Sunday, March 29, 2015

সম্ভাব্য প্রার্থী ৩০৪৯:যুগান্তর

জমে উঠেছে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ এবং চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন। এ নির্বাচনে দলীয় ব্যানারে প্রার্থী দেয়ার বিধান না থাকলেও বাস্তবে আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টিসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলের নেতারাই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। চলছে ভোটের নানা হিসাব-নিকাশ। সম্ভাব্য মেয়র প্রার্থীরাও দলীয় পরিচয়ে মাঠে নেমেছেন।
t='_blank'> শনিবার পর্যন্ত তিন সিটি নির্বাচনে মেয়র ও কাউন্সিলর পদে ৩ হাজার ৪৯ জন সম্ভাব্য প্রার্থী মনোনয়নপত্র নিয়েছেন। এর মধ্যে মেয়র পদে রয়েছেন ৭৬ ও কাউন্সিলর পদে ২ হাজার ৯৭৩ জন। মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে ঢাকা উত্তরে ২৮, দক্ষিণে ৩০ এবং চট্টগ্রামে ১৮ জন সম্ভাব্য প্রার্থী মনোনয়নপত্র নিয়েছেন। শনিবার পর্যন্ত মেয়র পদে ১০ এবং কাউন্সিলর পদে ২২৩ প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। এদিকে আজ রোববার মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার শেষ দিন। তিন সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনেই আওয়ামী লীগ এবং জাতীয় পার্টি একক প্রার্থী ঘোষণা করেছে। ঢাকা উত্তরে আওয়ামী লীগের আনিসুল হক, জাতীয় পার্টির বাহাউদ্দিন আহম্মেদ বাবুল, দক্ষিণে আওয়ামী লীগের সাঈদ খোকন, জাতীয় পার্টির হাজী সাইফুদ্দিন আহমেদ মিলন প্রার্থী। চট্টগ্রামে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী আ জ ম নাছির, জাতীয় পার্টির সোলায়মান আলম শেঠ। সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে বিএনপি এই নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে। চট্টগ্রামে তারা বিদায়ী মেয়র এম মনজুর আলমকে প্রার্থী করেছে। তবে এই সিটিতে আরেক বিএনপি নেতা অ্যাডভোকেট আবদুস সাত্তার মনোনয়নপত্র নিয়েছেন। ঢাকা উত্তরে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী আবদুল আউয়াল মিন্টু। দক্ষিণের সম্ভাব্য প্রার্থী মির্জা আব্বাস। এদের বাইরেও ঢাকা দক্ষিণে বিএনপি নেতা নাসিরউদ্দিন পিন্টু, আসাদুজ্জামান রিপন, আবদুস সালাম ও অধ্যক্ষ সেলিম ভূইয়া মেয়র পদে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। হেভিওয়েট মেয়র প্রার্থীদের আজ মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার কথা রয়েছে। মনোনয়নপত্র সংগ্রহে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনে মেয়র পদে সব মিলিয়ে ২৮, সাধারণ কাউন্সিলর পদে ৮২৩ ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ১৬১ জনসহ মোট ১ হাজার ১২ জন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনে মেয়র পদে ৩০, সাধারণ কাউন্সিলর পদে ১ হাজার ১২৮ ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ২০৮ জনসহ ১ হাজার ৩৬৬ জন এবং চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে ১৮, কাউন্সিলর পদে ৫৫৯ ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ৯৪ জনসহ মোট ৬৭১ জন রয়েছেন। শনিবার পর্যন্ত ঢাকা উত্তর সিটিতে মেয়র পদে ৩ জন, সাধারণ কাউন্সিলর পদে ৭৪ জন ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ৭ জনসহ মোট ৮৪ জন মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। অপরদিকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনে মেয়র পদে ৪ জন, সাধারণ কাউন্সিলর পদে ৭৭ জন ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ১৩ জনসহ মোট ৯৪ জন এবং চট্টগ্রাম সিটিতে মেয়র পদে ৩ জন, কাউন্সিলর পদে ৪৮ জন ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ৪ জনসহ মোট ৫৫ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন : ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনে মেয়র পদে শনিবার গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকী ও আমিরুল ইসলাম মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। একই দিনে সাধারণ কাউন্সিলর পদে ৭৩ জন ও সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে ১০ জন মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। এ নিয়ে মেয়র পদে ২৮ জন, সাধারণ কাউন্সিলর পদে ৮২৩ জন ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ১৬১ জন মনোনয়নপত্র নিয়েছেন। শনিবার সিপিবি সমর্থিত প্রার্থী আবদুল্লাহ আল কাফি রতন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। মেয়র পদে এ সিটি নির্বাচনে তিনজন মনোনয়নপত্র জমা দিলেন। নির্বাচনী আচরণবিধি লংঘন করে আগাম প্রচারণা চালানোর দায়ে এ পর্যন্ত ২৪ জন সম্ভাব্য প্রার্থীকে শোকজ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. শাহ আলম। ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন : ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে শনিবার মেয়র পদে কেউই মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেননি। এ সিটিতে ইতিপূর্বে ৩০ জন মেয়র পদে মনোনয়নপত্র নিয়েছেন। কাউন্সিলর পদে ৮৭ জন ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ৯ জন মনোনয়নপত্র নিয়েছেন। এ নিয়ে সাধারণ কাউন্সিলর পদে মোট ১ হাজার ১২৮ জন ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ২০৮ জন মনোনয়নপত্র নিলেন। এ সিটিতে নির্বাচনী আচরণবিধি লংঘন করে আগাম প্রচারণা চালানোর দায়ে এ পর্যন্ত ৮১ জন সম্ভাব্য প্রার্থীকে শোকজ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা মিহির সারওয়ার মোর্শেদ। চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন : শনিবার পর্যন্ত চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ১৮ জন মেয়র প্রার্থী মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। ৪১ ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলর পদে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন ৫৫৯ জন এবং সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর পদে ৯৪ জন মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন। মেয়র প্রার্থী হিসেবে যারা মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন তাদের মধ্যে রয়েছেন বিএনপি ও ২০ দলীয় জোট সমর্থিত এম মনজুর আলম, আওয়ামী লীগ সমর্থিত আ জ ম নাছির উদ্দিন, বিএনপি সমর্থিত বিদ্রোহী প্রার্থী অ্যাডভোকেট আবদুস সাত্তার, বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট পার্টি (বিএনএফ) সমর্থিত অধ্যাপক আরিফ মঈনুদ্দিন, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট সমর্থিত এমএ মতিন, ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ সমর্থিত এইচএম মুজিবুল হক শুক্কুর, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ সমর্থিত আলহাজ ওয়ায়েস হোসেন ভূঁইয়া। এছাড়া সৈয়দ সাজ্জাদ জোহা, ফোরকান চৌধুরী, আবুল কালাম আজাদ, মোহাম্মদ ইলিয়াছ, সাইফুদ্দিন আহমেদ রবিসহ আরও ১১ প্রার্থী স্বতন্ত্র হিসেবে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে আচরণবিধি লংঘনের অভিযোগ : গণভবনে দলের বৈঠক করে নির্দলীয় স্থানীয় প্রতিষ্ঠানের নির্বাচনে দলের প্রার্থী পরিচয় করিয়ে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আচরণবিধি লংঘন করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র প্রার্থী সিপিবি নেতা আবদুল্লাহ আল কাফি রতন। শনিবার রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে মনোনয়নপত্র জমা দিতে গিয়ে সাংবাদিকদের সামনে এ অভিযোগ করেন তিনি। কাফি আরও অভিযোগ করেন, টাকা ও পেশি শক্তি, সরকারি প্রভিশন ব্যবহার করে প্রার্থীরা প্রচারণা চালাচ্ছেন। বিলবোর্ড, পোস্টার দিয়ে বড় রাজনৈতিক দলগুলো আচরণবিধি লংঘন করছে। শনিবারও প্রধানমন্ত্রী দু’জন প্রার্থীকে পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন। এটা নির্বাচনী আচরণবিধি পরিপন্থী। এ অভিযোগের জবাবে ইসি সচিব মো. সিরাজুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, প্রধানমন্ত্রী তো এ রকম (আচরণবিধি ভঙ্গ) কিছু করেন না। যদি করে থাকেন তবে বিষয়টি দেখতে হবে। দেখে কমিশন ব্যবস্থা নেবে। স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের এ নির্বাচনের বিষয়ে তিনি বলেন, দলীয়ভাবে কিছু করার সুযোগ নেই। দলীয়ভাবে প্রচারণার সুযোগ নেই। এটা নির্দলীয় নির্বাচন। আচরণবিধি প্রতিপালনে ইসির সক্রিয়তার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, কোথাও কোথাও ব্যত্যয় ঘটবে। কিন্তু এরপরও ইসি বসে রয়েছে কিনা তা দেখার বিষয়। আমরা বসে নেই। যারা আচরণবিধি ভাঙছেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছি। এখন আর মুখের কথা নয়, প্রকৃতভাবে কাজে ব্যবস্থা নিতে হবে। সব প্রার্থীর জন্য সমান সুযোগ তৈরির বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে রিটার্নিং কর্মকর্তাদের ইসি নির্দেশনা দিয়েছে বলেও জানান তিনি।  

No comments:

Post a Comment