৫টি ইনক্রিমেন্ট শেষে বেতন দাঁড়াবে ৫২ হাজার ২৩০ টাকা। অর্থাৎ এসব পদে থাকা কর্মকর্তারা আর কোনো পদোন্নতি না পেলেও চাকরিজীবন শেষে তাঁরা সর্বোচ্চ এই পরিমাণ অর্থ বেতন পাবেন। প্রস্তাবিত বেতন কাঠামোর নবম থেকে ১৬তম গ্রেড পর্যন্ত প্রতিটি ক্ষেত্রেই সর্বোচ্চ ২০টি করে ইনক্রিমেন্টের সুপারিশ রাখা হয়েছে। তাতে ইনক্রিমেন্টগুলো শেষে নবম গ্রেডে ৪৫ হাজার ২৬০ টাকা, দশম গ্রেডে ৩৪ হাজার ৬৯০ টাকা, ১১তম গ্রেডে ৩০ হাজার ৬৯০ টাকা, ১২তম গ্রেডে ২৮ হাজার ১০ টাকা, ১৩তম গ্রেডে ২৬ হাজার ৬৭০ টাকা, ১৪তম গ্রেডে ২৫ হাজার ৩৪০ টাকা, ১৫তম গ্রেডে ২৪ হাজার ৪০ টাকা এবং ১৬তম গ্রেডে সর্বোচ্চ বেতন দাঁড়াবে ২১ হাজার ৯০০ টাকা। কমিশনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জনপ্রশাসনে বর্তমানে কিছু কর্মকর্তা আছেন, যাঁরা বেতন কাঠামোর ১ নম্বর গ্রেডের চেয়ে অতিরিক্ত বেতন পেয়ে থাকেন। এ ক্ষেত্রে মন্ত্রিপরিষদসচিব ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিবের বেতন এক লাখ টাকা ও সিনিয়র সচিবদের বেতন ৮৮ হাজার টাকা নির্ধারণের সুপারিশ করা হয়েছে। তবে সচিবরা যেহেতু বিভিন্ন নীতিনির্ধারণী ও সমন্বয়ের কাজ করে থাকেন, তাই তাঁদের মাসিক মূল বেতন আরো চার হাজার টাকা বাড়িয়ে ৮৪ হাজার টাকা দেওয়া সমীচীন হবে বলা হয়েছে। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছেন, 'আমরা ভাবিনি যে আমাদের হাতেই প্রতিবেদনটি আসবে। এটা এই দেশের নির্বাচন প্রক্রিয়ার ওপর নির্ভর করত। এই হিসেবে এটা আমাদের সৌভাগ্য যে সুপারিশটি আমাদের হাতে এসেছে। এটা বাস্তবায়নের দায়িত্ব আমাদের নিতে হবে এবং সেটা অত্যন্ত খুশি মনেই আমরা গ্রহণ করছি। আমাদের ইচ্ছা হলো, এটা আমরা বাস্তবায়ন শুরু করব, ২০১৫ সালের ১ জুলাই থেকে। এটা বাস্তবায়নের জন্য ইতিমধ্যেই বাজেটে একটা ব্যবস্থা করে রেখেছি। আমাদের হাতেও অর্থ আছে।' অর্থ বিভাগের সিনিয়র সচিব মাহবুব আহমেদ বলেন, আগামী জুলাই থেকে নতুন বেতন কাঠামোর শতভাগ বাস্তবায়ন করলেও অর্থের কোনো সমস্যা হবে না। এমনকি চলতি অর্থবছর থেকে এটি বাস্তবায়ন করতে গেলেও কোনো সমস্যা হতো না। ড. ফরাসউদ্দিন বলেন, ২০০৯ সালের সপ্তম বেতন স্কেল চার বছরের জন্য প্রণীত হয়েছিল। বর্তমান কমিশনের সুপারিশের ভিত্তি ছয় বছর। এবারই প্রথম সরকার চার সদস্যের পরিবারের বদলে ছয় সদস্যের পরিবার বিবেচনা করেছে। গ্রেড ২০ থেকে ১৬ তে নামানো হয়েছে। উপনিবেশ আমলে চালু হওয়া ইবি তুলে দেওয়া হয়েছে। সিলেকশন গ্রেড ও টাইম স্কেলের বিলুপ্তি ঘটিয়ে পদোন্নতির মাধ্যমে পরবর্তী ধাপে ওঠার ব্যবস্থা করার সুপারিশ করা হয়েছে। বিসিএস কর্মকর্তাদের নিয়োগকালে মূল বেতন ১১ হাজার থেকে বাড়িয়ে ২৫ হাজার টাকা নির্ধারণের সুপারিশ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এতে সরকারি চাকরির প্রতি মেধাবীরা আকৃষ্ট হবে। অন্যান্য দেশের বেতন কাঠামো ও বেসরকারি খাতের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে এটি প্রণয়ন করা হয়েছে। তবে নতুন এই বেতন কাঠামো যেদিন থেকে কার্যকর হবে, সেদিন থেকেই বিদ্যমান মহার্ঘ ভাতা বিলুপ্ত হবে। এতে বেতন-ভাতা বাবদ সরকারের ব্যয় বাড়বে ৬৩ দশমিক ৭ শতাংশ। চলতি অর্থবছরের বাজেটের মোট আকারের ১৫ শতাংশ এ খাতে ব্যয় হয়। নতুন কাঠামো বাস্তবায়ন হলে আগামী অর্থবছরের বাজেটের মাত্র ১৪.২ শতাংশ ব্যয় হবে। তিনি বলেন, যেহেতু এই সুপারিশ বাস্তবায়ন হলে বেতন যথেষ্ট বাড়বে, তাই ভাতা বাড়ানো ঠিক হবে না বলে কমিশন মনে করে। বিদ্যমান ভাতা একটি নির্দিষ্ট হারে বা হারের মধ্যেও একটি সর্বোচ্চ সীমা রেখে বহাল রাখা যেতে পারে। ডেপুটেশন এবং প্রেষণের সব ধরনের ভাতা বাতিল করা যেতে পারে। ডেপুটেশন বাতিলের পক্ষে কমিশন। বাড়িভাড়া আরো যৌক্তিক করতে তিন ধরনের স্তরের বদলে চার স্তরে- ঢাকা মেট্রোপলিটন শহর, চট্টগ্রামসহ বিভাগীয় শহর, নারায়ণগঞ্জ, সাভার ও জেলা শহর এবং অন্যান্য এলাকায় বিভাজন করা যেতে পারে। গ্রাম পুলিশের বেতনের অর্ধেক আসে সরকারি কোষাগার থেকে। বাকি অর্ধেক আসে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে। সরকারের কেনা চাল যেহেতু ৯ মাস পর নষ্ট হয়ে যায়, তাই এসব চাল কম দামে গ্রাম পুলিশদের মধ্যে বিতরণের উদ্যোগ নেওয়া যেতে পারে। এমপিওভুক্তির ক্ষেত্রে ছয় মাস পরে কার্যকর করার সুপারিশ করে কমিশন বলেছে, এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো শিক্ষার্থীদের বেতন বাবদ যে অর্থ আয় করে, তার একটি অংশ সরকারি কোষাগারে জমা দেওয়ার বিধান করা যেতে পারে। কমিশন লোকসানি স্বায়ত্তশাসিত ও সরকারি প্রতিষ্ঠানে আলাদা বেতন কাঠামো সুপারিশ করেনি। যেমন- পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকিং খাত, বীমা খাত। বেতন-ভাতার বাইরে সরকারি চাকুরেদের বাসস্থান একটি বড় সমস্যা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ বিষয়ে কমিশন বিভিন্ন বিকল্প সুপারিশ রেখেছে। একটি হলো আবাসন কম্পানির মাধ্যমে সরকারি পুরনো বাড়িঘর ভেঙে বা খাসজমি দিয়ে ফ্ল্যাট বানিয়ে ৬০ শতাংশ-৪০ শতাংশ মালিকানার ভিত্তিতে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে বরাদ্দ দিতে পারে। ২০-১০ জনকে সরকারি খাসজমি বরাদ্দ দিয়ে গৃহ নির্মাণের জন্য ৫০ মাসের মূল বেতনের সমান গৃহঋণ দেওয়া, সাধারণভাবে জমি কেনার প্রমাণ সাপেক্ষে ৫০ মাসের মূল বেতন ঋণ হিসেবে দেওয়ার চিন্তা করা যেতে পারে। এতে ম্রিয়মাণ আবাসন খাতে নতুন প্রাণের সঞ্চার হতে পারে। একইভাবে গাড়ি কেনার ক্ষেত্রে প্রাধিকারপ্রাপ্ত বা তার নিচের গ্রেডে ২৫ লাখ টাকা ঋণ দেওয়া যেতে পারে। তবে স্বায়ত্তশাসিত ও আধা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে এমন ঋণ দেওয়া হলে গাড়ি রক্ষণাবেক্ষণের ব্যয় ওই সব প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব আয় থেকে বহন করতে হবে। স্বাস্থ্যক্ষেত্রে বীমার জন্য প্রতি চাকুরের জন্য মাসে ৪০০ টাকা সাধারণ স্বাস্থ্য, চিকিৎসা, দুর্ঘটনা ও ১০০ টাকা জীবন বীমা প্রিমিয়াম দিয়ে পাঁচ বছর মেয়াদে মোট পাঁচ লাখ টাকার বীমা করা যেতে পারে বলে মনে করে কমিশন। তবে এ ক্ষেত্রে কোনো নগদ লেনদেন করা যাবে না। এই ব্যবস্থা বীমা খাতেও প্রাণের জোয়ার আনবে বলে কমিশন মনে করে। বীমা খাতের উদ্বৃত্ত অর্থ থেকে সরকারি চাকুরেদের জন্য একটি আধুনিক হৃদরোগ হাসপাতাল স্থাপন করা যেতে পারে। বীমা প্রিমিয়াম থেকে যথেষ্ট সঞ্চয় হবে বিধায় এ খাতে সরকারের খরচ কেবল প্রথম বছরই হবে, পরবর্তীতে খরচ কমে যাবে। প্রতিবেদনে বলা হয়, পেনশনের হার ৯০ শতাংশ উন্নীত করা যায়। ১৯৮৬ সালে পেনশনে বড় ধরনের পরিবর্তন ও উন্নতি হয়। এরই ধারাবাহিকতায় ৯০ শতাংশ বিবেচনা করা যেতে পারে। তবে ২০১৩ সালের নভেম্বরে আনুতোষিক বাড়িয়ে যে ১ টাকায় ২৯৩ টাকা করা হয়েছে, সেটা আর বাড়ানো উচিত হবে না। ছুটি পাওনা সাপেক্ষে পেনশনে যাওয়া কর্মকর্তাদের ১২ মাসের বদলে ১৮ মাসের ছুটির পাওনা দেওয়া যায় কি-না, তা বিবেচনা করা যেতে পারে। অবসরের বয়স ২৫ এর পরিবর্তে ২০ বছর করার সুপারিশ করা হয়েছে। পিএলআর ব্যবস্থা কিছু বিভ্রান্তি সৃষ্টি করেছে বলে এলপিআর পদ্ধতিতে ফেরার সুপারিশ করেছে কমিশন। কমিশনের একটি বড় সুপারিশ হলো- যে হারে বেতন বাড়বে, সেই হারেই পেনশন বাড়ানো যায় কি না, সেটা সরকার বিবেচনা করবে। তবে যারা সম্পূর্ণ টাকা পেনশনের পর নিয়ে গেছেন, তাঁদের চিকিৎসা ভাতা ও উৎসব ভাতা বাড়ানো ছাড়া আর কোনো সুপারিশ করা সম্ভব হয় নাই। কমিশন বলেছে, সাচিবিক ক্যাডারের জন্য আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী পদ খালি থাকলে নিয়োগ দেওয়া যেতে পারে। নন-ক্যাডারদের বিভিন্ন দাবি উপযুক্ত নিরীক্ষা শেষে যৌক্তিক মনে হলে মেনে নেওয়া যেতে পারে। যারা এক পদে সারা জীবন থাকতে বাধ্য হন, তাঁদের জন্য অর্গানোগ্রাম প্রণয়ন করা এবং সচিবালয়ের কর্মচারী এবং বাইরের কর্মচারী যারা একই বেতনে ও একই যোগ্যতায় চাকরিতে প্রবেশ করেছেন, তাঁদের ক্ষেত্রে ১৯৯৫ সালে যে বৈষম্য সৃষ্টি হয়েছে, তা দূর করার সুপারিশ করা হয়েছে।      

No comments:

Post a Comment