আমাদের পাশে থাকবে। কারণ, তাদের কাছে বাংলাদেশের পোশাকই সেরা।’ প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্যের সময় দর্শক সারিতে ইউরোপ ও আমেরিকার প্রায় ৬৫ ব্র্যান্ড ও ক্রেতা প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি, ক্রেতাদের দুই জোট অ্যাকর্ড ও অ্যালায়েন্সের কয়েকজন শীর্ষ কর্মকর্তা বসে ছিলেন। এর আগে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ তাঁর বক্তব্যেও একই অনুরোধ করেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদ্যাপনের বছর ২০২১ সালে তৈরি পোশাকের রপ্তানি ৫০ বিলিয়ন বা পাঁচ হাজার কোটি মার্কিন ডলারে নিয়ে যেতে চায় তৈরি পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ। এই লক্ষ্য অর্জনের পথে পোশাকশিল্পের চ্যালেঞ্জগুলো চিহ্নিত করে একটি টেকসই পরিকল্পনা ও বাংলাদেশের ব্র্যান্ডিং করতে এই সম্মেলনের আয়োজন করেছে সংগঠনটি। সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানসহ তিনটি কর্ম-অধিবেশনে দেশ-বিদেশের মন্ত্রী, বিদেশি ক্রেতা প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি, উদ্যোক্তা, বিশেষজ্ঞরা পোশাকশিল্পের রপ্তানি আয়ে এই মাইলফলক অর্জন সম্ভব বলে মন্তব্য করেছেন। তাঁরা অভিমত দিয়েছেন, অবকাঠামোর উন্নয়ন, উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, নীতির ধারাবাহিকতা, শ্রমিকদের কর্মপরিবেশ উন্নত করতে পারলে আগামী ছয়-সাত বছরের মধ্যে সহজেই পোশাকশিল্পের রপ্তানি ৫০ বিলিয়ন ডলার হয়ে যাবে। বর্তমানে এই খাতের রপ্তানি আয় ২৪ বিলিয়ন ডলার। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পোশাক খাতের বিরুদ্ধে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রের বিষয়ে সজাগ থাকার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম তৈরি পোশাক রপ্তানিকারক দেশ। এটি অনেকের পছন্দ নয়। তাই তারা পোশাক খাতের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। এই দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রকারীদের ব্যাপারে পোশাকমালিক, শ্রমিক, বিদেশি ক্রেতা ও ভোক্তাদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানাই।’ পোশাকশিল্পের উদ্যোক্তাদের উদ্দেশে শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। প্রতিযোগিতাও বাড়ছে। তাই টিকে থাকতে হলে উৎপাদনশীলতা বাড়াতে হবে। ডিজাইনে নতুনত্ব আনতে হবে। নতুন বাজার সৃষ্টি করতে হবে। তিনি আরও বলেন, ‘আমরা গ্যাস-বিদ্যুতের উৎপাদন ও বন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধির উদ্যোগ নিয়েছি। আপনারা বিনিয়োগ বাড়ান।’ প্রথমবারের মতো এই সম্মেলনের আয়োজন করেছে বিজিএমইএ। এতে সহায়তা করছে ব্র্যান্ড ফোরাম। সম্মেলনের পাশাপাশি তিন দিনব্যাপী ভবন ও অগ্নিনিরাপত্তা সরঞ্জামের আন্তর্জাতিক প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। উত্তর আমেরিকার ক্রেতাদের জোট অ্যালায়েন্স এই প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে। এ ছাড়া প্রধানমন্ত্রী পোশাকশ্রমিকদের দক্ষতা ও গবেষণার জন্য সেন্টার অব এক্সিলেন্স ফর বাংলাদেশ অ্যাপারেল ইন্ডাস্ট্রির (সিইবিএআই) কার্যক্রম শুরুর আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেন। গতকাল বেলা ১১টায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য দেন বিজিএমইএর সহসভাপতি নাসিরউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী। এর পরপরই রানা প্লাজা ধসে নিহত শ্রমিকদের কয়েকজন সন্তান সমবেত কণ্ঠে ‘আমরা করব জয়’ গানটি পরিবেশন করে। তখন অনুষ্ঠানস্থলে পিনপতন নীরবতা নেমে আসে। দীর্ঘ মেয়াদে পোশাক খাতের প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে চাইলে উচ্চমূল্যের পণ্য তৈরির পরামর্শ দেন এইচএসবিসি ব্যাংকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফ্রাঁসওয়া দ্য ম্যারিকো। অন্যদিকে হার্ভার্ড ল স্কুলের অধ্যাপক আরনল্ড এম জ্যাক বলেন, বাংলাদেশ পোশাকশিল্পে বিশ্বের কাছে অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত হতে পারে। এ জন্য সুশাসন ও গণতন্ত্রের চর্চা অব্যাহত রাখতে হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি। অ্যালায়েন্সের চেয়ার অ্যালেন টশার বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি, বিশেষ করে পোশাকশিল্পকে আরও এগিয়ে নেওয়ার সুযোগ আছে। সে জন্য শ্রমিকদের কর্মপরিবেশের উন্নতি ও উদ্যোক্তাদের কারখানা সংস্কারে কাজ করতে হবে। এ জন্য অ্যাকর্ড ও অ্যালায়েন্স কাজ করছে। বাংলাদেশও প্রতিদিন উন্নতি করছে। ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টের সদস্য জেন ল্যামবের্ট বলেন, ‘ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) জনগণ চায় নিরাপদ কর্মপরিবেশ ও নৈতিকভাবে পোশাক তৈরি হোক। সে জন্য ইইউ পার্লামেন্ট বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে। বেশ কিছু শর্ত দিয়েছে। সে অনুযায়ী বাংলাদেশ অগ্রগতিও করছে।’ রানা প্লাজা ধসে নিহত ব্যক্তিদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ক্ষতিপূরণের জন্য জমা পড়েছে ২০ মিলিয়ন ডলার। আর ২০ মিলিয়ন ডলার দরকার। আমরা ইইউর ক্রেতা ও ব্র্যান্ডগুলোর প্রতিনিয়ত ক্ষতিপূরণের অর্থ দিতে প্রচেষ্টা চালাচ্ছি।’ বিজিএমইএর সভাপতি আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘তৈরি পোশাক রপ্তানি বিশ্বে বাংলাদেশের হিস্যা মাত্র ৫ শতাংশ। কিন্তু এখানে অ্যাকর্ড ও অ্যালায়েন্স বিভিন্ন শর্ত আরোপ করে প্রচণ্ড চাপে রেখেছে উদ্যোক্তাদের। ক্রেতাদের এ দুই জোটের উচিত আমাদের প্রতিযোগী দেশগুলোতেও একই ধরনের কার্যক্রম চালানো। এটি হলে সবার জন্য (লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড) সমান সুযোগ হবে।’ অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী, শ্রম প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক প্রমুখ। সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনে আজ সোমবার ছয়টি কর্ম-অধিবেশন অনুষ্ঠিত হবে।
Headlines from most popular newspapers of Bangladesh. বাংলাদেশে প্রকাশিত প্রধান প্রধান দৈনিক পত্রিকার সংবাদ শিরোনামগুলো এক নজরে দেখে নিন।
Monday, December 8, 2014
ক্রেতাদের পোশাকের দাম বাড়াতে বললেন প্রধানমন্ত্রী:প্রথম অালো
আমাদের পাশে থাকবে। কারণ, তাদের কাছে বাংলাদেশের পোশাকই সেরা।’ প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্যের সময় দর্শক সারিতে ইউরোপ ও আমেরিকার প্রায় ৬৫ ব্র্যান্ড ও ক্রেতা প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি, ক্রেতাদের দুই জোট অ্যাকর্ড ও অ্যালায়েন্সের কয়েকজন শীর্ষ কর্মকর্তা বসে ছিলেন। এর আগে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ তাঁর বক্তব্যেও একই অনুরোধ করেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদ্যাপনের বছর ২০২১ সালে তৈরি পোশাকের রপ্তানি ৫০ বিলিয়ন বা পাঁচ হাজার কোটি মার্কিন ডলারে নিয়ে যেতে চায় তৈরি পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ। এই লক্ষ্য অর্জনের পথে পোশাকশিল্পের চ্যালেঞ্জগুলো চিহ্নিত করে একটি টেকসই পরিকল্পনা ও বাংলাদেশের ব্র্যান্ডিং করতে এই সম্মেলনের আয়োজন করেছে সংগঠনটি। সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানসহ তিনটি কর্ম-অধিবেশনে দেশ-বিদেশের মন্ত্রী, বিদেশি ক্রেতা প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি, উদ্যোক্তা, বিশেষজ্ঞরা পোশাকশিল্পের রপ্তানি আয়ে এই মাইলফলক অর্জন সম্ভব বলে মন্তব্য করেছেন। তাঁরা অভিমত দিয়েছেন, অবকাঠামোর উন্নয়ন, উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, নীতির ধারাবাহিকতা, শ্রমিকদের কর্মপরিবেশ উন্নত করতে পারলে আগামী ছয়-সাত বছরের মধ্যে সহজেই পোশাকশিল্পের রপ্তানি ৫০ বিলিয়ন ডলার হয়ে যাবে। বর্তমানে এই খাতের রপ্তানি আয় ২৪ বিলিয়ন ডলার। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পোশাক খাতের বিরুদ্ধে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রের বিষয়ে সজাগ থাকার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম তৈরি পোশাক রপ্তানিকারক দেশ। এটি অনেকের পছন্দ নয়। তাই তারা পোশাক খাতের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। এই দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রকারীদের ব্যাপারে পোশাকমালিক, শ্রমিক, বিদেশি ক্রেতা ও ভোক্তাদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানাই।’ পোশাকশিল্পের উদ্যোক্তাদের উদ্দেশে শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। প্রতিযোগিতাও বাড়ছে। তাই টিকে থাকতে হলে উৎপাদনশীলতা বাড়াতে হবে। ডিজাইনে নতুনত্ব আনতে হবে। নতুন বাজার সৃষ্টি করতে হবে। তিনি আরও বলেন, ‘আমরা গ্যাস-বিদ্যুতের উৎপাদন ও বন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধির উদ্যোগ নিয়েছি। আপনারা বিনিয়োগ বাড়ান।’ প্রথমবারের মতো এই সম্মেলনের আয়োজন করেছে বিজিএমইএ। এতে সহায়তা করছে ব্র্যান্ড ফোরাম। সম্মেলনের পাশাপাশি তিন দিনব্যাপী ভবন ও অগ্নিনিরাপত্তা সরঞ্জামের আন্তর্জাতিক প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। উত্তর আমেরিকার ক্রেতাদের জোট অ্যালায়েন্স এই প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে। এ ছাড়া প্রধানমন্ত্রী পোশাকশ্রমিকদের দক্ষতা ও গবেষণার জন্য সেন্টার অব এক্সিলেন্স ফর বাংলাদেশ অ্যাপারেল ইন্ডাস্ট্রির (সিইবিএআই) কার্যক্রম শুরুর আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেন। গতকাল বেলা ১১টায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য দেন বিজিএমইএর সহসভাপতি নাসিরউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী। এর পরপরই রানা প্লাজা ধসে নিহত শ্রমিকদের কয়েকজন সন্তান সমবেত কণ্ঠে ‘আমরা করব জয়’ গানটি পরিবেশন করে। তখন অনুষ্ঠানস্থলে পিনপতন নীরবতা নেমে আসে। দীর্ঘ মেয়াদে পোশাক খাতের প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে চাইলে উচ্চমূল্যের পণ্য তৈরির পরামর্শ দেন এইচএসবিসি ব্যাংকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফ্রাঁসওয়া দ্য ম্যারিকো। অন্যদিকে হার্ভার্ড ল স্কুলের অধ্যাপক আরনল্ড এম জ্যাক বলেন, বাংলাদেশ পোশাকশিল্পে বিশ্বের কাছে অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত হতে পারে। এ জন্য সুশাসন ও গণতন্ত্রের চর্চা অব্যাহত রাখতে হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি। অ্যালায়েন্সের চেয়ার অ্যালেন টশার বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি, বিশেষ করে পোশাকশিল্পকে আরও এগিয়ে নেওয়ার সুযোগ আছে। সে জন্য শ্রমিকদের কর্মপরিবেশের উন্নতি ও উদ্যোক্তাদের কারখানা সংস্কারে কাজ করতে হবে। এ জন্য অ্যাকর্ড ও অ্যালায়েন্স কাজ করছে। বাংলাদেশও প্রতিদিন উন্নতি করছে। ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টের সদস্য জেন ল্যামবের্ট বলেন, ‘ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) জনগণ চায় নিরাপদ কর্মপরিবেশ ও নৈতিকভাবে পোশাক তৈরি হোক। সে জন্য ইইউ পার্লামেন্ট বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে। বেশ কিছু শর্ত দিয়েছে। সে অনুযায়ী বাংলাদেশ অগ্রগতিও করছে।’ রানা প্লাজা ধসে নিহত ব্যক্তিদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ক্ষতিপূরণের জন্য জমা পড়েছে ২০ মিলিয়ন ডলার। আর ২০ মিলিয়ন ডলার দরকার। আমরা ইইউর ক্রেতা ও ব্র্যান্ডগুলোর প্রতিনিয়ত ক্ষতিপূরণের অর্থ দিতে প্রচেষ্টা চালাচ্ছি।’ বিজিএমইএর সভাপতি আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘তৈরি পোশাক রপ্তানি বিশ্বে বাংলাদেশের হিস্যা মাত্র ৫ শতাংশ। কিন্তু এখানে অ্যাকর্ড ও অ্যালায়েন্স বিভিন্ন শর্ত আরোপ করে প্রচণ্ড চাপে রেখেছে উদ্যোক্তাদের। ক্রেতাদের এ দুই জোটের উচিত আমাদের প্রতিযোগী দেশগুলোতেও একই ধরনের কার্যক্রম চালানো। এটি হলে সবার জন্য (লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড) সমান সুযোগ হবে।’ অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী, শ্রম প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক প্রমুখ। সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনে আজ সোমবার ছয়টি কর্ম-অধিবেশন অনুষ্ঠিত হবে।
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment