সৌদি রাজপরিবারের এক জ্যেষ্ঠ সদস্য সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, ইরানের পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে পাশ্চাত্যের সঙ্গে আলোচিত চুক্তিটি সম্পাদিত হলে তা পারমাণবিক জ্বালানির উন্নয়নে অন্য আঞ্চলিক দেশগুলোকে উৎসাহিত করবে। প্রিন্স তুর্কি আল-ফয়সাল বিবিসিকে বলেন, চুক্তিটি হলে সৌদি আরবও একই অধিকার চাইবে। বিবিসি ও রয়টার্সের খবর। যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের ছয়টি শক্তিধর রাষ্ট্র ইরানের বিতর্কিত পরমাণু কর্মসূচি সীমিত করার লক্
ষ্যে একটি চুক্তির ব্যাপারে আলোচনা করছে। এর বিরোধিতাকারীরা বলছেন, চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হলে সৌদি-ইরানের প্রতিদ্বন্দ্বিতার কারণে এ অঞ্চলে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির প্রতিযোগিতা বেড়ে যাবে। সৌদি আরবের সাবেক গোয়েন্দাপ্রধান প্রিন্স তুর্কি আল-ফয়সাল বলেন, ‘এ আলোচনা যে ফলই বয়ে আনুক না কেন, আমরাও একই সুযোগ চাইব।’ তিনি বলেন, ‘যে স্তরেই হোক না কেন, ইরান যদি ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করার ক্ষমতা পায়, তবে সৌদি আরবসহ অনেকেই এ ক্ষমতা চাইবে।’ ইরানের সঙ্গে চুক্তির সময়সীমা নির্ধারিত রয়েছে ৩১ মার্চ। এ প্রেক্ষাপটেই সৌদি আরব গত সপ্তাহেই দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে পরমাণু সহযোগিতাবিষয়ক চুক্তি করেছে। ইরানকে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি থেকে নিবৃত্ত করতে পারবে না—এমন কোনো অকার্যকর চুক্তি করা হবে না বলে সৌদি আরবসহ আঞ্চলিক মিত্রদের আবারও নিশ্চয়তা দিতে চলতি মাসের শুরুতে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি রিয়াদ সফরে যান। তখন কেরিকে বলা হয়, এ অঞ্চলের বিভিন্ন সংঘাতে শিয়া মুসলিমদের সংগঠনের প্রতি ইরানের সমর্থন রয়েছে। প্রিন্স তুর্কি আল-ফয়সাল বলেন, ‘ইয়েমেন, সিরিয়া, ইরাক, ফিলিস্তিন বা বাহরাইন যে আরব দেশই হোক না কেন, ইরান এরই মধ্যে বিধ্বংসী ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে।’ ইরাকে আইএসের বিরুদ্ধে যুদ্ধে লিপ্ত শিয়া-মিলিশিয়াদের প্রতি ইরানের সমর্থন সৌদি আরবের বড় উদ্বেগের কারণ। মার্কিন সেনাবাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তা জেনারেল মার্টিন ডেম্পসি বলেছেন, তিকরিতের লড়াইয়ে ইরানের সহযোগিতা ‘ইতিবাচক’ হতে পারে, যদি তা বিভক্তিকে উসকে না দেয়। ইরানের ঘনিষ্ঠ আরব মিত্র দেশ সিরিয়ায় বাশার আল-আসাদ সরকারের বিরোধীদের অস্ত্র দেওয়ার বিষয়টি যুক্তরাষ্ট্র প্রত্যাখ্যান করায় রিয়াদ দীর্ঘদিন থেকেই হতাশ। বাশারের পরিবারও শিয়া সম্প্রদায়ের। আলোচনায় অগ্রগতি: ইরান ও যুক্তরাষ্ট্র পরমাণু চুক্তি নিয়ে সুইজারল্যান্ডে চলমান আলোচনায় গতকাল সোমবার একটি সমঝোতার কাছাকাছি পৌঁছেছে। তবে এখনো তেহরান এবং ছয় শক্তিধর দেশের মধ্যে বেশ মতপার্থক্য রয়ে গেছে। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি এবং ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাভেদ জারিফ গতকাল লুসান শহরে চার ঘণ্টা আলোচনা করেন। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র জেন সাকি সিএনএনকে বলেন, ‘আমরা এখন এক গুরুত্বপূর্ণ সময় পার করছি। এই সপ্তাহের শেষ দিনগুলো বেশ গুরুত্বপূর্ণ।’
No comments:
Post a Comment