Friday, December 19, 2014

সীমান্ত চুক্তি না হওয়ার জন্য কংগ্রেস দায়ী:প্রথম অালো

সীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়ন না হওয়ার জন্য পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভারতের সাবেক কংগ্রেস সরকারই দোষী বলে জানালেন। গতকাল বৃহস্পতিবার নয়াদিল্লিতে সংসদ ভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সাবেক সরকার এই চুক্তিটি ঠিকমতো সামলাতে পারেনি। তারা রাজ্য সরকারের সঙ্গে ঠিকমতো কথাবার্তাও বলেনি। কিন্তু এখন আর কোনো বাধা নেই। চুক্তি বাস্তবায়ন এখন স্রেফ সময়ের ব্যাপার। সীমান্ত চুক্ত
িকে সমর্থন করার কথা বলার পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী এই ইঙ্গিতও দিয়েছেন যে তিস্তা চুক্তি নিয়ে তিনি এখন আর ততটা অনমনীয় নন। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘এই চুক্তি নিয়ে সমস্যা আছে। কারণ, তিস্তায় পানির প্রবাহ কী রকম, সেই হিসাব চূড়ান্ত নয়। পানির প্রবাহ নিয়ে পর্যালোচনা হচ্ছে। সরকার কীভাবে এর মীমাংসা করবে, তা এখনই বলতে পারব না।’ তবে একই সঙ্গে তিনি বলেন, বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা, নেপাল, ভুটানের মতো প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সঙ্গে তিনি সুসম্পর্ক চান। তিন বছর আগে ২০১১ সালে এবং তার পরেও তিস্তা ও সীমান্ত চুক্তি নিয়ে মমতা তীব্র আপত্তি জানিয়েছিলেন। সেই মমতা আজ কেন সীমান্ত চুক্তিকে সমর্থন করছেন জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ‘সীমান্ত চুক্তি নিয়ে আপত্তি করিনি। আপত্তি করেছিলাম তিস্তা নিয়ে। সেই সময় সরকার আমাদের অগোচরে রেখেই সবকিছু করতে চেয়েছিল। ঠিকঠাক এগোলে, মিস হ্যান্ডলিং না হলে আগের সরকারই সীমান্ত চুক্তি পাস করাতে পারত।’ তিনি বলেন, এই সরকারও যে রাজ্যের সঙ্গে আলোচনা করে সবকিছু ঠিকভাবে করছে তা নয়। কিন্তু ‘আমরা বাংলাদেশের সঙ্গে সদ্ভাব রাখতে চাই। সম্পর্ক দৃঢ় করতে চাই। নেপাল, ভুটান, শ্রীলঙ্কার সঙ্গেও সম্পর্কের উন্নতি চাই। তাই এই চুক্তিতে মত দিয়েছি।’ মমতা এ প্রসঙ্গে আরও বলেন, ‘আমি নিজে অনেক সীমান্তবর্তী এলাকায় গিয়েছি। সেখানকার ছিটমহলগুলোর মানুষের দুর্দশা দেখেছি। তাদের সমস্যার কথা জানি। এর সমাধান হওয়া দরকার।’ সীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়নের আগে ছিটমহলবাসীর পুনর্বাসনের প্রশ্নটি অবশ্য বড় করে তুলে ধরেছেন মমতা। তিনি বলেন, রাজ্য সরকারের কর্মকর্তারা দিল্লি এসেছিলেন। কেন্দ্রীয় কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। পুনর্বাসনে অনেক টাকা প্রয়োজন। কেন্দ্রকে সেই অর্থ দিতে হবে। চুক্তি বাস্তবায়নের আগে এটা নিশ্চিত হওয়া দরকার। সীমান্ত চুক্তি বিল সংসদের এই অধিবেশনে আসছে না। নতুনভাবে জটিলতা সৃষ্টি না হলে বাজেট অধিবেশনে বিলটি পাস হবে। এ বিষয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির তৃণমূল সদস্য অধ্যাপক সুগত বসু। গতকাল সংসদ ভবনে প্রথম আলোকে তিনি বলেন, ‘আমরা এত দ্রুত কমিটির রিপোর্ট পেশ করলাম, অথচ সরকার বিলটি আনলই না। কোনো দলেরই কোনো বিরোধিতা নেই। সব দল সহমত, তবু কেন সরকার এই বিল আনল না, তা বোধোগম্য নয়।’ সুগত বসু বলেন, ‘লোহা গরম থাকতে থাকতেই ঘা মারতে হয়। তিন মাস পরে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি কোন দিকে বাঁক নেয় কেউ বলতে পারে না।’ মমতা দিল্লি থাকাকালীনই ছয় দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে ভারতে এলেন বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ। গতকাল তিনি রাজঘাটে মহাত্মা গান্ধীর সমাধিতে যান শ্রদ্ধা জানাতে। আজই তাঁর সম্মানে আয়োজিত নৈশভোজে অন্যান্যের সঙ্গে আমন্ত্রিত হয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। তাই কলকাতা যাওয়ার আগেই দিল্লিতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর সাক্ষাৎ হতে পারে।

No comments:

Post a Comment