Monday, January 19, 2015

বাসে পেট্রলবোমা ইডেনের চার ছাত্রী আহত:নয়াদিগন্ত

বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের ডাকা টানা অবরোধ চলাকালে গতকাল জাতীয় সংসদ ভবন এলাকায় যাত্রীবাহী একটি বাসে পেট্রলবোমা ছুড়ে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়। দুর্বৃত্তদের ছোড়া পেট্রলবোমায় ইডেন মহিলা কলেজের দুই শিক্ষার্থীর পা পুড়ে যায় এবং নামতে গিয়ে আহত হন আরো দুই ছাত্রী। আগুনে পুড়ে আহতরা হলেনÑ জয়নব আক্তার সাথী ও শারমীন আক্তার যূথী। এ ছাড়া বাস থেকে লাফিয়ে নামতে গিয়ে মাইমুনা ও মুক্তি নামে আরো দুই ছাত্রী আহত হয়েছেন
। বেলা ১টা ৪৫ মিনিটে সংসদ ভবনের পূর্ব পাশে খেজুরবাগানের পাশের রাস্তায় এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে মোহাম্মদপুর ফায়ার স্টেশনের দু’টি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিভিয়ে ফেলে। পরে আহতদের ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আহতরা সবাই ইডেন মহিলা কলেজের ইসলামিক শিা বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্রী। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, সাথী ও যূথীর দুই পায়ের কিছু অংশ পুড়ে গেলেও তারা আশঙ্কামুক্ত। মাইমুনা ও মুক্তির অবস্থা তেমন গুরুতর নয়। আহতরা জানান, তারা পাঁচ বন্ধু কলেজের কাস শেষে ইডেন কলেজের সামনে থেকে বিকল্প পরিবহনের একটি বাসে (ঢাকা মেট্রো ব-১১-২৬৬৬) মিরপুরের বাসায় ফিরছিলেন। এ সময় গাড়িটি সংসদ ভবন রোডে খেজুরবাগানে পৌঁছলেই কয়েক যুবক গাড়িটিতে প্রথমে ভাঙচুর করে। পরে পেট্রলবোমা ছুড়ে পালিয়ে যায়। মুহূর্তেই গাড়িটিতে আগুন ধরে যায়।  প্রত্যদর্শী সাথীর স্বামী জাহিদ হোসেন বলেন, আমি নিজেও গাড়িতে বসে ছিলাম। বোমা মারার সাথে সাথে চালকগাড়ির স্টার্ট বন্ধ করলে যাত্রীরা দ্রুত গাড়ি থেকে নেমে পড়ে। এ সময় বাস থেকে লাফ দিতে গিয়ে কয়েকজন আহত হয়েছেন। বার্ন ইউনিটের আবাসিক সার্জন পার্থ শংকর পাল জানান, সাথি ও যূথী আশঙ্কামুক্ত। মাইমুনা ও মুক্তির অবস্থা তেমন গুরুতর নয়। তাদের বাসায় পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে।  এ দিকে আহত ছাত্রীদের দেখতে হাসপাতালে ছুটে যান শিামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ, কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী, স্বাস্থ্য অধিদফতরের ডিজি ও জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মিজানুর রহমান। শিার্থীদের ওপর যারা হামলা ও নাশকতা করছে তারা মানুষ না বলে মন্তব্য করেছেন শিামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। তিনি বলেন, সব পরীা ও ফরম পূরণের তারিখ আগে থেকেই নির্ধারিত থাকে। ছয় বছর ধরে একইভাবে এ তারিখগুলো নির্ধারণ হয়ে আসছে। তিনি বলেন, তারা যেখানে-সেখানে হামলা চালাচ্ছে। শিার্থীরা তো স্কুল-কলেজে যাবেই। কিন্তু তাই বলে কি তাদেরও ছাড় দেবে না। যারা শিার্থীদের ওপর এ ধরনের হামলা করছে তারা মানুষ না। এ সময় শিার্থীদের ওপর হামলা বন্ধ করতে শিামন্ত্রী আহ্বান জানান। নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, যারা এ ধরনের আন্দোলন করছে, তাদের এ আন্দোলন জনগণের কল্যাণে নয়। যদি জনগণের কল্যাণেই হতো তাহলে আন্দোলনের নামে মানুষ মারা হতো না। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, এগুলো (সহিংসতা) বন্ধ করতে আমরা কী করব? যারা করছেন তাদেরই বন্ধ করতে হবে। তারা কী চায়? শুধু মানুষ পুড়ে মারছে। এ ধরনের কাজ বন্ধ করতে আইনগত যে ব্যবস্থা নেয়া দরকার তা নেয়া হবে। কাউকে রেহাই দেয়া হবে না।

No comments:

Post a Comment