স্পষ্ট চোখে পড়ল নদীর গা ঘেঁষে থাকা বনের গাছগুলোর গোড়া, এমনকি পলিপড়া মাটির রংও কালো। এর মধ্যেই একটি ডলফিনকে শ্বাস নিতে দেখে ট্রলারে থাকা স্থানীয় একজন হাহাকার করে বলে উঠলেন, ‘আহা রে, আমাগের ডলফিনগুলো আর থাকপে নানে। তেলের যে গন্ধ, তাতে ডাঙার মানুষই টিকতেছে না, আর ডলফিন!’ এ দুর্ঘটনায় নদী এবং বনে বসবাসরত বিভিন্ন প্রাণীর মতোই বিপাকে পড়েছে এলাকার হাজার হাজার মানুষ। তারা বিভিন্নভাবে এ নদী ও বনের ওপর নির্ভরশীল। জয়মনি বাজারের আবদুস সাত্তার যেমন বললেন, ‘নদীতি জাল পাতা বন্ধ। কবে পাততি পারব জানিনে।’ এলাকার লোকজনের সঙ্গে কথা বলে আরও জানা গেল, এই নদীর পানি তাঁদের অনেকের খাবার পানিরও উৎস। তা ছাড়া এ নদী থেকে বের হওয়া খালগুলোতে তেল ছড়িয়ে পড়ায় উদ্বিগ্ন অনেকে। তাঁদের ধারণা, বসতির মধ্য দিয়ে বয়ে যাওয়া এ ধরনের খালগুলোর পানি ঘেরের পানিতে মিশে গেলে সেখানকার মাছও মরে যাবে। এ দুর্ঘটনার প্রভাব সম্পর্কে সুন্দরবনের পূর্ব বিভাগীয় বন কর্মকর্তা আমীর হুসাইন চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, সুন্দরবনের ওপর এর প্রভাব ভয়াবহ। তবে এখন শীতকাল হওয়ায় বনের ভেতর এর প্রভাব অতটা পড়বে না বলে মনে করেন তিনি। এখন শীতকাল হওয়ায় জোয়ারের উচ্চতা অনেক কম। এতে প্রভাব অনেকটা কম। বর্ষাকাল হলে ক্ষতিটা অনেক বেশি হতো বলে জানান আমীর হুসাইন চৌধুরী। ডলফিনের বিচরণ সরে যেতে পারে কি না, জানতে চাইলে খুলনার বন্য প্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের কর্মকর্তা মো. জাহিদুল কবির বলেন, ডলফিন খুব বুদ্ধিমান প্রাণী। এ পরিস্থিতিতে তারা হয়তো সাময়িকভাবে সরে যাবে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আবার ফিরে আসার চেষ্টা করবে। তবে এত পরিমাণ তেল পানিতে ভেসে থাকায় উপকূলীয় প্রাণিবৈচিত্র্যের ওপর দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব পড়বে বলে মনে করেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক দিলীপ কুমার দত্ত। তাঁর মতে, এ ঘটনা সুন্দরবনের বাস্তুসংস্থানকেও গুরুতরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। তিনি বলেন, ভাটি এলাকায় পানির প্রবাহ তুলনামূলকভাবে কম থাকায় সাগরের জোয়ার-ভাটায় দ্রুত এ বর্জ্য অপসারণের সম্ভাবনা কম।
Headlines from most popular newspapers of Bangladesh. বাংলাদেশে প্রকাশিত প্রধান প্রধান দৈনিক পত্রিকার সংবাদ শিরোনামগুলো এক নজরে দেখে নিন।
Thursday, December 11, 2014
সাধারণ মানুষও বিপাকে:প্রথম অালো
স্পষ্ট চোখে পড়ল নদীর গা ঘেঁষে থাকা বনের গাছগুলোর গোড়া, এমনকি পলিপড়া মাটির রংও কালো। এর মধ্যেই একটি ডলফিনকে শ্বাস নিতে দেখে ট্রলারে থাকা স্থানীয় একজন হাহাকার করে বলে উঠলেন, ‘আহা রে, আমাগের ডলফিনগুলো আর থাকপে নানে। তেলের যে গন্ধ, তাতে ডাঙার মানুষই টিকতেছে না, আর ডলফিন!’ এ দুর্ঘটনায় নদী এবং বনে বসবাসরত বিভিন্ন প্রাণীর মতোই বিপাকে পড়েছে এলাকার হাজার হাজার মানুষ। তারা বিভিন্নভাবে এ নদী ও বনের ওপর নির্ভরশীল। জয়মনি বাজারের আবদুস সাত্তার যেমন বললেন, ‘নদীতি জাল পাতা বন্ধ। কবে পাততি পারব জানিনে।’ এলাকার লোকজনের সঙ্গে কথা বলে আরও জানা গেল, এই নদীর পানি তাঁদের অনেকের খাবার পানিরও উৎস। তা ছাড়া এ নদী থেকে বের হওয়া খালগুলোতে তেল ছড়িয়ে পড়ায় উদ্বিগ্ন অনেকে। তাঁদের ধারণা, বসতির মধ্য দিয়ে বয়ে যাওয়া এ ধরনের খালগুলোর পানি ঘেরের পানিতে মিশে গেলে সেখানকার মাছও মরে যাবে। এ দুর্ঘটনার প্রভাব সম্পর্কে সুন্দরবনের পূর্ব বিভাগীয় বন কর্মকর্তা আমীর হুসাইন চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, সুন্দরবনের ওপর এর প্রভাব ভয়াবহ। তবে এখন শীতকাল হওয়ায় বনের ভেতর এর প্রভাব অতটা পড়বে না বলে মনে করেন তিনি। এখন শীতকাল হওয়ায় জোয়ারের উচ্চতা অনেক কম। এতে প্রভাব অনেকটা কম। বর্ষাকাল হলে ক্ষতিটা অনেক বেশি হতো বলে জানান আমীর হুসাইন চৌধুরী। ডলফিনের বিচরণ সরে যেতে পারে কি না, জানতে চাইলে খুলনার বন্য প্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের কর্মকর্তা মো. জাহিদুল কবির বলেন, ডলফিন খুব বুদ্ধিমান প্রাণী। এ পরিস্থিতিতে তারা হয়তো সাময়িকভাবে সরে যাবে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আবার ফিরে আসার চেষ্টা করবে। তবে এত পরিমাণ তেল পানিতে ভেসে থাকায় উপকূলীয় প্রাণিবৈচিত্র্যের ওপর দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব পড়বে বলে মনে করেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক দিলীপ কুমার দত্ত। তাঁর মতে, এ ঘটনা সুন্দরবনের বাস্তুসংস্থানকেও গুরুতরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। তিনি বলেন, ভাটি এলাকায় পানির প্রবাহ তুলনামূলকভাবে কম থাকায় সাগরের জোয়ার-ভাটায় দ্রুত এ বর্জ্য অপসারণের সম্ভাবনা কম।
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment