Wednesday, January 7, 2015

সারা দেশে বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষ:যুগান্তর

বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলের ডাকা টানা অবরোধের প্রথমদিন মঙ্গলবার নির্বিচারে বিরোধী নেতাকর্মীদের গ্রেফতার, সংঘাত, পুলিশের ওপর হামলা, অগ্নিসংযোগসহ বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষ হয়েছে সারা দেশে। রাজশাহী, নারায়ণগঞ্জ ও চাঁপাইনবাগঞ্জসহ বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক সহিংসতা হয়েছে। এতে পুলিশ, সাংবাদিকসহ শতাধিক আহত হয়েছেন। পুলিশ অভিযান চালিয়ে ২০ দলীয় জোটের ৪ শতাধিক নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করেছে। রাজশাহীতে আবার তাণ্ডব চালিয়েছে শিবির
ক্যাডাররা। তারা পুলিশের অস্ত্র কেড়ে নিয়ে তাদের পিটিয়েছে। এতে তিন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। দূরপাল্লার কোনো যাত্রীবাহী বাস ও ট্রাক ছাড়া হয়নি। বিভাগীয় নগরীসহ বড় বড় শহরগুলোতে বিক্ষিপ্তভাবে রিকশা-অটোরিকশা চলাচল করলেও অধিকাংশ ছিল যাত্রীশূন্য। রাস্তাঘাটে সাধারণ মানুষের উপস্থিতি ছিল কম। যারা অবরোধ উপেক্ষা করে রাস্তায় বের হয়েছিলেন তাদের দুর্ভোগের শেষ ছিল না। রাজপথ দখলে রাখার চেষ্টায় ব্যস্ত ছিল আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোটের নেতাকর্মীরা। পুলিশও তাদের সহযোগিতা করেছে। জলঢাকায় আমার দেশের উপজেলা প্রতিনিধিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। কক্সবাজারে জেলা পরিষদের প্রশাসক মোস্তাক আহমদ চৌধুরীর গাড়িবহরে হামলা করেছে দুর্বৃত্তরা। এদিকে, সংঘর্ষের ঘটনায় দেশের বিভিন্ন স্থানে এক ডজনের বেশি মামলা হয়েছে। মামলায় বিএনপি জামায়াত-জোটের ১০-১২ হাজার নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে। এদের মধ্যে রাজশাহীতে ৭ হাজার ও চাঁপাইনবাবগঞ্জে ২ থেকে ৩ হাজার নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। যুগান্তর ব্যুরো, স্টাফ রিপোর্টার ও প্রতিনিধিদের ক্যাডাররা। মঙ্গলবার সকাল সোয়া ১০টার দিকে নগরীর শাহমখদুম থানার আলিফ-লাম-মিম ভাটা এলাকায় আকস্মিকভাবে পুলিশের ওপর এই হামলার ঘটনা ঘটে। এ হামলায় তিন পুলিশ সদস্য আহত হন। শিবির ক্যাডাররা পুলিশের দুটি গাড়িতে আগুন দেয়। হামলাকারীরা হরতালের সমর্থনে স্লোগান দিতে দিতে ঘটনাস্থলে হাজির হলেও পালিয়ে যাওয়ার সময় জয়বাংলা স্লোগান দেয় বলে এলাকাবাসী জানায়। তাদের হাতে শিবিরের একটি ব্যানারও ছিল। নগরীর আলিফ-লাম-মিম ভাটা এলাকায় সকাল সোয়া ১০টায় হরতালের সমর্থনে একটি ঝটিকা মিছিল বের জামায়াত-শিবির ক্যাডাররা। মিছিলটিতে জনা বিশেক নেতাকর্মী অংশ নেয়। এ সময় ওই এলাকায় দায়িত্ব পালনকারী পুলিশের দুটি দলকে তিন দিক থেকে আক্রমণ চালায় তারা। প্রথমে শিবির ক্যাডাররা কয়েকটি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটনায়। কয়েকজন শিবির ক্যাডার একজন পুলিশ সদস্যের অস্ত্র কেড়ে নিয়ে তাকেই বেধড়ক পেটাতে থাকে। পিটুনি খেয়ে মাটিতে পড়ে গিয়ে ওই পুলিশ সদস্য অচেতন হয়ে পড়লে বিজিবি সদস্যরা ছুটে গিয়ে তাকে প্রাণে বাঁচান। এই পুলিশ সদস্যের মাথায় ইট দিয়েও আঘাত করে তারা। অন্যদিকে হামলার শিকার অন্য পুলিশ সদস্যও প্রাণ বাঁচাতে পালাতে গিয়ে পড়ে গেলে তাকেও লাঠি দিয়ে পেটানো হয়। এ এলাকায় হামলাকারী শিবির ক্যাডারদের হাতেও ছিল অস্ত্র ও কাঁধে ঝোলানো ব্যাগে ছিল বোমা ও ককটেল। রাজশাহী মহানগর পুলিশের মুখপাত্র বোয়ালিয়া মডেল থানার সহকারী কমিশনার (এসি) ইফতে খায়ের আলম যুগান্তরকে জানান, শিবির ক্যাডারদের এই হামলায় পুলিশ কনস্টেবল শফিকুল ইসলাম (৩৬) কং নম্বর ১৪১৬ ও আমজাদ (৩২) কং নম্বর ১৫৬০ আহত হন। আহত পুলিশদের মধ্যে আমজাদের অবস্থা আশংকাজনক বলে পুলিশ জানিয়েছে। রাজশাহী মহানগরীর শালবাগান থেকে ৩টি ককটেল উদ্ধার করে পুলিশ। পুঠিয়া-বানেশ্বর বাজারে আ’লীগ ও বিএনপির সংঘর্ষের ঘটনায় চারঘাট উপজেলা চেয়ারম্যান চাঁদসহ বিএনপির ১৫ জন নেতাকর্মীদের নাম উল্লেখ করে আরও অজ্ঞাতনামা ৭ হাজার জনের বিরুদ্ধে পৃথক ৩টি মামলা করা হয়েছে পুঠিয়া থানায়। সোমবার গভীর রাত থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য শিবপুরহাট, বানেশ্বর বাজার ও বেলপুকুর এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও শিবগঞ্জ : সোমবারের সংঘর্ষের ঘটনায় শিবগঞ্জ থানায় বিএনপি ও জামায়াতের ২ থেকে ৩ হাজার নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা করেছে পুলিশ। এর মধ্যে শিবগঞ্জ উপজেলার পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল হকও রয়েছেন। চাঁপাইনবাবগঞ্জের চার উপজেলায় পুলিশের অভিযানে বিএনপি-জামায়াতের চাঁপাইনবাবগঞ্জ-সোনামসজিদ মহাসড়কের বেশ কিছু গাছ কেটে রাস্তা অবরোধ করেছে। রাস্তা অবরোধের কারণে সোনামসজিদ স্থলবন্দরে কাঁচা পণ্যসহ বিভিন্ন পণ্যবাহী দুই শতাধিক ট্রাক আটকা পড়েছে। চট্টগ্রাম : পুলিশ অভিযান চালিয়ে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির সভাপতি আসলাম চৌধুরী, দক্ষিণ জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি এনামূল হক এনামসহ ৩ শতাধিক নেতাকর্মীকে সোমবার রাতে গ্রেফতার করে। বিএনপিকে নগরীতে আর কোনো সভা-সমাবেশ করার অনুমতি দেবে না বলে ঘোষণা দিয়েছে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি)। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিবসহ গ্রেফতারকৃত নেতাকর্মীদের নিঃশর্ত মুক্তি না দিলে আন্দোলন আরও জোরদার করার হুশিয়ারি দিয়েছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান। খুলনা : নগরীতে দফায় দফায় মিছিল করা হয়েছে। খালিশপুরে বিএনপির মিছিলে পুলিশের হামলার পর পুলিশ বাদী হয়ে বিএনপির ২৫ নেতাকর্মীকে আসামি করে মামলা করেছে। স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা আবদুল হাই কালুকে গ্রেফতারের সময় পুলিশ থানায় রেখে বেদম মারধর করে। মঙ্গলবার ভোর পর্যন্ত মহানগরসহ খুলনা জেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে বিএনপি ও জামায়াতের কর্মীসহ সন্দেহভাজন ৫৬ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সিলেট : মঙ্গলবার সকালে দক্ষিণ সুরমার তেলিরাই এলাকায় সিলেট-ঢাকা মহাসড়ক অবরোধ করে ৮-১০টি গাড়ি ভাংচুর করে ছাত্রদল। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে ৪টি ককটেলের বিস্ফোরণ ও পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করা হয়। একপর্যায়ে পুলিশ গুলি ছুড়লে ছাত্রদল নেতাকর্মীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে পালিয়ে যায়। দুটি সিএনজি অটোরিকশায় আগুন ধরিয়ে পালিয়ে যায়। সিলেটে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের ২৩ নেতাকর্মীকে আটক করেছে পুলিশ। পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনায় জামায়াত-শিবিরের ৬০ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে জালালাবাদ থানায় মামলা করা হয়েছে। কুমিল্লা ও বুড়িচং : কুমিল্লার ৩ উপজেলা থেকে বিএনপির ১১ নেতাকর্মীকে আটক করেছে পুলিশ। সোমবার রাত থেকে মঙ্গলবার ভোর পর্যন্ত পুলিশ বিভিন্ন উপজেলায় অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করে। তবে আটক নেতাকর্মীদের পরিচয় জানায়নি পুলিশ। পুলিশ কন্ট্রোল রুম যুগান্তরকে জানায়, কুমিল্লা সদর থেকে ৫ জন, চৌদ্দগ্রামে ৪ জন ও হোমনায় ২ জন বিএনপি নেতাকর্মীকে আটক করা হয়েছে। পুলিশের হামলায় মুরাদনগর উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক জয়নাল মোল্লা, যুগ্ম আহ্বায়ক চঞ্চল গুলিবিদ্ধসহ ৫০ জন আহত হয়। হামলায় গুরুতর আহত উত্তর জেলা ছাত্রদলের সভাপতি চৌধুরী রকিবুল হক শিপনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ইলিয়টগঞ্জ এলাকায় ৩৫ গাড়ি ভাংচুর করেছে ২০ দলীয় জোট নেতাকর্মীরা। লক্ষ্মীপুর ও রায়পুর : লক্ষ্মীপুরে বিএনপি-জামায়াতের ঝটিকা মিছিল, সড়কে আগুন ও ট্রাক ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় বিএনপি নেতা হারুনুর রশিদসহ ১৬ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে আওয়ামী লীগের মিছিলে হামলা ও পুলিশের কাজে বাধা দেয়ার ঘটনায় পৃথক দুটি মামলায় ২৮০ জনকে আসামি করা হয়েছে। বাগেরহাট : বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ পৌর বিএনপির সহ-সভাপতিসহ বিভিন্ন মামলায় পুলিশ ১৯ জনকে আটক করেছে। মঙ্গলবার রাত থেকে সকাল পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে বিভিন্ন মামলায় তাদের আটক করা হয়। আটককৃতদের মধ্যে রয়েছে মোড়েলগঞ্জ পৌর বিএনপির সহ-সভাপতি জাকির হোসেন বাচ্চু ওরফে বাচ্চু কাজী (৪৮), মোড়েলগঞ্জ ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি সোহেল হোসেন রায়হান (২৫) ও কলেজছাত্র সোহেল হাওলাদারও রয়েছেন। মেহেরপুর : নাশকতার আশংকায় মেহেরপুর জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ১৩ জন বিএনপি কর্মী-সমর্থককে আটক করেছে পুলিশ। এদের মধ্যে গাংনী থানা পুলিশ ৮, সদর থানা পুলিশ ৪ ও মুজিবনগর থানা পুলিশ ১ জনকে আটক করেছে। দিনাজপুর : পুলিশ জেলা মহিলা দলের আহ্বায়ক ও জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি নাজমা মশিউর, পৌর মহিলা দলের আহ্বায়ক ও দিনাজপুর পৌরসভার কাউন্সিলর সাহিন সুলতানা বিউটিসহ ৫ জন মহিলা ও ১৪ জনকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করেছে। এছাড়া বিরল উপজেলায় ৪, বিরামপুরে ৩, বোঁচাগঞ্জে ৬, হাকিমপুরে ৩, খানসামায় ২, চিরিরবন্দরে ২ জন নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃত ৬১ জনের নাম উল্লেখ করে ৫শ’ অজ্ঞাত নেতাকর্মীর নামে কোতোয়ালি থানার এসআই নাজমুল আলম বাদী হয়ে একটি মামলা করেছেন। সিরাজগঞ্জ : জেলায় ২১ জন বিএনপি-জামায়াত কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়। এদের মধ্যে সদর থানায় ৭, বেলকুচিতে ৬, কাজীপুরে ৫ ও উল্লাপাড়ায় ৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়। সদর থানায় ৪৭ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা দেড় শতাধিক ব্যক্তিকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে। পাবনা : নাশকতার আশংকায় জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে পুলিশ ৪৬ জনকে গ্রেফতার করেছে। রংপুর ও তারাগঞ্জ : মঙ্গলবার সকালে রংপুর নগরীর লালবাগ এলাকায় প্রধান সড়কে আগুন জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে ইসলামী ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীরা। এ সময় ২টি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। তারাগঞ্জে ২০ দলীয় জোটের ডাকা অবরোধ কর্মসূচি চলাকালে এক জামায়াতের সদস্যকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। বগুড়া : সোমবার রাতে বিভিন্ন স্থান থেকে পুলিশ বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের ৩৮ নেতাকর্মী এবং মঙ্গলবার সকালে পিকেটিং করার সময় মাটিডালি ও ছিলিমপুর থেকে আরও ৭ জনকে গ্রেফতার করে। শহরের সুত্রাপুর এলাকায় একটি ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা ভাংচুর করা হয়। টাঙ্গাইল : ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কের তারুটিয়া এলাকায় একটি যাত্রীবোঝাই সিএনজি চালিত অটোরিকশায় পেট্রলবোমা নিক্ষেপ করে অগ্নিসংযোগ করেছে অবরোধকারীরা। ঘটনার পরপরই জেলা ছাত্রদলের নেতাসহ তিনজকে আটক করেছে পুলিশ। নারায়ণগঞ্জ, সোনারগাঁ ও বন্দর : নগরীর খানপুরে ৩০০ শয্যা হাসপাতালের সামনে বিএনপি নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। এ সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ নেতাকর্মীদের ওপর বেধড়ক লাঠিচার্জ ও গুলি বর্ষণ করেছে। সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন গুলিবিদ্ধসহ কমপক্ষে ২০ জন আহত হয়েছেন। এ সময় গুলিবিদ্ধ যুবদল নেতা রিটন দেসহ ৫ নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করে। সংঘর্ষের সময় বিএনপি নেতাকর্মীরাও পুলিশকে লক্ষ্য করে বেশ কয়েকটি হাতবোমা নিক্ষেপ করে। উপজেলা বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনের ৬৪ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে সোমবার রাতে সোনারগাঁ থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। মঙ্গলবার বন্দর থানায় পৃথক দুটি মামলা হয়েছে। মামলায় নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট আবুল কালাম, বন্দর উপজেলা চেয়ারম্যান আতাউর রহমান মুকুলসহ শতাধিক নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়। বরিশাল : অবরোধের সমর্থনে বিভিন্ন স্থানে ককটেল বিস্ফোরণ, পিকআপ ভ্যানে অগ্নিসংযোগ ও সড়কে আগুন জ্বালিয়ে বিচ্ছিন্ন পিকেটিংয়ের ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় বিভিন্ন স্থান থেকে ৮ জন নেতাকর্মীকে আটক করেছে পুলিশ। হবিগঞ্জ ও নবীগঞ্জ : জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে বিএনপি-জামায়াতের ২১ নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এর মধ্যে ৭ জনের বিরুদ্ধে দ্রুত বিচার আইনে মামলা রয়েছে। সোমবার রাতে নবীগঞ্জ থানা পুলিশ বাদী হয়ে বিএনপি অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের ৬৭ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ৫০ নেতাকর্মীকে আসামি করে নবীগঞ্জ থানায় দ্রুত বিচার আইনে একটি মামলা দায়ের করে। নীলফামারী : জলঢাকায় মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলা মোড় হতে আমার দেশ-এর জলঢাকা উপজেলা প্রতিনিধি প্রফেসর মো. সেলিমুর রহমান সেলিমকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। পিরোজপুর : বিএনপি কর্মী শেখ মিরাজকে গ্রেফতার এবং মঠবাড়িয়া কলেজ শাখার নেতা মো. সোহেলকে রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় আটক করে পুলিশ বেধড়ক পিটুনি দেয়। শহরের কালিবাড়িতে পিকেটাররা দুটো অটোরিকশা ভাংচুর করেছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া : বিএনপি ও ছাত্রদল নেতাকর্মীদের নামে পৃথক চারটি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় বিএনপির ২৪০ নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে। তিনদিনে জেলা বিএনপির সিনিয়র চার নেতাসহ ৬৭ জনকে আটক করেছে পুলিশ। আটক নেতাকর্মীদের মধ্যে জেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি ও পৌর বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট শফিকুল ইসলাম, আরেক সাবেক সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট গোলাম সারওয়ার খোকন, জেলা বিএনপি নেতা অ্যাডভোকেট শামসুজ্জামান কানন ও অ্যাডভোকেট ইমাম হোসেন রয়েছেন। সোমবার রাতে ২৩ জনকে আটক করা হয়েছে। মৌলভীবাজার ও কুলাউড়া : জেলায় সোমবার ২০ দলীয় জোটের কালো পতাকা মিছিলে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনায় জোটের শীর্ষনেতাদের আসামি করে মামলা করা হয়েছে। মঙ্গলবার বিকাল পর্যন্ত ১৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মামলায় মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির সভাপতি, সাবেক সংসদ সদস্য এম নাসের রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবদুল মুকিত, জেলা জামায়াতের আমীর মো. আবদুল মান্নানসহ ১৩০ জনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাত আরও ১২০ জনকে আসামি করা হয়েছে। সিরাজগঞ্জ : সিরাজগঞ্জে জেলা বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদলের ৪৭ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতনামা নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে পুলিশ বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছে। গাইবান্ধা : অবরোধকে কেন্দ্র করে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় বিএনপি-জামায়াতের ৮ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সোমবার রাতে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে পুলিশ তাদের গ্রেফতার করে। কক্সবাজার : কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়কের খরুলিয়া নামক স্থানে সোমবার রাতে জেলা পরিষদের প্রশাসক সাবেক সংসদ সদস্য মোস্তাক আহমদ চৌধুরীর গাড়ি বহরে হামলা চালিয়েছে দুবৃর্ত্তরা। এ সময় মোস্তাক আহমদ ছাড়াও আহত হয়েছেন জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী কানিজ ফাতেমা মোস্তাক, ট্রাস্টি সুপ্ত ভুষন বড়ুয়া ও মুক্তিযোদ্ধা আবদুল মান্নানসহ আহত হয়েছেন ৫ জন। চাঁদপুর, হাজীগঞ্জ ও ফরিদগঞ্জ : চাঁদপুরের বিভিন্ন স্থানে পুলিশের সঙ্গে বিএনপি নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনায় ৮টি মামলা করেছে পুলিশ। মামলায় বিএনপির ২৫০ জন নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত প্রায় ১২ জনকে আসামি করা হয়। এসব মামলায় ৮ জনকে আটক করা হয়েছে। সোমবার রাতে চাঁদপুর সদর, কচুয়া, হাজীগঞ্জ ও ফরিদগঞ্জ থানায় এসব মামলা দায়ের করা হয়। চাঁদপুর সদর মডেল থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আবদুল কাইয়ুম ও কচুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. ইব্রাহীম খলিল জানান, পুলিশের কাজে বাধা ও হামলা, ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় এসব মামলা করা হয়েছে। সাভার : আশুলিয়ায় একটি যাত্রীবাহী বাসে অগ্নিসংযোগ ও কয়েকটি যানবাহনে ভাংচুর চালিয়েছে বিএনপির নেতাকর্মীরা। সাভারে গাড়ি পোড়ানোর আভিযোগে বিএনপির ১১ নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত অনেক নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে সাভার মডেল থানা পুলিশ। ফুলবাড়ীয়া ও গফরগাঁও : ফুলবাড়ীয়ায় বিএনপি জামায়াতের কোনো নেতাকর্মীকে দেখা যায়নি। সোমবার রাতে ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলার পাগলা থানা কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। হাটহাজারী : সোমবার রাতে হাটহাজারী পৌরসভা এলাকার কয়েকটি স্থানে গাড়ি ভাংচুরের অভিযোগ এনে পুলিশ বাদী হয়ে ১৪০ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা করে। কোম্পানীগঞ্জ (নোয়াখালী) : কোম্পানীগঞ্জে রাস্তা থেকে পিকেটার সন্দেহে ছয়জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।  

No comments:

Post a Comment