Wednesday, January 28, 2015

বিএনপিকে ধ্বংস করাই সরকারের টার্গেট : রিজভী:নয়াদিগন্ত

বর্তমান সরকারকে নিপীড়ক আখ্যা দিয়ে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেনÑ ভোটবিহীন, গণবিরোধী সরকারের টিকে থাকার ভিত্তি হচ্ছে উৎপীড়ন আর জুলুম। অবৈধ ক্ষমতাসীনেরা স্বেচ্ছা-অন্ধত্বের দিকে নিজেদেরকে ঠেলে নিয়ে গেছে; কারণ জনগণের কাছে জবাবদিহিতাকে তারা এখন ঘৃণা করে। এখন নিপীড়ক সরকারের টার্গেট হচ্ছে এ দেশের জনগণের অবিসংবাদিত নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও তার দলকে নিশ্চিহ্ন করা। কারণ জাতীয়তাবাদী শক্তি দু
র্বল হলেই কেবল দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব বিকিয়ে দেয়া সহজ হয়। সেই লক্ষ্যেই ভোটারবিহীন ক্ষমতাধরেরা একের পর এক সিরিজ মামলা দিয়ে যাচ্ছে বেগম জিয়ার বিরুদ্ধে। গতকাল এক বিবৃতিতে এ কথা বলেন বিএনপির এ যুগ্ম মহাসচিব।   তিনি বলেন, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার ছেলে কোকোর মৃত্যু সংবাদে প্রধানমন্ত্রী গুলশান কার্যালয়ে এসে ফিরে যাওয়াতে নাকি অপমানবোধ করেছেন। আমরা সংবাদপত্র থেকে বিষয়টি জেনেছি। অথচ তার আসাটাকে বিএনপি ইতিবাচক হিসেবেই দেখেছে। সে জন্য বিএনপি চেয়ারপারসনের প থেকে শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানানো হয়েছে। কিন্তু মনে হচ্ছে শোক জানানোর চেয়ে শেখ হাসিনার নোংরা রাজনীতিটাই মুখ্য উদ্দেশ্য ছিল।   বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে হুকুমের আসামি করে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে মিথ্যা মামলা দায়েরের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান রিজভী।   বিবৃতিতে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর প্রতিহিংসার আগুন এত লেলিহান যে তিনি সাবেক সেনাপ্রধান শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর লাশ বনানী সামরিক কবরস্থানে দাফন করতে দিলেন না। এমনকি কোকোর নামাজে জানাজায় যাতে লোকসমাগম বেশি না হয় সে জন্য বিভিন্ন পাড়া-মহল্লা, স্কুল, কলেজ, মাদরাসাসহ ২০ দলীয় জোটের নেতাদের সরকারের গোয়েন্দা বাহিনী হুমকি দিয়েছে। সুতরাং কোকোর মৃত্যুতে সমবেদনা জানানোর ধুয়া তুলে প্রধানমন্ত্রীর সেখানে যাওয়ার আসল উদ্দেশ্যই ছিল অপরাজনীতি ও কুটিল চাতুরী। সরকারের ঘৃণ্য মানসিকতায় তীব্র নিন্দা ও ধিক্কার জানান রুহুল কবির রিজভী।   তিনি বলেন, রাষ্ট্রযন্ত্রকে কব্জা করে নিজেদের সর্বনাশা প্রতিহিংসাচরিতার্থ করার জন্য বেপরোয়া হয়ে পড়েছে সরকার। সারা দেশে হাজার হাজার নেতাকর্মীকে আটক ও মিথ্যা মামলা দেয়ার পরও তারা জিঘাংসা প্রশমিত করতে পারছেন না। গুম আর গুপ্তহত্যার কারণে দেশজুড়ে কান্নার রোল উঠলেও সরকারের ক্রোধ মিটছে না। আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে গুলি করার নির্দেশ দিয়ে তাদেরকে বিভিন্ন ধরনের অনাচার ও অবাধ হত্যা বাণিজ্যে লিপ্ত করা হয়েছে। ফলে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের এখন র‌্যাব-পুলিশের বেপরোয়া চাঁদাবাজি, ভাড়ায় সিরিজ হত্যা, গ্রেফতারবাণিজ্য, টাকা না পেয়ে ক্রসফায়ারের নামে খুন ও পায়ে গুলি খেয়ে পঙ্গুত্বের শিকার হচ্ছে।   তিনি আরো বলেন, জনগণকে তোয়াক্কা না করে, ভুয়া নির্বাচন করে, আন্তর্জাতিক মহলে তুমুল বিতর্কিত নির্বাচন হিসেবে স্বীকৃত সেই প্রহসনের নির্বাচনের পর শেখ হাসিনার প্রধানমন্ত্রী হওয়াটা কি সম্মানজনক? দেশের তিনবারের আরেকজন সাবেক প্রধানমন্ত্রী বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে তার কার্যালয়ে অবরুদ্ধ করে রেখে গোলমরিচের গুঁড়া স্প্রে করাটা কি শেখ হাসিনার জন্য সম্মানজনক ছিল? ইট, বালু, কাঠের ট্রাক আর বিপুলসংখ্যক আইনশৃঙ্খলা রাকারী বাহিনীর সদস্যদের দিয়ে গুলশান কার্যালয়ে ব্যারিকেড সৃষ্টি করে কি মান রা হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর?   রিজভী বলেন, যারা জনগণের নাগরিক ও মানবিক অধিকার কেড়ে নেয়, যারা ভয় দেখিয়ে গণমাধ্যমকে আয়ত্তে নিয়ে বিরোধী দলের বিরুদ্ধে লেলিয়ে দেয়, গুণ্ডামি, হুমকি আর রক্তপাতই যাদের মতার ভিত্তি তারা যে মানসম্মানের ধার ধারেন না বা তোয়াক্কা করেন না, তা সবাই জানেন।   রিজভী বলেন, অবৈধ সরকার মনে করছে, শেষ অস্ত্র হিসেবে বেগম জিয়ার বিরুদ্ধে মামলা দিলেই বিএনপি ও ২০ দলীয় জোটের চলমান আন্দোলন বন্ধ হবে। তাদের সে ধারণা যে কত ভুল তা তারা টের পাচ্ছে না।   রুহুল কবির রিজভী অবিলম্বে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে বেগম খালেদা জিয়াকে হুকুমের আসামি করে এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্য নেতার নামে দায়ের করা ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানান।

No comments:

Post a Comment