Thursday, January 1, 2015

কঠিন সময়ে রাজনীতি:যুগান্তর

অবরোধে শুরু আর হরতালে শেষ হল ২০১৪ সাল। আর জামায়াতের ডাকা হরতালের মধ্য দিয়ে শুরু হচ্ছে নতুন বছর ২০১৫। আগের চেয়ে গেল বছরটিতে রাজনৈতিক অঙ্গনে উত্তাপ ছিল কিছুটা কম। রাজপথে ছিল না তেমন কোনো সহিংসতা। বড় দুই দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপির শীর্ষ নেতাদের মধ্যে চলা রুচিহীন বাকযুদ্ধেই মূলত উত্তপ্ত ছিল রাজনৈতিক অঙ্গন। তবে বছরজুড়েই আলোচনায় ছিল আদালতপাড়া। মামলা মোকাবেলা করতেই সিংহভাগ সময় ব্যয় করতে হয়েছে রাজপথের বিরোধী
দল বিএনপি নেতাদের। তবে বছরের শেষদিকে বেশ উত্তপ্ত হয় দেশের রাজনৈতিক অঙ্গন। আগামী ৫ জানুয়ারি বড় দুই দলের মুখোমুখি অবস্থানে সাধারণ মানুষের মধ্যে সৃষ্টি হয়েছে উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা। কি হতে যাচ্ছে ৫ জানুয়ারি সবারই এমন জিজ্ঞাসা। তবুও নতুন বছরে আশার আলো দেখতে চায় সাধারণ মানুষ। তাদের প্রত্যাশা, রাজনৈতিক সংকট নিরসনে দুই দল একই টেবিলে বসবে। রাজনীতির আকাশের কালো মেঘ সরে গিয়ে নতুন বছরের শুরুতে ভোরের সূর্যের আলোর শুভবার্তা নিয়ে আসবে। কিন্তু রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এখনও পর্যন্ত দৃশ্যত কোনো আশার আলো নেই। অনেকে টানেলের শেষ প্রান্তে আলোর দেখা মিলতে পারে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করলেও বেশির ভাগ মানুষ এই আশায় ভর করতে পারছেন না। তৃতীয় বিশ্বের দেশ হিসেবে বাংলাদেশ নিয়ে ইতিপূর্বে এবং এখনও বহির্বিশ্বের যারা নাগ গলায় ও প্রভাব বিস্তার করে, সেখানে বিদ্যমান পরিস্থিতিতে নানা আশঙ্কার পদধ্বনি শোনা যায়। কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞদের অনেকে মনে করেন, গত দুই-তিন দশক ধরে বাংলাদেশের রাজনীতি ও ক্ষমতার পটপরিবর্তনের পেছনে যাদের পরোক্ষ ভূমিকা রয়েছে বলে অভিযোগ শোনা যায়, তাদের নাগপাশ থেকে আজও মুক্ত হতে পারেনি দেশের রাজনীতি। তাই এসব আশঙ্কার হিসাব মিলিয়ে পর্যবেক্ষক মহলের অনেকেই মনে করেন, সামনে যা অপেক্ষা করছে তা অনেকটা ধোঁয়াটে ও গুমট পরিস্থিতি। কেউ কেউ এও বলছেন, একটি উত্তপ্ত কড়াইয়ের ওপর আমরা বসে আছি। যেখানে ছাই চাপা আগুনের ধোঁয়া দেখা যাচ্ছে। যে কোনো সময় এর লেলিহান শিখা বেরিয়ে আসতে পারে। যার সুযোগ নিতে পারে অগণতান্ত্রিক শক্তি। পর্যবেক্ষকদের মতে, গত বছর রাজনৈতিক পরিস্থিতি ছিল অনেকটা স্থিতিশীল। বছরের শেষপ্রান্তে এতে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে রাজনীতি। গাজীপুরে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জনসভাকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে সারা দেশে। পাশাপাশি ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের প্রথম বার্ষিকীকে কেন্দ্র করে মুখোমুখি হচ্ছে দুই দল। দিনটিকে ‘গণতন্ত্রের বিজয় দিবস’ হিসেবে পালনের ঘোষণা দিয়ে ওইদিন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। অপরদিকে দিনটিকে ‘গণতন্ত্রের হত্যা দিবস’ আখ্যা দিয়ে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানসহ ঢাকার তিনটি স্থানে সমাবেশের অনুমতি চেয়েছে বিএনপি। অনুমতি না দিলেও যে কোনো মূল্যে ওইদিন রাজপথে নামবে বিএনপি। বাধা দিলে ঘোষণা করা হতে পারে হরতাল, যা সৃষ্টি করতে পারে সংঘাতময় পরিবেশের। এই দিনটিকে ঘিরে সব শ্রেণীর মানুষের মাঝে সৃষ্টি হয়েছে উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা। জানতে চাইলে, টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেরুজ্জামান যুগান্তরকে বলেন, গত বছর দেশে যে অবস্থা বিরাজ করছিল তাতে সাধারণ মানুষের মাঝে কিছুটা হলেও স্বস্তি ছিল। তবে যে প্রক্রিয়ায় এ অবস্থা ছিল তা সমর্থনযোগ্য নয়। গণতন্ত্র বিকাশ না করে চাপিয়ে দেয়া স্থিতিশীলতা বিরাজ করছে। এটা কারো কাম্য নয়। তিনি বলেন, গত বছরের শুরু ও শেষ এবং নতুন বছর যেভাবে শুরু হচ্ছে তাতে উৎকণ্ঠিত হওয়ার যথেষ্ট কারণ রয়েছে। সংঘাতের ধারা অব্যাহত থাকলে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডসহ অধিকারের জায়গাগুলো সংকুচিত হয়ে আসবে। আর সংঘাত-সহিংসতা অব্যাহত থাকলে লাভবান হবে অগণতান্ত্রিক শক্তি। তারা বিকাশের সুযোগ পাবে। তিনি বলেন, চূড়ান্ত বিবেচনায় দেশের শান্তির চাবিকাঠি দুই নেত্রীর হাতে। তাদের মধ্যে মতপার্থক্য থাকতে পারে। কিন্তু তারা যদি একটু ইতিবাচক চিন্তা করে তবে শান্তি প্রতিষ্ঠা করা অসম্ভব কিছু নয়। দেশবাসীর মতো নতুন বছরে তিনিও সেই প্রত্যাশা করেন। ৫ জানুয়ারি একতরফা নির্বাচন প্রতিহতের চ্যালেঞ্জ সামনে রেখে গত বছর শুরু করেছিল বিএনপি। বছর শেষ হয়েছে সরকার পতন আন্দোলনের চ্যালেঞ্জ সামনে রেখে। আর ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ৫ জানুয়ারির নির্বাচন অনুষ্ঠানের চ্যালেঞ্জ নিয়ে বছর শুরু করে। ওই চ্যালেঞ্জে তারা সফলও হয়। আন্দোলনের আগে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বলা হয়, কেবল সংবিধানের নিয়মরক্ষায় এ নির্বাচন। নির্বাচনের পরও আলাপ-আলোচনা অব্যাহত থাকবে। প্রয়োজনে আরেকটি নির্বাচন করা যেতে পারে এমন কথাও বলা হয়। কিন্তু ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের পর আগের অবস্থান থেকে সরে আসে আওয়ামী লীগ। আগামী পাঁচ বছরের জন্যই তারা ক্ষমতায় থাকবেন এমন ঘোষণা দেয়া হয়। আর বিএনপির সঙ্গে কোনো সংলাপ নয় বলেও স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেয়া হয়। এমন বাস্তবতায় আবারও আন্দোলনের প্রস্তুতি নিতে শুরু করে বিএনপি। গত বছর ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের পরপরই হঠাৎ করে আন্দোলন কর্মসূচি থেকে সরে আসে বিএনপি। বিএনপির নেতৃত্বে ২০ দলের আন্দোলনের সাফল্য-ব্যর্থতা ও ত্র“টি-বিচ্যুতি নিয়ে পর্যালোচনা করেন নিজেরা। একতরফা নির্বাচনের পর হঠাৎ করে আন্দোলন থেকে সরে আসা একটি ভুল সিদ্ধান্ত ছিল বলেও মনে করেন খালেদা জিয়া। এরপর নজর দেয়া হয় সাংগঠনিক পুনর্গঠনের দিকে। বছরজুড়েই দলটি ব্যস্ত ছিল সাংগঠনিক পুনর্গঠন, জনমত গঠন, জেলা সফর আর ধারাবাহিক মতবিনিময়ে। তবে পুরো এক বছর সময় পেয়েও ঠিকমতো দল পুনর্গঠন করতে পারেননি দলের নীতিনির্ধারকরা। এ সময়ের মধ্যে ঢাকা মহানগর বিএনপি, মুক্তিযোদ্ধা দল, শ্রমিক দল ও ছাত্রদলের কমিটি পুনর্গঠন করা হয়। পুনর্গঠন প্রক্রিয়া বড় ধাক্কা খায় ছাত্রদলের নতুন কমিটি ঘোষণাকে কেন্দ্র করে। নতুন কমিটি প্রত্যাখ্যান করে বিদ্রোহে নামে ছাত্রদলের একটি অংশ। বিদ্রোহ দমন হলেও এখনও গতিশীলতা ফিরে আসেনি। বিদ্রোহের আশংকায় থমকে যায় যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, কৃষকদলসহ অন্যন্য অঙ্গসংগঠনের পুনর্গঠন। দল পুনর্গঠনের পাশাপাশি নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকারের দাবিতে হতাশাগ্রস্ত ও দ্বিধাবিভক্ত নেতাকর্মীদের মনোবল চাঙ্গা ও জনমত গঠনে বছরজুড়ে চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ দলের সিনিয়র নেতারা কয়েক দফায় সারা দেশ সফর করেন। বারবার কঠোর আন্দোলনের টাইম ফ্রেম ঘোষণা করেও নিয়মতান্ত্রিক রাজনীতির মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল তারা। বারো মাসে সারা দেশে মাত্র দুটি হরতালের ডাক দেয় দলটি। গেল বছরে হরতাল অবরোধের মতো কঠোর কর্মসূচি না থাকায় রাজপথে আইনশৃংখলা বাহিনীর দমন-পীড়ন থেকে অনেকটাই নিরাপদে ছিলেন বিএনপি নেতাকর্মীরা। তবে বিগত বছরগুলোতে দায়ের করা বিভিন্ন মামলায় গত বছর আনুষ্ঠানিক বিচারের মুখোমুখি হয়েছেন দলটির বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী। বিগত বছরগুলোতে উপর্যুপরি মামলার মাধ্যমে আইনি জালে আটকানো হয়েছিল বিএনপি নেতাকর্মীদের। ২০১৪ সালে সেসব মামলার আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু হয়েছে। দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ স্থায়ী কমিটি থেকে তৃণমূল নেতাদের অনেকেই এখন একাধিক মামলায় আনুষ্ঠানিক বিচারের মুখোমুখি। ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের আগে সারা দেশে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক অবস্থা ছিল খুবই নাজুক। নির্বাচনের পর হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়ে বিএনপি। এ সুযোগটি কাজে লাগায় আওয়ামী লীগ। নেতাকর্মীদের চাঙ্গা করতে দল গোছানোর কাজ শুরু করে তারা। রাজশাহী, খুলনা, সিরাজগঞ্জসহ বেশ কয়েকটি জেলা সম্মেলন ইতিমধ্যে শেষ করা হয়েছে। আগের চেয়ে মাঠপর্যায়ের আওয়ামী লীগের শক্তি যে বেড়েছে তা বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের মধ্যেই প্রমাণ পাওয়া যায়। সর্বশেষ গাজীপুরে খালেদা জিয়ার সমাবেশ করতে না দেয়ার ঘোষণা দিয়েও তারা সফল হয়। যদিও বিএনপির অভিযোগ, প্রশাসনের সহযোগিতা ছাড়া এটা সম্ভব হতো না। তবে আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারকদের মতে, নেতাকর্মীরা চাঙ্গা না থাকলে প্রশাসনকে কাজে লাগিয়েও সমাবেশ বন্ধ করা সম্ভব হতো না। সূত্র জানায়, দল ও জোটের পাশাপাশি বিএনপির আন্দোলন মোকাবিলায় প্রস্তুত করা হচ্ছে প্রশাসনকেও। রাজনৈতিক অস্থিরতা না থাকায় বিএনপি নেতাদের দমনে ভিন্ন কৌশল নেয় সরকার। সরকারের সংশ্লিষ্টদের মতে, রাজপথে যাতে আন্দোলন গড়ে তুলতে না পারে, সে ব্যাপারে নেয়া হয়েছে নানা পদক্ষেপ। এ ক্ষেত্রে দুদককে কাজে লাগানো হয়। রাজনৈতিক অস্থিরতা না থাকায় দুদক দিয়ে বিএনপি নেতাদের নামে করানো হয় একাধিক মামলা। মামলা দিয়ে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেনকে গ্রেফতার করা হয়। মুখ বন্ধ করার কৌশল হিসেবে স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের বিরুদ্ধেও মামলা করে দুদক। নানা আলোচনার পরও অবশেষে ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে অংশ নেয় হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টি। দশম সংসদে তারা বিরোধী দল হিসেবে ভূমিকা পালন করে। কিন্তু প্রত্যাশা অনুযায়ী কার্যকর বিরোধী দলের ভূমিকা পালন করতে পারেনি দলটি। একই সঙ্গে সরকার ও বিরোধী দলে থাকা নিয়েও শুরু হয় নানা বিতর্ক। এসব বিষয়ে দলের মধ্যে চলে নানা মেরুকরণ। দলের কেন্দ্রীয় কয়েকজন নেতার সঙ্গে আওয়ামী লীগের সুসম্পর্কের অভিযোগ ওঠে। ফলে এরশাদ অনেক সিদ্ধান্ত নেয়ার পরও তা কার্যকর করতে পারেননি। সর্বশেষ সরকার থেকে জাতীয় পার্টির মন্ত্রীরা পদত্যাগ করবেন এমন ঘোষণা দেয়া হলেও দলের কয়েকজন নেতা এর বিরোধিতা করে বলেছেন, এমন কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। নানা বিভেদ থাকলেও দলের একক নেতৃত্ব ধরে রাখার চেষ্টা অব্যাহত রাখেন এরশাদ। শুরু করেন নতুন করে দল গোছানোর কাজ। দেশের অনেক জেলায় শেষ হয়েছে কাউন্সিল। নিজেদের শক্তি জানান দিতে আজ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিশাল সমাবেশ করছে জাতীয় পার্টি। সেখানে গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য দেবেন হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। অনেকের নজর থাকবে তার বক্তব্যের দিকে। কী বলেন তিনি। বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের অন্যতম শরিক জামায়াতে ইসলামী সাংগঠনিকভাবে তছনছ হয়ে যায়। দলের সিনিয়র নেতাদের মানবতাবিরোধী অপরাধের সাজা হওয়ার প্রতিবাদে রাজপথে ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড চালায় তারা। সরকারও শক্ত হাতে তা প্রতিহত করে। মামলা-হামলা গ্রেফতারের ভয়ে নেতাকর্মীরা আত্মগোপনে চলে যান। প্রকাশ্যেই দলটির রাজনৈতিক কর্মসূচি নেই বললেই চলে। গত কয়েকটি হরতালে দলটির সাংগঠনিক দুর্বলতা চোখে পড়ে। জামায়াতের ডাকা হরতালে সাধারণ মানুষের মধ্যে আতংক থাকলেও এখন তা নেই। আত্মগোপনে থেকেই দল গোছানোর চেষ্টা করছে তারা। নানা গুঞ্জন থাকলেও শেষ পর্যন্ত জোট থেকে বের হয়নি জামায়াত। গত বছরের রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক আলোচনা হয় তৃতীয় জোট গঠন নিয়ে। বিশিষ্ট আইনজীবী ড. কামালের নেতৃত্বে তৃতীয় একটি জোট গঠনের উদ্যোগ নেয়া হয়। বারবার চেষ্টা করেও শেষ পর্যন্ত তা আলোর মুখ দেখেনি। তবে জোট গঠনের চেষ্টা একেবারে থমকে যায়নি। নতুন বছরে আবারও তৃতীয় জোটের আত্মপ্রকাশ হতে পারে। সে প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। রাজনৈতিক অঙ্গনে দেশের বামপন্থী দলগুলো কার্যকর ভূমিকা পালনে ব্যর্থতার পরিচয় দেয়। ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে সিপিবিসহ বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দল অংশ নেয়নি। কিন্তু সব দলের অংশগ্রহণে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে সরকারকে তারা কোনো চাপও প্রয়োগ করতে পারেনি। রুটিন কাজ ছাড়া কোনো ইস্যুতেই তারা তেমন কোনো ভূমিকা রাখতে পারেনি। রাজনৈতিক বিশ্লেষক ড. আমেনা মোহসিন যুগান্তরকে বলেন, দেশের রাজনৈতিক অস্থিরতা এখনও কমেনি। বাংলাদেশের রাজনীতি অতীতেও সংঘাতময় ছিল, বর্তমানেও সংঘাতমুখর এবং ভবিষ্যতেও এ পরিস্থিতি বিরাজ থাকবে বলে মনে হয়। তিনি বলেন, রাজনৈতিক সহিংসতা না থাকলেও গত বছর রাজনীতি এবং অর্থনীতিতে যেসব স্থায়ী সমস্যা রয়েছে সেগুলো নিরসনে উল্লেখযোগ্য কোনো পদক্ষেপ নেয়া যায়নি। এ ক্ষেত্রে বড় দুটি দলই ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। সংকট নিরসনে কোনো দলই ইতিবাচক নয়। সরকার নানা দমনপীড়ন চালালেও বিরোধী দল হিসেবে বিএনপি সাধারণ মানুষের মাঝে ইতিবাচক কোনো কর্মসূচি নিয়ে আসতে পারেনি। শুধু নির্বাচনকেন্দ্রিক আন্দোলন করে ভালো ফল পাওয়া যায় না। কারণ সরকার তো পুরোপুরি ব্যর্থ নয়। তারা একটি জায়গায় ব্যর্থ হলেও অন্যান্য ক্ষেত্রে কিছুটা সফল। তবে রাজনৈতিক সংকট নিরসনে দু’দলকে চাপে রাখতে নাগরিক সমাজও ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে বলে মন্তব্য করেন আমেনা মোহসিন।  

No comments:

Post a Comment