Sunday, March 29, 2015

‘একদিন আমার নাম সবাই জানবে’:প্রথম অালো

‘একদিন এমন কিছু করব, তখন সবাই আমার নাম জানবে। আমাকে মনে রাখবে,’ সাবেক প্রেমিকাকে এ কথা বলেছিলেন জার্মানির বিধ্বস্ত বিমানের অন্যতম পাইলট অ্যান্ড্রিয়াস লুবিৎস। গতকাল শনিবার বহুল প্রচারিত জার্মান পত্রিকা বিল্ড-এর এক খবরে এ কথা জানানো হয়। তদন্তকারী বলেছেন, লুবিৎস ইচ্ছা করেই উড়োজাহাজটি পাহাড়ের চূড়ায় আছড়ে ফেলেন। খবর এএফপি ও রয়টার্সের। বিল্ড পত্রিকাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে লুবিৎসের এক সময়ের প্রেমিকা মারিয
়া ডব্লিউ (২৬) আরও বলেন, ‘নিয়ম ভেঙেচুরে দেওয়ার একটা প্রবণতা লুবিৎসের মধ্যে ছিল। সে চাইত সবকিছু বদলে দিতে। ওই সময় তার এসব কথার মানে আমি বুঝতে পারিনি। কিন্তু এখন নিশ্চিত করে বুঝতে পারছি ওর মনে কী ছিল।’ সাক্ষাৎকারে মারিয়া বলেন, লুবিৎসের এমন কাণ্ড ঘটানোর খবরে হতবাক হয়ে পড়েছিলেন তিনি। গত বছর তাঁরা দুজন ইউরোপের বিভিন্ন দেশে ভ্রমণ করেছিলেন। ওই সময় দুজনই খুব সুখী ছিলেন। মারিয়া বলেন, ‘জার্মানির জাতীয় বিমান সংস্থা লুফথানসায় পাইলট বা ক্যাপ্টেন হিসেবে চাকরি করতে চেয়েছিল ও। কিন্তু স্বাস্থ্যগত সমস্যার কারণে তা সম্ভব হয়নি। এ কারণে লুবিৎস হতাশ হয়ে পড়েছিল।’ লুবিৎসের কিছু মানসিক সমস্যার কারণে দুজনের প্রেমে ছেদ পড়ে বলেও উল্লেখ করেন মারিয়া। তিনি আরও বলেন, নিজের অসুস্থতা সম্পর্কে মুখ খুলতেন না লুবিৎস, শুধু বলতেন মনোরোগ চিকিৎসকের পরামর্শ নিচ্ছেন। লুফথানসার প্রধান নির্বাহী কার্স্টেন স্পোর বলেছেন, ২০০৮ সালে লুবিৎস বিমানের পাইলট হিসেবে প্রশিক্ষণ নেওয়া শুরু করেন। কিন্তু শারীরিক সমস্যার কারণে তা মাঝপথে বন্ধ হয়ে যায়। গত মঙ্গলবার বিধ্বস্ত জার্মান যাত্রীবাহী বিমানের ককপিট ভয়েস রেকর্ডারের তথ্য অনুযায়ী, লুবিৎস একপর্যায়ে ওই বিমানের ক্যাপ্টেনকে ককপিটের বাইরে আটকে ফেলেন। এরপর তিনি বিমানটি দ্রুতগতিতে নিচে নামিয়ে পাহাড়ে আছাড় খাইয়ে বিধ্বস্ত করেন। তদন্তকারী কর্মকর্তারা বলেছেন, কো-পাইলট লুবিৎস ইচ্ছা করেই তা করেছেন। এতে ১৫০ জন আরোহীর সবাই নিহত হন। তদন্তকারীরা বলেছেন, লুবিৎস মঙ্গলবার বিমান চালানোর মতো সুস্থ নন বলে চিকিৎসক মত দিয়েছিলেন। তবে তিনি ক্যাপ্টেন বা বিমান সংস্থার কাউকে বিষয়টি জানাননি। জার্মানির সরকারি কৌঁসুলিরা লুবিৎসের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে চিকিৎসকদের ব্যবস্থাপত্রের মতো কাগজ ছেঁড়া অবস্থায় পেয়েছেন। প্রাথমিকভাবে বলা হয়েছে অতীতে লুবিৎস গভীর বিষণ্নতার মতো মানসিক অসুস্থতায় ভুগেছেন। তবে এ অসুস্থতার কথা বন্ধু ও সহকর্মীদের কাছে গোপন রেখেছিলেন তিনি। এদিকে ওই দুর্ঘটনায় নিহত প্রত্যেক আরোহীর পরিবারকে তাৎক্ষণিকভাবে জার্মানউইংস কর্তৃপক্ষ ৫৪ হাজার ৮০০ ডলার করে ক্ষতিপূরণ দেবে বলে ঘোষণা দিয়েছে। এ ছাড়া গতকাল সকালে নিহত ব্যক্তিদের স্মরণে জার্মানির কোলন ক্যাথেড্রালে জাতীয়ভাবে ধর্মীয় আচার পালন করার কথা ছিল।

No comments:

Post a Comment