Sunday, January 18, 2015

গুলি চালিয়ে গণ-অভ্যুত্থান ঠেকানো যাবে না:নয়াদিগন্ত

বিজিবির মহাপরিচালক, পুলিশের আইজি ও র‌্যাব মহাপরিচালকের বক্তব্যের তীব্র সমালোচনা করেছেন সাংবাদিক নেতারা। তারা বলেছেন, প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী হয়ে তাদের কাছ থেকে এ ধরনের রাজনৈতিক বক্তব্য আশা করা যায় না। সাংবাদিক নেতারা সরকারকে অবিলম্বে সংলাপে বসার আহ্বান জানিয়ে বলেন, গুলি চালিয়ে গণ-অভ্যুত্থান ঠেকানো যাবে না। এ সময় চলমান গণতান্ত্রিক আন্দোলনের সাথে সাংবাদিক নেতারা একাত্মতা প্রকাশ করেন।   ‘বন্ধ মিডিয়া খ
ুলে দেয়া, সাংবাদিক নির্যাতন বন্ধ, জাতীয় প্রেস কাবে হামলা, সেন্সরশিপ প্রত্যাহার, সম্প্রচার নীতিমালা বাতিল, মাহমুদুর রহমানের মুক্তি ও সাগর-রুনির প্রকৃত খুনিদের গ্রেফতারের দাবিতে’ গতকাল শনিবার জাতীয় প্রেস কাব প্রাঙ্গণে এক প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে) এ সমাবেশের আয়োজন করে। এতে সভাপতিত্ব করেন, বিএফইউজে সভাপতি শওকত মাহমুদ। ডিইউজে সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম প্রধানের সঞ্চালনায় এতে বক্তব্য রাখেন সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক ও বিএফইউজের সাবেক সভাপতি রুহুল আমিন গাজী, বিএফইউজে মহাসচিব এম এ আজিজ, ডিইউজের সাবেক সভাপতি আবদুস শহিদ, ফটোজার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মীর আহমেদ মীরু, জাতীয় প্রেস কাবের যুগ্ম সম্পাদক কাদের গণি চৌধুরী, বিএফইউজের সাংগঠনিক সম্পাদক শহিদুল ইসলাম, ডিইউজের যুগ্ম সম্পাদক শাহিন হাসনাত, প্রচার সম্পাদক আকন আব্দুল মান্নান, নির্বাহী সদস্য এরফানুল হক নাহিদ, ঢাবি সাংবাদিক সমিতির সাবেক সভাপতি জসিম উদ্দিন প্রমুখ।   শওকত মাহমুদ বলেন, সরকারের চাপে বর্তমানে গণমাধ্যম সত্য সংবাদ পরিবেশন করতে পারছে না। অনেক টেলিভিশন চ্যানেল ও পত্রিকা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমান এবং একুশে টেলিভিশনের চেয়ারম্যান আবদুস সালামকে গ্রেফতার করা হয়েছে। টেলিভিশনের টকশো নিয়ন্ত্রণ এবং ক্ষেত্রবিশেষে বন্ধ করে দেয়া হচ্ছে। টকশোতে কারা অতিথি হবে তা সরকার নির্ধারণ করে দিচ্ছে। টকশোতে সরকারবিরোধী কথা বললে তাকে ধরে নিয়ে যাচ্ছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এ ছাড়া সরকার ও প্রশাসনের চাপে প্রকৃত সংবাদ পরিবেশন করতে গণমাধ্যম ভয় পাচ্ছে।   তিনি বলেন, দেশে গণতন্ত্র না থাকায় গণমাধ্যমও স্বাধীন নয়। এ জন্য গণতন্ত্র উদ্ধারে যখন আন্দোলন শুরু হয়েছে তখন সাংবাদিক সমাজ বসে থাকতে পারে না।   শওকত মাহমুদ অভিযোগ করেন, ৫ জানুয়ারি আমরা সাংবাদিকদের অধিকার আদায়ের সমাবেশ করছিলাম, সেখানে আওয়ামী লীগ আমাদের ওপর ন্যক্কারজনক হামলা চালায় কিন্তু আমাদের সে আন্দোলন বৃথা যায়নি। আমাদের সেই দাবি আজ জাতীয় দাবিতে পরিণত হয়েছে। বেগম খালেদা জিয়া সংলাপের জন্য যে ৭ দফা পেশ করেছেন তার অন্যতম হলো বন্ধ গণমাধ্যম খুলে দেয়া। তাই এখন এটি জাতীয় দাবি।   তিনি বিজিবির মহাপরিচালক, পুলিশের আইজি ও র‌্যাব মহাপরিচালকের বক্তব্যের সমালোচনা করে বলেন, সারা দেশে যে গণ-অভ্যুত্থান শুরু হয়েছে গুলি চালিয়ে এ আন্দোলন বন্ধ করা যাবে না।   শওকত মাহমুদ সরকারের উদ্দেশে বলেন, আপনারা সংলাপে বসুন। সংলাপই সমাধানের একমাত্র পথ। না হলে আপানদের গণ-অভ্যুত্থানের মোকাবেলা করতে হবে। তিনি বলেন, এখন যাদের দিয়ে জনগণের বুকে গুলি চালাচ্ছেন তারাই হয়তো একদিন আপনার দিকে বন্দুক ধরতে পারে।   বিএফইউজে সভাপতি বলেন, সাংবাদিকদের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে। তিনি আজ রোববার বেলা ১১টায় আবার একই স্থানে সমাবেশ হবে জানিয়ে বলেন, সে সমাবেশ থেকে বৃহত্তর কর্মসূচি দেয়া হবে।   রুহুল আমিন গাজী বলেন, একে একে জনপ্রিয় গণমাধ্যমগুলো বন্ধ করে দেয়া হচ্ছে। যাতে সরকারের বিরুদ্ধে কেউ কথা বলতে না পারে। তিনি র‌্যাব মহাপরিচালকের বক্তব্যের সমালোচনা করে বলেন, প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীরা এখন বলছেন কবে নির্বাচন হবে। তাহলে নির্বাচন কমিশনের কাজ কী? আইজিপির বক্তব্যেরও সমালোচনা করেন তিনি। রুহুল আমিন গাজী বলেন, ’৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ, স্বৈরাচার এরশাদ বিরোধী আন্দোলনের কথা সংবিধানের ছিল না কিন্তু আন্দোলন হয়েছে এবং জনগণ বিজয়ী হয়েছে। এবারের আন্দোলনেও জনগণই বিজয়ী হবে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন তীব্র থেকে তীব্রতর হবে বলেও জানান এ সাংবাদিক নেতা।   এম এ আজিজ বলেন, প্রজাতন্ত্রের বিভিন্ন বাহিনীর প্রধানদের বক্তব্য শুনে মনে হয় দেশে যুদ্ধ ঘোষণা হয়েছে। তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, তারা কি দেশে গৃহযুদ্ধ বাধাতে চান? রাজনৈতিক কারণে টিভি ও পত্রিকা বন্ধ করা হয়েছে বলেও সরকারের সমালোচনা করেন তিনি।   আজ বিএফইউজে ডিইউজের প্রতিবাদ সমাবেশ : জাতীয় প্রেস কাবে হামলা, বন্ধ গণমাধ্যম খুলে দেয়া, সাংবাদিক সমাবেশে হামলা, সেন্সরশিপ প্রত্যাহার, সাগর-রুনির প্রকৃত খুনিদের গ্রেফতার, মাহমুদুর রহমানের মুক্তি ও গণবিরোধী সম্প্রচার নীতিমালা বাতিলের দাবিতে আজ রোববার বেলা ১১টায় বিএফইউজে ও ডিইউজের উদ্যোগে জাতীয় প্রেস কাবে এক প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করা হয়েছে।   বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি শওকত মাহমুদ, মহাসচিব এম এ আজিজ, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি আবদুল হাই শিকদার ও সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম প্রধান শনিবার এক যুক্ত বিবৃতিতে সাংবাদিক সহকর্মী বন্ধুদের উক্ত প্রতিবাদ সমাবেশ সফলে উপস্থিতির আহ্বান জানিয়েছেন। বিজ্ঞপ্তি।

No comments:

Post a Comment