্রথম তিন বছর সংশ্লিষ্ট গ্রাহক কোনো নগদ লভ্যাংশ প্রদান করতে পারবেন না। সুদের হারও কমে যাবে। ব্যাংকের তহবিল ব্যবস্থাপনা ব্যয়ের সাথে অতিরিক্ত ১ শতাংশ হবে ঋণের সুদের হার। ফলে তা বিদ্যমান সুদের হারের চেয়ে অনেক কমে যাবে। এ সুবিধা নিতে আগামী ৩০ জুনের মধ্যে আবেদন করতে পারবেন। এর ফলে ৫০০ কোটি টাকার ওপরে ২৫টি খেলাপি ব্যবসায়ী গ্রুপ এ নীতিমালার আওতায় সুবিধা পাবে বলে বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এ নীতিমালার কারণে সমাজে বৈষম্য সৃষ্টির পাশাপাশি বড় ঋণখেলাপিরা আরো উৎসাহিত হবেন। ৫০০ কোটি টাকার নিচে যেসব ঋণখেলাপি আছেন তাদেরকে ১৫ শতাংশ ডাউন পেমেন্ট দিয়েই ঋণ নবায়ন করতে হবে। সুদের হারের বিষয়ে তারা কোনো ছাড় পাবেন না। অথচ ৫০০ কোটি টাকার ওপরে হলেই তারা ছাড় পেয়ে যাবেন। বড় ব্যবসায়ী গ্রুপগুলো এমনিতেই ঋণ পরিশোধ না করায় ব্যাংকের বড় অংকের অর্থ আটকে গেছে। এর ওপর নতুন করে ঋণ নেয়ার অনুমোদন দেয়া হলে ব্যাংকের আরো অর্থ ওই ব্যবসায়ী গ্রুপের কাছে আটকে যাবে। ব্যাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, এ সুবিধার আওতায় বেশির ভাগ গ্রুপেরই কোনো না কোনো ফর্মে রাজনৈতিক প্রভাব রয়েছে। সুতরাং তারা আবার ব্যাংকের অর্থ নিয়ে আটকে দিলে ব্যাংকের কিছুই করার থাকবে না। নীতিমালায় যা থাকছে : বাংলাদেশ ব্যাংকের ঋণ পুনর্গঠন নীতিমালার আওতায় ৫০০ কোটি টাকার ওপরে ৫০০ কোটি টাকার বেশি অংকের ঋণকে পুনর্গঠনের বিশেষ সুবিধা দেয়ার সুযোগ রাখা হয়েছে। এর চেয়ে কম ঋণগ্রহীতারা এ সুযোগ পাবেন না। খেলাপি এবং খেলাপি হওয়ার যোগ্য এমন সব ঋণকে এ নীতিমালার আওতায় পুনর্গঠন করা যাবে। এ নীতিমালার আওতায় বিশেষ সুযোগ নিয়ে নিয়মিত ঋণ শোধ করতে না পারলে প্রচলিত আইনি কাঠামো অনুসরণ করে করে দেউলিয়া আদালতে মামলা করার বিধান রাখা হয়েছে। সর্বোচ্চ ১২ বছর মেয়াদে ঋণ পুনর্গঠন করা যাবে। তবে চলমান ও তলবি ঋণের ক্ষেত্রে ছয় বছরের অধিক হবে না। বকেয়ার পরিমাণ ১ হাজার কোটি টাকার কম হলে ২ শতাংশ এবং ১ হাজার কোটি টাকার ওপরে হলে ১ শতাংশ হারে ডাউন পেমেন্ট দিতে হবে। ঋণের সুদের হার, কিস্তি পরিশোধ, ঋণ শোধের মেয়াদ পুনর্নির্ধারণ করা যাবে। পুনর্গঠনের এক বছর পর থেকে তিন মাস পর পর কিস্তি শোধ করতে হবে। পর পর দুইটি কিস্তি শোধে ব্যর্থ হলে এই সুবিধা বাতিল বলে গণ্য হবে। শর্ত সাপেে স্বল্প মেয়াদি ঋণকে দীর্ঘ মেয়াদি ঋণে রূপান্তর করা যাবে। দীর্ঘ মেয়াদি ঋণের পাশাপাশি স্বল্প মেয়াদি ঋণও এ নীতিমালার আওতায় পুনর্গঠনের সুযোগ রাখা হয়েছে। সুদের হার হবে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের তহবিল ব্যবস্থাপনা ব্যয়ের সাথে অতিরিক্ত ১ শতাংশ। নীতিমালায় নানা ফাঁকফোকর : ঋণ পুনর্গঠন নীতিমালায় প্রতারণা এবং জাল-জালিয়াতির সাথে জড়িত কোনো গ্রহীতা এ সুবিধা পাবেন না। তবে প্রতারণা ও জাল-জালিয়াতি নির্ধারণের মাপকাঠি কী হবে তা বলা হয়নি। এর ফলে জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে ব্যাংকের শত শত কোটি টাকা যারা গায়েব করে দিয়েছেন তারাও এ সুবিধার আওতায় পার পেয়ে যাবেন। ওই নীতিমালার আওতায় একবারই কেবল ঋণ পুনর্গঠন করা যাবে। এরপর কোনো কারণে কিস্তি পরিশোধ করতে না পারলে সংশ্লিষ্ট গ্রাহকের বিরুদ্ধে প্রচলিত আইনিপ্রক্রিয়া সম্পন্ন করে ঋণ আদায়ে দেউলিয়া আদালতে মামলা করার সুযোগ রাখা হয়েছে। এখন প্রশ্ন দেখা দিয়েছে আইনিপ্রক্রিয়া সম্পন্ন করা নিয়ে। প্রচলিত নিয়মে টাকা আদায়ের জন্য প্রথমে অর্থঋণ আদালতে মামলা করতে হয়। ওই মামলা নিষ্পত্তি হলে এতে ব্যাংকের পে রায় এলে তারপরে দেউলিয়া আদালতে মামলা করা যাবে। তবে ব্যাংকাররা ইচ্ছে করলে গ্রাহককে টাকা পরিশোধের নোটিশ দিয়ে সরাসরি দেউলিয়া আদালতে মামলা করতে পারবেন। এ েেত্র গ্রাহকের রাজনৈতিক প্রভাবের ওপর নির্ভর করবে ব্যাংকের সিদ্ধান্ত নেয়ার প্রক্রিয়াটি।
Headlines from most popular newspapers of Bangladesh. বাংলাদেশে প্রকাশিত প্রধান প্রধান দৈনিক পত্রিকার সংবাদ শিরোনামগুলো এক নজরে দেখে নিন।
Wednesday, January 28, 2015
বড় ঋণখেলাপিদের ছাড় দিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতিমালা অনুমোদন:নয়াদিগন্ত
্রথম তিন বছর সংশ্লিষ্ট গ্রাহক কোনো নগদ লভ্যাংশ প্রদান করতে পারবেন না। সুদের হারও কমে যাবে। ব্যাংকের তহবিল ব্যবস্থাপনা ব্যয়ের সাথে অতিরিক্ত ১ শতাংশ হবে ঋণের সুদের হার। ফলে তা বিদ্যমান সুদের হারের চেয়ে অনেক কমে যাবে। এ সুবিধা নিতে আগামী ৩০ জুনের মধ্যে আবেদন করতে পারবেন। এর ফলে ৫০০ কোটি টাকার ওপরে ২৫টি খেলাপি ব্যবসায়ী গ্রুপ এ নীতিমালার আওতায় সুবিধা পাবে বলে বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এ নীতিমালার কারণে সমাজে বৈষম্য সৃষ্টির পাশাপাশি বড় ঋণখেলাপিরা আরো উৎসাহিত হবেন। ৫০০ কোটি টাকার নিচে যেসব ঋণখেলাপি আছেন তাদেরকে ১৫ শতাংশ ডাউন পেমেন্ট দিয়েই ঋণ নবায়ন করতে হবে। সুদের হারের বিষয়ে তারা কোনো ছাড় পাবেন না। অথচ ৫০০ কোটি টাকার ওপরে হলেই তারা ছাড় পেয়ে যাবেন। বড় ব্যবসায়ী গ্রুপগুলো এমনিতেই ঋণ পরিশোধ না করায় ব্যাংকের বড় অংকের অর্থ আটকে গেছে। এর ওপর নতুন করে ঋণ নেয়ার অনুমোদন দেয়া হলে ব্যাংকের আরো অর্থ ওই ব্যবসায়ী গ্রুপের কাছে আটকে যাবে। ব্যাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, এ সুবিধার আওতায় বেশির ভাগ গ্রুপেরই কোনো না কোনো ফর্মে রাজনৈতিক প্রভাব রয়েছে। সুতরাং তারা আবার ব্যাংকের অর্থ নিয়ে আটকে দিলে ব্যাংকের কিছুই করার থাকবে না। নীতিমালায় যা থাকছে : বাংলাদেশ ব্যাংকের ঋণ পুনর্গঠন নীতিমালার আওতায় ৫০০ কোটি টাকার ওপরে ৫০০ কোটি টাকার বেশি অংকের ঋণকে পুনর্গঠনের বিশেষ সুবিধা দেয়ার সুযোগ রাখা হয়েছে। এর চেয়ে কম ঋণগ্রহীতারা এ সুযোগ পাবেন না। খেলাপি এবং খেলাপি হওয়ার যোগ্য এমন সব ঋণকে এ নীতিমালার আওতায় পুনর্গঠন করা যাবে। এ নীতিমালার আওতায় বিশেষ সুযোগ নিয়ে নিয়মিত ঋণ শোধ করতে না পারলে প্রচলিত আইনি কাঠামো অনুসরণ করে করে দেউলিয়া আদালতে মামলা করার বিধান রাখা হয়েছে। সর্বোচ্চ ১২ বছর মেয়াদে ঋণ পুনর্গঠন করা যাবে। তবে চলমান ও তলবি ঋণের ক্ষেত্রে ছয় বছরের অধিক হবে না। বকেয়ার পরিমাণ ১ হাজার কোটি টাকার কম হলে ২ শতাংশ এবং ১ হাজার কোটি টাকার ওপরে হলে ১ শতাংশ হারে ডাউন পেমেন্ট দিতে হবে। ঋণের সুদের হার, কিস্তি পরিশোধ, ঋণ শোধের মেয়াদ পুনর্নির্ধারণ করা যাবে। পুনর্গঠনের এক বছর পর থেকে তিন মাস পর পর কিস্তি শোধ করতে হবে। পর পর দুইটি কিস্তি শোধে ব্যর্থ হলে এই সুবিধা বাতিল বলে গণ্য হবে। শর্ত সাপেে স্বল্প মেয়াদি ঋণকে দীর্ঘ মেয়াদি ঋণে রূপান্তর করা যাবে। দীর্ঘ মেয়াদি ঋণের পাশাপাশি স্বল্প মেয়াদি ঋণও এ নীতিমালার আওতায় পুনর্গঠনের সুযোগ রাখা হয়েছে। সুদের হার হবে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের তহবিল ব্যবস্থাপনা ব্যয়ের সাথে অতিরিক্ত ১ শতাংশ। নীতিমালায় নানা ফাঁকফোকর : ঋণ পুনর্গঠন নীতিমালায় প্রতারণা এবং জাল-জালিয়াতির সাথে জড়িত কোনো গ্রহীতা এ সুবিধা পাবেন না। তবে প্রতারণা ও জাল-জালিয়াতি নির্ধারণের মাপকাঠি কী হবে তা বলা হয়নি। এর ফলে জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে ব্যাংকের শত শত কোটি টাকা যারা গায়েব করে দিয়েছেন তারাও এ সুবিধার আওতায় পার পেয়ে যাবেন। ওই নীতিমালার আওতায় একবারই কেবল ঋণ পুনর্গঠন করা যাবে। এরপর কোনো কারণে কিস্তি পরিশোধ করতে না পারলে সংশ্লিষ্ট গ্রাহকের বিরুদ্ধে প্রচলিত আইনিপ্রক্রিয়া সম্পন্ন করে ঋণ আদায়ে দেউলিয়া আদালতে মামলা করার সুযোগ রাখা হয়েছে। এখন প্রশ্ন দেখা দিয়েছে আইনিপ্রক্রিয়া সম্পন্ন করা নিয়ে। প্রচলিত নিয়মে টাকা আদায়ের জন্য প্রথমে অর্থঋণ আদালতে মামলা করতে হয়। ওই মামলা নিষ্পত্তি হলে এতে ব্যাংকের পে রায় এলে তারপরে দেউলিয়া আদালতে মামলা করা যাবে। তবে ব্যাংকাররা ইচ্ছে করলে গ্রাহককে টাকা পরিশোধের নোটিশ দিয়ে সরাসরি দেউলিয়া আদালতে মামলা করতে পারবেন। এ েেত্র গ্রাহকের রাজনৈতিক প্রভাবের ওপর নির্ভর করবে ব্যাংকের সিদ্ধান্ত নেয়ার প্রক্রিয়াটি।
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment