Thursday, March 19, 2015

ভারতকে হারানোর ক্ষমতা আমাদের আছে:প্রথম অালো

কাঙ্ক্ষিত সেই ম্যাচটি আজ। এমনও হতে পারে, বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসেরই অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ হয়ে থাকবে বাংলাদেশ-ভারত কোয়ার্টার ফাইনাল। তবে গত কয়েকটা দিন ম্যাচের ফলাফলের চেয়েও বেশি আলোচনা হয়েছে কোন দল কতটুকু চাপে আছে তা নিয়ে। বাংলাদেশ দলের খেলোয়াড়েরাসহ দেশের বেশির ভাগ ক্রিকেট অনুরাগীই মনে করেন, আমাদের ওপর কোনো চাপ নেই। চাপে আছে ভারত। কথাটা ভুল নয়। অধিকাংশ ভারতীয়ই ভাবতে ও বিশ্বাস করতে শুরু
করেছে যে তাদের এই দলটা এবারও ফাইনাল খেলবে। ধরে রাখবে বিশ্বকাপের ট্রফি। আইপিএল খেলার সুবাদে ভারত মাঠে তাদের পেশাদারির দৃষ্টান্ত প্রমাণ করতে বরাবরই আগ্রহী। তা ছাড়া অনেকগুলো বড় টুর্নামেন্টে বড় ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা ও সাফল্য তাদের প্রেরণার উৎস হিসেবে কাজ করে। তবে একটা সুপ্ত চাপ ভারতীয় দলের ওপরও আছে। ২০০৭ বিশ্বকাপে বাংলাদেশের কাছে হেরেছে দলটা। সঙ্গে যোগ হবে গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে খুব ভালো না খেলার অভিজ্ঞতাও। বাংলাদেশ দল কোয়ার্টার ফাইনালে খেলছে, তার মানে বিশ্বকাপে আমরা আমাদের লক্ষ্য পূরণ করতে পেরেছি। কিন্তু তাতে দলের ওপর চাপ কমলেও খেলোয়াড়দের ওপর ব্যক্তিগত চাপটা বেড়ে গেছে। তামিম-ইমরুলের আছে বড় রান উপহার দেওয়ার চাপ, সৌম্য ও মাহমুদউল্লাহর চাপ ধারাবাহিকতা ধরে রাখার, মুশফিকের চাপ হলো ইনিংসের শেষ পর্যন্ত বিপক্ষ দলের বোলারদের ওপর প্রভাব বিস্তার করা। ক্রিকেটারদের অবশ্য এ রকম চাপ নিয়েই চলতে হয়। দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেটারদের কথাই ধরুন। কাল শ্রীলঙ্কাকে হারানোর আগ পর্যন্ত ‘চোকার্স’ শব্দটা তো চাপ হয়েই বসে ছিল তাদের মাথার ওপর! আমাদের সবার আজ একটাই চাওয়া—বাংলাদেশ জিতুক। এই প্রত্যাশায় বাস্তব যুক্তির চেয়ে আবেগের এগিয়ে থাকাটাই স্বাভাবিক। ভারতের সঙ্গে অভিজ্ঞতা ও শক্তির তারতম্য ঘোচানোর দায়িত্ব থাকল ক্রিকেটারদের ওপর। সে সামর্থ্য তাদের আছে বলেই আমার বিশ্বাস। আমাদের প্রতিটি খেলোয়াড় যদি তার সামর্থ্য ও সুযোগের পূর্ণ সদ্ব্যবহার করতে পারে, তাহলে ভারতকে হারানোর ক্ষমতা আমরা অবশ্যই রাখি। তবে গতানুগতিক ক্রিকেট খেলে সেটা সম্ভব হবে না। টস জিতলে আগে ব্যাট করতে হবে। তামিমের ব্যাট থেকে একটা বড় ইনিংস প্রয়োজন। মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যানদের যেন দ্রুতই নতুন বলের সামনে এসে না পড়তে হয়, সেটা দেখার দায়িত্বও টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানদের। আর একটা কথা, ব্যাটসম্যানদের স্ট্রাইক রেটের দিকে দৃষ্টি রাখতে হবে। স্কোর যদি ২৮০ বা ৩০০তে না যায়, ভারতের ব্যাটসম্যানদের আটকানো আমাদের বোলারদের জন্য কঠিন হবে। আর ভারত আগে ব্যাট করলে প্রথম ১০-১৫ ওভারের মধ্যে দু-তিনটি উইকেট ফেলে দিতে হবে। সেটা না পারলে এই ম্যাচ ওরা শুধু ব্যাটিং দিয়েই আমাদের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেবে। ম্যাচে ফেরা তখন কঠিন হবে বাংলাদেশের জন্য। আজ দলে দুটি পরিবর্তন চাইব আমি। তাইজুলের জায়গায় আরাফাত সানি, মাশরাফি আসবে ইমরুল কায়েসের পরিবর্তে। বলতে পারেন তাহলে তামিমের সঙ্গে ইনিংস শুরু করবে কে? এখানে আমি একটা চমক দেওয়ার পক্ষে—ওপেনিংয়ে তামিমের সঙ্গে পাঠানো হোক নাসিরকে। তাতে আমাদের জয়ের ক্ষুধাটা যেমন প্রকাশ পাবে, নাসিরও সুযোগ পাবে একটা কিছু করে দেখানোর। আমার বিশ্বাস, ডানহাতি-বাঁহাতি এই কম্বিনেশন ভারতীয় বোলারদেরও চমকে দেবে।

No comments:

Post a Comment