Friday, January 2, 2015

সোনালি আঁশ শক্ত করে বাঁধতে পারে অর্থনীতি:কালের কন্ঠ

দেশ স্বাধীন হওয়ার পর সোনালি আঁশ খ্যাত পাট খাত থেকেই বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি বৈদেশিক মুদ্রা অর্জিত হতো। পাটকল ছিল বাংলাদেশের প্রথম শিল্প-কারখানা। দুই শতাধিক পাটকল ছিল দ
েশের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে। পাটকলগুলোতে বাংলাদেশের লক্ষাধিক লোকের কর্মসংস্থানও হতো। বাংলাদেশের প্রায় ৬৫ হাজার হেক্টর জমি আছে, যেখানে পাট ছাড়া অন্য কোনো ফসল ভালো হয় না। এ ছাড়া বাংলাদেশের পাট বিশ্বের অন্য দেশের তুলনায় গুণে-মানে অনেক উন্নত ও টেকসই। নারায়ণগঞ্জের আদমজী জুট মিল ছিল শুধু বাংলাদেশ নয়, বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম পাটকল। এটি সারা বিশ্বে এতই সমাদৃত ছিল যে তখন অনেক দেশ বাংলাদেশকে চিনত ও জানত আদমজী জুট মিলের মাধ্যমেই। দেশের পাট খাতের অর্ধেকেরও বেশি বৈদেশিক মুদ্রা অর্জিত হতো এক আদমজী মিলটি থেকেই। কিন্তু বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফের পরামর্শে ২০০৩ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার আমলে এ মিলটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। এরপর সেখানকার যন্ত্রপাতি ও কলকবজাগুলো বেসরকারি মিলের মালিকদের কাছে আর অন্যগুলো লোহা হিসেবে কেজি দরে বিক্রি করে দেওয়া হয়। ওই সরকারের আমলে আদমজীই শুধু নয়, অনেক মিল বন্ধ হওয়ায় এ খাতটি একেবারে ধসে পড়ে। মিলগুলো বন্ধ হওয়ায় এ অঞ্চলে পাটের আবাদ কমে যায়। বাংলাদেশের পাটের বাজার চলে যায় বিদেশিদের হাতে। দেশ একদিকে ঐতিহ্য হারায়, অন্যদিকে বঞ্চিত হয় বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন থেকে। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর বন্ধ পাটকলগুলো চালু করার প্রক্রিয়া শুরু করে। খুলনার দৌলতপুরসহ বিভিন্ন এলাকার ছয়টি পাটকল চালু করা হয়। এসব মিলে পুনরায় চাকরিতে নিয়োজিত হয় কমপক্ষে ৩৫ হাজার শ্রমিক। আশা সঞ্চারিত হতে থাকে পাটচাষিসহ শ্রমিক, কর্মচারী ও পাট ব্যবসায়ীদের মধ্যে। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, পাট এমন একটি অর্থকরী ফসল, যাতে এখনো সরকার বিনিয়োগ করে আধুনিক প্রযুক্তির সমন্বয় করতে পারলে গার্মেন্টের পরই এটি হতে পারে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম শ্রমিকবান্ধব খাত। কারণ পরিবেশবান্ধব এ পাটের ব্যবহার বিশ্বব্যাপী দিন দিন বেড়েই চলেছে। পাট খাতসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, বর্তমানে চালু বেশির ভাগ মিলই ৫০-৬০ বছরের পুরনো। যন্ত্রপাতি সংযোজন করে কোনো রকমে কর্মক্ষম রাখা হয়েছে। এগুলোর বেশির ভাগ সেই পঞ্চাশের দশক থেকেই চট, পাটের বস্তা প্রভৃতি পণ্য তৈরি করে আসছে। কিন্তু যুগের পরিবর্তনে বিশ্ববাজারে পাটপণ্যের চাহিদায়ও বৈচিত্র্য আসছে। দুয়ার খুলছে বহুমুখী পাটপণ্যের। কিন্তু দেশের প্রচলিত জুট মিলগুলো সেই চাহিদার সঙ্গে তাল মেলাতে পারছে না। দু-একটি বেসরকারি মিলে আধুনিকায়নের ছোঁয়া লাগলেও বেশির ভাগ মিলই সেই পুরনো প্রযুক্তিতেই রয়ে গেছে। ফলে ৪২ বছর ধরে এই জুট মিলগুলো লোকসানের কবলে পড়ে ধুঁকছে। মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ২০১০ সালকে জাতিসংঘ প্রাকৃতিক তন্তু দিবস ঘোষণার পর থেকে পাট আবার ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে। উন্নত দেশগুলো এখন পলিথিন বর্জন করে পরিবেশসম্মত প্রাকৃতিক আঁশকেই নিত্যব্যবহার্য সঙ্গী হিসেবে বেছে নিচ্ছে। এ সুযোগকে কাজে লাগাতে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় পাট নিয়ে নতুন পরিকল্পনা তৈরি করছে। এ পরিকল্পনার মূলে রয়েছে পাটকে বহুমুখী পণ্যে পরিণত করা। দেশে পাটের বহুমুখীকরণের একমাত্র গবেষণা প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ জুট রিসার্চ ইনস্টিটিউট (বিজেআরআই) পাটবস্ত্র তৈরির জন্য চিকন সুতা উদ্ভাবন করেছে। পাটকে তুলার সঙ্গে ব্লেন্ড করে এ সুতা উৎপাদন করা হয়েছে। এসব সুতার মধ্যে রয়েছে ৮, ১০, ১৫ ও ২০ কাউন্টের সুতা। বিজেআরআই ৫০ ভাগ তুলা ও ৫০ ভাগ পাটকে সফলভাবে মিশ্রণ করে সুতা উৎপাদন করতে সক্ষম হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলেন, পাটবস্ত্রের পোশাক তৈরি করে দেশের চাহিদা মেটানোর পর তা বিদেশে রপ্তানি করা সম্ভব হবে। দরকার শুধু একটি সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা। এটা করা সম্ভব হলে বাংলাদেশ হবে পাট থেকে তৈরি পোশাকের অগ্রপথিক। যেহেতু বাংলাদেশ বিশ্বে অন্যতম পাট উৎপাদনকারী দেশ, তাই বাংলাদেশ এ ক্ষেত্রে একচেটিয়া ব্যবসা করতে পারবে। আর এটা হলে পাট আর সোনালি আঁশ নয়, জাদুর আঁশ হয়ে ফিরে আসবে। সদ্য প্রয়াত বিজ্ঞানী মাকসুদুল আলমের নেতৃত্বে বাংলাদেশের গবেষকরা তোষা পাটের জীবনরহস্য উন্মোচন করেন ২০১০ সালে। বিশ্বে সবচেয়ে বেশি চাষ হওয়া পাটের দুটি প্রধান জাতের মধ্যে এটি একটি। এরপর ২০১২-এর ১৯ জুন এই বিজ্ঞানী ও তাঁর সহকর্মীরা পাটসহ ৫০০ প্রজাতির উদ্ভিদের জন্য ক্ষতিকর ছত্রাকের জীবনরহস্য উন্মোচন করেন। এই ছত্রাকের আক্রমণে শুধু পাটের উৎপাদনই ৩০ থেকে ৭০ শতাংশ কমে যেতে পারে। ফসল ধ্বংসকারী এ ছাত্রাকের জীবনরহস্য উন্মোচনের ফলে এখন উন্নত জাতের পাট জন্মানোর নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হয়েছে। আর ২০১৩-এর আগস্টে মাকসুদুল আলমের দল দেশি বা সাদা পাটের জীবনরহস্য উন্মোচন করে। তবে বিজ্ঞানী মাকসুদের সেই আবিষ্কার এখনো যথাযথভাবে পাট চাষের উন্নতির কাজে লাগাতে পারেনি বাংলাদেশ। বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম কালের কণ্ঠকে বলেন, অতীতের সরকারগুলো পাট সেক্টরকে বিদেশিদের প্রেসক্রিপশনমতো ধ্বংস করে দিয়েছে। বর্তমান সরকার এ সেক্টরকে ওঠাতে আবারও মহাপরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। নতুন এ পরিকল্পনার আওতায় সরকার নিয়ন্ত্রিত পাটকলগুলো আধনিকায়ন করে পাটের বহুমুখী পণ্য উৎপাদন করা হবে। এতে একদিকে যেমন পাট তার হারানো ঐতিহ্য ফিরে পাবে, পাশাপাশি এ সেক্টরে কয়েক লাখ লোকের কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে। বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে পাট ও তুলার মিশ্রণে তৈরি হচ্ছে ডেনিম, শার্টের কাপড়, পর্দার কাপড়, বেডশিট, শাড়ি প্রভৃতি পণ্য। পাটের কারিগরি গবেষণায় উল্লেখযোগ্য সাফল্যের মধ্যে রয়েছে অগ্নিরোধী পাটজাত বস্ত্র, রট-প্রুফ জুট নার্সারি পট, পাট উল এবং পাটজাত শোষক তুলা ও স্যানিটারি ন্যাপকিন। এ ছাড়া নিম্নমানের পাটের মানোন্নয়ন, মূল্য সংযোজিত পণ্য উৎপাদন, স্বল্প খরচে ওষুধে ক্যারিয়ার দ্রব্য হিসেবে ব্যবহৃত মাইক্রোক্রিস্টালাইন সেলুলোজসহ অন্যান্য মূল্যবান উপজাত দ্রব্যাদি উৎপাদন পদ্ধতি উদ্ভাবন এবং এ ক্ষেত্রে ব্যবহৃত মেশিন উন্নয়ন করা হয়েছে। ইতিমধ্যে চীন পাটবস্ত্র উৎপাদনের প্রযুক্তি ও মেশিন তৈরিতে বেশ সফলতা অর্জন করেছে। প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম বলেন, ‘নতুন পরিকল্পনায় আমরা বহুমুখী পাটপণ্যের সম্প্রসারণকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি। বিজেএমসির বিদ্যমান জুট মিলগুলোকে বহুমুখী পাটপণ্য তৈরির জন্য রূপান্তর করা হবে। সংস্থার ২৬টি জুট মিলের মধ্যে ১৫টিকেই বহুমুখী পাটপণ্য তৈরির উপযোগী করে গড়ে তোলা হবে। পাটের ব্যবহার নিশ্চিত করতে ২০১০ সালে সরকার একটি আইন করে চলতি বছর তা কার্যকর করা হয়েছে। পাটের আন্তর্জাতিক বাজারে অস্থিরতা যাচ্ছে। এ জন্য বাংলাদেশের পাটশিল্প চাপে আছে। এখনো শুধু বিজেএমসির গুদামে প্রায় ৮০০ কোটি টাকার পণ্য মজুদ আছে। তবে রপ্তানির ২০ শতাংশ যদি স্থানীয় বাজারে জায়গা করে নিতে পারে তাহলে পাটশিল্প এ চাপমুক্ত হবে। শুধু আন্তর্জাতিক বাজারের ওপর নির্ভরতার কারণে পাটের ন্যায্যমূল্য পাওয়া যাচ্ছে না। প্রতিমন্ত্রী বলেন, পাটের উৎপাদন বাড়াতে কৃষকদের উন্নতজাতের বীজ ও সার বিনা মূল্যে সরবরাহ করা হয়। এতে উৎপাদন প্রায় ৮০ শতাংশ বেড়েছে। বিজেএমসি সূত্রে জানা যায়, এখন বিজেএমসির মিলগুলোর দৈনিক উৎপাদন দাঁড়িয়েছে ৭০০ টন। আদমজী বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর এখনো বিশ্বে বিজেএমসিই সবচেয়ে বড় পাটপণ্য উৎপাদনকারী সংস্থা। বিশ্ববাজারের চাহিদার প্রতি লক্ষ্য রেখে মিলগুলোর বিএমআরই করার জন্য বিজেএমসি সরকারের কাছে এক হাজার ৮৪ কোটি টাকা চেয়েছিল। তবে সেই প্রস্তাব সরকার ফেরত পাঠিয়েছে। অবশ্য সরকার একযোগে সব মিল বিএমআরই না করে ধাপে ধাপে কিছু কিছু মিল বিএমআরই করতে বলেছে। সে অনুযায়ী, বিজেএমসি ফের ১৯৪ কোটি টাকার নতুন প্রস্তাব পাঠিয়েছে। ওই টাকা পেলে পাঁচ-সাতটি মিল বহুমুখী পাটপণ্য উৎপাদনের জন্য বিএমআরই করা সম্ভব হবে বলে জানা গেছে। বিজেএমসির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) হুমায়ুন খালেদ বলেন, ‘বিশ্বে এখন প্রচলিত পাটপণ্যের দিন চলে যাচ্ছে। এখন বাজারের সঙ্গে তাল মিলিয়ে যুগোপযোগী পাটপণ্য উৎপাদন করতে হবে। প্রচলিত বস্তা তৈরি করলে আর চলবে না। বহুমুখী পাটপণ্য তৈরি করতে হবে। বিজেএমসিকেও সে পথেই যেতে হবে। সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) অতিরিক্ত গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, প্রতিবছর বিশ্ববাজারে পাটপণ্যের চাহিদা ৬-৭ শতাংশ করে বাড়ছে। তবে ছোট ছোট সমস্যার কারণে বাংলাদেশে এই শিল্পটি পিছিয়ে পড়ছে। তিনি জানান, ভর্তুকি দিয়েও এ খাতের কোনো উন্নয়ন হচ্ছে না। যদিও সরকার এ খাতকে গুরুত্ব দিয়ে প্রতিবছরই বাজেটে বরাদ্দ দিচ্ছে। তিনি বলেন, এই শিল্পকে বিশ্ববাজারে প্রতিযোগিতাসক্ষম করতে হবে। এ জন্য অভ্যন্তরীণ বাজারে রাজনৈতিকভাবে দৃঢ় সিদ্ধান্ত দরকার। সরকারি প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকেও প্রাধান্য দিতে হবে। স্থানীয় পর্যায়ে পাটের ব্যবহার, পাটপণ্যের উৎপাদন ব্যয় কমানো ও পণ্য বহুমুখীকরণের ওপর জোর তাগিদ দিতে হবে। বাংলাদেশ পরিবেশ আইনজীবী সমিতির (বেলা) প্রধান সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘পাটশিল্পের উন্নয়নে আমাদের একটি মাস্টার প্ল্যান দরকার। সেখানে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা থাকবে এবং এই পরিকল্পনা কমিটিতে শুধু গবেষক নন, পাট চাষি থেকে শুরু করে সব স্টেকহোল্ডার থাকবেন।’ তিনি বলেন, পলিথিন নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কিন্তু তার পরও সবার হাতে এখন পলিথিন ব্যাগ রয়েছে। পণ্যের পাটজাত মোড়কীকরণ আইন যাতে পলিথিন নিষিদ্ধের আইনের মতো নিষ্ফল না হয় সে উদ্যোগ সরকারকে নিতে হবে। রিজওয়ানা বলেন, পাটের ব্যবহার কমে যাওয়ার একটা কুফল হলো বুড়িগঙ্গার তলদেশ থেকে পলিথিন অপসারণের জন্য সরকারকে ২৫ কোটি টাকা গচ্চা দিতে হয়েছে। মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, দেশের ঝিমিয়ে পড়া পাট খাতের আধুনিকায়নে সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকার মহাপরিকল্পনা হাতে নিয়েছে সরকার। এ পরিকল্পনার আওতায় পাটকল সংস্কার, পণ্যের বৈচিত্রায়ণ, কৃষকের ন্যায্যমূল্য প্রাপ্তি এবং স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক বাজার সম্প্রসারণ করা হবে। এ লক্ষ্য পূরণে প্রাথমিকভাবে দেশের সরকারি ২৬টি পাটকলের আধুনিকায়নে ঋণ দেবে চীন। সম্প্রতি বাংলাদেশ ও চীন সরকারের মধ্যে তিনটি সমঝোতা স্মারক সই হয়। চুক্তি অনুযায়ী প্রথমে চীনের অনুদানে বিজেএমসির ২৬টি পাটকল জরিপ করা হবে। তারপর পাটকলগুলোর বিএমআরই বা আধুনিকায়নে ১.৫ শতাংশ সুদে ২০ বছরে পরিশোধযোগ্য ঋণ মিলবে। সংস্কারের পাশাপাশি পাটকলে উৎপাদিত পণ্যেরও একটি বড় অংশ কিনে নেবে চীন। মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, মহাপরিকল্পনার আওতায় প্রথমে সরকারি মিলগুলোকে আধুনিকায়ন করা হবে। চটের বস্তা ও চটের ব্যাগ ছাড়াও জিন্স কাপড়, সোফার কাপড়, এমনকি মেডিক্যালের ব্যান্ডেজের কাপড়সহ ব্যবহার উপযোগী নানা পণ্য তৈরি করা হবে এসব কারখানায়। সূত্র জানায়, বাংলাদেশের আবহাওয়ায় কয়েক লাখ হেক্টর জমি পাট চাষের উপযুক্ত। এর মধ্যে প্রায় ৬৫ হাজার হেক্টর জমি রয়েছে যেখানে পাট ছাড়া অন্যকোনো ফসল করা যায় না। পাটের দুর্দিনের কারণে এবং পাটের প্রকৃত মূল্য না পাওয়ায় চাষিরা পাট উৎপাদনে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছে। মধ্যস্বত্বভোগীদের অধিক মুনাফার কারণে চাষিরা তাদের উৎপাদিত কাঁচা পাটের সঠিক মূল্য পাচ্ছে না। এমনকি বর্তমানে সরকারি পাটকলগুলোয় কাঁচা পাট ক্রয়ের যে পলিসি রয়েছে, তাতেও কৃষকদের সরাসরি মিলগুলোয় পাট বিক্রির কোনো সুযোগ নেই। নতুন পরিকল্পনার আওতায় সরকারি মিলগুলোয় কৃষকরা যাতে সরাসরি পাট বিক্রি করতে পারে এ জন্য চীনের সঙ্গে করা সমঝোতা চুক্তিতে এ বিষয়ে একটি নির্দেশনা রাখা হয়েছে। বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী পাট খাতের সংস্কারে মহাপরিকল্পনার অংশ হিসেবে এবার দেশের সরকারি ২৬টি পাটকল আধুনিকায়নের দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়কে। এ বিষয়ে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় থেকে বুয়েটকে একটি পত্র দেওয়া হয়েছে।

No comments:

Post a Comment