Thursday, December 11, 2014

দেশে মানবাধিকার লঙ্ঘন রেকর্ড ছাড়িয়েছে : মান্না:নয়াদিগন্ত

‘মানবাধিকার হরণ- এ কী পরিস্থিতিতে দেশ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় সবুজবাগ থানা ছাত্রদলের নেতা মাহবুব হাসানের স্ত্রী তানজিনা আক্তার অভিযোগ করেনÑ এক বছর আগে তার স্বামীকে ধরে নিয়ে যায় পুলিশের গোয়েন্দা শাখার পরিচয় দেয়া লোকজন। এর পর থেকে তার আর সন্ধান পাওয়া যায়নি। তিনি বলেন, দুই সন্তান নিয়ে আমাদের দিনগুলো কিভাবে কাটছে, আল্লাহ ছাড়া কেউ জানে না।   গতকাল জাতীয় প্রেস কাবে মৌলিক অধিকার সুরা কমিটির আলোচনা সভায় ভুক্ত
ভোগী পরিবারের সদস্যরা এভাবে তাদের স্বজনদের হারিয়ে যাওয়ার করুণ বর্ণনা দেন। রাজধানীর মিরপুর বিহারি ক্যাম্পের বাসিন্দা শহীদ আলী বাহাদুর অভিযোগ করেন, ক্যাম্প দখল করার জন্য ৯ জনকে হত্যা করা হয়েছে। কয়েক দিন আগে একজনকে পিটিয়ে মেরেছে পুলিশ। এর এক মাস আগে চাঁদা দাবি করে না পেয়ে জাবেদ নামের একজনকে হত্যা করা হয়েছে।   যশোরের মালোপাড়ার বিশ্বজিৎ বিশ্বাস বলেন, প্রধানমন্ত্রী আমাদের তিনটি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। একটিও পূরণ হয়নি। পুলিশ আসামি ধরে। ১০-১২ দিন পরে আসামির জামিন হয়ে যায়। নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের মো: রফিক বলেন, ২০০০ সালের ২৩ অক্টোবর সেনাবাহিনী ও এলাকাবাসীর মধ্যে সংঘর্ষের সময় তার ছেলে জামাল নিহত হয়। তিনিও সব সময় গোয়েন্দা নজরদারিতে থাকেন।   জাতীয় মানবাধিকার সমিতির মানববন্ধন : আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলে গতকাল জাতীয় প্রেস কাবের সামনে মানবাধিকার সমিতি আয়োজিত মানববন্ধনে অংশ নিয়ে নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন, অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে দেশে বর্তমানে মানবাধিকার লঙ্ঘন রেকর্ড ছাড়িয়েছে। এখন দেশের ১৬ কোটি মানুষের দায়িত্ব হচ্ছে সরকারকে আসামির কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে তাদের জবাবদিহিতার ব্যবস্থা করা। যারা অবৈধভাবে মতায় থেকে মানুষের অধিকারকে হরণ করছে তাদের কাছে জবাব চাই। মান্না আরো বলেন, খুন, গুমের শিকার পরিবারগুলো তাদের স্বজনদের খুঁজে পাওয়ার জন্য সরকারকে ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ করলেও সরকার এখনো কোনো জবাব দেয়নি। আজ খুন, গুমের সবচেয়ে বড় অভিযোগ হচ্ছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিরুদ্ধে।   সংগঠনের মহাসচিব মঞ্জুর হোসেন ঈশার সভাপতিত্বে মানববন্ধনে আরো বক্তব্য দেন এনডিপির চেয়ারম্যান খোন্দকার গোলাম মোর্ত্তজা, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ড. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ব্যারিস্টার হায়দার আলী প্রমুখ।   অন্য দিকে বছরের ৩৬৫ দিনই আদিবাসী ও ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানবাধিকার সুরক্ষার দাবিতে রাজধানীতে মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে হিউম্যান রাইটস অ্যালায়েন্স বাংলাদেশ, বাংলাদেশ মাইনরিটি ওয়াচ, গ্লোবাল হিউম্যান রাইটস ডিফেন্স, বাংলাদেশ সেন্টার ফর হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট, অ্যালায়েন্স ফর লিগ্যাল এইড কো-অপারেশন ইন বাংলাদেশ, ইনস্টিটিউট ফর ইনভারমেন্ট অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট, জন-উদ্যোগ, ইসলামবাগ অনির্বাণ সমাজ কল্যাণ সংস্থা ও দেবীদাসঘাট সমাজ কল্যাণ সংস্থা।   অন্য দিকে প্যালেস্টাইন প্রত্যাগত মুক্তিযোদ্ধা সংসদ দিলকুশাস্থ কার্যালয়ে আলোচনা সভার আয়োজন করে। এতে বক্তারা মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় সব ধরনের নির্যাতন, হত্যা-গুম বন্ধ করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।

No comments:

Post a Comment