Saturday, January 31, 2015

ঘর থেকে বের হলে ফেরার নিশ্চয়তা দেবে কে?:কালের কন্ঠ

তরুণ প্রজন্মের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের জন্য সহিংসতা বন্ধে সব রাজনৈতিক দলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে জাতীয় শিক্ষক-কর্মচারী ফ্রন্ট। গতকাল শুক্রবার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আয়োজিত প্রতীকী অনশন কর্মসূচিতে ফ্রন্টের নেতারা এ আহ্বান জানান। শিক্ষক-কর্মচারীদের ১১টি সংগঠনের মোর্চা জাতীয় শিক্ষক-কর্মচারী ফ্রন্টের এ কর্মসূচিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, এসএসসি পরীক্ষার ফল একজন শিক্ষার্থী
র সারা জীবনে প্রভাব ফেলে। এ পরীক্ষার ফল যদি কোনো কারণে আশানুরূপ না হয়, তাহলে সেই শিক্ষার্থী তো জীবনের শুরুতেই হতাশ হয়ে পড়বে। ফ্রন্টের প্রধান সমন্বয়ক অধ্যাপক কাজী ফারুক বলেন, শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত করে কোনো রাজনীতি নয়। যে রাজনীতি দেশের ধ্বংস ডেকে আনে, তরুণ প্রজন্মকে কর্মসংস্থানের দিকে পরিচালিত করে না, তাদের ভবিষ্যৎকে অনিশ্চিত করে তোলে, সে রাজনীতি কোনো রাজনীতি হতে পারে না। অনশনে যোগ দেওয়া অভিভাবকরা বলেন, 'অবরোধ-হরতালের মধ্যে আমার সন্তান ঘর থেকে বের হলেও তার বাড়ি ফেরার নিশ্চয়তা কে দেবে? আর চলমান অস্থিরতার মধ্যে পরীক্ষা হলে ফলাফল খারাপ হতে বাধ্য।' অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া শিক্ষক নেতারা বলেন, একটি স্বাধীন দেশে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশবিরোধী কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচি চলতে দেওয়া যায় না। আসন্ন এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার কথা মাথায় রেখে ২০ দলীয় জোটকে তাদের কর্মসূচির পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানান তাঁরা। অনশন কর্মসূচিতে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ আজিজুল ইসলাম, বাংলাদেশ কলেজ শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ আসাদুল হক, সহসভাপতি উপাধ্যক্ষ আব্দুর রব মিঞা, অধ্যক্ষ মোহাম্মদ আলী চৌধুরী প্রমুখ। পরে ড. আরেফিন সিদ্দিক পানি পান করিয়ে জাতীয় শিক্ষক-কর্মচারী ফ্রন্টের নেতা-কর্মীদের অনশন ভাঙান। গণজাগরণ মঞ্চের গণস্বাক্ষর কর্মসূচি : দেশের চলমান সহিংসতার প্রতিবাদে দেশজুড়ে গণস্বাক্ষর কর্মসূচি শুরু করছে গণজাগরণ মঞ্চ। 'পুড়ছে বাংলাদেশ, পুড়ছে মানবতা, সম্মিলিত প্রতিবাদ, রুখতে পারে সন্ত্রাস' স্লোগানে এ কর্মসূচি শুরু হচ্ছে। গতকাল বিকেলে ফেরদৌসী প্রিয়ভাষিণী স্বাক্ষর করে কর্মসূচির উদ্বোধন করেন। আগামীকাল রবিবার দেশব্যাপী এ কর্মসূচি শুরু হবে। সারা দেশ থেকে সংগৃহীত স্বাক্ষর আগামী ২৬ মার্চ রাষ্ট্রপতি ও স্পিকারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। দেশের সব জেলা সদরে স্থানীয় গণজাগরণ মঞ্চের নির্ধারিত স্থানে এবং উপজেলা, গ্রামাঞ্চল ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসমূহে স্থানীয় শহীদ মিনারে গণস্বাক্ষর কর্মসূচি চলবে। পাশপাশি আগামী ৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বিকেল থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচি চলবে। গতকাল কর্মসূচির উদ্বোধন শেষে মঞ্চের মুখপাত্র ডা. ইমরান এইচ সরকার বলেন, 'গত ৪ জানুয়ারি থেকে সারা দেশে রাজনীতির নামে ধারাবাহিক সহিংসতা চলছে। দেশকে একটি ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার অপচেষ্টা চলছে। এসবের পেছনে রয়েছে জামায়াত-শিবির এবং তাদের দোসর ব্যক্তি ও সংগঠনসমূহ। এ অবস্থা থেকে দেশ ও জাতিকে মুক্ত এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বৈষম্যহীন-অসাম্প্রদায়িক দেশ বিনির্মাণে সম্মিলিত প্রতিবাদ-প্রতিরোধে শামিল হওয়া নাগরিক হিসেবে আমাদের দায়িত্ব।' চাই বিকল্প শক্তির উত্থান : দেশের চলমান সমস্যা নিরসনে বিকল্প রাজনৈতিক শক্তির উত্থান ঘটাতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান। গতকাল বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন। বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) ও বাসদের 'দেশ বাঁচাও' কর্মসূচির অংশ হিসেবে এ সমাবেশের আয়োজন করা হয়। দেশব্যাপী এ কর্মসূচি পালন করছে তারা। সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন সিপিবির সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবু জাফর আহমেদ, বাসদের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য বজলুর রশীদ ফিরোজ প্রমুখ। সমাবেশ পরিচালনা করেন সিপিবির ঢাকা কমিটির সাধারণ সম্পাদক ডা. সাজেদুল হক রুবেল। সমাবেশ থেকে আগামী ৬ ফেব্রুয়ারি সারা দেশে গণ-অবস্থান কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে পুরানা পল্টনে এসে শেষ হয়। সহিংসতা নয়, শান্তি চাই : সহিংসতা ও নাশকতা সৃষ্টিকারীদের আইনের আওয়তায় এনে সর্বোচ্চ শাস্তি দেওয়ার দাবি জানিয়েছে বেসরকারি সংগঠন সুশাসনের জন্য প্রচারাভিযান (সুপ্র)। গতকাল বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত মানববন্ধনে এ দাবি জানানো হয়। সুপ্রর সহযোগী সমন্বয়কারী আরিফুল ইসলামের সঞ্চালনায় সংগঠনের সমন্বয়কারী সাদেকা নাহার ধারণাপত্র পাঠ করেন। মানববন্ধনে বক্তব্য দেন সুপ্রর নির্বাহী সদস্য এম এ কাদের, পরিচালক এলিসন সুব্রত বাড়ৈ, প্রশিক্ষণ ও দক্ষতা বিভাগের সমন্বয়কারী মো. শরিফুল ইসলাম, স্বাধীন বাংলা গার্মেন্ট শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি শামীমা নাসরিন প্রমুখ। ঢাকাসহ ৪৫টি জেলায় এমন মানববন্ধনের আয়োজন করে সুপ্র। হামলাকারীদের ফাঁসি দাবি বোয়াফের : আইন করে পেট্রলবোমা হামলাকারীদের ফাঁসির দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট ফোরাম (বোয়াফ)। গতকাল জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তারা এ দাবি জানান। বক্তারা বলেন, গণতন্ত্র রক্ষা বা গণতন্ত্র হত্যার নামে দেশের মানুষকে অগ্নিদগ্ধ করা হচ্ছে। সাধারণ মানুষের জীবন জিম্মি করে বিশ্বের কাছে বাংলাদেশকে একটি অকার্যকর রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার ষড়যন্ত্র চলছে। এটা মেনে নেওয়া যায় না। অবিলম্বে এ ধরনের কর্মকাণ্ড বন্ধ করার আহ্বান জানান তাঁরা। সমাবেশে বক্তব্য দেন স্বাধীন বাংলা বেতারকেন্দ্রের শিল্পী ও মুক্তিযোদ্ধা মনোরঞ্জন ঘোষাল, কাজী আরেফ ফাউন্ডেশনের সভাপতি কাজী মাসুদ আহমেদ, ঢাকা বারের সাংস্কৃতিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট তাহমিনা তাহেরিন মুমু, সাহিত্যিক মোস্তফা ইকবাল, বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের সভাপতি অ্যাডভোকেট মশিউর মালেক, আওয়ামী লীগ নির্বাচন কমিটির নির্বাহী সদস্য হক মোজাম্মেল, উপকমটির সহসম্পাদক সোহেলী পারভীন মনি, বঙ্গবন্ধু ডিপ্লোমা চিকিৎসক পরিষদের সভাপতি ডা. আনোয়ার হোসেন প্রমুখ।    

No comments:

Post a Comment