Tuesday, January 13, 2015

প্রয়োজনে খালেদার সঙ্গে দেখা করবে বিজিএমইএ:কালের কন্ঠ

চলমান রাজনৈতিক সংকট সমাধানে সংলাপের আহ্বান জানিয়েছেন তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারকদের সংগঠন বিজিএমইএর সভাপতি আতিকুল ইসলাম। এ জন্য সংগঠনের পক্ষ থেকে প্রয়োজনে তাঁরা
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গেও দেখা করতে যেতে পারেন বলে জানিয়েছেন তিনি। তবে কখন, কিভাবে তাঁর সঙ্গে দেখা করবেন সে বিষয়ে কিছু বলতে রাজি হননি তিনি। রাজধানীর কারওয়ান বাজারে বিজিএমইএ কার্যালয়ে গতকাল সোমবার চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আয়োজিত জরুরি সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আতিকুল ইসলাম এসব কথা বলেন। এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিজিএমইএর দ্বিতীয় সহসভাপতি এস এম মান্নান কচি, সহসভাপতি শহিদউল্লাহ আজিম, সাবেক সহসভাপতি ছিদ্দিকুর রহমান প্রমুখ। আতিকুল ইসলাম বলেন, 'দেশে চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতা ও উৎকণ্ঠার পরিস্থিতিতে বিপর্যস্ত অবস্থার দিকে ধাবিত হচ্ছে পোশাক খাত। নতুন বছরের শুরুতেই এ ধাক্কা বিদেশি ক্রেতাদের কাছে নেতিবাচক ভাবমূর্তি তৈরি করছে। শুধু ইমেজ সংকট নয়, ব্যবসা হারানোর মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। ক্রেতারা বলছেন, "আমরা (ক্রেতারা) আবারও 'ব্যাক টু দ্য প্যাভিলিয়নে' ফিরে যাচ্ছি। এই বার্তা পোশাকশিল্পের জন্য অশনিসংকেত।" রাজনৈতিক সহিংসতা দানব আকারে আবির্ভূত হয়েছে- মন্তব্য করে বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, 'এ অস্থিরতা চলতে থাকলে ২০১৩ সালের মতো ফের ক্রেতাদের মধ্যে অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হবে এবং তাঁরা বাংলাদেশে আসতে নিরুৎসাহিত হবেন। স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীতে পোশাকশিল্পের রপ্তানি আয় ৫০ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করার যে চ্যালেঞ্জ আমরা গ্রহণ করেছি, তা স্বপ্নই থেকে যাবে।' আতিকুল ইসলাম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, 'আমরা দেশের রাজনীতির কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছি। অব্যাহতভাবে অবরোধ কর্মসূচি চলছে। রাজনৈতিক কর্মসূচির নামে রাজনীতিবিদরা আমাদের ব্যবসা, বিনিয়োগকে জিম্মি করেছেন। এতে গভীর সংকটে পড়েছে পোশাকশিল্প। কারণ এটি ভাবমূর্তিনির্ভর আন্তর্জাতিক শিল্প, যার ক্রেতারা বিদেশি। ক্রেতারা যখন দেখেন এখানে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা নেই, জানমালের নিরাপত্তা নেই, তখন তাঁরা বিপাকে পড়েন এবং অর্ডার দিতে নিরুৎসাহিত বোধ করেন।' চলমান অস্থিরতার কারণে ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা প্রকাশ করে বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, 'ইতিমধ্যে তৈরি পোশাকশিল্পের বেশ কিছু কারখানা বিশাল আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। গত বছরও এ ধরনের রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার কারণে পাঁচ হাজার ৫০০ কোটি টাকার এয়ার শিপমেন্ট করতে হয়েছে আমাদের। আর ৯ হাজার কোটি টাকার পণ্য ডিসকাউন্ট হয়েছে। ২০১৪-১৫ অর্থবছরে পোশাক রপ্তানিতে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২৬ দশমিক ৮৯ বিলিয়ন ডলারের। এক দিন অবরোধ-হরতাল থাকলে ৬৯৫ কোটি টাকার পোশাক রপ্তানি বাধাগ্রস্ত হয়। আর উৎপাদন ব্যাহত হয় অন্তত ২১৫ কোটি টাকার। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহায়তায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক দিয়ে মালামাল আনা-নেওয়া করা হচ্ছে, এটা কোনো স্বাভাবিক বিষয় নয়। কেন আমরা স্বাভাবিকভাবে নির্বিঘ্নে মালামাল আনা-নেওয়া করতে পারছি না? ক্রেতারা একে মোটেও সুনজরে দেখছে না।'জাতীর বৃহত্তর স্বার্থে পোশাক খাতকে সব ধরনের রাজনৈতিক কর্মসূচির আওতামুক্ত রাখার দাবি জানিয়ে আতিকুল ইসলাম বলেন, পোশাকশিল্পকে যেভাবে হরতালের আওতামুক্ত রাখা হয়েছে, একইভাবে পোশাকশিল্পসহ সংশ্লিষ্ট সব ফরোয়ার্ড ও ব্যাকওয়ার্ড শিল্পের পণ্যবাহী ট্রাক-কাভার্ড ভ্যানকে সব ধরনের রাজনৈতিক কার্যক্রমের আওতামুক্ত রাখতে হবে।      

No comments:

Post a Comment