Tuesday, March 31, 2015

মতানৈক্য অনেক তবু শেষ মুহূর্তের চেষ্টা চলছে:প্রথম অালো

ইরানের বিতর্কিত পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে অচলাবস্থা নিরসনে দেশটি ও বিশ্বের ছয় শক্তিধর দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা একটি চুক্তিতে পৌঁছাতে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন। সুইজারল্যান্ডের লুজানে কয়েক দিন ধরে চলছে এই আলোচনা। আজ মঙ্গলবার মধ্যরাতে এ বিষয়ে চুক্তিতে পৌঁছানোর সময়সীমা শেষ হবে। কিন্তু অনেক বিষয়ে এখনো মতবিরোধ বিস্তর। এর পরও গতকাল সোমবার জোর চেষ্টা চলে একটি সমঝোতায় পৌঁছানোর। খবর এএফপি ও রয়টার্সের। আলোচ
নায় জার্মানি ও জাতিসংঘের পাঁচটি স্থায়ী সদস্য যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, চীন ও রাশিয়া এবং ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা চূড়ান্ত আলোচনায় অংশ নিচ্ছেন। জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফ্রাংক ওয়াল্টার স্টাইনমেয়ার ১৮ মাসব্যাপী আলোচনার এই পর্যায়কে ‘শেষ খেলা’ বলে অভিহিত করেছেন। ইরানের প্রধান আলোচকও একে ‘চূড়ান্ত পর্যায়’ বলে আখ্যা দেন। তবে দুজনই শেষ পর্যায়ের এই আলোচনাকে খুব কঠিন বলে মন্তব্য করেন। ইরানের পরমাণু কর্মসূচির মাত্রা কমিয়ে আনা এবং সেগুলোতে আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থা কর্তৃক পর্যবেক্ষণের সুযোগ করে দেওয়া এবং দেশটির ওপর জাতিসংঘের আরোপিত নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার সময়সীমার মতো কয়েকটি অমীমাংসিত বিষয় নিয়ে শেষ মুহূর্তে জোর আলোচনা চলছে। ইরান কী মাত্রায় তাদের পরমাণু কার্যক্রম কমাতে রাজি—এ বিষয়টি এখনো অমীমাংসিত রয়েছে। বিশ্বশক্তি চায়, আগামী ১০ বছর ইরান পরমাণু কর্মসূচি স্থগিত রাখুক। এক পশ্চিমা কূটনীতিক জানিয়েছেন, ইরান সমৃদ্ধ সেন্ট্রিফিউজের সংখ্যা ২০ হাজার থেকে ৬ হাজারে নামিয়ে আনতে এবং নিম্নমাত্রায় সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম বিদেশে পাঠানোর ব্যাপারে কমবেশি রাজি হয়েছে। তবে ইরানের প্রধান আলোচক আরাগছি ইউরেনিয়াম বিদেশে পাঠানোর ব্যাপারটি নাকচ করে দিয়েছেন। এ ছাড়া ইরান তাদের পরমাণু কর্মসূচি ব্যাপক মাত্রায় পর্যবেক্ষণের সুযোগদানের বিষয়টিও এখনো মীমাংসা হয়নি। আর ইরানের ওপর আরোপ করা নিষেধাজ্ঞা কত সময়ের মধ্যে প্রত্যাহার করা হবে, এ বিষয়ও মীমাংসার বাকি রয়েছে। সর্বশেষ পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে লুজানে পৌঁছানো ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফিলিপ হ্যামন্ড বলেন, ‘চুক্তি হওয়া সম্ভব বলে আমাদের বিশ্বাস। তবে চুক্তিতে পারমাণবিক বোমাকে ইরানের আওয়ার বাইরে রাখতে হবে।’ একটি কাঠামোগত চুক্তিতে পৌঁছানোর এই আলোচনা এখনো ভেঙে পড়ার ঝুঁকিতে রয়েছে বলে সতর্ক করেছেন কর্মকর্তারা। তবে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কোনো চুক্তি স্বাক্ষরিত হলে ইরানের পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে চলা এক যুগ ধরে চলা সংকটের সমাধান হতে পারে। ছয় বিশ্বশক্তির অভিযোগ, ইরান পারমাণবিক বোমা বানানোর কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। এ জন্য তেল রপ্তানিসহ দেশটির ওপর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। তবে ইরান বিশ্ব সম্প্রদায়ের এই অভিযোগ বরাবরই অস্বীকার করে আসছে। দেশটির দাবি, তাদের পরমাণু কার্যক্রম শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যে পরিচালিত।

No comments:

Post a Comment