ীরা। রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বাসিন্দা আহম্মেদ কায়সার। জানালেন তার ভোগান্তির কথা। তিনি বলেন, ভয়ে সকালে বাসা থেকে বের হতে ইচ্ছে হয় না। কিন্তু উপায় কী? পেটের দায়ে বাসা থেকে বের হতে হয়। বের হওয়ার পর থেকেই থাকেন চরম ভয়ের মধ্যে। কোথায় কখন হামলার শিকার হন, সেই আশঙ্কা। মাঝে মধ্যে ভয়ে বাসে না চড়ে চড়া দামে রিকশায় কর্মস্থলে যান। টাকা না থাকলে পায়ে হেঁটে। হাঁটতে গিয়ে প্রায় প্রতিদিনই পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হন। তিনি বলেন, পুলিশ তল্লাশি করে ছেড়ে দিলেও আতঙ্কের মধ্যে থাকতে হয়। আবার বিষয়টি বেশ লজ্জারও। কিছু না করেও পুলিশি তল্লাশির শিকার হওয়া একটা বড় বিড়ম্বনা। ফেসবুকে একজন স্ট্যাটাস দিয়েছেন, ‘যাক বাবা, বেঁচে ফিরলাম’। আরেকজনের স্ট্যাটাস ছিল ‘রাস্তায় এমনিতেই থাকি চরম আতঙ্কে। কাজ শেষে দৌড়ে বাসায় ফিরতে পারলেই ভালো। পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দায়িত্ব হলো মানুষকে নিরাপদে তাড়াতাড়ি বাসায় পৌঁছানোর ব্যবস্থা করা। কিন্তু ১০-১২ হাত পরপর চেকপোস্ট। পুলিশ তল্লাশি করে। মানুষের বাসায় পৌঁছতে আরো দেরি হয়। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, এখন যারা বাসার বাইরে বের হচ্ছেন তারা নিতান্তই দায়ে পড়ে বের হচ্ছেন। বাইরে বের না হলে পেট চলবে না, সংসার চলবে না বা অন্য জরুরি কোনো কাজের জন্য বাইরে বের হতেই হবে। ধানমন্ডির এক নারী চাকরিজীবী বলেন, ‘বাসায় বসে থাকলে চাকরি থাকবে না। পেট চলবে না। তা না হলে এর মধ্যে বাইরে বের হওয়ার প্রশ্নই ওঠে না।’ নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের বাসিন্দা বিল্লাল (২৮)। গুলিস্তানের একটি দরজির দোকানে চাকরি করতেন। ওই দোকানের মালিক মিজান জানান, প্রতিদিন বিল্লালকে ৪০০ টাকা বেতন দেয়া হতো। এর মধ্যে বিল্লালের খরচ ছিল ১০০ টাকা। বাকি ৩০০ টাকা দিয়ে স্ত্রী-সন্তান ও মা-বাবাকে নিয়ে সংসার চালাতেন। যাত্রাবাড়ীতে শুক্রবার রাতে বাসে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় বিল্লাল দগ্ধ হন। এখন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি। বিল্লালের বৃদ্ধ বাবা সাদেক আলী জানান, বিল্লাল এক দিন কাজ না করলে সংসার চলে না। সে জন্যই কাজের উদ্দেশ্যে প্রতিদিন তাকে ঢাকায় আসতে হতো। এখন তিনি নিরুপায়। না খেয়ে থাকতে হচ্ছে তাদের। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল সূত্র জানায়, হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে গত ২০ দিনে চিকিৎসা নিয়েছেন ৮৬ জন। এখনো ভর্তি আছেন ৫০ জন। ভর্তিকৃতদের মধ্যে ৯ জনের অবস্থা খুবই গুরুতর। বাকিদেরও অনেকে আছেন আশঙ্কার মধ্যে। ঢাকার বাইরেও অনেকেই অগ্নিদগ্ধ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত ২৫ দিনে রাজধানীসহ সারা দেশে পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গুলি, সংঘর্ষ, পেট্রলবোমা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় নিহত হয়েছেন ৩২ জন। আহত হয়েছেন প্রায় দেড় হাজার। গ্রেফতার হয়েছেন প্রায় ১৩ হাজার। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে অনেক সাধারণ মানুষ রয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। কোনো কোনো এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা মানুষের বাড়িতে বাড়িতে অভিযান চালিয়ে ভাঙচুর করছে বলে অভিযোগ রয়েছে। কোনো কোনো এলাকা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের ভয়ে জনশূন্য হয়ে পড়েছে বলে জানা গেছে। কয়েকজন অভিযোগ করেছেন, তাদের হয়রানি করা হচ্ছে তালিকায় নাম ঢুকিয়ে দেয়ার কথা বলে। তারা বলেছেন, থানা পুলিশ দালাল নিয়োগ করেছে। দালালরা ধনাঢ্য ব্যক্তিদের নাম-ঠিকানা দিচ্ছে পুলিশের কাছে। আর পুলিশ তাদের দেখা করার কথা বলে থানায় ডাকছে।
Headlines from most popular newspapers of Bangladesh. বাংলাদেশে প্রকাশিত প্রধান প্রধান দৈনিক পত্রিকার সংবাদ শিরোনামগুলো এক নজরে দেখে নিন।
Tuesday, January 27, 2015
নিরাপত্তাহীনতায় মানুষ:নয়াদিগন্ত
ীরা। রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বাসিন্দা আহম্মেদ কায়সার। জানালেন তার ভোগান্তির কথা। তিনি বলেন, ভয়ে সকালে বাসা থেকে বের হতে ইচ্ছে হয় না। কিন্তু উপায় কী? পেটের দায়ে বাসা থেকে বের হতে হয়। বের হওয়ার পর থেকেই থাকেন চরম ভয়ের মধ্যে। কোথায় কখন হামলার শিকার হন, সেই আশঙ্কা। মাঝে মধ্যে ভয়ে বাসে না চড়ে চড়া দামে রিকশায় কর্মস্থলে যান। টাকা না থাকলে পায়ে হেঁটে। হাঁটতে গিয়ে প্রায় প্রতিদিনই পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হন। তিনি বলেন, পুলিশ তল্লাশি করে ছেড়ে দিলেও আতঙ্কের মধ্যে থাকতে হয়। আবার বিষয়টি বেশ লজ্জারও। কিছু না করেও পুলিশি তল্লাশির শিকার হওয়া একটা বড় বিড়ম্বনা। ফেসবুকে একজন স্ট্যাটাস দিয়েছেন, ‘যাক বাবা, বেঁচে ফিরলাম’। আরেকজনের স্ট্যাটাস ছিল ‘রাস্তায় এমনিতেই থাকি চরম আতঙ্কে। কাজ শেষে দৌড়ে বাসায় ফিরতে পারলেই ভালো। পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দায়িত্ব হলো মানুষকে নিরাপদে তাড়াতাড়ি বাসায় পৌঁছানোর ব্যবস্থা করা। কিন্তু ১০-১২ হাত পরপর চেকপোস্ট। পুলিশ তল্লাশি করে। মানুষের বাসায় পৌঁছতে আরো দেরি হয়। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, এখন যারা বাসার বাইরে বের হচ্ছেন তারা নিতান্তই দায়ে পড়ে বের হচ্ছেন। বাইরে বের না হলে পেট চলবে না, সংসার চলবে না বা অন্য জরুরি কোনো কাজের জন্য বাইরে বের হতেই হবে। ধানমন্ডির এক নারী চাকরিজীবী বলেন, ‘বাসায় বসে থাকলে চাকরি থাকবে না। পেট চলবে না। তা না হলে এর মধ্যে বাইরে বের হওয়ার প্রশ্নই ওঠে না।’ নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের বাসিন্দা বিল্লাল (২৮)। গুলিস্তানের একটি দরজির দোকানে চাকরি করতেন। ওই দোকানের মালিক মিজান জানান, প্রতিদিন বিল্লালকে ৪০০ টাকা বেতন দেয়া হতো। এর মধ্যে বিল্লালের খরচ ছিল ১০০ টাকা। বাকি ৩০০ টাকা দিয়ে স্ত্রী-সন্তান ও মা-বাবাকে নিয়ে সংসার চালাতেন। যাত্রাবাড়ীতে শুক্রবার রাতে বাসে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় বিল্লাল দগ্ধ হন। এখন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি। বিল্লালের বৃদ্ধ বাবা সাদেক আলী জানান, বিল্লাল এক দিন কাজ না করলে সংসার চলে না। সে জন্যই কাজের উদ্দেশ্যে প্রতিদিন তাকে ঢাকায় আসতে হতো। এখন তিনি নিরুপায়। না খেয়ে থাকতে হচ্ছে তাদের। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল সূত্র জানায়, হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে গত ২০ দিনে চিকিৎসা নিয়েছেন ৮৬ জন। এখনো ভর্তি আছেন ৫০ জন। ভর্তিকৃতদের মধ্যে ৯ জনের অবস্থা খুবই গুরুতর। বাকিদেরও অনেকে আছেন আশঙ্কার মধ্যে। ঢাকার বাইরেও অনেকেই অগ্নিদগ্ধ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত ২৫ দিনে রাজধানীসহ সারা দেশে পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গুলি, সংঘর্ষ, পেট্রলবোমা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় নিহত হয়েছেন ৩২ জন। আহত হয়েছেন প্রায় দেড় হাজার। গ্রেফতার হয়েছেন প্রায় ১৩ হাজার। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে অনেক সাধারণ মানুষ রয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। কোনো কোনো এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা মানুষের বাড়িতে বাড়িতে অভিযান চালিয়ে ভাঙচুর করছে বলে অভিযোগ রয়েছে। কোনো কোনো এলাকা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের ভয়ে জনশূন্য হয়ে পড়েছে বলে জানা গেছে। কয়েকজন অভিযোগ করেছেন, তাদের হয়রানি করা হচ্ছে তালিকায় নাম ঢুকিয়ে দেয়ার কথা বলে। তারা বলেছেন, থানা পুলিশ দালাল নিয়োগ করেছে। দালালরা ধনাঢ্য ব্যক্তিদের নাম-ঠিকানা দিচ্ছে পুলিশের কাছে। আর পুলিশ তাদের দেখা করার কথা বলে থানায় ডাকছে।
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment