Thursday, January 8, 2015

সিলেট ও হবিগঞ্জের মেয়র সাময়িক বরখাস্ত:প্রথম অালো

সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী ও হবিগঞ্জের পৌর মেয়র জি কে গউছকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। গতকাল বুধবার আরিফুলকে এবং গত সোমবার গউছকে বরখাস্ত করে স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে এ-সংক্রান্ত দুটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এ এম এস কিবরিয়া হত্যা মামলার দ্বিতীয় দফার সম্পূরক অভিযোগপত্রে ওই দুই মেয়রের নাম আসায় তাঁদের সাময়িক বরখাস্ত করে সরকার। আরিফুলের স্থলাভিষিক্ত হচ্ছে
ন ১ নম্বর প্যানেল মেয়র রেজাউল হাসান লোদী। তিনি সাবেক মেয়র আওয়ামী লীগের নেতা বদরউদ্দিন আহমদ কামরানের ঘনিষ্ঠ বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে। আর হবিগঞ্জে গউছের স্থলাভিষিক্ত হচ্ছেন ১ নম্বর প্যানেল মেয়র পিয়ার বেগম। ২০১৩ সালের ১৫ জুন সিলেট সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে ১৮-দলীয় জোট-সমর্থিত প্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরী এক লাখের বেশি ভোট পেয়ে দুই মেয়াদের মেয়র নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বদরউদ্দিন আহমদ কামরানকে পরাজিত করেন। মেয়র নির্বাচিত হওয়ার দেড় বছরের মাথায় সরকার আরিফুলকে সাময়িক বরখাস্ত করল। ২০১১ সালে হবিগঞ্জ পৌরসভার মেয়র নির্বাচিত হন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জি কে গউছ। তিনি তৎকালীন পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি শরীফ উল্লাহকে ৮ হাজার ১৪৬ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করেন। আরিফুল হক চৌধুরীকে সাময়িক বরখাস্তের প্রজ্ঞাপনে সই করেছেন জ্যেষ্ঠ সহকারী সচিব সরোজ কুমার নাথ। এতে বলা হয়, কিবরিয়া হত্যা মামলায় গত ১৩ নভেম্বর সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র ও বিএনপির নেতা আরিফুল হক চৌধুরীসহ নতুন করে নয়জনকে অভিযুক্ত করে তৃতীয় সম্পূরক (প্রকৃতপক্ষে দ্বিতীয় দফার সম্পূরক অভিযোগপত্র) দেয় সিআইডি। আদালত তাঁদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করলে আরিফুল আত্মসমর্পণ করেন। পরে আদালত তাঁকে কারাগারে পাঠান। কারাগারে আটক থাকায় তাঁর মাধ্যমে মেয়রের ক্ষমতা প্রয়োগ জনস্বার্থের পরিপন্থী। সে জন্য তাঁকে সিটি করপোরেশন আইন, ২০০৯-এর ১২(১) ধারার বিধানে সাময়িক বরখাস্তের সিদ্ধান্ত হয়েছে। জি কে গউছকে বরখাস্তের প্রজ্ঞাপনে সই করেন উপসচিব খলিলুর রহমান। এতে বলা হয়, ওই মামলায় গত ২৮ ডিসেম্বর হবিগঞ্জ পৌরসভার মেয়র ও জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জি কে গউছ হবিগঞ্জের আমলি আদালত-১-এ আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন। আদালত জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে তাঁকে কারাগারে পাঠান। ২০০৫ সালের ২৭ জানুয়ারি হবিগঞ্জের বৈদ্যেরবাজারে স্থানীয় আওয়ামী লীগের এক জনসভায় গ্রেনেড হামলায় শাহ এ এম এস কিবরিয়াসহ পাঁচজন নিহত ও ৭০ জন আহত হন। পরদিন এ ঘটনায় হবিগঞ্জ সদর থানায় হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দুটি মামলা হয়। ঘটনার ৫০ দিন পর ২০০৫ সালের ২০ মার্চ অভিযোগপত্র দাখিল করে সিআইডি। আসামি ১০ জনের মধ্যে ছিলেন স্থানীয় বিএনপির নেতা, সাইনবোর্ড লেখক, স্কুলশিক্ষক ও ডাকপিয়ন। তবে এই অভিযোগপত্রের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে তখনই প্রশ্ন ওঠে। কিবরিয়ার পরিবার ওই অভিযোগপত্র প্রত্যাখ্যান করে। এর পরে আদালতের নির্দেশে মামলাটি অধিকতর তদন্ত করে সিআইডি। ২০১১ সালে শেখ হাসিনার সরকারের আমলে সম্পূরক অভিযোগপত্র দেয় সিআইডি। এতে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরসহ ১৬ জনকে নতুন করে আসামি করা হয়। অন্যরা হরকাতুল জিহাদের (হুজি) নেতা-কর্মী। কিবরিয়ার পরিবারের নারাজি আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত আবারও অধিকতর তদন্তের নির্দেশ দেন। এরপর ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের পর দ্বিতীয় দফায় অধিকতর তদন্ত হয়। এরপর গত ১৩ নভেম্বর আদালতে দ্বিতীয় দফার সম্পূরক অভিযোগপত্র দাখিল করে সিআইডি। এতে আরিফুল হক, বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সাবেক রাজনৈতিক উপদেষ্টা হারিছ চৌধুরী, হবিগঞ্জ পৌরসভার মেয়র জি কে গউছসহ নয়জনকে নতুন করে অভিযুক্ত করা হয়।

No comments:

Post a Comment